Surah Al Ankabut Tafseer
Tafseer of Al-'Ankabut : 60
Saheeh International
And how many a creature carries not its [own] provision. Allah provides for it and for you. And He is the Hearing, the Knowing.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৫৬-৬০ নং আয়াতের তাফসীর:
সূরার প্রথম থেকে এ পর্যন্ত মুসলিমদের প্রতি কাফিরদের শত্র“তা, তাওহীদ ও রিসালাত অস্বীকার এবং সত্য ও সত্যপন্থীদের পথে নানা রকম বাধা-বিঘœ ইত্যাদি বর্ণিত হয়েছে। আলোচ্য আয়াতে মুসলিমদের জন্য কাফিরদের অনিষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করা, সত্য প্রচার করা এবং আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করতে কোন বাধা বিঘœ থাকবে না এমন একটি কৌশল বর্ণনা করা হয়েছে। এ কৌশলের নাম হিজরত।
(يَا عِبَادِيَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْآ.....)
উক্ত আয়াতে মূলত আল্লাহ তা‘আলা মু’মিন বান্দাদেরকে হিজরত করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছেন। অর্থাৎ যদি মু’মিনরা এমন এলাকায় বাস করে যেখানে আল্লাহ তা‘আলার দীন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হচ্ছে না, অথবা কাফিররা প্রতিনিয়ত তাদের কষ্ট দিচ্ছে, যথাযথভাবে আল্লাহ র ইবাদত করা যাচ্ছে না তাহলে জেনে রাখ হে মু’মিনগণ, আল্লাহ তা‘আলার জমিন প্রশস্ত। যে জায়গায় গেলে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠা করতে পারবে, কাফিরদের নির্যাতন থেকে রেহাই পাবে এবং আল্লাহার ইবাদত করতে কোন বাধা থাকবে না সেখানে হিজরত করবে। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবীগণ হিজরত করেছেন। এ অর্থে কুরআনে অনেক আয়াত রয়েছে, তন্মধ্যে অন্যতম হল: আল্লাহ বলেন:
(إِنَّ الَّذِيْنَ تَوَفّٰهُمُ الْمَلٰٓئِكَةُ ظَالِمِيْٓ أَنْفُسِهِمْ قَالُوْا فِيْمَ كُنْتُمْ ط قَالُوْا كُنَّا مُسْتَضْعَفِيْنَ فِي الْأَرْضِ ط قَالُوْآ أَلَمْ تَكُنْ أَرْضُ اللّٰهِ وَاسِعَةً فَتُهَاجِرُوْا فِيْهَا)
“যারা নিজেদের ওপর জুলুম করে তাদের প্রাণ গ্রহণের সময় ফেরেশতাগণ বলে, ‘তোমরা কী অবস্থায় ছিলে? তারা বলে ‘দুনিয়ায় আমরা অসহায় ছিলাম।’ তারা বলে, ‘আল্লাহর জমিন কি প্রশস্ত ছিল না যেখানে তোমরা হিজরত করতে?’’ (সূরা নিসা ৪:৯৭)
সুতরাং কোথাও ইসলামের বিধান পালন করতে গিয়ে যদি বাধা আসে আর ঐ বাধা প্রতিহত করার ক্ষমতা না থাকে তাহলে সেখানের চেয়ে এমন উত্তম স্থান যদি থাকে যেখানে হিজরত করলে যাবতীয় ইবাদত পালনে কোন বাধা থাকবে না তখন সেখানে হিজরত করা আবশ্যক।
স্বদেশ পরিত্যাগ করে অন্যত্র যাওয়ার মধ্যে মানুষ স্বভাবত ভয় করতে পারে যে, হয়তো পথিমধ্যে স্থানীয় কাফিররা বাধা দেবে এবং প্রাণে মেরে ফেলবে। তাই পরের আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: জীবন মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। কেউ পৃথিবীতে স্থায়ী হবে না। সে জন্য প্রাণের ভয়ে মু’মিন কখনো আল্লাহ তা‘আলার বিধান পালন করা থেকে বিরত থাকতে পারে না। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(كُلُّ نَفْسٍ ذَا۬ئِقَةُ الْمَوْتِ ط وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُوْرَكُمْ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ)
“সকল আত্মাই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণকারী এবং নিশ্চয়ই কিয়ামত দিবসে তোমাদেরকে পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে।” (সূরা আলি ইমরান ৩:১৮৫)
বিশেষতঃ আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশাবলী পালন করা অবস্থায় মৃত্যু হলে অনেক মর্যাদা রয়েছে। সেজন্য পরের আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেনন যারা সৎ আমল করবে, ধৈর্য ধারণ করবে ও আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা করবে তারাই মৃত্যুর পর তলদেশে নহর প্রবাহিত হয় এমন জান্নাতে বসবাস করবে। যেখানে থাকবে শুধু আরাম-আয়েশ, কোন দুঃখ-কষ্ট সেখানে তাদেরকে স্পর্শ করবে না।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, পৃথিবীর স্থলে ও জলে এমন কতক জীবজন্তু আছে যারা নিজেদের খাদ্য বহন করে নিয়ে চলে না এবং মজুত করে রাখে না। আল্লাহ তা‘আলাই তাদের রিযিকের ব্যবস্থা করে থাকেন। তারা সকালে খালি পেটে বাসা থেকে বের হয়ে যায় আবার সন্ধ্যায় ভরা পেটে ফিরে আসে। তাদের জীবিকার জন্য কোনই চিন্তা করতে হয় না। অথচ তাদের কী পরিমাণ খাদ্যের প্রয়োজন হয় যার ব্যবস্থা করেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا مِنْ دَآبَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَي اللّٰهِ رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا ط كُلٌّ فِيْ كِتٰبٍ مُّبِيْنِ)
“ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী সকলের জীবিকার দায়িত্ব একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই। তিনি তাদের স্থায়ী ও অস্থায়ী অবস্থিতি সম্বন্ধে অবহিত; সুস্পষ্ট কিতাবে (লাওহে মাহফূজ) সব কিছুই লিপিবদ্ধ আছে।” (সূরা হূদ ১১:৬)
মানুষও যদি আল্লাহ তা‘আলার ওপর সত্যিকার ভরসা করে, তাহলে তাদেরকে এভাবেই রিযিক দেবেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
لَوْ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَوَكَّلُونَ عَلَي اللَّهِ حَقَّ تَوَكُّلِهِ لَرُزِقْتُمْ كَمَا يُرْزَقُ الطَّيْرُ تَغْدُو خِمَاصًا وَتَرُوحُ بِطَانًا
তোমরা যদি আল্লাহ তা‘আলার ওপর যথাযথ ভরসা কর যেমন ভরসা করা উচিত তাহলে তোমাদেরকে তেমনভাবে রিযিক দেবেন যেমনভাবে পাখিদেরকে রিযিক দিয়ে থাকেন। পাখিরা খালি পেটে সকালে বের হয় আর ভরা পেটে বাসায় ফিরে আসে। (তিরমিযী হা: ২৩৪৪, সহীহ)
অতএব সকল প্রাণীর রিযিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, সৃষ্টি করার পূর্বেই আল্লাহ তা‘আলা রিযিক নির্ধারণ করে রেখেছেন। তাই রিযিকের চিন্তা না করে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে দীনের সকল বিধি বিধান যথাযথভাবে পালন করলে আল্লাহ তা‘আলা কোথা থেকে রিযিক দেবেন তা বুঝতেও পারবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মানুষের রিযিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
২. জীব মাত্রই মৃত্যুবরণ করতে হবে।
৩. বিপদে ধৈর্যধারণ করতে হবে, অধৈর্য হওয়া যাবে না।
৪. কোথাও আল্লাহ তা‘আলার বিধান পালন করতে বাধাগ্রস্ত হলে সেখান থেকে উত্তম স্থান পেলে সেখানে হিজরত করতে হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings