Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 157
Saheeh International
Those are the ones upon whom are blessings from their Lord and mercy. And it is those who are the [rightly] guided.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৫৫ ও ১৫৭ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিচ্ছেন বিভিন্ন সময় মু’মিনদেরকে বিভিন্ন বালা-মুসিবত দ্বারা পরীক্ষা করবেন। কখনো শত্র“দের ভয়, কখনো ক্ষুধা অর্থাৎ অভাব-অনটন আবার কখনো ধন-সম্পদ ধ্বংস ও প্রিয় ব্যক্তিদের মৃত্যু এবং বিভিন্ন ফল-ফসলাদী নষ্টের দ্বারা।
এটাই হল আল্লাহ তা‘আলার রীতি। কেননা সবসময় যদি মু’মিনরা সুখ-সাচ্ছন্দে থাকে তাহলে আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ থেকে গাফেল হয়েও যেতে পারে এবং নেয়ামতের মূল্যায়ন নাও করতে পারে। (وَبَشِّرِ الصّٰبِرِيْنَ) ‘‘তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান কর” অর্থাৎ যারা এসব বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করবে তাদের জন্য সুসংবাদ। বিপদের শুরুতেই ধৈর্য ধরতে হবে, পরে ধৈর্য ধরলে এ সুসংবাদ প্রাপ্তদের শামিল নাও হতে পারে। কারণ হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ধৈর্য হলো বিপদের শুরুতেই। (সহীহ বুখারী হা: ১৩০২, সহীহ মুসলিম হা: ৯২৬) সুতরাং যারা বিপদ-আপদের শুরুতেই ধৈর্য ধারণ করবে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ।
‘মুসিবত বা বিপদ’বলা হয় প্রত্যেক ঐ বিষয় যা মু’মিনকে কষ্ট দেয়, তা শারীরিক বা মানসিক অথবা উভয়টা হতে পারে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: একজন মু’মিনকে কোন কষ্ট, ব্যথা, অসুস্থতা, দুশ্চিন্তা বা উদ্বিগ্নতা ইত্যাদি আক্রান্ত করলে আল্লাহ তা‘আলা তার বিনিময়ে গুনাহ ক্ষমা করে দেন। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫৭৩) তবে সবচেয়ে বড় মুসিবত হলো দীনের জন্য বিপদাপন্ন হওয়া। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: তোমাদের কেউ মুসিবতে পতিত হলে আমার মসিবতের কথা যেন স্মরণ করে, কারণ এটা সবচেয়ে বড় মুসিবত। (সহীহুল জামে হা: ৩৪৭)
খাব্বাব ইবনু আরাত (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এমন এক সময় অভিযোগ করলাম যখন তিনি কাবা ঘরের ছায়ায় চাদরকে বালিশ বানিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম: আমাদের জন্য কি সাহায্য প্রার্থনা করবেন না, আমাদের জন্য কি দু‘আ করবেন না? তিনি বললেন, না। তোমাদের পূর্বেকার ঈমানদার লোকেদের ধরে এনে জমিনে গর্ত করে তাতে পুঁতে দেয়া হত। অতঃপর তাদের মাথা বরাবর করাত চালিয়ে দ্বিখণ্ডিত করা হত। লোহার চিরুনী দিয়ে শরীরের গোশত হাড় থেকে পৃথক করা হত। কিন্তু এ নির্মম অত্যাচারও তাদেরকে তাদের দীন থেকে বিরত করতে পারেনি। আল্লাহ তা‘আলার কসম! এ দীন পূর্ণরূপে বিজয়ী হবে। এমন একদিন আসবে যখন কোন ভ্রমণকারী নির্বিঘেœ সানআ থেকে হাযরামাউত পর্যন্ত ভ্রমণ করবে কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কাউকে ভয় করবে না। আর মেষপালের জন্য বাঘের ভয় বাকি থাকবে। কিন্তু তোমরা খুব তাড়াহুড়ো করছ। (সহীহ বুখারী হা: ৬৯৪৩)
সুতরাং যারা বিপদ-আপদে বলে-
(اِنَّا لِلہِ وَاِنَّآ اِلَیْھِ رٰجِعُوْنَ)
তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তাদের প্রতি রবের পক্ষ থেকে প্রশংসা ও রহমত। তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। হাদীসেও এসেছে যে, একজন মু’মিন বিপদে ধৈর্যহারা না হয়ে দু‘আ করবে:
إِنَّا لِلّٰهِ وَإِنَّآ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ، اللّٰهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي وَاخْلُفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا
আমরা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যই এবং তারই দিকে ফিরে যাব। হে আল্লাহ! আমার এ বিপদে সওয়াব দান করুন এবং এর পরিবর্তে উত্তম কিছু দান করুন। (সহীহ মুসলিম হা: ৯১৮)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের জানে-মালে বিপদ-আপদ দ্বারা পরীক্ষা করেন।
২. বিপদে ধৈর্য ধারণ করাই সফলতা।
৩. (إِنَّا لِلّٰهِ وَإِنَّآ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ)
বলার নিয়ম ও ফযীলত জানলাম।
৪. আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় বান্দাদের প্রতি করুণা ও দয়া করেন।
৫. পূর্ববর্তী উম্মাতের লোকেরা শত বিপদেও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings