2:119

إِنَّآ أَرۡسَلۡنَٰكَ بِٱلۡحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا‌ۖ وَلَا تُسۡــَٔلُ عَنۡ أَصۡحَٰبِ ٱلۡجَحِيمِ١١٩

Saheeh International

Indeed, We have sent you, [O Muhammad], with the truth as a bringer of good tidings and a warner, and you will not be asked about the companions of Hellfire.

Tafsir "Ibn Kathir Partial" (Bengali)

সুসংবাদদাতা এবং ভয় প্রদর্শনকারী দ্বারা উদ্দেশ্য ইবনে আবি হাতিম (রহঃ) ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) এর একটি সূত্র উল্লেখ করে বলেন যে, بشير দ্বারা জান্নাতের সু-সংবাদ দাতা উদ্দেশ্য আর نذير দ্বারা জাহান্নামের প্রতি ভয় প্রদর্শনকারী উদ্দেশ্য।মহান আল্লাহ ইরশাদ করেনঃ ﴿وَّلَا تُسْـَٔلُ عَنْ اَصْحٰبِ الْجَحِیْمِ﴾‘(হে নবী)! জাহান্নামবাসী কাফেরদের সম্বন্ধে তুমি জিজ্ঞাসিত হবে না।’ لا تُسْئلْ এর একটি কিরা’আত ما تُسْئل ও রয়েছে। ‘আবদুল্লাহ ইবনে মাস‘উদ (রাঃ) لن تُسْئلِ পড়তেন। অর্থ হবে তুমি কখনো জিজ্ঞাসিত হবে না। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ ﴿فَاِنَّمَا عَلَیْكَ الْبَلٰغُ وَعَلَیْنَا الْحِسَابُ﴾তোমার কর্তব্য শুধু প্রচার করা; আর হিসাব-নিকাশ তো আমার কাজ। (১৩ নং সূরা রা‘দ, আয়াত নং ৪০) মহান আল্লাহ আরো বলেনঃ ﴿فَذَكِّرْ١ؕ۫ اِنَّمَاۤ اَنْتَ مُذَكِّرٌؕ۝۲۱ لَسْتَ عَلَیْهِمْ بِمُصَۜیْطِرٍ﴾অতএব তুমি উপদেশ দিতে থাকো, তুমি তো একজন উপদেশ দাতা মাত্র। তুমি তাদের কর্মনিয়ন্ত্রক নও। (৮৮ নং সূরা গাশিয়াহ, আয়াত নং ২১-২২) অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেনঃ﴿نَحْنُ اَعْلَمُ بِمَا یَقُوْلُوْنَ وَ مَاۤ اَنْتَ عَلَیْهِمْ بِجَبَّارٍ١۫ فَذَكِّرْ بِالْقُرْاٰنِ مَنْ یَّخَافُ وَعِیْدِ﴾তারা যা বলে তা আমি জানি, তুমি তাদের ওপর জবরদস্তকারী নও। সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে তাকে উপদেশ দান করো কুর’আনের সাহায্যে। (৫০ নং সূরা কাফ, আয়াত নং ৪৫)একটি কিরা’আতে لا تَسئل তথা ت বর্ণে যবর দিয়েও পড়া হয়েছে। তখন অর্থ হবে হে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তুমি জাহান্নামবাসী সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞেস করো না। আয়াতটি অবতীর্ণের কারণ মুহাম্মাদ ইবনে কা‘বুল কারাযী (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদি আমি আমার পিতা মাতার কথা জানতে পারতাম! এরূপ কথা তিনি বারবার বললেন, ফলে অত্র আয়াতটি অবতীর্ণ করা হয়েছে। (হাদীসটি য‘ঈফ। তাফসীরে আব্দুর রাজ্জাক, ১/৭৮/১২৬, তাফসীরে ত্বাবারী- ১/৫৫৮/১৮৭৫) অতঃপর জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পিতা-মাতার কথা উল্লেখ করেননি।ইমাম কুরতুবী (রহঃ) বলেন, এর ভাবার্থ এই যে, যাদের অবস্থা এরূপ খারাপ ও জঘন্য তাদের সম্বন্ধে যেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহান আল্লাহকে কোন কিছুই জিজ্ঞেস না করেন। তিনি বলেন আমরা তাযকিরাহ নামক কিতাবে উল্লেখ করেছি যে, ‘মহান আল্লাহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জনক জননীকে জীবিত করেন এবং তারা তাঁর ওপর ঈমান আনেন। সহীহ মুসলিমের যে হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক ব্যক্তির প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেনঃ إن أبي وأباك في النار ‘আমার পিতা ও তোমার পিতা জাহান্নামে রয়েছে’ এর উত্তরও কোথায় রয়েছে। কিন্তু এটা স্মরণ রাখা দরকার যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পিতা- মাতাকে জীবিত করার হাদীসটি ছয়টি বিশুদ্ধ হাদীস ইত্যাদির মধ্যে নেই এবং এর ইসনাদও দুর্বল। মহান আল্লাহ ভালো জানেন। ইবনে জারীর (রহঃ) একটি সূত্র উল্লেখ করে বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার জিজ্ঞেস করেনঃ "أين أبواي؟" ‘আমার বাপ- মায়ের কবর কোথায় আছে।’ সেই সময় অত্র আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। কিন্তু এ হাদীসটিও পূর্বের হাদীসের মতোই মুরসাল। অবশ্য ইমাম ইবনে জারীর (রাঃ) এটা খণ্ডন করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তার পিতা-মাতা সমন্ধে সন্দেহ পোষণ করা অসম্ভব। আর তিনি প্রথম কির‘আতটিই সঠিক বলেছেন। কিন্তু আমার ইমাম জারীর (রহঃ) এর ওপর বিস্মিত হচ্ছি যে, কি করে তিনি এটাকে অসম্ভব বললেন। সম্ভবত এ ঘটনা ঐ সময়ের হবে যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তার পিতা- মাতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতেন এবং এর পরিণাম সম্বন্ধে তিনি হয়তো অবহিত ছিলেন না। অতঃপর তিনি যখন তাদের অবস্থা জেনে নেন তখন তিনি এ কাজ হতে বিরত থাকেন এবং তাদের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং স্পষ্ট ভাবে বলে দেন যে তারা দু’জনই জাহান্নামী। যেমন বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা এটা সাব্যস্ত হয়েছে। তাওরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে বর্ণনা মুসনাদে আহমাদে রয়েছে, ‘আবদুল্লাহ ইবনে ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) কে ‘আতা ইবনে ইয়াসার (রহঃ) জিজ্ঞেস করেনঃ ‘তাওরাতের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর গুণাবলী ও প্রশংসা কি রয়েছে? তখন তিনি বলেনঃ ‘হ্যাঁ! তাঁর যে গুণাবলী কুর’আন মাজীদে রয়েছে, ঐগুলোই তাওরাতেও রয়েছে। তাওরাতে আছেঃ ‘হে নবী! আমি তোমাকে সাক্ষী, সুসংবাদ দাতা, ভয় প্রদর্শনকারী এবং মুর্খদের রক্ষক করে পাঠিয়েছি। তুমি আমার বান্দা ও রাসূল। আমি তোমার নাম ‘মুতাওয়াক্কিল’ তথা ভরসাকারী রেখেছি। তুমি কর্কশভাষীও নও, তোমার হৃদয় কঠোরও নয়। তুমি দুশ্চরিত্রবানও নও। তুমি বাজারে ও গঞ্জে গণ্ডগোল সৃষ্টিকারীও নও। তিনি মন্দের বিনিময়ে মন্দ করেন না। বরং ক্ষমা করে থাকেন। মহান আল্লাহ তাঁকে দুনিয়া হতে উঠাবেন না যে পর্যন্ত তিনি বক্র ধর্মকে তাঁর দ্বারা সরল সোজা না করেন, মানুষ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহকে স্বীকার করে না নেয়, অন্ধ চক্ষু খুলে না যায়, তাদের বধির কর্ণ শুনতে না থাকে এবং মরিচা ধরা অন্তর পরিস্কার হয়ে না যায়।’ (হাদীসটি সহীহ। সহীহুল বুখারী ৪/২১২৫, ৮/৪৮৩৮, মুসনাদ আহমাদ ২/১৭৪/৬৬২২, ফাতহুল বারী ৪/৪০২) ইমাম বুখারী (রহঃ) একাই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

Arabic Font Size

30

Translation Font Size

17

Arabic Font Face

Help spread the knowledge of Islam

Your regular support helps us reach our religious brothers and sisters with the message of Islam. Join our mission and be part of the big change.

Support Us