Surah Al Qasas Tafseer
Tafseer of Al-Qasas : 86
Saheeh International
And you were not expecting that the Book would be conveyed to you, but [it is] a mercy from your Lord. So do not be an assistant to the disbelievers.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৮৫-৮৮ নং আয়াতের তাফসীর:
(إِنَّ الَّذِيْ فَرَضَ عَلَيْكَ....)
উক্ত আয়াতে মূলত আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা প্রদান করছেন এবং তাবলীগী কাজে অবিচল থাকার প্রতি জোর দিচ্ছেন। সূরার শুরুতে মূসা (عليه السلام) ও তাঁর শত্র“ ফির‘আউনের ঘটনা বিস্তারিত আলোচনা করার পর সূরার শেষে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে চাচ্ছেনন মূসা (عليه السلام)-কে ফির‘আউন ও তার বাহিনী হত্যা করতে চেয়েছিল, তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করে এবং তার ওপর অমানবিক নির্যাতন করে। কিন্তু আল্লাহ তাঁকে ফির‘আউনের ওপর বিজয় দান করেন এবং নিজ দেশে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। অনুরূপ হে রাসূল! মক্কার কাফিররা তোমাকে মক্কা থেকে বের করে দিয়েছে, তোমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছে এবং অমানবিক নির্যাতন করেছে। আল্লাহ তাঁর রীতি অনুযায়ী তোমাকেও বিজয় দান করবেন এবং মক্কায় তোমার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবেন।
(إِنَّ الَّذِيْ فَرَضَ عَلَيْكَ الْقُرْاٰنَ)
অর্থাৎ যে পবিত্র সত্তা তোমার প্রতি কুরআন নাযিল করে বিধি-বিধান দিয়েছেন সে সত্তা তোমাকে ‘মাআদে’ ফিরিয়ে আনবেন। ইবনু আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন:
(لَرَآدُّكَ إِلٰي مَعَادٍ)
অর্থাৎ মক্কায় ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৭৭৩) অধিকাংশ মুফাসসিরগণ এ কথাই বলেছেন। (তাফসীর কুরতুবী, মুয়াসসার) তবে আল্লামা সাদী বলেন: যে আল্লাহ তোমার প্রতি কুরআন নাযিল করে বিধি-বিধান দিয়েছেন। যথা হালাল-হারাম বর্ণনা করে দিয়েছেন ও তোমাকে দাওয়াতী কাজের নির্দেশ দিয়েছেন তাঁর হিকমতের শানে এটা উপযোগী নয় যে, ভাল-মন্দ কর্মের প্রতিদান না দিয়ে দুনিয়ার জীবনের মাঝেই সব শেষ করে দেবেন। বরং অবশ্যই তোমাকে আখিরাতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। তথায় ভাল কাজের উত্তম প্রতিদান দেবেন আর মন্দ কর্মের উপযুক্ত শাস্তি দেবেন। (তাফসীর সাদী)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি তাঁর অন্যতম একটি বড় অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে কয়েকটি নির্দেশ প্রদান করছেন। অনুগ্রহ হলন তিনি তোমার প্রতি কুরআন নাযিল করেছেন, অথচ তুমি জানতেও না যেন তুমি একজন নাবী হবে, তোমার প্রতি কুরআন নাযিল করে সম্মানিত করা হবে। এটা মূলত তোমার প্রতি মহান আল্লাহ তা‘আলার একটা বড় অনুগ্রহ। সুতরাং যে আল্লাহ তা‘আলা তোমার প্রতি এত বড় নেয়ামত দান করেছেন তাঁর নির্দেশ হল-কখনো কাফিরদের সাহায্য করবে না। কুরআন নাযিল হওয়ার পর কারো কোন কথা বা মন্তব্য, মোট কথা কোন কিছুই যেন আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ থেকে তোমাকে বিরত না রাখতে পারে। আল্লাহ তা‘আলার দিকে মানুষকে আহ্বান কর, আর কখনো শির্কী কাজ করে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
(كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَه)
‘তাঁর চেহারা ব্যতীত সমস্ত কিছুই ধ্বংসশীল।’ وجه শব্দের অর্থ চেহারা, যা আমাদের কাছে পরিচিত। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলার চেহারা কেমন তা আমাদের জানা নেই, আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে সংবাদ দেননি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাদীসেও বলেননি। সুতরাং আমরা অন্যান্য সিফাতের ন্যায় বিশ্বাস করব আল্লাহ তা‘আলার প্রকৃত চেহারা রয়েছে, যেমন তাঁর সত্তার সাথে উপযোগী। কোন মাখলূকের চেহারার সাথে সাদৃশ্য দিতে যাব না, আর অস্বীকারও করব না। হাদীসে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
حِجَابُهُ النُّورُ لَوْ كَشَفَهُ لَأَحْرَقَتْ سُبُحَاتُ وَجْهِهِ مَا انْتَهَي إِلَيْهِ بَصَرُهُ مِنْ خَلْقِهِ
আল্লাহ তা‘আলার পর্দা হল নূর, যদি তা উন্মোচন করেন তাহলে তাঁর চেহারার উজ্জ্বলতা ও নূর ঐ পর্যন্ত পুড়িয়ে ফেলবে সৃষ্টির যে পর্যন্ত তাঁর দৃষ্টি পৌঁছবে। (সহীহ মুসলিম হা: ১৭৯)।
অনেকে বলতে পারেন তাহলে আল্লাহ তা‘আলার চেহারা ব্যতীত সব ধ্বংস হয়ে যাবে? উত্তর: আপনি যদি বলতে চান, এখানে চেহারা দ্বারা উদ্দেশ্য হল আল্লাহ তা‘আলার সম্পূর্ণ সত্তা, তাহলেও কোন সমস্যা নেই। এখানে وجه দ্বারা এমন সত্তার কথা ব্যক্ত করা হয়েছে যার চেহারা রয়েছে। যদি চেহারা না থাকত তাহলে এ শব্দ দ্বারা আল্লাহ তা‘আলার সত্তাকে ব্যক্ত করতে পারতেন না। সুতরাং যারা وجه দ্বারা তাফসীর করে থাকে এমন আমল যা আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য করা হয় বা রূপক অর্থে এ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ তা‘আলার কোন চেহারা নেই, যদি বলি আল্লাহ তা‘আলার চেহারা আছে তাহলে আল্লাহ তা‘আলার আকার সাব্যস্ত করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি তাদের তাফসীর ভুল ও বিকৃত।
তাই প্রত্যেক মু’মিনের বিশ্বাস করতে হবে, আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে যে সকল গুণ নিজের জন্য সাব্যস্ত করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সহীহ হাদীসে উল্লেখ করেছেন তা আল্লাহ তা‘আলার শানে যেমন উপযুক্ত তেমনি, আমাদেরকে যতটুকু জানানো হয়েছে ততটুকুর প্রতি ঈমান আনব। কোন প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও অপব্যাখ্যা করা যাবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার চেহারা রয়েছে যেমন তাঁর সত্তার জন্য উপয্ক্তু।
২. আল্লাহ তা‘আলার সাথে কাউকে শরীক করা যাবে না।
৩. সকলকে একদিন আল্লাহ তা‘আলার কাছে ফিরে যেতে হবে।
৪. কুরআনের মাধ্যমে এক জাতিকে আল্লাহ তা‘আলা উত্থান করেন অপর জাতির পতন ঘটান।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings