2:110

وَأَقِيمُواۡ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُواۡ ٱلزَّكَوٰةَ‌ۚ وَمَا تُقَدِّمُواۡ لِأَنفُسِكُم مِّنۡ خَيۡرٍ تَجِدُوهُ عِندَ ٱللَّهِ‌ۗ إِنَّ ٱللَّهَ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِيرٌ١١٠

Saheeh International

And establish prayer and give zakah, and whatever good you put forward for yourselves - you will find it with Allah. Indeed, Allah of what you do, is Seeing.

Tafsir "Ibn Kathir Partial" (Bengali)

আহলে কিতাবীদের অনুসরণ করা যাবে না অত্র আয়াতগুলোর মাধ্যমে মহান আল্লাহ মু’মিনদেরকে আহলে কিতাবদের অনুসরণ করার ব্যাপারে সতর্ক করে দিচ্ছেন। কারণ তারা প্রকাশ্যে এবং গোপনে মুসলিমদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করছে এবং ঘৃণা করছে। যখন তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর অনুসরণকারীদের মর্যাদা সম্পর্কে অবহিত হয়, তখন তাদেরকে হিংসা করছে। মহান আল্লাহ তাঁর অনুগত বান্দাদেরকে বলেছেন যে, তারা যেন আহলে কিতাবদেরকে ক্ষমার চোখে দেখে এবং ধৈর্য ধারণ করে যতোক্ষণ না তাদের জন্য মহান আল্লাহ্‌র সাহায্য নেমে আসে এবং বিজয় লাভ করে। মহান আল্লাহ আরো আদেশ করছেন সালাত আদায় করতে, যাকাত প্রদান করতে এবং উত্তম ‘আমল করতে।ইবনে আবি হাতিম (রহঃ) বর্ণনা করেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনে কা ‘ব ইবনে মালিক (রহঃ) বলেন যে, কা ‘ব ইবনু আশরাফ নামক এক ইয়াহূদী কবি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খুবই সমালোচনা করতো। এ কারণেই তাকে উদ্দেশ্য করে ﴿وَدَّ كَثِیْرٌ مِّنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ لَوْ یَرُدُّوْنَكُمْ ﴾ এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (তাফসীর ইবনে আবি হাতিম ১/৩৩১)যাহ্হাক (রহঃ) বলেন, ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, যদিও ইয়াহুদীদের কিতাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সত্যতার প্রমাণ বিদ্যমান ছিলো এবং সে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর গুণাবলী সম্বন্ধে সম্যক অবগত ছিলো ও তাঁকে ভালোভাবেই চিনতো, আবার যদিও সে এটাও স্বচক্ষে দেখছিলো যে, কুর’আন মাজীদ তাদের কিতাবের সত্যতা প্রমাণ করছে এবং এটাও লক্ষ্য করছিলো যে, একজন নিরক্ষর লোক এ কিতাব পাঠ করছেন, যা সরাসরি মু‘জিযাহ। তথাপি তিনি যে ‘আরবে প্রেরিত হয়েছিলেন শুধু এ কারণেই হিংসার বশবর্তী হয়ে সে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও কুর’আনকে অস্বীকার করেছিলো এবং জনগণকে পথভ্রষ্ট করতে আরম্ভ করেছিলো। (তাফসীর ইবনে আবি হাতিম ১/৩৩৫) সেই সময় গভীর পরিণামদর্শিতার ভিত্তিতে মহান আল্লাহ মুসলিমদেরকে নির্দেশ দেন যে, তারা যেন ঐ সব ইয়াহুদীকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখে এবং মহান আল্লাহ্‌র ফায়সালার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। যেমন মহান আল্লাহ অন্য জায়গায় বলেনঃ﴿وَ لَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَ مِنَ الَّذِیْنَ اَشْرَكُوْۤا اَذًى كَثِیْرًا﴾তোমাদের পূর্বে যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছে ও যারা অংশী স্থাপন করেছে তাদের নিকট হতে তোমাদেরকে বহু দুঃখজনক বাক্য শুনতে হবে। (৩ নং সূরা আলি ‘ইমরান, আয়াত নং ১৮৬)ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ অতঃপর অন্য আয়াতও অবতীর্ণ হয় এবং তার ফলে পূর্বের নির্দেশ উঠে যায়। এখন তাদেরকে প্রতিশোধ গ্রহণ ও আত্মরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।﴿فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِیْنَ حَیْثُ وَجَدْتُّمُوْهُمْ﴾অতঃপর মুশরিকদের যেখানে পাবে তাদের সাথে যুদ্ধ করো এবং হত্যা করো। (৯ নং সূরা তাওবাহ, আয়াত নং ৫) অপর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেনঃ ﴿قَاتِلُوا الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ لَا بِالْیَوْمِ الْاٰخِرِ﴾যে সব আহলে কিতাব মহান আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান রাখে না এবং কিয়ামত দিনের প্রতিও না। (৯ নং সূরা তাওবাহ, আয়াত নং ২৯) অন্যত্র বলা হয়েছেঃ ﴿وَّ هُمْ صٰغِرُوْنَ﴾যে পর্যন্ত না তারা অধীনতা স্বীকার করে। (৯ নং সূরা তাওবাহ, আয়াত নং ২৯)‘উসামা ইবনে যায়েদ (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আলোচ্য আয়াতের পরিপ্রেক্ষিতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং সাহাবীগণ কাফির ও আহলে কিতাবীদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেন। অতঃপর মহান আল্লাহ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার আদেশ দেন। ফলে কুরাইশদের যে সমস্ত শক্তিশালী নেতা ও যোদ্ধা ছিলো তাদের মধ্য থেকে মহান আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে যাদের ধ্বংস হওয়া নির্ধারিত ছিলো রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সেনাবাহিনীর হাতে তারা নিহত হয়। (হাদীসটি সহীহ। সহীহুল বুখারী ৬/৪৯, ৮/৫৬, ৬৯, সহীহ মুসলিম ৫/১৮২, জামি‘ তিরমিযী ২৭০২, মুসনাদ আহমাদ ৫/২০৩, তাফসীর ইবনে আবি হাতিম ১/৩৩৩)আর বদর প্রান্তরে যে প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয় তাতেই মুশরিকরা ভীষণভাবে পরাজিত হয় এবং তাদের বড় বড় নেতৃবৃন্দের মৃতদেহে মায়দান পূর্ণ হয়ে যায়। সৎ কাজের আদেশ দানে উৎসাহ প্রদান ﴿وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ١ؕ وَ مَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللّٰهِ﴾এখন মু’মিনদেরকে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে যে, যদি তারা সালাত, সিয়াম ইত্যাদি ‘ইবাদত সঠিকভাবে পালন করে তাহলে তাদের পরকালের শাস্তির রক্ষাকবচ ছাড়াও দুনিয়ায়ও মুশরিক ও কাফিরদের ওপর জয়যুক্ত হওয়ার কারণ হয়ে যাবে। দুনিয়ায় এ ‘আমল না করার কারণে পরকালের দুরাবস্থার কথা জানিয়ে অন্যত্র বলা হয়েছেঃ ﴿یَوْمَ لَا یَنْفَعُ الظّٰلِمِیْنَ مَعْذِرَتُهُمْ وَ لَهُمُ اللَّعْنَةُ وَ لَهُمْ سُوْٓءُ الدَّارِ﴾‘যেদিন যালিমদের কোন ওযর আপত্তি কোন কাজে আসবে না, তাদের জন্য রয়েছে লা ‘নত এবং নিকৃষ্ট আবাস।’ (৪০ নং সূরা মু’মিন, আয়াত নং ৫২)এরপর মু’মিনদেরকে বলা হচ্ছে, ﴿اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ﴾ তাদের ভালো কাজের প্রতিদান উভয় জগতেই দেয়া হবে। তাঁর নিকট ছোট বড়, প্রকাশ্য, গোপনীয়, ভালো ও মন্দ কোন কাজই গোপন থাকে না। মু’মিনদেরকে তাঁর আনুগত্যের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য এবং তাঁর অবাধ্যতা হতে রক্ষার জন্যই মহান আল্লাহ এটা বলেছেন।

Arabic Font Size

30

Translation Font Size

17

Arabic Font Face

Help spread the knowledge of Islam

Your regular support helps us reach our religious brothers and sisters with the message of Islam. Join our mission and be part of the big change.

Support Us