Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 176
Saheeh International
That is [deserved by them] because Allah has sent down the Book in truth. And indeed, those who differ over the Book are in extreme dissension.
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
মহান আল্লাহ্র আয়াত গোপন করার জন্য ইয়াহুদীদেরকে তিরস্কার করা হয়েছে
মহান আল্লাহ বলছেনঃ انالذينيكتمون ‘যারা গোপন করে’ অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রিসালাতের প্রতি প্রমাণ বহন করে, এমন যা কিছু মহান আল্লাহ কিতাব হতে অবতীর্ণ করেছেন, তা যারা গোপন করে। তাওরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর গুণাবলী সম্পর্কিত যেসব আয়াত রয়েছে সেগুলো যেসব ইয়াহুদী তাদের কর্তৃত্ব চলে যাওয়ার ভয়ে গোপন করে এবং সাধারণ ‘আরবদের নিকট থেকে হাদিয়া ও উপঢৌকন গ্রহণ করে এই নির্দিষ্ট দুনিয়ার বিনিময়ে তাদের আখিরাতকে খারাপ করে থাকে তাদেরকে এখানে ভয় দেখানো হয়েছে। যদি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নবুওয়াতের সত্যতার আয়াতগুলো, যা তাওরাতের মধ্যে রয়েছে, জনগণের মধ্যে প্রকাশ পায় তাহলে তারা তাঁর আওতাধীনে এসে যাবে এবং তাদেরকে পরিত্যাগ করবে, এই ভয়ে তারা হিদায়াত ও মাগফিরাতকে ছেড়ে পথভ্রষ্টতা ও শাস্তির ওপরেই সন্তুষ্ট হয়ে গেছে। তাদের দুষ্ট প্রকৃতির পণ্ডিত বা জ্ঞানীরা যে আয়াতগুলো গোপন করতো সেগুলোও জনসাধারণের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়ে। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আলৌকিক ঘটনাবলী এবং তাঁর নিষ্কলুষ চরিত্র মানুষকে তাঁর নাবুওয়াতের সত্যতা স্বীকারের প্রতি আগ্রহী করে তুলে। হাত ছাড়া হয়ে যাবে এই ভয়ে যে দলটি হতে তারা মহান আল্লাহ্র কালামকে গোপন রাখতো শেষে ঐ দলটি তাদের হাত ছাড়া হয়েই যায়। ঐ দলের লোক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাতে বায়‘আাত গ্রহণ করে এবং মুসলিম হয়ে যায়। অতঃপর তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে মিলিত হয়ে ঐ সত্য গোপনকারীদের প্রাণনাশ করতে থাকে এবং নিয়মিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। মহান আল্লাহ তাদের এই গোপনীয়তার কথা কুর’আন মাজীদের বিভিন্ন জায়গায় বর্ণনা করেছেন। এখানেও বর্ণনা করেছেনঃ
﴿اُولٰٓىِٕكَ مَا یَاْكُلُوْنَ فِیْ بُطُوْنِهِمْ اِلَّا النَّارَ﴾ মহান আল্লাহ্র কথা গোপন করে তারা যে অর্থ উপার্জন করছে তা প্রকৃতপক্ষে আগুনের অঙ্গার দ্বারা তারা তাদের পেট পূর্ণ করেছে। মহান আল্লাহ বলেনঃ
﴿اِنَّ الَّذِیْنَ یَاْكُلُوْنَ اَمْوَالَ الْیَتٰمٰى ظُلْمًا اِنَّمَا یَاْكُلُوْنَ فِیْ بُطُوْنِهِمْ نَارًا وَ سَیَصْلَوْنَ سَعِیْرًا﴾
‘যারা অন্যায়ভাবে পিতৃহীনদের ধন সম্পত্তি গ্রাস করে, নিশ্চয়ই তারা স্বীয় উদরে অগ্নি ব্যতীত কিছুই ভক্ষণ করে না এবং সত্বরই তারা অগ্নি শিখায় প্রবেশ করবে।’ (৪ নং সূরা নিসা, আয়াত নং ১০)
সহীহ হাদীস রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
"الذي يأكل أو يشرب في آنية الذهب والفضة، إنما يُجَرْجرُ في بطنه نار جهنم".
‘যে ব্যক্তি সোনা-চাঁদির পাত্রে পানাহার করে সে তার পেটের মধ্যে আগুন ভরে থাকে।’ (হাদীসটি সহীহ। সহীহুল বুখারী ১০/৫৬৩৪, সহীহ মুসলিম ৩/১১৬৩৪, সুনান ইবনে মাজাহ ২/৩৪১৩, সুনান দারিমী-২/২১২৯, মুওয়াত্তা ইমাম মালিক-২/১১/৯২৪, মুসনাদে আহমাদ-৬/৩০১, ৩০২, ৩০৪, ৩০৬)
অতঃপর বলা হচ্ছেঃ ﴿وَ لَا یُكَلِّمُهُمُ اللّٰهُ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ وَ لَا یُزَكِّیْهِمْ١ۖۚ وَ لَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ﴾ কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না, বরং তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির মধ্যে জড়িত থাকবে। কেননা তাদের কৃতকর্মের কারণে মহান আল্লাহ্র ক্রোধ ও অভিশাপ তাদের ওপরে বর্ণিত হয়েছে এবং আজ তাদের ওপর হতে মহান আল্লাহ্র করুণা দৃষ্টি অপসারিত হয়েছে। তারা আজ আর প্রশংসার যোগ্য হয় নেই, বরং তারা শাস্তির যোগ্য হয়ে পড়েছে এবং তারা এর মধ্যেই জড়িত থাকবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
"ثلاثة لا يكلمهم الله، ولا ينظر إليهم ولا يزكيهم [ولهم عذاب أليم] شيخ زان، وملك كذاب، وعائل مستكبر".
‘তিন প্রকার লোকের সাথে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কথা বলবেননা, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না, আর তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। তারা হচ্ছে বয়োঃবৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক ও অহঙ্কারী ভিক্ষুক বা ফাকীর।’ (হাদীসটি সহীহ। সহীহ মুসলিম ১/১৭২/১০২, ১০৩, মুসনাদে আহমাদ ২/৪৮০) অতঃপর মহান আল্লাহ বলেনঃ
﴿اُولٰٓىِٕكَ الَّذِیْنَ اشْتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالْهُدٰى﴾ তারা সুপথের বিনিময়ে ভ্রান্ত পথকে গ্রহণ করেছে। তাদের উচিত ছিলো তাওরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)সম্বন্ধে যেসব সংবাদ রয়েছে তা অজ্ঞদের নিকট পৌঁছে দেয়া। কিন্তু তার পরিবর্তে তারা সেগুলো গোপন করেছে এবং তারা নিজেরাও তাঁকে অস্বীকার করেছে ও মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং সেগুলো প্রকাশ করলে তারা যে নি‘য়ামত ও ক্ষমা প্রাপ্তির অধিকারী হতো তার পরিবর্তে তারা কষ্ট ও শাস্তিকে গ্রহণ করে নিয়েছে।
অতঃপর মহান আল্লাহ বলেন যে, তাদেরকে এমন বেদনাদায়ক ও বিষ্ময়কর শাস্তি দেয়া হবে যা দেখে অবলোকনকারীরা হতভম্ব হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ্র কাছে আমরা এসব বেদনাদায়ক শাস্তি হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
অতঃপর ইরশাদ হচ্ছে যে, এরা মহান আল্লাহ্র কথাকে খেল-তামাশা মনে করেছে এবং মহান আল্লাহ যে কিতাব সত্য প্রকাশ করার জন্য ও অসত্য দূর করার জন্য অবতীর্ণ হয়েছিলো তারা তার বিরোধিতা করেছে, প্রকাশ করার কথাকে গোপন করেছে। মহান আল্লাহ্র নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে শত্রুতা করেছে এবং তাঁর গুণাবলী গোপন করেছে, এসব কারণেই তারা শাস্তি পাওয়ার যোগ্য হয়ে পড়েছে। আর এ জন্যই মহান আল্লাহ বলেছেনঃ
ذَلِكَ بِأَنَّ اللهَ نزلَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ وَإِنَّ الَّذِينَ اخْتَلَفُوا فِي الْكِتَابِ لَفِي شِقَاقٍ بَعِيدٍ
‘বাস্তবিকই যারা এই কিতাবের ব্যাপারে বিরোধ সৃষ্টি করেছে তারা মহান আল্লাহ্র বিরুদ্ধাচরণে বহু দূর এগিয়ে গেছে।’
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings