Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 238
Saheeh International
Maintain with care the [obligatory] prayers and [in particular] the middle prayer and stand before Allah, devoutly obedient.
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
মহান আল্লাহ্র নির্দেশ হচ্ছে, ‘তোমরা সালাতসমূহের সময় হিফাযত করো। তার সীমাগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করো এবং সময়ের প্রথম অংশে সালাত আদায় করতে থাকো।’ ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞেস করেনঃ ‘হে মহান আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) !
أَيُّ الْعَمَلِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: "الصَّلَاةُ عَلَى وَقْتِهَا". قُلْتُ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: "الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ". قُلْتُ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: "بِرُّ الْوَالِدَيْنِ". قَالَ: حَدَّثَنِي بِهِنَّ رَسُوْلُ اللَّهِ #، وَلَوِ استزدتُه لَزَادَنِي.
‘কোন ‘আমল উত্তম?’ তিনি বলেনঃ ‘যথাসময়ে সালাত আদায় করা।’ তিনি আবার জিজ্ঞেস করেনঃ ‘তার পরে কোনটি?’ তিনি বলেনঃ ‘মহান আল্লাহ্র পথে জিহাদ করা।’ তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করেনঃ ‘তার পরে কোনটি?’ তিনি বলেনঃ ‘পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা।’ ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেনঃ ‘যদি আমি আরো কিছু জিজ্ঞেস করতাম তাহলে তিনি আরো উত্তর দিতেন।’ (সহীহুল বুখারী-১/১৩৯/৯০, ২/১২/৫২৭, সহীহ মুসলিম-১৩৭/৮৯, ফাতহুল বারী ২/১২, মুসলিম১/৯০, মুসনাদ আহমাদ -১/৪১৮) অন্য একটি হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ إِنَّ أَحَبَّ الْأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ تعجيلُ الصَّلَاةِ لِأَوَّلِ وَقْتِهَا.
‘মহান আল্লাহ্র নিকট পছন্দনীয় ‘আমল হলো প্রথম ওয়াক্তেই সালাত আদায় করার নিমিত্তে তাড়াহুড়া করা।’ (হাদীসটি সহীহ। মুসনাদ আহমাদ -৬/৩৭৫, ৬/৭৪, ৬/৭৫, সুনান আবূ দাউদ-১/১১৫/৪৫৬, জামি‘তিরমিযী -১/৩১৯/১৭০, সুনান দারাকুতনী-১/১২/২৪৮, সুনান বায়হাক্বী-১/৪৩৪, মুসতাদরাক হাকিম-১/১৮৯, সুনান দারাকুতনী-১/২৪৮/১৪, ১/১৫/২৪৮) এই হাদীসের একজন বর্ণনাকারী ‘উমরী (রহঃ) -কে ইমাম তিরমিযী নির্ভরযোগ্য মনে করেন না।
মধ্যবর্তী ওয়াক্ত কোনটি
অতঃপর মধ্যবর্তী সালাতের প্রতি অত্যধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ‘মধ্যবর্তী সালাত’ নির্ণয়ে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ‘আলিমগণের মধ্যে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। ‘আলী (রাঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) -সহ প্রভৃতি মনীষীদের অভিমত হলো এই যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে ফজরের সালাত। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) একবার ফজরের সালাত আদায় করে বলেন যে, এটাই হলো সেই মধ্যবর্তী সালাত যাতে কুনূত পড়ার নির্দেশ রয়েছে। (হাদীস সহীহ। তাফসীর তাবারী -৫/২১৮/৫৪৮১)
ইবনু জারীর (রহঃ) বলেন যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) -এর সেই সালাত পড়ার ঘটনাটি ঘটেছিলো বাসরার কোন একটি মাসজিদে। অতঃপর তিনি রুকূ‘র পূর্বেই কুনূত পড়েন এবং বলেন যে, এটাই হলো সেই মধ্যবর্তী সালাত যার উল্লেখ মহান আল্লাহ্ কুর’আন মাজীদে করেছেন। (হাদীস সহীহ। তাফসীর তাবারী -৫/২১৬, ২১৭//৫৪৭৮) জাবির (রাঃ) থেকে কাতাদাহ (রহঃ) বর্ণনা করে বলেন যে, ‘মধ্যবর্তী সালাত’ হচ্ছে ফজরের সালাত। (হাদীসয‘ঈফ। তাফসীর তাবারী -৫/২১৬, ২১৭/৫৪৭৮)
তিরমিযী (রহঃ) এবং বাগাবী (রহঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা যে মধ্যবর্তী সালাতের কথা উল্লেখ করেছেন সেই ব্যাপারে অধিকাংশ সাহাবীগণের মতামত হচ্ছে ‘আসর সালাত। আল কাযী আল মাওয়ারদী (রহঃ) বলেন যে, তাবি‘ঈগণের অধিকাংশ ‘আলিমেরও একই মত পোষণ করেছেন। হাফিয আবূ ‘উমার ইবনু ‘আবদুল্লাহ বার (রহঃ) বলেছেন যে, অধিকাংশ হাদীস শাস্ত্রবিদ এবং সালাফাগণেরও (আসার) একই অভিমত। তাছাড়া আবূ মুহাম্মাদ ইবনু আতিয়িয়া (রহঃ) বলেন যে, বেশিরভাগ ‘আলিমই তাদের তাফসীরে ‘আসর সালাতকে মধ্যবর্তী সালাত বলে উল্লেখ করেছেন। হাফিয আবূ মুহাম্মাদ ‘আবদুল মু’মিন ইবনু খালাক আদ দামাতী (রহঃ) তার কিতাবে ‘আসর সালাতকে মধ্যবর্তী সালাত হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে, এ বিষয়ে ‘উমার (রাঃ) , ‘আলী (রাঃ) , ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) , আবূ আইউব (রাঃ) , ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) , সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাঃ) , আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) , আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) , হাফসা (রাঃ) , উম্মু হাবীবা (রাঃ) , উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) , ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এবং ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) -এর এটাই তাফসীর। ‘উবাইদাহ (রহঃ) , ইবরাহীম নাখ‘ঈ (রহঃ) , রাযীন (রহঃ) , যির ইবনু হুবাইস (রহঃ) সা‘ঈদ ইবনু যুবাইর (রহঃ) , ইবনু সীরীন (রহঃ) , হাসান বাসরী (রহঃ) , কাতাদাহ (রহঃ) , যাহ্হাক (রহঃ) , কালবী (রহঃ) , মুকাতিল ইবনু হাইয়্যান (রহঃ) , ‘উবাইদাহ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) এবং অন্যান্যরাও একই তাফসীর করেছেন।
আবার কেউ কেউ বলেন যে, মধ্যবর্তী সালাত হচ্ছে মাগরিবের সালাত। কেননা এর পূর্বে চার রাক‘আত বিশিষ্ট সালাত রয়েছে এবং এর পরেও চার রাকা‘আত বিশিষ্ট সালাত রয়েছে। আর সফরে এগুলোর কসর পড়তে হয়, কিন্তু মাগরিবের সালাত পুরোই পড়তে হয়। আর একটি কারণ এই যে, এর পরে রাতের দু’টি সালাত তথা ‘ঈশা ও ফজর এর সালাত রয়েছে। আর এ সালাত গুলো কির’আত উচ্চস্বরে পড়তে হয়। আবার মাগরিবের সালাতের পূর্বে দিনের দু’টি সালাত তথা যুহর ও ‘আসরের সালাত রয়েছে। আর এই দু’ ওয়াক্তের সালাতে কির’আত ধীরে ধীরে পড়তে হয়।
কারো মতে এই মধ্যবর্তী সালাত হলো যোহরের সালাত। একবার কতোগুলো লোক যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) -এর সভায় উপস্থিত ছিলো। সেখানে এই জিজ্ঞাস্য বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছিলো। জনগণ উসামা (রাঃ) -এর নিকট এর ফায়সালা নেয়ার জন্য লোক পাঠালে তিনি বলেন, এটা যোহরের সালাত, যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সময়ের প্রথমাংশে আদায় করতেন। (মুসনাদ আবূ দাউদ আততায়ালিসী-১/৮৭/৬২৮, তারীখুল কাবীর-৩/৪৩৪)
যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) বলেন যে, সাহাবীগণের ওপর এর চেয়ে ভারী সালাত আর কোনটি ছিলো না। এই জন্যই এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এর পূর্বেও দু’টি সালাত রয়েছে এবং পরেও দু’টি সালাত রয়েছে। (হাদীসটি সহীহ। সুনান আবূ দাউদ- ১/১১২/৪১১, মুসনাদ আহমাদ -৫/১৮৩) কুরাইশদের প্রতিনিধি দল যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) -কে মধ্যবর্তী সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তরে ‘আসর সালাতের কথা বলেছিলেন, পরবর্তী প্রতিনিধি দল একই বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাদেরকে উত্তর দেন যে মধ্যবর্তী সালাতটি হলো যোহরের সালাত। অতঃপর পূর্বের প্রতিনিধি দলটি উসামা (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তর দেন যে তা হলো যোহরের সালাত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই সালাত সূর্য পশ্চিম আকাশে একটু হেলে গেলেই আদায় করতেন। খুব কষ্ট করে দু’এক সারীর লোক উপস্থিত হতেন। কেউ ঘুমিয়ে থাকতেন। আবার কেউ ব্যবসায় লিপ্ত থাকতেন। তখন এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয় এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ليَنْتَهيَنَّ رِجَالٌ أَوْ لَأُحَرِّقَنَّ بُيُوتَهُمْ.
‘লোকেরা হয়তো বিরত থাকবে নতুবা আমি তাদের বাড়ি-ঘরে আগুন জালিয়ে দিবো।’ (মুসনাদ আহমাদ -৫/২০৬, আল মাজমা‘উযযাওয়ায়িদ-১/৩০৯)
‘আসরের সালাতই মধ্যবর্র্র্র্তী ওয়াক্তের সালাত হওয়ার দলীল
এই উক্তির দলীল এই যে, ‘আলী (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খন্দকের যুদ্ধের দিন বলেছিলেনঃ
شَغَلُونَا عَنِ الصَّلَاةِ الْوُسْطَى، صَلَاةِ الْعَصْرِ، مَلَأَ اللَّهُ قُبُورَهُمْ وَأَجْوَافَهُمْ أَوْ بُيُوتَهُمْ نَارًا
‘মহান আল্লাহ্ মুশরিকদের অন্তর ও তাদের ঘরগুলো আগুন দ্বারা পূর্ণ করুন। তারা صَلَوةِوُسْطَى ‘আসরের সালাত হতে বিরত রেখেছে।’ অতঃপর তা তিনি মাগরিব ও ‘ঈশার মধ্যবর্তী সময়ে আদায় করেন। (হাদীসটি সহীহ। মুসনাদ আহমাদ -১/৭১, ৭২/৬১৭, সহীহ মুসলিম-১/২০৫/৪৩৭, ১/২০৪/৪৩৭, সহীহুল বুখারী-৬/১২৪/২৯৩১, সুনান নাসাঈ -১/২৫৫/৪৭২, সুনান আবূ দাউদ-১/১১২/৪০৯, জামি‘তিরমিযী -৫/২০২/২৯৮৪) ‘আলী (রাঃ) বলেনঃ ‘আমরা এর ভাবার্থ নিতাম ফজর অথবা ‘আসরের সালাত। অবশেষে খন্দকের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মুখে আমি এ কথা শুনতে পাই।
ইমাম মুসলিম (রহঃ) এবং নাসাঈ (রহঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (হাদীস নং ১/৪৩৭ও৬/৩০৩) এছাড়া ইমাম বুখারী (রহঃ) , আবূ দাঊদ (রহঃ) , তিরমিযী (রহঃ) ও অন্যান্য হাদীস সংগ্রহকারীগণও ‘আলী (রাঃ) -এর বরাতে বিভিন্ন সুত্রে এটা বর্ণনা করেছেন। (ফাতহুল বারী ৬/১২৪, ৭/৪৬৭, ৮/৪৩, ১১/১৯৭; সহীহ মুসলিম১/৪৩৬, সুনান আবু দাঊদ১/২৮৭, জামি‘তিরমিযী ৮/৩২৮, নাসাঈ ১/২৩৬, মুসনাদ আহমাদ ১/১৩৭) আহযাবের যুদ্ধের সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর সাহাবীগণকে মুশরিকরা যুদ্ধে ব্যস্ত রাখার ফলে তারা যে ‘আসর সালাত আদায় করতে পারেন নি এ কথা অন্যান্য সাহাবীগণ হতেও বর্ণিত হয়েছে। ইমাম মুসলিম (রহঃ) -ও একই শব্দ প্রয়োগে ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) এবং বারা’ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। (হাদীস১/৪৩৭, ৪৩৮) এ ছাড়া ইমাম আহমাদ (রহঃ) সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মধ্যবর্তী সালাত হলো ‘আসর সালাত। (মুসনাদ আহমাদ ৫/২২)
অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতকে হিফাযত করো, বিশেষ করে মধ্যবর্তী সালাত এবং বর্ণিত হয়েছে যে, তা হলো ‘আসর সালাত। (মুসনাদ আহমাদ -৫/৮) অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এটা হলো ‘আসর সালাত। ইবনু জা‘ফর (রহঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মধ্যবর্তী সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এ উত্তর দেন। (মুসনাদ আহমাদ -৫/৭) ইমাম তিরমিযী (রহঃ) -ও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং হাদীসটি হাসান সহীহ বলেছেন। ইমাম মুসলিমের বর্ণনা ছিলো নিম্নরূপঃ
شَغَلُونَا عَنِ الصَّلَاةِ الْوُسْطَى صَلَاةِ الْعَصْرِ.
তারা অর্থাৎ মুশরিকরা আমাদেরকে মধ্যবর্তী সালাত আদায় করা থেকে বিরত রেখেছে, তা হলো ‘আসর সালাত। (সহীহ মুসলিম-১/৪৩৭)
মোট কথা, صَلَوةِوُسْطَى-এর ভাবার্থ ‘আসর সালাত হওয়া সম্বন্ধে বহু হাদীস এসেছে যেগুলোর মধ্যে কোনটি হাসান, কোনটি সহীহ এবং কোনটি দুর্বল। জামি‘ তিরমিযী, সহীহ মুসলিম প্রভৃতি গ্রন্থেও এ হাদীসগুলো রয়েছে। তাছাড়া এ সালাতের ওপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন এবং যারা এর প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করেছে তাদের প্রতি কঠোর বাণী উচ্চারণ করেছেন। যেমন ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে রয়েছেঃ
مَنْ فَاتَتْهُ صَلَاةُ الْعَصْرِ فَكَأَنَّمَا وَتِرَ أَهْلَهُ وَمَالَهُ.
‘যার ‘আসরের সালাত ছুটে গেলো তার যেন পরিবারবর্গ ও ধন-সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেলো।’ (সহীহ মুসলিম-১/২০০/৪৩৫, ১/২০১/৪৩৬, ইবনু মাজাহ -১/২২৪/৬৮৫, সুনান দারিমী-১/৩০৫/১২৩০, মুসনাদ আহমাদ -২/৫৪, ১৩৪, ১৩৫, সহীহুল বুখারী-২/৩৭/৫৫২, সুনান আবূ দাউদ-১/১১৩/৪১৪, জামি‘তিরমিযী -১/৩৩০/১৭৫) বুরাইদাহ ইবনু হুসাইব (রাঃ) থেকে অন্য হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ بَكِّرُوا بِالصَّلَاةِ فِي يَوْمِ الْغَيْمِ، فَإِنَّهُ مَنْ تَرَكَ صَلَاةَ الْعَصْرِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ ‘মেঘলা দিনে তোমরা ‘আসরের সালাত সময়ের পূর্বভাগেই আদায় করে নাও। জেনে রেখো, যে ব্যক্তি ‘আসরের সালাত ছেড়ে দেয় তার ‘আমলসমূহ নষ্ট হয়ে যায়।’ (ইবনু মাজাহ -১/২২৭/২৯৪, মুসনাদ আহমাদ -৫/৩৬১, সহীহুল বুখারী-২/৩৯/৫৫৩, সুনান নাসাঈ -১/২৫৬/২৭৩)
সালাত আদায়ের সময় কথা বলা যাবে না
অতঃপর মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿وَقُوْمُوْالِلّٰهِقٰنِتِیْنَ﴾তোমরা বিনয় ও হীনতার সাথে মহান আল্লাহ্র সম্মুখে দণ্ডায়মান হও। এর মধ্যে এটা অবশ্যই রয়েছে যে, সালাতের মধ্যে মানবীয় অর্থাৎ পার্থিব কোন কথা থাকবে না। এ জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতের মধ্যে ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) -এর সালামের উত্তর দেননি এবং সালাত শেষে তাকে বলেনঃ
إِنَّ فِي الصَّلَاةِ لَشُغْلًا.
‘সালাত হচ্ছে নিমগ্নতার কাজ।’ (সহীহুল বুখারী-৭/২২৭/৩৮৭৫, সহীহ মুসলিম-১/৩৪/৩৮২, সুনান আবূ দাউদ-১/২৪৩/৯২৩, মুসনাদ আহমাদ -১/৩৭৬৪০৯) মু‘আবিয়া ইবনু হাকাম (রাঃ) সালাত আদায় করা অবস্থায় কথা বললে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেছিলেনঃ
إِنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النَّاسِ، إِنَّمَا هِيَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَذِكْرُ اللَّهِ.
‘সালাতের মধ্যে মানবীয় কোন কথা বলা উচিত না। এতো হচ্ছে শুধুমাত্র মহান আল্লাহ্র পবিত্রতা ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করার কাজ।’ (সহীহ মুসলিম-১/৩৩/৩৮১, সুনান আবূ দাউদ-১/২৪৫/৯৩০, মুসনাদ আহমাদ -৫/৪৪৭, সুনান বায়হাক্বী-২/৩৬০)
মুসনাদ আহমাদে রয়েছে, যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ) বলেনঃ এই আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে মানুষ সালাতের মধ্যে প্রয়োজনীয় কথাগুলো বলে ফেলতো। অতঃপর এই আয়াতটি অবতীর্ণ হলে মানুষকে সালাতের মধ্যে নীরব থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৪/৩৬৮, ফাতহুল বারী ৩/৮৮, মুসলিম১/৩৭৩, সুনান আবু দাঊদ১/৫৮৩, জামি‘তিরমিযী ৮/৩৩০, সুনান নাসাঈ ৩/১৮) কিন্তু এই হাদীসের মধ্যে একটা সমস্যা এই রয়েছে যে, সালাতের মধ্যে কথাবার্তা বলার নিষিদ্ধিতার নিদেশ আবিসিনিয়ায় হিজরতের পরে ও মাদীনায় হিজরতের পূর্বে মাক্কা নগরীতেই অবতীর্ণ হয়েছিলো।
সহীহ মুসলিমের মধ্যে রয়েছে, ‘আবদুল্লাহ ইবন মাস‘উদ (রাঃ) বলেনঃ আবিসিনিয়ায় হিজরতের পূর্বে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে তার সালাতে রত অবস্থায় সালাম দিতাম এবং তিনি সালাতের মধ্যেই উত্তর দিতেন। আবিসিনিয়া হতে ফিরে এসে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে তার সালাতে রত অবস্থায় সালাম দেই। কিন্তু তিনি উত্তর দেন নি। এতে আমার দুঃখের সীমা ছিলো না। সালাত শেষে তিনি বলেনঃ
إِنِّي لَمْ أَرُدَّ عَلَيْكَ إِلَّا أَنِّي كُنْتُ فِي الصَّلَاةِ، وَإِنَّ اللَّهَ يُحْدِثُ مِنْ أَمْرِهِ مَا يَشَاءُ، وَإِنَّ مِمَّا أَحْدَثَ أَلَّا تَكَلَّمُوا فِي الصَّلَاةِ.
‘হে ‘আবদুল্লাহ! অন্য কোন কথা নেই। আমি সালাতে ছিলাম বলেই তোমার সালামের উত্তর দেইনি। মহান আল্লাহ্ যে নির্দেশ দিতে চান তাই দিয়ে থাকেন। তিনি এটা নতুন নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা সালাতের মধ্যে কথা বলো না।’ (মুসনদআহমাদ -১/৩৭৭, ৪০৯, ৪১৫, ৪৩৫, ১৩/৫০৫, সুনান আবূ দাউদ-১/২৪৩/৯২৪, সুনান নাসাঈ -৩/২৩/১২২০) অথচ এই আয়াতটি মাদীনায় অবতীর্ণ হয়েছিলো। এখন যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ) -এর ‘মানুষ সালাতের মধ্যে প্রয়োজনে তার ভাইয়ের সাথে কথা বলতো’ এই কথার ভাবার্থ ‘আলিমগণ এই বলেন যে, এটা কথার শ্রেণী বিশেষ এবং নিষিদ্ধতা হিসেবে এই আয়াতকে দলীলরূপে গ্রহণ করাও হচ্ছে তার নিজস্ব অনুভূতি মাত্র। আবার কেউ কেউ বলেন যে, সম্ভবতঃ সালাতের মধ্যে দু’বার বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং দু’বার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু প্রথম উক্তিটিই অধিকতর ¯পষ্ট। ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি যা হাফিয আবূ ইয়া‘লা (রহঃ) বর্ণনা করেছেন, তাতে রয়েছে যে, ইবনু মাস‘উদ (রহঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার সালামের উত্তর না দেয়ায় আমার এই ভয় ছিলো যে, সম্ভবত আমার সম্বন্ধে কোন ওয়াহী অবতীর্ণ হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত শেষে আমাকে সম্বোধন করে বলেনঃ وعليكالسلامايهاالمسلمورحمةالله অর্থাৎ হে মুসলমান ব্যক্তি! তোমার ওপর শান্তি ও মহান আল্লাহ্র করুণা বর্ষিত হোক। নিশ্চয় মহান আল্লাহ্ যে নির্দেশ দিতে চান তাই দিয়ে থাকেন। সুতরাং যখন তোমরা সালাতে থাকবে তখন বিনয় প্রকাশ করবে ও নীরব থাকবে। (সনদ য‘ঈফ)
ভয়-ভীতির সময় সালাত আদায়
﴿فَاِنْ خِفْتُمْ فَرِجَالًا اَوْ رُكْبَانًا١ۚ فَاِذَاۤ اَمِنْتُمْ فَاذْكُرُوا اللّٰهَ كَمَا عَلَّمَكُمْ مَّا لَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَ﴾ ইতোপূর্বে যেহেতু সালাতের পুরাপুরি সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো সেহেতু এখানে ঐ অবস্থার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যেখানে পুরোপুরিভাবে সালাতের মর্যাদা রক্ষা করা সম্ভব হয় না। যেমন যুদ্ধের মাঠে যখন শত্রুসৈন্য সম্মুখে দণ্ডায়মান থাকে সেই সময়ের জন্য নির্দেশ হচ্ছে, ‘যেভাবে সম্ভব হয় সেভাবেই তোমরা সালাত আদায় করো। অর্থাৎ তোমরা সোয়ারীর ওপরই থাকো বা পদব্রজেই চলো, কিবলার দিকে মুখ করতে পারো আর নাই পারো, তোমাদের সুবিধামত সালাত আদায় করো।’
ইবনু ‘উমার (রাঃ) এই আয়াতের ভাবার্থ এটাই বর্ণনা করেছেন। এমনকি নাফি‘ (রহঃ) বলেনঃ ‘আমি তো জানি যে, এটা মারফূ‘ হাদীস। (মুওয়াত্তা-১/১৮, ফাতহুল বারী -৮/৪৬, সহীহ মুসলিম-১/৫৭৪)
ইমাম মুসলিম (রহঃ) , ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) , ইমাম নাসাঈ (রহঃ) , ইমাম ইবনু মাজাহ (রহঃ) এবং ইবনু জারীর (রহঃ) বর্ণনা করেছেন যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ মহান আল্লাহ্ তাঁর নবীর মাধ্যমে সালাত নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তা হলো নিজ বাসস্থানে চার রাক‘আত, সফরে থাকা অবস্থায় দু’রাক‘আত এবং ভয়-ভীতির সময় এক রাক‘আত। (সহীহ মুসলিম-১/৪৭৮, ৪৭৯, সুনান আবু দাঊদ২/৪০, সুনান নাসাঈ -৩/১৬৯, সুনান ইবনু মাজাহ-১/৩৩৯, তাফসীর তাবারী -৫/২৪৭) হাসান বাসরী (রহঃ) কাতাদাহ (রহঃ) , যাহ্হাক (রহঃ) এবং আরো অনেকে একই মতামত ব্যক্ত করেছেন। (তাফসীর তাবারী -৫/২৪০, ২৪১) ইমাম বুখারী (রহঃ) তার কিতাবে ‘দূর্গ বিজয়ের সময় ও শত্রুসৈন্যর সম্মুখীন হওয়ার সময় সালাত আদায় করা ‘নামে একটি অধ্যায় রেখেছেন। ইমাম আওযা‘ঈ (রহঃ) বলেন যে, যদি বিজয় লাভ আসন্ন হয়ে যায় এবং সালাত আদায় করার সাধ্য না হয় তাহলে প্রত্যেক লোক তার সামর্থ্য অনুসারে ইশারায় সালাত আদায় করে নিবে। যদি এটুকু সময় পাওয়া না যায় তাহলে বিলম্ব করবে যে পর্যন্ত না যুদ্ধ শেষ হয়। আর যদি নিরাপত্তা লাভ হয় তাহলে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করবে,অন্যথায় এক রাক‘আতই যথেষ্ট। কিন্তু শুধু তাকবীর পাঠ করা যথেষ্ট নয়, বরং বিলম্ব করবে যে পর্যন্ত না নিরাপদ হয়। মাকহুল (রহঃ) -ও এটাই বলেছেন।
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেনঃ ‘তাসতার দূর্গের যুদ্ধে সেনাবাহিনীর মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। সুবহি সাদিকের সময় ভীষণ যুদ্ধ চলছিলো। সালাত আদায় করার সময়ই আমরা পাইনি। অনেক বেলা সেদিন আমরা আবূ মূসা (রাঃ) -এর সাথে ফজরের সালাত আদায় করি। ঐ সালাতের বিনিময়ে যদি আমি দুনিয়া এবং এর মধ্যে যা কিছু রয়েছে সবও পেয়ে যাই, তবুও আমি সন্তুষ্ট নই। (ফাতহুল বারী -২/৫০৩) এটা সহীহুল বুখারীর শব্দ। ইমাম বুখারী (রহঃ) ঐ হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণ করেছেন যাতে রয়েছে যে, খন্দকের যুদ্ধে সূর্য পূর্ণ অস্তমিত না হওয়া পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আসরের সালাত আদায় করতে পারেননি।
একটি হাদীসে আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সাহাবীগণকে বানূ কুরাইযার বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন তখন তাদেরকে বলেন, তোমাদের কেউ যেন বানূ কুরাইযাতে না পৌঁছা পর্যন্ত ‘আসরের সালাত আদায় না করে। পথিমধ্যে ‘আসরের সালাতের সময় হওয়া সত্তেও একদল সেখানে সালাত আদায় করলো না, কিন্তু অপর দল যথা সময়ে সালাত আদায় করে নিলো। যারা সালাত আদায় করলো তাদের বুঝ ছিলো এই যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উদ্দেশ্য ছিলো, আমরা যেন খুব দ্রুত পথ চলে তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌছে যায় এবং সেখানে ‘আসরের সালাত আদায় করি। কিন্তু যারা সালাত আদায় করলো না তারা গন্তব্যে পৌছাতে পৌছাতে সূর্যই অস্তমিত হয়ে গেলো। তথাপি তারা বানূ কুরাইযার নিকট গিয়ে ‘আসরের সালাত আদায় করলো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ সংবাদ জানতে পেরেও তাদেরকে ধমকের সুরে কিছুই বলেননি। সুতারাং এর দ্বারাই ইমাম বুখারী যুদ্ধের মায়দানে সালাতকে পিছিয়ে দেয়ার বৈধতার পক্ষে দলীল গ্রহণ করেছেন। কিন্তু জামহূর এর বিপরীত বলেছেন। তাঁরা বলেন যে, সূরাহ আন নিসার মধ্যে সালাতুল খাওফের যে নির্দেশ এসেছে এবং যে সালাত শারী‘আত সম্মত হওয়ার কথা এবং যে সালাতের নিয়ম-কানুন হাদীসসমূহে এসেছে তা খন্দকের যুদ্ধের পরের ঘটনা। কিন্তু ইমাম বুখারী (রহঃ) , ইমাম মাকহুল (রহঃ) এবং ইমাম আওযা‘ঈ (রহঃ) -এর উত্তর এই যে, এটা পরে শারী‘আত সম্মত হওয়া এই বৈধতার উল্টো হতে পারে না যে, এটাও জায়িয এবং এটাও নিয়ম। আর এরূপ অবস্থায় সালাতকে বিলম্বে পড়া জায়িয।
স্বাভাবিক অবস্থায় খুশু‘-খুযুর সাথে সালাত আদায় করা
মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿فَاِذَاۤاَمِنْتُمْفَاذْكُرُوااللّٰهَ﴾‘যখন নিরাপদে থাকো তখন মহান আল্লাহ্কে স্মরণ করো।’ অর্থাৎ তোমাদেরকে যেভাবে সালাত আদায় করতে বলেছি যেমন রুকূ‘, সাজদাহ্, কিয়াম, তাশাহুদ এবং খুশু-খুযু‘র সাথে সালাত আদায় করো। মহান আল্লাহ্ বলেন যে, তিনি যেভাবে শিক্ষা দিয়েছেন, যা পালন করলে পার্থিব জীবনে এবং পরকালে উপকৃত হওয়া যাবে সেভাবেই কাজ করে মহান আল্লাহ্র প্রতি কৃতজ্ঞ চিত্তে ‘ইবাদত ও শুকরিয়া জানাতে হবে। এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার সাথে সাথে মহান আল্লাহ্ ভয়-ভীতি অবস্থায় সালাত আদায় করার কথা বলেনঃ
﴿ فَاِذَا اطْمَاْنَنْتُمْ فَاَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ١ۚ اِنَّ الصَّلٰوةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِیْنَ كِتٰبًا مَّوْقُوْتًا ﴾
‘অতঃপর যখন তোমরা নিরাপদ হও তখন তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠিত করো; নিশ্চয়ই সালাত বিশ্বাসীগণের ওপর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্ধারিত।’ (৪নং সূরাহ নিসা, আয়াত নং ১০৩)
﴿وَ اِذَا كُنْتَ فِیْهِمْ فَاَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلٰوةَ ﴾
আর যখন তুমি তাদের (সৈন্যদের) মধ্যে থাকো, অতঃপর সালাতে দণ্ডায়মান হও। (৪নং সূরাহ নিসা, আয়াত নং১০২) সালাতকে নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করা মু’মিনদের ওপর ফরয। صَلَوةخَوْف-এর পূর্ণ বর্ণনা সূরাহ্ নিসার وَاِذَاكُنْتَفِیْهِمْ-এর তাফসীরে ইনশা’আল্লাহ্ আসবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings