Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 18
Saheeh International
Deaf, dumb and blind - so they will not return [to the right path].
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৭ ও ১৮ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা পূর্বোক্ত আয়াতগুলোতে মুনাফিকদের আলামত ও বৈশিষ্ট্য আলোচনা পর এখানে তাদের ক্রিয়াকলাপকে বাস্তবতার সাথে উপমা দিচ্ছেন। এখানে আল্লাহ তা‘আলা মুনাফিকদের দু’টি দৃষ্টান্ত দিয়েছেন। প্রথমতঃ আগুনের দৃষ্টান্ত। দ্বিতীয়তঃ পানির দৃষ্টান্ত।
প্রথম দৃষ্টান্ত: তাদের অবস্থান এমন যে, কোন ব্যক্তি আগুন প্রজ্জ্বলিত করল আলো গ্রহণ ও উপকৃত হওয়ার জন্য। যাতে সে আলোর দ্বারা ইসলামে প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু তাদের অন্তরে আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমান না থাকায় সে আলো ধরে রাখতে পারে না। ফলে আগুন প্রজ্জ্বলনের কারণে যে আলো হয় আল্লাহ তা‘আলা তা নিয়ে যান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ذَھَبَ اللہُ بِنُوْرِھِمْ)
তিনি তাদের আলো নিয়ে যান। তাদেরকে অন্ধকারের মধ্যে ফেলে রাখেন।
দ্বিতীয় দৃষ্টান্ত: তাদেরকে সাদৃশ্য দিয়েছেন ঐ ব্যক্তির সাথে যে ব্যক্তিকে বৃষ্টি পেল তাতে রয়েছে অন্ধকার, বজ্রধ্বনি ও বিদ্যুৎচমক। তা থেকে বাঁচার জন্য ভয়ে কানে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে দেয় এবং চোখ বন্ধ করে ফেলে। কারণ কুরআন আদেশ, নিষেধ ও সম্বোধন নিয়ে মুনাফিকদের প্রতি বজ্রাঘাতের ন্যায় নাযিল হয়েছে। এ দৃষ্টান্ত ১৯ ও ২০ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।
ইবনু আব্বাস, ইবনু মাসউদ (রাঃ) ও আরো কয়েকজন সাহাবী থেকে বর্ণিত তারা বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় আগমনের পর কতকগুলো লোক ইসলাম গ্রহণ করে, কিন্তু পরে তারা মুনাফিক হয়ে যায়। তাদের উপমা ঐ লোকটির মত, যে অন্ধকারে রয়েছে অতঃপর আগুন জ্বালিয়ে আলো লাভ করেছে এবং আশে-পাশের ভাল-মন্দ জিনিস দেখতে পেয়েছে, আর কোন্ পথে কী আছে তা সবই জানতে পেরেছে। এমন সময় হঠাৎ আগুন নিভে যাওয়ার ফলে আলো হারিয়ে গেছে; এখন পথে কী আছে না আছে তা জানতে পারে না। ঠিক এ রকমই মুনাফিকরা শির্ক ও কুফরের অন্ধকারে ছিল। অতঃপর ঈমান এনে ভাল-মন্দ অর্থাৎ কুফর-ইসলাম ইত্যাদি চিনতে পারল। কিন্তু পুনরায় কাফির হয়ে যায়; ফলে ইসলামের হালাল-হারাম ও ভাল-মন্দের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না।
অন্য বর্ণনায় ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: এটি মুনাফিকদের দৃষ্টান্ত, তারা ইসলাম গ্রহণ করার কারণে সম্মান পেয়ে যায়। মুসলিমদের মধ্যে শামিল হয়ে উত্তরাধিকার এবং গনীমতের অংশ ইত্যাদি পেতে থাকে। কিন্তু মরণের সঙ্গে সঙ্গেই এ সম্মান হারিয়ে যায়। যেমন, আগুনের আলো নিভে গেলেই সব শেষ হয়ে যায়।
(صُمّۭ بُکْمٌ عُمْیٌ)
‘তারা বধির, বাকশক্তিহীন ও অন্ধ’এ আয়াত দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, মুনাফিকরা সত্য প্রকাশ করতে বধির, বাকশক্তিহীন ও সত্য প্রত্যক্ষ করতে অন্ধ প্রভৃতি দোষে দুষ্ট।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র তাদের বধিরতা, বাকশক্তিহীনতা ও অন্ধত্বের অর্থ বর্ণনা করেছেন। তা হল তাদের কর্ণ, অন্তর ও দৃষ্টিশক্তি দ্বারা উপকৃত না হওয়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(وَجَعَلْنَا لَھُمْ سَمْعًا وَّاَبْصَارًا وَّاَفْئِدَةًﺘ فَمَآ اَغْنٰی عَنْھُمْ سَمْعُھُمْ وَلَآ اَبْصَارُھُمْ وَلَآ اَفْئِدَتُھُمْ مِّنْ شَیْءٍ اِذْ کَانُوْا یَجْحَدُوْنَﺫ بِاٰیٰتِ اللہِ وَحَاقَ بِھِمْ مَّا کَانُوْا بِھ۪ یَسْتَھْزِءُوْنَ)
“আমি তাদেরকে কান, চোখ ও অন্তর দিয়েছিলাম: কিন্তু শোনার, দেখার ও বুঝার (এ শক্তিগুলো) তাদের কোনো কাজে আসল না। কারণ, তারা আল্লাহর আয়াতগুলোকে অস্বীকার করেছিল। যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-তামাশা করত তা-ই তাদেরকে ঘিরে ফেলল।” (সূরা আহক্বাফ ৪৬:২৬, আযওয়াউল বায়ান ১/৬৪) অতএব তাদের কান, চোখ ও হৃদয় থাকা সত্যেও উপকৃত না হতে পারায় যেন তারা বধির, বাকশক্তিহীন ও অন্ধ।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুনাফিকরা সুবিধাবাদী, স্বার্থ হাসিল করার লক্ষে যখন যাদের সাথে যেমন আচরণ করা দরকার তেমন আচরণ করে।
২. মুনাফিকরা সত্য গ্রহণে বধির, বাকশক্তিহীন ও অন্ধ।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings