Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 229
Saheeh International
Divorce is twice. Then, either keep [her] in an acceptable manner or release [her] with good treatment. And it is not lawful for you to take anything of what you have given them unless both fear that they will not be able to keep [within] the limits of Allah . But if you fear that they will not keep [within] the limits of Allah, then there is no blame upon either of them concerning that by which she ransoms herself. These are the limits of Allah, so do not transgress them. And whoever transgresses the limits of Allah - it is those who are the wrongdoers.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২২৯ ও ২৩০ নং আয়াতের তাফসীর:
তালাকের পরিচয়:
তালাক অর্থ বন্ধন মুক্ত করা, ছেড়ে দেয়া। শরীয়তের পরিভাষায় তালাক বলা হয়- তালাক ও অনুরূপ শব্দ দ্বারা বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করা।
তালাকের শর্তসমূহ:
প্রাপ্ত বয়স্ক স্বামী তার বৈধ স্ত্রীকে সুস্থ বিবেকে তালাক ও অনুরূপ শব্দ দ্বারা বিবাহ বিচ্ছেদ করবে। স্বামীকে যদি তালাক দিতে বাধ্য করা হয় অথবা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তালাক দেয় তাহলে তালাক হবে না।
তালাক দু’প্রকার:
(১) স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে এমন স্ত্রীকে ঐ পবিত্র অবস্থায় তালাক দেয়া যে পবিত্র অবস্থায় দৈহিক সম্পর্ক হয়নি। এটাই হলো সুন্নাতী পদ্ধতি।
(২) যে পবিত্র অবস্থায় দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে অথবা ঋতু অবস্থায় তালাক দেয়াকে বিদআতী তালাক বলা হয়। এরূপ অবস্থায় তালাক দিলে তালাক কার্যকর হবে না। (সহীহ বুখারী হা: ৫২৫১)
(الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ)
‘তালাক দু’বার’বলতে সে তালাককে বুঝানো হয়েছে যে তালাকে স্বামী ইদ্দতের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার রাখে। আর তার সংখ্যা দু’টি। প্রথমবার এবং দ্বিতীয়বার তালাক দেয়ার পরও স্বামী তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। তবে তৃতীয়বার তালাক দিলে ফিরিয়ে নেয়ার সুযোগ থাকে না।
জাহিলী যুগে তালাক দেয়া ও ফিরিয়ে নেয়ার কোন নির্ধারিত সময়সীমা ছিল না। ফলে নারীর ওপর অত্যাচার করা হত। মানুষ বার বার স্ত্রীকে তালাক দিত আবার মন চাইলে ফিরিয়ে নিত। এভাবে না তাকে রাখত, না ছেড়ে দিত।
আল্লাহ তা‘আলা নারীদের ওপর জুলুমের এ পথ বন্ধ করে দিলেন। অপর পক্ষে প্রথমবার ও দ্বিতীয়বারে চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেননি। তা না হলে যদি প্রথম তালাকেই চির দিনের জন্য বিচ্ছেদের নির্দেশ দিতেন, তাহলে এ থেকে পারিবারিক যেসব সমস্যার সৃষ্টি হত তা কল্পনাতীত। অনেক স্বামী রাগবশতঃ তালাক দিয়ে দেয়, পরে অনুধাবন করতে পারে। সেজন্য আল্লাহ তা‘আলা দ্বিতীয়বার পর্যন্ত স্বামীদের চিন্তা করার সুযোগ দিয়েছেন।
তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা (طلقتان) (দু’তালাক) বলেননি বরং বলেছেন:
(الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ)
তালাক দুইবার। এর দ্বারা বুঝা যায়, একই সময়ে দুই বা তিন তালাক দেয়া এবং তা কার্যকরী করা আল্লাহ তা‘আলার হিকমতের পরিপন্থী। আল্লাহ তা‘আলার হিকমতের দাবি হল- একবার তালাক দেয়ার পর প্রথম মাসিক ইদ্দত পূর্ণ করবে এমতাবস্থায় চিন্তা-ভাবনা করবে ফিরিয়ে নেয়া যায় কিনা। যদি ফিরিয়ে না নেয় তারপর অনুরূপ দ্বিতীয় তালাক দেয়ার পর স্বামী চিন্তা ভাবনা করার এবং ত্বরান্বিত ও রাগান্বিত অবস্থায় কৃতকর্ম সম্বন্ধে পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ পাবে। আর এ হিকমত এক মজলিসে তিন তালাককে এক তালাক গণ্য করার মধ্যেও বিদ্যমান থাকে। একই সময়ে দেয়া তিন তালাককে কার্যকরী করে দিলে চিন্তা-ভাবনা করার এবং ভুল সংশোধনের সুযোগ দেয়া থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং হিকমাতও অবশিষ্ট থাকে না।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন- হয় তালাক প্রত্যাহার করে নিয়ে তার সাথে ভালভাবে সাংসারিক জীবন-যাপন করবে অথবা তৃতীয়বার তালাক দিয়ে সুন্দরভাবে বিদায় করে দেবে।
অতঃপর খোলা তালাকের কথা বলা হচ্ছে- খোলা তালাক হল স্ত্রী স্বামী থেকে পৃথক হতে চাইলে স্ত্রী তার স্বামী কর্তৃক প্রদত্ত মোহরানা ফিরিয়ে দেবে। তবে তা অবশ্যই শরীয়তসম্মত কোন কারণ থাকতে হবে। যেমন স্বামী সালাত আদায় করে না, স্ত্রীকে বেপর্দা হয়ে চলতে বাধ্য করে ইত্যাদি। এমতাবস্থায় স্বামী যদি স্ত্রীকে পৃথক করে দিতে না চায়, তাহলে আদালত স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করবে। যদি তালাক না দেয় তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদ করে দেবে। অর্থাৎ খোলা তালাকের মাধ্যমে হতে পারে বা বিবাহ বিচ্ছেদ করার মাধ্যমেও হতে পারে। উভয় অবস্থায় ইদ্দত হল এক মাস। (তিরমিযী হা: ১১৮৫, আবূ দাঊদ হা: ২২৩৯, সহীহ)
মহিলাকে এ অধিকার দেয়ার সাথে সাথে এ কথার ওপর শক্ত তাকীদ দেয়া হয়েছে যে, কোন উপযুক্ত কারণ ছাড়া সে যেন তার স্বামীর কাছে তালাক কামনা না করে। যদি সে রকম হয় তাহলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلاَقًا فِي غَيْرِ مَا بَأْسٍ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْجَنَّةِ
যে মহিলা তার স্বামীর কাছে কোন সমস্যা ছাড়া তালাক চাইবে তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধি পর্যন্ত হারাম। (তিরমিযী হা: ১১৮৭, আবূ দাঊদ হা: ২২২৬, সহীহ)
তারপর ২৩০ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তৃতীয় তালাকের আলোচনা করেছেন। তৃতীয় তালাক দেয়ার পর স্বামী স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না, আর পুনরায় বিবাহও করতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, স্ত্রী যদি অন্য কোন পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, সে পুরুষ স্বেচ্ছায় তাকে তালাক দেয় অথবা স্বামী মারা যায় আর মহিলা যদি প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে যেতে চায় তাহলে ঐ প্রথম স্বামী বিবাহ করতে পারবে।
কিন্তু আমাদের দেশে তথাকথিত এক বৈঠকে তিন তালাককে তিন তালাক গণ্য করতঃ হারাম কৌশলের (হিল্লা পদ্ধতির) আশ্রয় গ্রহণ করে প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ করে দেয়ার অপচেষ্টা চালায়। এ প্রথা সম্পূর্ণ হারাম। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّي اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُحَلَّ والمُحَلَلَ لَهُ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লা‘নত করেছেন হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয় ব্যক্তিকে। (তিরমিযী হা: ৮৯৩-৯৪, মিশকাত হা: ৩২৯৬-৯৭, সহীহ)
এ পরিকল্পিত অবৈধ বিবাহের মাধ্যমে মহিলা প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হবে না। এসব আল্লাহ তা‘আলার নির্ধারিত সীমারেখা; অতএব কেউ যেন সীমালঙ্ঘন না করে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. এক শব্দে বা এক বৈঠকে তিন তালাক দেয়া বিদআত, যা বৈধ নয়।
২. এক বৈঠকে তিন তালাক দিলে এক তালাক বলে গণ্য হবে।
৩. তিন তুহুরে অর্থাৎ তিন পবিত্রাবস্থায় সঠিকভাবে তিন তালাক দিলে স্ত্রী স্বামীর জন্য হারাম।
৪. খোলা তালাক শরীয়তসম্মত। তবে তা ন্যায়সঙ্গত কারণে হতে হবে।
৫. হিল্লা বিবাহ হারাম, যে করে এবং যার জন্য করা হয় উভয়ে অভিশপ্ত।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings