Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 136
Saheeh International
Say, [O believers], "We have believed in Allah and what has been revealed to us and what has been revealed to Abraham and Ishmael and Isaac and Jacob and the Descendants and what was given to Moses and Jesus and what was given to the prophets from their Lord. We make no distinction between any of them, and we are Muslims [in submission] to Him."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৩৫-১৩৮ নং আয়াতের তাফসীর:
ইয়াহূদীরা মুসলিমদেরকে ইয়াহূদী ধর্মের দিকে আর খ্রিস্টানরা খ্রিস্ট-ধর্মের দিকে আহ্বান করত এবং বলত: এটাই হিদায়াতের পথ।
অত্র আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বলে দাও, মিল্লাতে ইবরাহীমের অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত হিদায়াত। তিনি ছিলেন ‘হানিফ’(একনিষ্ঠ অর্থাৎ সমস্ত মা‘বূদ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে কেবল এক উপাস্যের ইবাদতকারী) এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। অথচ ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানধর্মের মাঝে শির্কের মিশ্রণ রয়েছে।
ইমাম বুখারী (রহঃ) অত্র আয়াতের তাফসীরে এ হাদীস নিয়ে এসেছেন- আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহলে কিতাবগণ ইবরানি ভাষায় তাওরাত পড়ে মুসলিমদের জন্য আরবি ভাষায় তাফসীর করত। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
لَا تُصَدِّقُوا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلَا تُكَذِّبُوهُمْ، وَقُولُوا: آمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا
আহলে কিতাবদেরকে বিশ্বাস করো না আবার মিথ্যা প্রতিপন্নও করো না। বরং বল আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ও আমাদের প্রতি যা কিছু নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৫)
অত্র আয়াতে আমাদেরকে সকল নাবী-রাসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সকল নাবী-রাসূল এবং তাদের ওপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব সত্য বলে বিশ্বাস করব, আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর অবতীর্ণ কিতাব কুরআন ও তাঁর সুন্নাহ অনুসরণ করব।
أسباط ‘আসবাত’হল ইয়া‘কূব (আঃ)-এর বংশধরে বানী ইসরাঈলের বারটি গোত্রে যে সকল নাবী রাসূল এসেছেন তারা।
নাবী রাসূলগণের প্রতি ঈমানে চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত:
১. এ বিশ্বাস রাখা যে, তাদের রিসালাত আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে।
২. যে সকল নাবী-রাসলের নাম জানা যায় তাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। যেমন ঈসা, মূসা, ইবরাহীম (আলাইহিমুস সালাম) প্রমুখ।
৩. তাদের ব্যাপারে যেসব সহীহ সংবাদ এসেছে তা বিশ্বাস করা।
৪. এসব নাবী-রাসূলের মধ্যে যাকে আমাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীয়ত অনুসরণ করা। (মাজমু ফাতাওয়া লি উসায়মীন)।
সকল নাবীদের ওপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন প্রকার পাথর্ক্য করি না, অর্থাৎ এমন নয় যে, কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি আর কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَآ اُنْزِلَ اِلَیْھِ مِنْ رَّبِّھ۪ وَالْمُؤْمِنُوْنَﺚ کُلٌّ اٰمَنَ بِاللہِ وَمَلٰ۬ئِکَتِھ۪ وَکُتُبِھ۪ وَرُسُلِھ۪ﺤ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِھ۪ﺤ)
“রাসূল বিশ্বাস করেছেন যা তার রবের পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে এবং ঈমানদাররাও। প্রত্যেকেই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছেন। আমরা তাঁর রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না।”(সূরা বাকারাহ ২:২৮৫)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা এ ঈমান আনার ফলাফল বর্ণনা করেছেন:
(وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللہِ وَرُسُلِھ۪ وَلَمْ یُفَرِّقُوْا بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْھُمْ اُولٰ۬ئِکَ سَوْفَ یُؤْتِیْھِمْ اُجُوْرَھُمْﺚ وَکَانَ اللہُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا)
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনে এবং তাঁদের একের সঙ্গে অপরের পার্থক্য করে না তাদেরকে তিনি অবশ্যই পুরস্কার দেবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নিসা ৪:১৫২)
যদি আহলে কিতাবগণ সকল আসমানী কিতাব এবং রাসূলের প্রতি ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন পাথর্ক্য না করে তাহলে তারা সুপথপ্রাপ্ত। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে এ বিষয়ে সাক্ষ্য হিসেবে আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু শুনেন ও সবকিছু জানেন।
(صِبْغَةَ اللّٰهِ) ‘আল্লাহর রং’অর্থাৎ
الزموا صبغة اللّٰه
আল্লাহর রং আঁকড়ে ধর। ইবনু আব্বাস (রাঃ) সহ অধিকাংশ মুফাসসির বলেন: আল্লাহর রং হল আল্লাহর দীন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দীন ইসলামে যে সকল আদেশ করেছেন তা যথাযথভাবে পালন কর আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক, তাহলেই আল্লাহ তা‘আলার রঙে রঙ্গিন হওয়া যাবে।
খ্রিস্টানদের নিকট এক প্রকার হলুদ রঙের পানি থাকে; যা প্রত্যেক খ্রিস্টানশিশুকে এবং এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে পান করানো হয় যাকে খ্রিস্টান বানানোর উদ্দেশ্য থাকে।
এ অনুষ্ঠানের নাম ‘ব্যাপটিজম’(পবিত্র বারি দ্বারা সিঞ্চিত করে খ্রিস্টান ধর্মের দীক্ষাদানোৎসব)। এটা তাদের কাছে অত্যধিক জরুরী ব্যাপার। এছাড়া তারা কাউকেও পবিত্র গণ্য করে না। মহান আল্লাহ তাদের এ বিশ্বাস খণ্ডন করে বলেন: আসল রং তো আল্লাহর রং। এর চেয়ে উত্তম কোন রং নেই। আর আল্লাহর রঙের তাৎপর্য হল, ইসলাম ধর্ম, যার দিকে প্রত্যেক নাবী স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন; যা ছিল তাওহীদের আহ্বান।
সুতরাং একমাত্র ইসলামই সঠিক ধর্ম, এ ধর্মের দাওয়াত নিয়ে প্রত্যেক নাবী দুনিয়াতে আগমন করেছেন। আমাদের উচিত এ ধর্মের আদেশ-নিষেধগুলো যথাযথভাবে পালন করা। বিভিন্ন দিক থেকে যারা তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে তাদের আহ্বানে সাড়া না দেয়া।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মে হিদায়াত ও সফলতা নেই।
২. কোন একজন রাসূলকে অস্বীকার করা মূলত সকল রাসূলকে অস্বীকার করার শামিল। তাই সকলের প্রতি কোন পার্থক্য ছাড়াই ঈমান আনতে হবে।
৩. ইয়াহূদ ও খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সাহায্য, প্রলোভন ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে আমাদের সে সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।
৪. আমাদের সকলের উচিত ইসলামের আদেশ নিষেধগুলো মেনে চলা, তাহলেই আমরা আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হতে পারব।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings