Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 223
Saheeh International
Your wives are a place of sowing of seed for you, so come to your place of cultivation however you wish and put forth [righteousness] for yourselves. And fear Allah and know that you will meet Him. And give good tidings to the believers.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২২২ ও ২২৩ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, ইয়াহূদীরা ঋতুবতী স্ত্রীলোকদেরকে তাদের সাথে খেতে দিত না এবং তাদের পার্শ্বে রাখত না। সাহাবীগণ এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, স্ত্রীদের সাথে সহবাস ছাড়া সবকিছু করতে পার। (সহীহ মুসলিম হা: ৩০২)
ইকরিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন এক স্ত্রী থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি তাঁর ঋতুবর্তী স্ত্রীর সাথে থাকতে চাইতেন তাহলে স্ত্রীর নিম্নার্ধে ভাল ভাবে কাপড় বেঁধে নিতেন। (আবূ দাঊদ হা: ২৭২, সহীহ)
আয়িশাহ (রাঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তাঁর মাথা ধৌত করে দিতে বললেন- আমি তার মাথা ধৌত করে দিলাম তখন আমি ঋতুবতী ছিলাম এবং আমার ঋতুকালীন অবস্থায় তিনি আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে কুরআন তেলাওয়াত করতেন। (সহীহ বুখারী হা: ২৯৫, ২৯৭)
মেয়েদের ঋতুস্রাব তিন প্রকার:
১. হায়িয: মেয়েরা সাবালিকা হলে তাদের জরায়ু হতে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট কয়েকদিন স্বাভাবিকভাবে যে রক্তস্রাব হয় তাকে হায়িয বলে। এর নিম্ন সময় ও উর্ধ্ব সময় সহীহ হাদীসে নির্দিষ্ট করে উল্লেখ নেই। তবে অধিকাংশদের ছয় বা সাত দিন হয়ে থাকে।
২. নিফাস: সন্তান প্রসবের পর যে রক্তস্রাব হয় তাকে নিফাস বলে। এর নিম্ন কোন সময় নেই তবে ঊর্ধ্ব সময় হলো ৪০দিন। (ফিকহুস সুন্নাহ ১/১১২ -১১৩)
হায়িয ও নিফাস চলাকালীন সময় সালাত পড়া যাবে না এবং তা পরে আদায়ও করতে হবে না। রোযা রাখা যাবে না, তবে পবিত্র হয়ে আদায় করতে হবে। কাবায় তাওয়াফ করা যাবে না। মাসজিদে অবস্থান করা যাবে না। কুরআন মাজিদ গিলাফ ছাড়া স্পর্শ করা যাবে না। স্বামী-স্ত্রীর সহবাস করা যাবে না।
৩. ইস্তিহাযা: হায়িয ও নিফাস এর নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও যে রক্তস্রাব হতে থাকে তাকে ইস্তিহাযা বলা হয়। এমন অবস্থায় প্রতি ওয়াক্তে গুপ্তাঙ্গ ধৌত করে নতুনভাবে ওযূ করে সালাত আদায় করবে এবং রোযাও রাখবে। স্বামী-স্ত্রী সহবাসও করতে পারবে।
(قُلْ هُوَ أَذًي)
‘তুমি বল, তা কষ্টদায়ক’অর্থাৎ ঋতুস্রাব মহিলাদের জন্য কষ্টদায়ক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: এটা আল্লাহ তা‘আলা আদম (আঃ)-এর কন্যাদের ওপর আবশ্যক করে দিয়েছেন। (সুনান ইবনু মাযাহ হা: ৬৩৭ হাসান)
(فَاِذَا تَطَھَّرْنَ)
‘পবিত্র হওয়ার’দু’টি অর্থ হতে পারে: ১. রক্ত আসা বন্ধ হয়ে গেছে কিন্তু গোসল করেনি। কারো কারো মতে এ অবস্থায় সহবাস জায়েয তবে সঠিক কথা হল নাজায়েয।
হাফিজ ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: এ ব্যাপারে আলেমগণ এক মত পোষণ করেছেন যে, ঋতুর রক্ত আসা বন্ধ হওয়ার পর গোসলের পূর্বে সহবাস করা বৈধ হবে না। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১/৫৬৫)
২. গোসল করার পর পবিত্র হওয়া।
(مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللّٰهُ)
‘আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায়’অর্থাৎ যোনি পথে। কারণ মাসিক অবস্থায় এ যোনি পথই ব্যবহার করা নিষেধ করা হয়েছে। তাই পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
لَا يَنْظُرُ اللّٰهُ إِلَي رَجُلٍ جَامَعَ اِمْرَأَتَهُ فِيْ دُبُرِهَا
আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির দিকে দয়ার দৃষ্টিতে তাকাবেন না, যে কুকর্ম করার জন্য কোন পুরুষের কাছে যায় বা স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার করে। (তিরমিযী হা: ১১৬৫, নাসাঈ হা: ৯০১১, সহীহ)
আল্লাহ তা‘আলা তাওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন।
(نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ)
শানে নুযূল:
জাবের (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ইয়াহূদীরা বলত- যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে পিছন দিক থেকে সহবাস করে তাহলে সন্তান টেরা হবে। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫২৮, সহীহ মুসলিম হা: ১৪৩৫)
অন্য বর্ণনায় ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: একদা উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কিসে তোমাকে ধ্বংস করল? তিনি বলেন, রাতে আমি আমার সোয়ারী উল্টা করেছি অর্থাৎ পিছন দিক থেকে সহবাস করেছি। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (তিরমিযী হা: ২৯৮০, হাসান)
(اَنّٰی شِئْتُمْ) ‘যেভাবে ইচ্ছা’অর্থাৎ যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে স্ত্রীদের সাথে দৈহিক মিলন কর। কোন বিধি-নিষেধ নেই তবে শর্ত হল পথ একটাই হবে আর তা হল যোনিপথ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
مُقْبِلَةً وَمُدْبِرَةً إِذَا كَانَ ذَلِكَ فِي الْفَرْجِ. وفي رواية: إِذَا كَانَ ذَلِكَ فِي صِمَامٍ وَاحِدٍ
সামনের দিক থেকে সহবাস কর বা পিছন দিক থেকে সহবাস কর তবে যোনিপথে হতে হবে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, যখন স্থান হবে একটিই। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর, ইমাম হাকেম সহীহ বলেছেন ২/১৯৫)
এছাড়াও অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে যেখানে স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার করা হারাম করা হয়েছে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মাসিক বা ঋতু অবস্থায় স্ত্রী সহবাস হারাম।
২. মাসিক বা ঋতু থেকে মুক্ত হয়ে গোসল না করা পর্যন্ত স্ত্রী সহবাস নিষেধ।
৩. স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার হারাম।
৪. সর্বদা সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করা আবশ্যক।
৫. সকলকে আল্লাহ তা‘আলার কাছে ফিরে যেতে হবে।
৬. আল্লাহ তা‘আলা “ভালবাসেন’’- এ গুণের প্রমাণ পেলাম।
৭. হায়িয, নিফাস ও ইস্তিহাযা অবস্থায় কঅ করণীয় তা জানতে পেলাম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings