Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 185
Saheeh International
The month of Ramadhan [is that] in which was revealed the Qur'an, a guidance for the people and clear proofs of guidance and criterion. So whoever sights [the new moon of] the month, let him fast it; and whoever is ill or on a journey - then an equal number of other days. Allah intends for you ease and does not intend for you hardship and [wants] for you to complete the period and to glorify Allah for that [to] which He has guided you; and perhaps you will be grateful.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
এখানে রমযান মাসের সম্মান ও মর্যাদার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, এই পবিত্র মাসেই কুরআন কারীম অবতীর্ণ হয়েছে। মুসনাদ-ই-আহমাদের মধ্যে হাদীস রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর সহীফা রমযানের প্রথম রাত্রে, তাওরাত’ ৬ তারিখে, ইঞ্জীল' ১৩ তারিখে এবং কুরআন কারীম ২৪ তারিখে অবতীর্ণ হয়। অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, যাবুর ১২ তারিখে এবং ইঞ্জীল’ ১৮ তারিখে অবতীর্ণ হয়। পূর্বে সমস্ত ‘সহীফা এবং তাওরাত, ইঞ্জীল’ ও ‘যাবুর' যে যে নবীর উপর অবতীর্ণ হয়েছিল, একবারই অবতীর্ণ হয়েছিল। কিন্তু কুরআন কারীম’ বায়তুল ইযাহ’ হতে দুনিয়ার আকাশ পর্যন্ত তো একবারই অবতীর্ণ হয়। অতঃপর মাঝে মাঝে প্রয়োজন হিসেবে পৃথিবীর বুকে অবতীর্ণ হতে থাকে। আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃ এবং (আরবি) এবং ভাবার্থ এটাই। অর্থাৎ কুরআন কারীমকে একই সাথে প্রথম আকাশের উপরে রমযান মাসের কদরের রাত্রে অবতীর্ণ করা হয় এবং ঐ রাতকে (আরবি) অর্থাৎ বরকতময় রাতও বলা হয়।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) প্রমুখ মনীষী হতে এটাই বর্ণিত আছে। যখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) জিজ্ঞাসিত হন যে, কুরআন মাজীদ তো বিভিন্ন বছর অবতীর্ণ হয়েছে, তাহলে রমযান মাসে ও কদরের রাত্রে অবতীর্ণ হওয়ার ভাবার্থ কি: তখন তিনি উত্তরে এই ভাবার্থই বর্ণনা করেন (তাফসীর-ই-ইবনে মিরদুওয়াই। প্রভৃতি)। তিনি এটাও বর্ণনা করেন যে, অর্ধ রমযানে কুরআনে কারীম দুনিয়ার আকাশে অবতীর্ণ হয় এবং বায়তুল ইয্যায়’ রাখা হয়। অতঃপর প্রয়োজন মত ঘটনাবলী ও প্রশ্নাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে অল্প অল্প করে অবতীর্ণ হতে থাকে এবং বিশ বছরে পূর্ণ হয়। অনেকগুলো আয়াত কাফিরদের কথার উত্তরেও অবতীর্ণ হয়। তাদের একটা প্রতিবাদ এও ছিল যে, কুরআন কারীম সম্পূর্ণটা একই সাথে অবতীর্ণ হয় না কেন: ওরই উত্তরে বলা হয় (আরবি) অর্থাৎ ‘যেন আমি এর দ্বারা তোমার অন্তরকে দৃঢ় রাখি এবং ওটা আমি স্পষ্ট করে বর্ণনা করেছি।' (২৫:৩২)
অতঃপর কুরআন মাজীদের প্রশংসায় বলা হচ্ছে যে, এটা বিশ্ব মানবের জন্যে পথ প্রদর্শক এবং এতে প্রকাশ্য ও উজ্জ্বল নিদর্শনাবলী রয়েছে। ভাবুক ও চিন্তাশীল ব্যক্তিরা এর মাধ্যমে সঠিক পথে পৌছতে পারেন। এটা সত্য ও মিথ্যা, হারাম ও হালালের মধ্যে প্রভেদ সৃষ্টিকারী। সুপথ ও কুপথ এবং ভাল ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য আনয়নকারী। পূর্ববর্তী কোন একজন মনীষী হতে বর্ণিত আছে যে, শুধু রমযান বলা মাকরূহ, (আরবি) অর্থাৎ রমযানের মাস বলা উচিত। হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেছেনঃ “তোমরা রমযান' বলো না। এটা আল্লাহ তাআলার নাম। তোমরা (আরবি) অর্থাৎ রমযানের মাস’ বলতে থাকো।' হযরত মুজাহিদ (রঃ) এবং হযরত মুহাম্মদ বিন কা'ব (রঃ) হতেও এটা বর্ণিত আছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এবং হযরত যায়েদ বিন সাবিতের (রঃ) মাহযাব এর উল্টো। রামযান’ না বলা সম্বন্ধে একটি মার’ হাদীসও রয়েছে। কিন্তু সনদ হিসেবে এটা একেবারেই ভিত্তিহীন।
ইমাম বুখারীও (রঃ) এর খণ্ডনে ‘অধ্যায় রচনা করে বহু হাদীস বর্ণনা করেছেন। একটিতে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি বিশ্বাস রেখে ও সৎ নিয়্যাতে রমযানের রোযা রাখে তার পূর্বের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেয়া হয়। মোট কথা। এই আয়াত দ্বারা সাব্যস্ত হচ্ছে যে, রমযানের চন্দ্র উদয়ের সময় যে ব্যক্তি বাড়ীতে অবস্থান করবে, মুসাফির হবে না এবং সুস্থ ও সবল থাকবে, তাকে বাধ্যতামূলকভাবেই রোযা রাখতে হবে। পূর্বে এদের জন্যে রোযা ছেড়ে দেয়ার অনুমতি ছিল; কিন্তু এখন আর অনুমতি রইল না। এটা বর্ণনা করার পর আল্লাহ তা'আলা রুগ্ন ও মুসাফিরের জন্যে রোযা ছেড়ে দেয়ার অনুমতির কথা বর্ণনা করেন। এদের জন্যে বলা হচ্ছে যে, এরা এই সময় রোযা রাখবে না এবং পরে আদায় করে নেবে। অর্থাৎ যে ব্যক্তির শরীরে কোন কষ্ট রয়েছে যার ফলে তার পক্ষে রোযা রাখা কষ্টকর হচ্ছে কিংবা সফরে রয়েছে সে রোযা ছেড়ে দেবে এবং এভাবে যে কয়টি রোযা ছুটে যাবে তা পরে আদায় করে নেবে। অতঃপর ইরশাদ হচ্ছে যে, এরূপ অবস্থায় রোযা ছেড়ে দেয়ার অনুমতি দিয়ে আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দাদের প্রতি বড়ই করুণা প্রদর্শন করেছেন এবং ইসলামের নির্দেশাবলী সহজ করে দিয়ে তাঁর বান্দাদেরকে কষ্ট হতে রক্ষা করেছেন।
এখানে এই আয়াতের সাথে সম্পর্ক যুক্ত গুটি কয়েক জিজ্ঞাস্য বিষয়ের বর্ণনা। দেয়া হচ্ছেঃ (১) পূর্ববর্তী মনীষীগণের একটি দলের ধারণা এই যে, কোন লোক। বাড়ীতে অবস্থানরত অবস্থায় রমযানের চাঁদ উদয়ের ফলে রমযানের মাস এসে পড়ে অতঃপর মাসের মধ্যেই তাকে সফরে যেতে হয় এই সফরে রোযা ছেড়ে দেয়া তার জন্যে জায়েয নয়। কেননা এরূপ লোকদের জন্যে রোযা রাখার পরিষ্কার নির্দেশ কুরআন পাকের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। হাঁ, তবে ঐ লোকদের সফরের অবস্থায় রোযা ছেড়ে দেয়া জায়েয, যারা সফরে রয়েছে এমতাবস্থায় রমযান মাস এসে পড়েছে। কিন্তু এই উক্তিটি অসহায়। আবু মুহাম্মদ বিন হাযাম স্বীয় পুস্তক মুহাল্লীর মধ্যে সাহাবা (রাঃ) এবং তাবেঈগণের (রঃ) একটি দলের এই মাযহাবই নকল করেছেন। কিন্তু এতে সমালোচনা রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) রমযানুল মুবারক মাসে মক্কা বিজয় অভিযানে রোযার অবস্থায় রওয়ানা হন। কাদীদ’ নামক স্থানে পৌছে রোযা ছেড়ে দেন এবং সাহাবীগণকেও রোযা ভেঙ্গে দেয়ার নির্দেশ দেন (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)।
(২) সাহাবী (রাঃ) এবং তাবেঈগণের একটি দল বলেছেন যে, সফরের অবস্থায় রোযা ভেঙ্গে দেয়া ওয়াজিব। কেননা, কুরআন কারীমের মধ্যে রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ তার জন্যে অপর দিন হতে গণনা করবে। কিন্তু সঠিক উক্তি হচ্ছে জমহূরের মাযহাব। তা হচ্ছে এই যে, তার জন্যে স্বাধীনতা রয়েছে, সে রাখতেও পারে, নাও রাখতে পারে। কেননা, রমযান মাসে সাহাবীগণ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে সফরে বের হতেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ রোযা রাখতেন আবার কেউ কেউ রাখতেন না। এমতাবস্থায় রোযাদারগণ বে-রোযাদারগণের উপর এবং বে-রোযাদারগণ রোযাদারগণের উপর কোনরূপ দোষারোপ করতেন না। সুতরাং যদি রোযা ছেড়ে দেয়া ওয়াজিব হতো তবে রোযাদারগণকে অবশ্যই রোযা রাখতে নিষেধ করা হতো। এমনকি স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সফরের অবস্থায় রোযা রাখা সাব্যস্ত আছে। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের মধ্যে রয়েছে, হযরত আবু দারদা (রাঃ) বর্ণনা করেনঃ রমযানুল মুবারক মাসে কঠিন গরমের দিনে আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে এক সফরে ছিলাম। কঠিন গরমের কারণে আমরা মাথায় হাত রেখে রেখে চলছিলাম। আমাদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও হযরত আবদুল্লাহ বিন রাওয়াহা (রাঃ) ছাড়া আর কেউই রোযাদার ছিলেন না।
(৩) ইমাম শাফিঈ (রঃ) সহ আলেমগণের একটি দলের ধারণা এই যে, সফরে রোযা না রাখা অপেক্ষা রোযা রাখাই উত্তম। কেননা, সফরের অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর রোযা রাখা সাব্যস্ত আছে। অন্য একটি দলের ধারণা এই যে, রোযা না রাখাই উত্তম। কেননা, এর দ্বারা রুখসাতের’ (অবকাশের) উপর আমল করা হয়। অন্য একটি হাদীসে রয়েছে যে, সফরে রোযা রাখা সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ (সঃ) জিজ্ঞাসিত হলে তিনি বলেনঃ “যে ব্যক্তি রোযা ভেঙ্গে দেয় সে উত্তম কাজ করে এবং যে ভেঙ্গে দেয় না তার উপরে কোন পাপ নেই। অন্য একটি হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা তোমাদের যে অবকাশ দিয়েছেন তা তোমরা গ্রহণ কর।
তৃতীয় দলের উক্তি এই যে, রোযা রাখা ও না রাখা দুটোই সমান। তাঁদের দলীল হচ্ছে হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত নিম্নের এই হাদীসটিঃ হযরত হামযা বিন আমর আসলামী (রাঃ) বলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি প্রায়ই রোযা রেখে থাকি। সুতরাং সফরেও কি আমার রোযা রাখার অনুমতি রয়েছে:' রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, ইচ্ছে হলে রাখো, না হলে ছেড়ে দাও (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)।' কোন কোন লোকের উক্তি এই যে, যদি রোযা রাখা কঠিন হয় তবে ছেড়ে দেয়াই উত্তম। হযরত জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) একটি লোককে দেখেন যে, তাকে ছায়া করা হয়েছে। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ ব্যাপার কি: জনগণ বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! লোকটি রোযাদার। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন বলেনঃ সফরে রোযা রাখা পুণ্য কাজ নয় (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)। এটা স্মরণীয় বিষয় যে, যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সুন্নাত হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে সফরের অবস্থাতেও রোযা। ছেড়ে দেয়া মাকরূহ মনে করে, তার জন্যে রোযা ছেড়ে দেয়া জরুরী এবং রোযা রাখা হারাম। মুসনাদ-ই-আহমাদ ইত্যাদির মধ্যে হযরত ইবনে উমার (রাঃ), হযরত জাবির (রাঃ) প্রভৃতি মনীষী হতে বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা'আলার অবকাশকে গ্রহণ করে না, আরাফাতের পর্বত সমান তার পাপ হবে।
(৪) চতুর্থ জিজ্ঞাস্য হলোঃ কাযা রোযাসমূহ ক্রমাগত রাখাই কি জরুরী না পৃথক পৃথকভাবে রাখলেও কোন দোষ নেই: কতকগুলো লোকের মাযহাব এই যে, কাযা রোযাকে হালী’ রোযার মতই পুরো করতে হবে। একের পরে এক এভাবে ক্রমাগত রোযা রেখে যেতে হবে। অন্য মাযহাব এই যে, ক্রমাগত রোযা রাখা ওয়াজিব নয়। এক সাথেও রাখতে পারে আবার পৃথক পৃথকভাবে অর্থাৎ মাঝে মাঝে ছেড়ে ছেড়েও রাখতে পারে। পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মনীষীদেরও এই উক্তিই রয়েছে এবং দলীল প্রমাণাদি দ্বারা এটাই সাব্যস্ত হচ্ছে। রমযান মাসে ক্রমাগতভাবে এজন্যেই (রোযা) রাখতে হয় যে, ওটা সম্পূর্ণ রোযারই মাস। আর রমযানের মাস শেষ হওয়ার পর ওটা শুধুমাত্র গণনা করে পুরো করতে হয়। তা যে কোন দিনেই হতে পারে। এ জন্যেই তো কাযার নির্দেশের পরে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের যে সহজ পন্থা বাতলিয়েছেন, তার এই নিয়ামতের বর্ণনা দিয়েছেন। মুসনাদ-ই-আহমাদের মধ্যে একটি হাদীসে রয়েছে হযরত আবু উরওয়া (রাঃ) বলেনঃ “একদা আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর জন্যে অপেক্ষা করছিলাম এমন সময়ে তিনি আগমন করেন এবং তার মাথা হতে পানির ফোটা টপটপ করে পড়ছিল। মনে হচ্ছিল যে, সবে মাত্র তিনি অযু বা গোসল করে আসলেন। নামায সমাপনান্তে জনগণ তাকে জিজ্ঞেস করতে আরম্ভ করেঃ হুজুর (সঃ)! অমুক কাজে কোন ক্ষতি আছে কি এবং অমুক কাজে কোন ক্ষতি আছে কি: অবশেষে তিনি বলেনঃ 'আল্লাহর দ্বীন সহজের মধ্যেই রয়েছে। এটাই তিনবার বলেন।
‘মুসনাদ-ই-আহমাদ’ এরই আর একটি হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ তোমরা সহজ কর,কঠিন করো না এবং সান্ত্বনা দান কর, ঘৃণার উদ্রেক করো না।' সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম শরীফের হাদীসেও রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত মুআয (রাঃ) ও হযরত আবু মূসাকে (রাঃ) ইয়ামন পাঠাবার সময় বলেনঃ “তোমরা (জনগণকে) সুসংবাদ প্রদান করবে, ঘৃণা করবে, পরস্পর এক মতের উপর থাকবে, মতভেদ সৃষ্টি করবে না।' সুনান ও মুসনাদ সমূহে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমি সুদৃঢ় এবং নরম ও সহজ বিশিষ্ট ধর্ম নিয়ে প্রেরিত হয়েছি।' হযরত মুহজিন বিন আদরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এক ব্যক্তিকে নামাযের অবস্থায় দেখেন। তিনি তাকে কিছুক্ষণ ধরে চিন্তা যুক্ত দৃষ্টির সাথে লক্ষ্য করতে থাকেন। অতঃপর তিনি বলেনঃ “তুমি কি মনে কর যে, সে সত্য অন্তঃকরণ নিয়ে নামায পড়ছে: বর্ণনাকারী বলেন ‘আমি বলিঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! সমস্ত মদীনাবাসী অপেক্ষা সে বেশী নামাযী।' তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ তাকে শুনায়োনা, না জানি এটা তার ধ্বংসের কারণ হয়ে যায়। তারপরে তিনি বলেনঃ “নিশ্চয়। আল্লাহ তা'আলা এই উম্মতের উপর সহজের ইচ্ছা করেছেন, তিনি তাদের উপর কঠিনের ইচ্ছে করেননি। সুতরাং আয়াতটির ভাবার্থ হচ্ছে এই যে, রুগ্ন, মুসাফির প্রভৃতিকে অবকাশ দেয়া এবং তাদেরকে অপারগ মনে করার কারণ এই যে, আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা তাঁর বান্দাদের প্রতি ওটাই যা তাদের জন্যে সহজ সাধ্য এবং তাদের পক্ষে যা দুঃসাধ্য তার ইচ্ছা আল্লাহ তা'আলা পোষণ করেন না। আর কাযার নির্দেশ হচ্ছে গণনা পুরো করার জন্যে। সুতরাং তাঁর এই দয়া, নিয়ামত এবং সুপথ প্রদর্শনের জন্যে মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করা তাঁর বান্দাদের উচিত। যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ তা'আলা হজ্বব্রত সম্পর্কে বলেছেনঃ (আরবি) অর্থাৎ ‘যখন তোমরা হজ্বের নির্দেশাবলী পুরো করে ফেললা তখন তোমরা আল্লাহর যিক্র করতে থাকো।' (২:২০০)
অন্য জায়গায় তিনি জুম'আর নামাযের সম্বন্ধে বলেছেনঃ “যখন নামায পুরো হয়ে যায় তখন তোমরা ভূ-পৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড় ও খাদ্য অনুসন্ধান কর এবং খুব বেশী করে আল্লাহর যিক্র করতে থাকো; যেন তোমরা মুক্তি পেয়ে যাও। অন্য স্থানে রয়েছেঃ (আরবি)
অর্থাৎ ‘তুমি সূর্য উদয়ের পূর্বে এবং অস্তমিত হওয়ার পূর্বে তোমার প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা কর।' (৫০:৩৯) এ জন্যই রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর অনুসরণীয় পন্থা এই যে, প্রত্যেক ফরয নামাযের পর আল্লাহ তা'আলার হামদ, তাসবীহ এবং তাকবীর পাঠ করতে হবে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ “আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর নামাযের সমাপ্তি শুধুমাত্র তাঁর আল্লাহু আকবার' ধ্বনির মাধ্যমেই জানতে পারতাম। এই আয়াতটি এই বিষয়ের দলীল যে, ঈদুল ফিরেও তাকবীর পাঠ করা উচিত।
দাউদ বিন আলী ইসবাহানী যাহেরীর (রঃ) মাযহাব এই যে, এই ঈদে তাকবীর পাঠ করা ওয়াজিব। কেননা, এই বিষয়ে আদেশসূচক শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন (আরবি) অর্থাৎ যেন তোমরা তাকবীর পাঠ কর।' ইমাম আবূ হানীফা (রঃ)-এর মাযহাব এর সম্পূর্ণ উল্টো। তার মাযহাব অনুসারে এই ঈদে তাকবীর পাঠ ‘মাসনূন’ নয়। অবশিষ্ট মনীষীবৃন্দ এটাকে মুসতাহাব বলে থাকেন, যদিও কোন কোন শাখার ব্যাখ্যায় তাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। অতঃপর বলা হচ্ছে যে, যেন তোমরা কৃতজ্ঞ হও। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলার নির্দেশাবলী পালন করতঃ তাঁর ফরযগুলো আদায় করে, তার নিষিদ্ধ কাজগুলো হতে বিরত থেকে এবং তার সীমারেখার হিফাযত করে তোমরা তার কৃতজ্ঞ বান্দা হয়ে যাও।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings