Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 191
Saheeh International
And kill them wherever you overtake them and expel them from wherever they have expelled you, and fitnah is worse than killing. And do not fight them at al-Masjid al- Haram until they fight you there. But if they fight you, then kill them. Such is the recompense of the disbelievers.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৯০ থেকে ১৯৩ নং আয়াতের তাফসীর:
১৯০ নং আয়াতের বিষয়ে দু’টি মতামত পাওয়া যায়। যেমন:
১. আয়াতটি সূরা তাওবার
(وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِينَ كَآفَّةً)
(তোমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ কর) আয়াত দ্বারা রহিত হয়ে গেছে।
২. আয়াতটি রহিত হয়নি। (নাসেখ মানসূখ, ইবনুল আরাবী পৃঃ ৩৯)
হাফিয ইবনে কাসীর (রহঃ) বলেন: রহিত হবার কথা গ্রহণযোগ্য নয়। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর) আবুল আলিয়া (রহঃ) বলেন: মদীনায় অবতীর্ণ এটাই সর্বপ্রথম যুদ্ধের আয়াত। এ আয়াত নাযিল হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন যারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। আর যারা যুদ্ধ করেনি সূরা তাওবাহ অবতীর্ণ হওয়া পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেননি।
وَلَا تَعْتَدُوْا ‘বাড়াবাড়ি কর না’- দু’ভাবে এর অর্থ হতে পারে:
১. যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে না তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর না।
২. মহিলা, বাচ্চা, পাদরী বা গীর্জার লোকেদের হত্যা কর না, অনুরূপ গাছ-পালা বা ফসলাদি জ্বালিয়ে দেয়া এবং কোন অভীষ্ট লাভ ছাড়াই পশু-হত্যা করা ইত্যাদিও বাড়াবাড়ি বলে গণ্য হবে।
জালাল উদ্দীন সুয়ূতী (রহঃ) প্রথম অর্থকে বেশি মজবুত মনে করেছেন। (নাসেখ মানুসখ, পৃঃ ৩৯)
তবে অধিকাংশ মুফাস্সিরগণ দ্বিতীয় অর্থ সমর্থন করেছেন। কারণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ তা‘আলার পথে যুদ্ধ করবে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না, চুক্তি ভঙ্গ করবে না, নাক-কান ইত্যাদি অঙ্গহানী করবে না, শিশু ও সংসার বিরাগীদেরকে হত্যা করবে না যারা উপাসনা গৃহে পড়ে থাকে। (মুসনাদ আহমাদ হা: ২৬১৩)
আল্লাহ তা‘আলা সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালবাসেন না। মুশরিকদের মধ্যে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদেরকে যেখানেই পাবে সেখানেই হত্যা কর এবং তোমাদেরকে যারা মক্কা থেকে বের করে দিয়েছে তাদেরকেও মক্কা থেকে বের করে দাও। কারণ জমিনে কুফরী, শির্ক করা ও ইসলাম থেকে বাধা দেয়া ইত্যাদি বিপর্যয় সৃষ্টি করা তাদেরকে হত্যা করার চেয়ে জঘণ্যতম অপরাধ।
কুরআনে فتنة শব্দটি কয়েকটি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন-
ফেতনা অর্থ শির্ক: মহান আল্লাহ বলেন:
(وَالْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ)
“আর হত্যা অপেক্ষা ফেত্না-ফাসাদ (শির্ক) গুরুতর অপরাধ।”(সূরা বাকারাহ ২:১৯১)
ফেতনা অর্থ বিভ্রান্ত করা: আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَاَمَّا الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِھِمْ زَیْغٌ فَیَتَّبِعُوْنَ مَا تَشَابَھَ مِنْھُ ابْتِغَا۬ئَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَا۬ئَ تَاْوِیْلِھ۪)
“সুতরাং যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে তারা ফেতনা (বিভ্রান্ত করার জন্য) এবং ব্যাখ্যা তালাশের উদ্দেশ্যে মুতাশাবিহাতের অনুসরণ করে।”(সূরা আলি ইমরান ৩:৭)
ফেতনা অর্থ হত্যা করা:
(أَنْ يَفْتِنَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا)
“যদি তোমাদের আশঙ্কা হয়, কাফিররা তোমাদের জন্য ফেতনা সৃষ্টি (হত্যা) করবে।”(সূরা নিসা ৪:১০১) অর্থাৎ হত্যা করবে। এছাড়াও ফেতনা শব্দটি বাধা দেয়া, পথভ্রষ্ট করা, গুনাহ, পরীক্ষা ও শাস্তি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
মাসজিদে হারামের নিকট যুদ্ধ-বিগ্রহ করা নিষেধ। কিন্তু যদি কাফির-মুশরিকগণ যুদ্ধ শুরু করে তাহলে প্রতিরোধ ও প্রতিশোধ নেয়ার জন্য যুদ্ধ করা যাবে। (তাফসীরে সাদী পৃঃ ৭৩)
যদি তারা যুদ্ধ বর্জন করতঃ ইসলামে প্রবেশ করে তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের অপরাধ ক্ষমা করে দেবেন।
১৯৩ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদেরকে মুশরিক ও সীমালঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে সর্বদা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে বলেছেন। যতক্ষণ না পৃথিবী থেকে শির্ক দূরীভূত হয়ে তাওহীদের দীন-ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয় যেখানে আল্লাহ তা‘আলার সাথে অন্য কারো ইবাদত করা হবে না।
যারা কুফরী ও সীমালঙ্ঘনের ওপর বহাল থাকবে কেবল তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চলবে। তবে জিহাদের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করা যাবে না। যেমন ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত: তাঁর কাছে দু’ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়ের (রাঃ)-এর যুগে সৃষ্ট ফেতনার সময় আগমন করল এবং বলল, লোকেরা সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আর আপনি উমার (রাঃ)-এর পুত্র নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী! কী কারণে আপনি বের হন না? তিনি উত্তর দিলেন: আমাকে নিষেধ করেছে এ কথা- ‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা আমার ভাইয়ের রক্ত হারাম করেছেন। তারা দু’জন বললেন, আল্লাহ তা‘আলা কি এ কথা বলেননি যে, তোমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ কর যতক্ষণ না ফেতনার অবসান ঘটে। তখন ইবনু উমার (রাঃ) বললেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি যতক্ষণ না ফেতনার অবসান ঘটেছে এবং দীনও আল্লাহ তা‘আলার জন্য হয়ে গেছে। আর তোমরা যুদ্ধ করার ইচ্ছা করছ ফেতনা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং যেন আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্যের জন্য দীন হয়ে যায়। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫১৩)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. যারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা মুসলিমদের ওয়াজিব।
২. শত্র“দের পক্ষে মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধদেরকে হত্যা করা যাবে না। তবে যদি তারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তাহলে হত্যা করা যাবে।
৩. মাসজিদে হারামে যুদ্ধ-বিগ্রহ করা হারাম, তবে শত্র“রা শুরু করলে তাদেরকে দমন করার জন্য করা যাবে।
৪. আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের ভালবাসেন না।
৫. গাফুর ও রাহীম- এ দু’টি আল্লাহ তা‘আলার সুন্দর নাম ও পবিত্র গুণ।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings