Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 114
Saheeh International
And who are more unjust than those who prevent the name of Allah from being mentioned in His mosques and strive toward their destruction. It is not for them to enter them except in fear. For them in this world is disgrace, and they will have in the Hereafter a great punishment.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১১৩ ও ১১৪ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
ইবনু আবি হাতিম ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, যখন নাজরানের খ্রিস্টান প্রতিনিধি দল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আগমন করল তখন ইয়াহূদী পণ্ডিতগণ এসে তাদের সাথে বিবাদে লিপ্ত হয়ে গেল। তখন রাফে বিন হুরাইমালা বলল- তোমরা কোন ধর্মের ওপরই নও। কেননা তোমরা ঈসা ও ইঞ্জিলের সাথে কুফরী করেছ। তখন একজন নাজরানবাসী ইয়াহূদীদেরকে বলল- তোমরাও কোন ধর্মের ওপরই নও। কেননা তোমরা মূসা (আঃ)-এর নবুওয়াত ও তাওরাতকে অস্বীকার করেছ। তখন এ আয়াত নাযিল হয়। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৩৩৮, লুবাবন নুকূল ফি আসবাবে নুযূল, পৃঃ ২৭)
অর্থাৎ ইয়াহূদীরা তাওরাত পড়ত। তাতে মূসা (আঃ)-এর জবানে ঈসা (আঃ)-এর সত্যায়ন বিদ্যমান, তা সত্ত্বেও ইয়াহূদীরা ঈসা (আঃ) কে অস্বীকার করে। খ্রিস্টানদের কাছে ইনজিল বিদ্যমান, তাতে মূসা (আঃ) এবং তাওরাত যে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে আগত সে কথার সত্যায়ন রয়েছে, তা সত্ত্বেও এরা ইয়াহূদীদেরকে কাফির মনে করে। এ হল ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানদের পরস্পরের প্রতি হিংসার বহিঃপ্রকাশ, যার কারণে তারা একে অপরকে পথভ্রষ্ট ও কাফির বলে।
(كَذٰلِكَ قَالَ الَّذِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ مِثْلَ قَوْلِهِمْ)
‘এভাবে যারা জানে না, তারাও ওদের কথার মত কথা বলে থাকে’অর্থাৎ আহলে কিতাবদের মোকাবেলায় আরবের মুশরিকরা নিরক্ষর (অশিক্ষিত) ছিল। আর এ জন্যই তাদেরকে ‘অজ্ঞ’বলা হয়েছে। কিন্তু তারা মুশরিক হওয়া সত্ত্বেও ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানদের মত এ মিথ্যা ধারণায় মত্ত ছিল যে, তারাই নাকি হক্বের ওপর প্রতিষ্ঠিত। আর এ জন্যই তারা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সাবেয়ী বা বেদীন বলত।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন: কারা সঠিক দীনের ওপর প্রতিষ্ঠিত আর কারা প্রতিষ্ঠিত নয় তা নিয়ে নিজেদের মাঝে ঝগড়া করার প্রয়োজন নেই বরং তিনি কিয়ামতের দিন এ বিষয়ে ফায়সালা করে দেবেন। যেমন অন্যত্র বলেন:
(اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَالَّذِیْنَ ھَادُوْا وَالصَّابِئِیْنَ وَالنَّصٰرٰی وَالْمَجُوْسَ وَالَّذِیْنَ اَشْرَکُوْٓاﺣ اِنَّ اللہَ یَفْصِلُ بَیْنَھُمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِﺚ اِنَّ اللہَ عَلٰی کُلِّ شَیْءٍ شَھِیْدٌ)
“যারা ঈমান এনেছে এবং যারা ইয়াহূদী হয়েছে, যারা সাবিয়ী, খৃষ্টান ও অগ্নিপূজক এবং যারা মুশরিক হয়েছে ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেবেন। আল্লাহ সমস্ত কিছুর সম্যক প্রত্যক্ষকারী।”(সূরা হজ্জ ২২:১৭)
(وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ)
‘‘আর তার চেয়ে বড় জালিম আর কে আছে’’আয়াতের শানে নুযূল: এর শানে নুযূলের ব্যাপারে দু’টি মত পাওয়া যায়। যথা:
১. ৬ষ্ঠ হিজরীতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন উমরা করতে যান তখন মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যে বাধা প্রদান করেছিল, সে ব্যাপারে নাযিল হয়। এর প্রমাণ বহন করে এ বাণী:
(هُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوكُمْ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ)
“এরাই তো ঐ লোক, যারা কুফরী করেছে ও তোমাদেরকে মাসজিদুল হারাম থেকে ফিরিয়ে রেখেছে”(সূরা ফাতহ ৪৮:২৫)
এ অর্থে মাসজিদ ধ্বংস করার অর্থ হলো: মাসজিদে ইবাদত করতে বাধা দেয়া।
২. বখতে নসর ও অন্যান্যরা যে বাইতুল মাকদাসকে নষ্ট ও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছিল সে ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। এর প্রমাণ বহন করে আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(فَاِذَا جَا۬ئَ وَعْدُ الْاٰخِرَةِ لِیَسُوْ۬ءۭا وُجُوْھَکُمْ وَلِیَدْخُلُوا الْمَسْجِدَ کَمَا دَخَلُوْھُ اَوَّلَ مَرَّةٍ وَّلِیُتَبِّرُوْا مَا عَلَوْا تَتْبِیْرًا)
“অতঃপর পরবর্তী নির্ধারিত কাল উপস্থিত হলে আমি আমার বান্দাদেরকে প্রেরণ করলাম তোমাদের মুখমণ্ডল কালিমাচ্ছন্ন করার জন্য, প্রথমবার তারা যেভাবে মাসজিদে প্রবেশ করেছিল পুনরায় সেভাবেই তাতে প্রবেশ করার জন্য এবং তারা যা অধিকার করেছিল তা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার জন্য।”(সূরা ইসরা ১৭:৭) (আযওয়াউল বায়ান ১/৮৯)
প্রথম বর্ণনাটি অধিক গ্রহণযোগ্য। আর এটাই অধিকাংশ মুফাসসিরগণ বর্ণনা করেছেন। ইবনু কাসীরেও এ বর্ণনা আছে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
যারা মাসজিদে ইবাদত করতে বাধা দেয় ও মাসজিদ ধ্বংস করে তারা কারা? এ সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়: তবে সঠিক হল তারা আরবের মুশরিকগণ। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
তারা যারাই হোক তাদের জন্য দুনিয়াতে রয়েছে অপমান আর আখিরাতে রয়েছে মহা শাস্তি।
(أُولٰ۬ئِكَ مَا كَانَ لَهُمْ أَنْ يَّدْخُلُوْهَآ إِلَّا خَا۬ ئِفِيْنَ)
এ ধরণের ব্যক্তিদেরকে ভীত অবস্থায়ই তাতে প্রবেশ করা উচিত” এখানে শব্দগুলো সংবাদমূলক হলেও উদ্দেশ্য হল আদেশ। অর্থাৎ যখন আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে প্রতিষ্ঠা ও বিজয় দান করবেন তখন তোমরা মুশরিকদেরকে সেখানে সন্ধি ও জিযিয়া-কর ছাড়া প্রবেশ বা অবস্থান করার অনুমতি দেবে না।
তাই ৮ম হিজরীতে মক্কা বিজয়ের পর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোষণা দিলেন, আগামী বছর থেকে কোন মুশরিক কাবায় হজ্জ ও উলঙ্গ অবস্থায় তাওয়াফ করতে পারবে না। (সহীহ বুখারী হা: ৩৭৯) তবে যার সাথে চুক্তি আছে সে চুক্তির সময় পর্যন্ত এখানে থাকার অনুমতি পাবে।
কেউ বলেছেন: এটা একটা সুসংবাদ ও ভবিষ্যদ্বাণী যে, অতি সত্বর মুসলিমরা জয়লাভ করবে এবং মুশরিকরা এ ভেবে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে প্রবেশ করবে যে, আমরা মুসলিমদের ওপর জুলুম-অত্যাচার করেছি তার বদলায় হয়তো তারা আমাদেরকে শাস্তি দিতে ও হত্যাও করতে পারে। বলা বাহুল্য অতি সত্বর এ সুসংবাদ বাস্তবে রূপান্তরিত হয়।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. দীন তিন স্তরের (ঈমান, ইসলাম ও ইহসান) ওপর প্রতিষ্ঠিত, এটাই জাহান্নাম হতে নাজাত ও জান্নাত লাভের একমাত্র মাধ্যম।
২. মাসজিদ ধ্বংস করা অথবা ইবাদতে বাধা দেয়া বড় ধরণের অপরাধ।
৩. কাফির-মুশরিকদের থেকে মাসজিদ রক্ষা করা ওয়াজিব।
৪. মুসলিমদের অন্যান্য জাতির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব জানলাম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings