Surah An Naml Tafseer
Tafseer of An-Naml : 90
Saheeh International
And whoever comes with an evil deed - their faces will be overturned into the Fire, [and it will be said], "Are you recompensed except for what you used to do?"
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৮৬-৯০ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন: মানুুষ কি আমার এসব বড় বড় নিদর্শন প্রত্যক্ষ করে না? যে, আমি তাদের জন্য রাতকে অন্ধকার করেছি যাতে তারা প্রশান্তি লাভ করে। لِيَسْكُنُوْا শব্দের অর্থ প্রশান্তি লাভ করা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: “আর তার দৃষ্টান্তগুলোর মধ্যে একটি এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকে স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি লাভ কর” (সূরা রূম ৩০:২১)
মানুষ সারাদিন পরিশ্রম করে রাতের বেলা যখন ঘুমায় তখন দিনের সকল ক্লান্তি শেষ হয়ে যায়। পরের দিন পূর্ণ উদ্যমে এমনভাবে কাজ শুরু করে যেন গতকালের পরিশ্রমের কোন চিহ্ন শরীরে নেই। আবার দিনকে করে দিয়েছেন আলোকময়, কারণ মানুষ দিনের বেলা কাজ করবে, রিযিক অন্বেষণে ভ্রমণ করবে। তা যদি অন্ধকার হয় তাহলে কাজ করতে পারবে না। এসব আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামত, আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করলে সূর্যকে আলোহীন করে দিতে পারতেন ফলে কোন কিছু জন্মাতো না। মানুষ জীবন যাপন করতে পারত না। এ সম্পর্কে সূরা বানী ইসরাঈলের ১২ নং আয়াতে ও সূরা ইউনুস এর ৬৮ নং আয়াতেও আলোচনা করা হয়েছে।
কিয়ামতের পূর্বে ইসরাফিল (عليه السلام) যখন শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেবেন তখন আকাশ ও যমিনবাসীর কী কঠিন পরিস্থিতি হবে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
فَفَزِعَ শব্দের অর্থ অস্থির হওয়া, উদ্বিগ্ন হওয়া, সূরা যুমারের ৬৮ নং আয়াতে বলা হয়েছ فَصَعِقَ বা বেহুশ হয়ে যাবে। শিঙ্গায় ফুঁৎকার কয়টি হবে এ নিয়ে দুটি মত বিদ্যমানন কেউ বলেছেন, দুটি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: দুই ফুঁৎকারের মাঝে ব্যবধান চল্লিশ বছর, প্রথম ফুঁৎকারে প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যু বরণ করবে। দ্বিতীয় ফুঁৎকারে প্রত্যেক মৃত জীবিত হবে। (ফাতহুল বারী ১১/৩৭০) কেউ বলেছেন তিনটি হবে: প্রথম বার সব ধ্বংস হবে, মানুষ ভীত বিহ্বল হবে। দ্বিতীয়বারে সবাই মারা যাবে, আর তৃতীয়বার সবাই হাশরের জন্য জীবিত হবে। তবে এখানে কোন্টা উদ্দেশ্য? কেউ বলেছেন, প্রথমটা; আবার কেউ বলেছেন, দ্বিতীয়টা। আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন।
(إِلَّا مَنْ شَا۬ءَ اللّٰهُ)
‘তবে আল্লাহ তা‘আলা যাদেরকে চাইবেন তারা ব্যতীত’ অর্থাৎ সবাই বেহুশ হয়ে যাবে তবে আল্লাহ তা‘আলা যাদেরকে চাইবেন তারা ব্যতীত। তারা কারা? কেউ বলেন, তারা হল, নাবী ও শহীদগণ; কেউ বলেন ফেরেশতাগণ; আবার কেউ বলেন, সকল মু’মিনগণ। সঠিক কথা হল আল্লাহ তা‘আলা যাদেরকে সম্মানিত করবেন এবং সে আতঙ্ক থেকে হেফাযত করবেন তারা ব্যতীত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বেহুশ হওয়ার পর যারা জ্ঞান ফিরে পাবে তাদের মধ্যে আমিই হবো প্রথম ব্যক্তি। আমি উঠেই দেখব আরশের পাশে খুঁটি ধরে মূসা (عليه السلام) দাঁড়িয়ে আছেন। আমি জানিনা তিনি কি আমার আগেই জ্ঞান ফিরে পেয়েছেন নাকি আল্লাহ তা‘আলা যাদেরকে বেহুশ করবেন না তাঁকে তাদের মধ্যে রেখেছেন। (সহীহ বুখারী হা: ২৪১১)
আর সেদিনের অবস্থা এমন হবে যে, পাহাড়সমূহ মেঘমালার মত চলবে ও উড়তে থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(يَّوْمَ تَمُوْرُ السَّمَا۬ءُ مَوْرًا- وَّتَسِيْرُ الْجِبَالُ سَيْرًا)
“যেদিন আকাশ প্রকম্পিত হবে প্রবলভাবে এবং পাহাড় চলবে দ্রুত।” (সূরা তূর ৫২:৯-১০) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(وَيَوْمَ نُسَيِّرُ الْجِبَالَ وَتَرَي الْأَرْضَ بَارِزَةً لا وَّحَشَرْنٰهُمْ فَلَمْ نُغَادِرْ مِنْهُمْ أَحَدًا)
“স্মরণ কর, যেদিন আমি পর্বতমালাকে করব সঞ্চালিত এবং তুমি পৃথিবীকে দেখবে উন্মুক্ত প্রান্তর, সেদিন তাদের সকলকে আমি একত্র করব এবং তাদের কাউকেও অব্যাহতি দেব না।” (সূরা কাহফ ১৮:৪৭)
সুতরাং সেদিনের অবস্থা হবে খুবই ভয়াবহ।
সেদিন যারা সৎকাজ নিয়ে আল্লাহ তা‘আলার নিকট আসবে তাদেরকে তথায় উত্তম প্রতিদান দেয়া হবে, আর তারা কিয়ামত দিবসে ভয় হতে মুক্ত থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(لَا يَحْزُنُهُمُ الْفَزَعُ الْأَكْبَرُ وَتَتَلَقّٰهُمُ الْمَلٰٓئِكَةُ ط هٰذَا يَوْمُكُمُ الَّذِيْ كُنْتُمْ تُوْعَدُوْنَ)
“মহাভীতি তাদেরকে চিন্তাযুক্ত করবে না এবং ফেরেশতাগণ তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাবে এই বলে, ‘এ তোমাদের সে দিন যার প্রতিশ্র“তি তোমাদেরকে দেয়া হয়েছিল।’ (সূরা আম্বিয়া ২১:১০৩) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(فَأُولٰٓئِكَ لَهُمْ جَزَا۬ءُ الضِّعْفِ بِمَا عَمِلُوْا وَهُمْ فِي الْغُرُفٰتِ اٰمِنُوْنَ)
“তারাই তাদের কর্মের জন্য পাবে বহুগুণ পুরস্কার; আর তারা প্রাসাদসমূহে নিরাপদে থাকবে।” (সূরা সাবা ৩৪:৩৭) পক্ষান্তরে যারা মন্দ আমল নিয়ে উপস্থিত হবে তাদেরকে অধোমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। আর তারা তথায় কঠিন শাস্তি ভোগ করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّه۫ مَنْ يَّأْتِ رَبَّه۫ مُجْرِمًا فَإِنَّ لَه۫ جَهَنَّمَ ط لَا يَمُوْتُ فِيْهَا وَلَا يَحْيٰي)
“যে তার প্রতিপালকের নিকট অপরাধী হয়ে উপস্থিত হবে তার জন্য আছে জাহান্নাম, সেথায় সে মরবেও না, বাঁচবেও না।” (সূরা ত্বহা ২০:৭৪)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(مَنْ جَا۬ءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَه۫ عَشْرُ أَمْثَالِهَا ج وَمَنْ جَا۬ءَ بِالسَّيِّئَةِ فَلَا يُجْزٰٓي إِلَّا مِثْلَهَا وَهُمْ لَا يُظْلَمُوْنَ)
“কেউ কোন সৎকাজ করলে সে তার দশ গুণ পাবে এবং কেউ কোন অসৎ কাজ করলে তাকে শুধু তারই প্রতিফল দেয়া হবে, আর তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না।” (সূরা আন‘আম ৬:১৬০)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. যেদিন সিংঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে, সেদিন অপরাধীরা আল্লাহ তা‘আলার ভয়ে প্রকম্পিত হয়ে ওঠবে।
২. সেদিন পাহাড়সমূহ চলমান হবে।
৩. সৎ কাজের জন্য মানুষ উত্তম প্রতিদান পাবে আর অসৎ কাজের জন্য মন্দ পরিণতি ভোগ করবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings