Surah An Naml Tafseer
Tafseer of An-Naml : 62
Saheeh International
Is He [not best] who responds to the desperate one when he calls upon Him and removes evil and makes you inheritors of the earth? Is there a deity with Allah ? Little do you remember.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
আল্লাহ তা'আলা অবহিত করছেন যে, বিপদ-আপদের সময় তাঁর সত্তাই আহ্বানের যোগ্য। আর্ত ও অসহায়দের সহায় ও আশ্রয়স্থল তিনিই। বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিরা তাকেই ডেকে থাকে। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবি)
অর্থাৎ “সমুদ্রে যখন তোমাদেরকে বিপদ-আপদ স্পর্শ করে তখন তোমরা একমাত্র তাঁকেই (আল্লাহকেই) ডেকে থাকো এবং অন্য সবকেই ভুলে যাও।” (১৭: ৬৭) আর এক জায়গায় তিনি বলেন (আরবি)
অর্থাৎ “অতঃপর যখন তোমাদেরকে বিপদ-আপদ স্পর্শ করে তখন তোমরা তাঁরই নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে থাকো।” (১৬:৫৩) তার সত্তা এমনই যে, প্রত্যেক আশ্রয়হীন ব্যক্তি তার কাছে আশ্রয় লাভ করে থাকে। বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির বিপদ তিনি ছাড়া আর কেউই দূর করতে পারে না।
হযরত আবু তামীমাতুল হাজীমী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে জিজ্ঞেস করলোঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আপনি কোন জিনিসের দিকে আহ্বান করছেন?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “আমি তোমাকে আহ্বান করছি ঐ আল্লাহ তা'আলার দিকে যিনি এক, যার কোন অংশীদার নেই। যিনি ঐ সময় তোমার কাজে এসে থাকেন যখন তুমি কোন বিপদ-আপদে পতিত হও। যখন তুমি জঙ্গলে ও মরুপ্রান্তরে পথ ভুলে যাও তখন তুমি যাকে ডাকো এবং তিনি তোমার ডাকে সাড়া দিয়ে তোমাকে পথ-প্রদর্শন করেন। যখন তোমার কিছু হারিয়ে যায় এবং তুমি ওটা প্রাপ্তির জন্যে যার নিকট প্রার্থনা কর তখন যিনি তোমাকে তা পৌঁছিয়ে দেন ও তুমি তা পেয়ে যাও। যদি দুর্ভিক্ষ হয়, আর তুমি তার নিকট প্রার্থনা কর তবে তিনি মুষলধারে আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন।” লোকটি বললোঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমাকে কিছু উপদেশ দিন!” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বলেনঃ “কাউকেও খারাপ বলো না, পুণ্যের কোন কাজকে তুচ্ছ জ্ঞান করো না যদিও সেই কাজ মুসলমানের সাথে হাসিমুখে মিলিত হওয়া হয় এবং নিজের বালতি হতে কোন পিপাসার্তকে এক ঢাকে পানি পান করানোও হয়। আর স্বীয় লুঙ্গীকে পায়ের গোছার অর্ধেক পর্যন্ত রাখবে। এটা স্বীকার না করলে খুব জোর পায়ের গিঁঠ পর্যন্ত লটকাবে। এর চেয়ে নীচে লটকানো হতে বেঁচে থাকবে। কেননা, এটা ফখর ও গর্ব। আল্লাহ তাআলা এটা অপছন্দ করেন। (এ হাদীসটি মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত হয়েছে)
অন্য একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, লোকটির নাম ছিল জাবির ইবনে সালীম হাজীমী (রাঃ)। তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট গমন করি, ঐ সময় তিনি চাদর পরিহিত অবস্থায় বসেছিলেন যার প্রান্ত তাঁর পায়ের উপর পড়েছিল। আমি (তার পাশে উপবিষ্ট লোকেদেরকে) জিজ্ঞেস করিঃ তোমাদের মাঝে আল্লাহর রাসূল (সঃ) কে? আমার এ প্রশ্নের উত্তরে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সঃ) নিজের দিকে ইঙ্গিত করেন। আমি তখন বলি, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি একজন গ্রাম্য লোক। দ্রতার কোন জ্ঞান আমার নেই। আমাকে আহকামে ইসলামের কিছু শিক্ষা দান করুন! তিনি বললেনঃ “কোন ছোট পুণ্যকেও তুচ্ছ জ্ঞান করো না যদিও তা মুসলমান ভাই-এর সাথে সচ্চরিত্রতার সাথে সাক্ষাৎ করা হয় এবং নিজের বালতি হতে পানি প্রার্থীর পাত্রে কিছু পানি দিয়ে দেয়াও হয়। যদি কেউ তোমার ব্যাপারে কিছু জেনে তোমাকে দোষারোপ করে ও তোমাকে গালি দেয় তবে তুমি তার ব্যাপারে কিছু জেনে তাকে দোষারোপ করো না এবং তাকে গালি দিয়ো না। তাহলে তুমি পুরস্কার লাভ করবে এবং তার স্কন্ধে পাপের বোঝা চেপে যাবে। গিঁঠের নীচে কাপড় লটকানো হতে তুমি বেঁচে থাকবে। কেননা, এটা অহংকার, যা আল্লাহ তাআলার নিকট অপছন্দনীয়। আর কাউকেও কখনো তুমি গালি দেবে না।” এ কথা শোনার পর হতে আজ পর্যন্ত আমি কোন মানুষকে এমন কি কোন জন্তুকেও গালি দেইনি।
আব্দুল্লাহ ইবনে আবি সালেহ্ (রঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রোগাক্রান্ত হলে হযরত তাউস (রাঃ) আমাকে দেখতে আসেন। আমি তখন তাঁকে বলিঃ হে আবু আবদির রহমান (রঃ)! আমার জন্যে দু'আ করুন! তিনি তখন আমাকে বলেনঃ “তুমি নিজেই তোমার জন্যে দু'আ কর। কেননা, আল্লাহ তা'আলা আর্তের আহ্বানে সাড়া দিয়ে থাকেন যখন সে তাঁকে ডাকে। আর তিনি বিপদ-আপদ দূরীভূত করেন।” (এটা ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
অহাব ইবনে মুনাব্বাহ (রঃ) বলেনঃ আমি পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবে পড়েছি যে, আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “আমার মর্যদার শপথ! যে ব্যক্তি আমার উপর নির্ভর করে ও আমাকে করজোড়ে ধরে, আমি তাকে তার বিরুদ্ধচারীদের খপ্পর হতে রক্ষা করি। আমি তাকে অবশ্যই রক্ষা করি যদিও আসমান, যমীন ও সমস্ত সৃষ্টজীব তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আমার উপর ভরসা করে এবং আমার নিকট আশ্রয় প্রার্থী হয় না, আমি তাকে তার নিরাপদে চলাফেরা অবস্থাতেই ইচ্ছা করলে যমীনে ধ্বসিয়ে দেই এবং তাকে কোন প্রকারের সাহায্য করি না।”
হাফিয ইবনে আসাকির (রঃ) একটি খুবই বিস্ময়কর ঘটনা স্বীয় কিতাবে বর্ণনা করেছেন। ঘটনাটি এই যে, একটি লোক বলে, আমি লোকদেরকে আমার খচ্চরের উপর সওয়ার করিয়ে দামেশক হতে যাবদান শহরে যাওয়া-আসা করতাম এবং এই ভাড়ার উপর আমার জীবিকা নির্বাহ হতো। এভাবে একদিন একটি লোককে আমি খচ্চরের উপর সওয়ার করিয়ে নিয়ে যাত্রা শুরু করি। চলতে চলতে এমন এক জায়গায় পৌছি যেখানে দুটি পথ ছিল। লোকটি বললোঃ “এই পথে চলো।” আমি বললামঃ আমি তো এই পথ চিনি না। আমি যে পথটি চিনি সেটাই সোজা পথ। লোকটি বললোঃ “আমি যে পথের কথা বলছি সে পথেই চলো। আমার এ পথ ভালরূপে চেনা আছে। এটাই খুব কাছের পথ।” তার কথার উপর বিশ্বাস করে আমি ঐ পথেই খচ্চরকে চালিত করলাম। অল্পদূর গিয়েই আমি দেখলাম যে, আমরা একটি জনহীন অরণ্যে এসে পড়েছি। সেখানে রাস্তার কোন লেশমাত্র নেই। অত্যন্ত ভয়াবহ জঙ্গল। চতুর্দিকে মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। আমি তো অত্যন্ত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লাম। লোকটি আমাকে বললোঃ “খচ্চরের লাগাম টেনে ধর। এখানে আমার নামবার প্রয়োজন আছে। তার কথামত আমি খচ্চরটির লাগাম টেনে ধরলাম। সে নেমে পড়লো এবং স্বীয় পরিহিত কাপড় ঠিক ঠাক করে নিয়ে ছুরি বের করলো এবং আমাকে আক্রমণ করতে উদ্যত হলো। আমি তখন সেখান হতে দ্রুত বেগে পালাতে লাগলাম। সে আমার পশ্চাদ্ধাবন করলো এবং ধরে ফেললো। তাকে আমি কসম দিতে শুরু করলাম। কিন্তু সে মোটেই ভ্রুক্ষেপ করলো না। তখন আমি তাকে বললামঃ তুমি আমার খচ্চরটি এবং আমার কাছে যা কিছু রয়েছে সবই নিয়ে নাও এবং আমাকে ছেড়ে দাও। সে বললোঃ “এগুলোতে আমার হয়েই গেছে। আসল
কথা, আমি তোমাকে জীবিত ছেড়ে দিতে চাই না। আমি তখন তাকে আল্লাহর ভয় দেখালাম এবং আখিরাতের শাস্তির উল্লেখ করলাম। কিন্তু এটা তার উপর মমাটেই ক্রিয়াশীল হলো না। সে আমাকে হত্যা করার উপর অটল থাকলো। এখন আমি সম্পূর্ণ নিরাশ হয়ে গেলাম এবং মৃত্যুর জন্যে প্রস্তুত হলাম। আমি তার নিকট আবেদন করলামঃ আমাকে দুই রাকআত নামায পড়ার সময় দাও! সে বললোঃ “আচ্ছা, তাড়াতাড়ি পড়ে নাও।” আমি তখন নামায শুরু করলাম। কিন্তু আল্লাহর শপথ! আমার মুখ দিয়ে কুরআনের একটি অক্ষরও বের হচ্ছিল হাত বুকের উপর রেখে আতংকিত অবস্থায় শুধু দাঁড়িয়েই ছিলাম। সে তাড়াহুড়া করছিল। ঘটনাক্রমে হঠাৎ আমার মুখে এ আয়াতটি উচ্চারিত হলোঃ (আরবি)
অর্থাৎ “বরং তিনি, যিনি আর্তের আহ্বানে সাড়া দেন যখন সে তাকে ডাকে, এবং বিপদ-আপদ দূরীভূত করেন।” এ আয়াতটি আমার মুখে উচ্চারিত হওয়া মাত্রই আমি দেখি যে, জঙ্গলের মধ্য হতে একজন অশ্বারোহী দ্রুত অশ্ব চালনা করে বর্শা হাতে আমাদের দিকে আসছেন। তিনি মুখে কিছু উচ্চারণ না করেই ঐ ডাকাতটির পেটে বর্শা ঢুকিয়ে দেন যা তার পেটের মধ্য দিয়ে পার হয়ে যায়। সে তৎক্ষণাৎ মৃত্যুমুখে পতিত হয়। অশ্বারোহী ফিরে যেতে উদ্যত হন। আমি তখন তার পা জড়িয়ে ধরে বলিঃ আল্লাহর ওয়াস্তে বলুন, আপনি কে? তিনি উত্তরে বললেনঃ “আমি তারই প্রেরিত দূত যিনি আশ্রয়হীন, আর্ত ও অসহায়ের দুআ ককূল এবং বিপদ-আপদ দূরীভূত করে থাকেন।” আমি তখন আল্লাহ তাআলার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলাম এবং সেখান হতে আমার খচ্চর ও আসবাবপত্রসহ নিরাপদে ফিরে আসলাম।”
এ ধরনের আর একটি ঘটনা এই যে, মুসলমানদের এক সেনাবাহিনী এক যুদ্ধে কাফিরদের নিকট পরাজিত হয়ে প্রত্যাবর্তন করছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন একজন বড়ই দানশীল ও সৎ লোক। তার দ্রুতগামী ঘোড়াটি হঠাৎ থেমে যায়। ঐ দরবেশ লোকটি বহুক্ষণ চেষ্টা করলেন, কিন্তু ঐ ঘোড়াটি একটি কদমও উঠালো না। শেষে অপারগ হয়ে ঘোড়াটিকে লক্ষ্য করে আফসোস করে তিনি বলেনঃ “তুমি তো বেঁকে বসলে। অথচ এইরূপ সময়ের জন্যেই আমি তোমার খিদমত করেছিলাম এবং তোমাকে অত্যন্ত ভালবেসে লালন-পালন করেছিলাম!” সাথে সাথে আল্লাহ তা'আলা ঘোড়াটিকে বাক-শক্তি দান করলেন। সে বললোঃ আমার থেমে যাওয়ার কারণ এই যে, আপনি আমার জন্যে যে ঘাস ও দানা সহিসের হাতে সমর্পণ করতেন, ওর মধ্য হতে সে কিছু কিছু চুরি করে নিতে। আমাকে সে খুব কমই খেতে দিতে এবং আমার উর যুলুম করতো।” ঘোড়ার এ কথা শুনে ঐ সৎ ও আল্লাহভীরু লোকটি ওকে বললেনঃ “এখন তুমি চলতে থাকো। আমি আল্লাহকে সামনে রেখে তোমার সাথে ওয়াদা করছি যে, এখন থেকে আমি সদা-সর্বদা তোমাকে নিজের হাতে খাওয়াবো।” মনিবের এ কথা শোনা মাত্রই ঘোড়াটি দ্রুত গতিতে চলতে শুরু করলো এবং তাঁকে নিরাপদ জায়গায় পৌছিয়ে দিলো। ওয়াদা অনুযায়ী লোকটি ঘোড়াটিকে নিজের হাতেই খাওয়াতে থাকলেন। জনগণ তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি কোন এক লোকের নিকট ঘটনাটি বর্ণনা করলেন। তখন সাধারণভাবে তার খ্যাতি চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়লো এবং জনগণ এ ঘটনা শুনবার জন্যে দূর-দূরান্ত থেকে তাঁর নিকট আসতে লাগলো। রোমক বাদশাহ এ খবর পেয়ে কোন রকমে এই দরবেশ লোকটিকে তার শহরে আনয়নের ইচ্ছা করলো। বহু চেষ্টা করেও কিন্তু সে সফলকাম হলো না। অবশেষে সে একটি লোককে পাঠালো যে, সে যেন কোন রকম কৌশল অবলম্বন করে তাকে তার কাছে পৌছিয়ে দেয়। প্রেরিত লোকটি পূর্বে মুসলমান ছিল, কিন্তু পরে মুরতাদ (ধর্মত্যাগী) হয়ে গিয়েছিল। সে সম্রাটের নির্দেশক্রমে দরবেশ লোকটির নিকট আসলো এবং নিজের মুসলমান হওয়ার কথা প্রকাশ করলো। সে তাওবা করতঃ অত্যন্ত সৎ সেজে গিয়ে তাঁর নিকট থাকতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত সে আল্লাহর ঐ অলীর নিকট বেশ বিশ্বাসভাজন হয়ে গেল। তাকে সৎ ও দ্বীনদার বলে বিশ্বাস করে তিনি তার সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করলেন এবং তার চলাফেরা করতে লাগলেন। সে তার উপর পূর্ণভাবে নিজের প্রভাব বিস্তার করে তাকে তার বাহ্যিক দ্বীনদারীর প্রতারণার ফাঁদে ফেলে দিলো। অতঃপর সে সম্রাটের নিকট খবর পৌছালো যে, সে যেন অমুক সময় একজন অসীম সাহসী বীর পুরুষকে সমুদ্রের তীরে পাঠিয়ে দেয়। সে তাঁকে (দরবেশকে) নিয়ে সেখানে পৌছে যাবে। অতঃপর ঐ বীর পুরুষের সাহায্যে তাকে গ্রেফতার করতঃ (ম্রাটের) নিকট পৌছিয়ে দেবে। অতঃপর সে দরবেশকে প্রতারণা করে নিয়ে চললো এবং ঐ জায়গাতেই পৌছিয়ে দিলো ।
হঠাৎ ঐ (সাহসী) লোকটি আত্মপ্রকাশ করলো এবং ঐ মহান ব্যক্তিকে আক্রমণ করলো। আর এদিক থেকে এই মুরতাদ লোকটিও আক্রমণ চালালো। তখন ঐ পুণ্যবান লোকটি আকাশের দিকে দৃষ্টি উঠিয়ে প্রার্থনা করলেনঃ “হে আল্লাহ! এ লোকটি আমাকে আপনার নাম করে ধোকা দিয়েছে। এখন আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যে, আপনি যেভাবেই চান আমাকে এ দু'জন হতে রক্ষা করুন!” তৎক্ষণাৎ দু'টি হিংস্র জন্তু জঙ্গল হতে দৌড়িয়ে আসলো এবং ঐ দুই ব্যক্তিকে আক্রমণ করে তাদেরকে টুকরো টুকরো করে দিলো। অতঃপর তারা ফিরে গেল। আর আল্লাহর ঐ নেককার বান্দা নিরাপদে সেখান হতে ফিরে আসলেন।
আল্লাহ তাআলা স্বীয় করুণার মাহাত্ম্য বর্ণনা করার পর বলেনঃ তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন। একজন একজনের পিছনে আসতে রয়েছে। ক্রমান্বয়ে এটা চলতেই আছে। যেমন মহান আল্লাহ্ বলেনঃ (আরবি)
অর্থাৎ “যদি তিনি চান তবে তোমাদেরকে এখান হতে ধ্বংস করে দিবেন এবং অন্যদেরকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন যেমন তোমাদেরকে অন্যদের স্থলাভিষিক্ত করেছেন!” (৬: ১৩৩) অন্য আয়াতে আছেঃ (আরবি)
অর্থাৎ “তিনি ঐ আল্লাহ যিনি তোমাদেরকে পৃথিবীর প্রতিনিধি বানিয়েছেন এবং তোমাদের এককে অপরের উপর মর্যাদা দান করেছেন।” (৬: ১৬৫) হযরত আদম (আঃ)-কেও খলীফা বা প্রতিনিধি বলা হয়েছে, এটাও এই হিসেবেই যে, তাঁর সন্তানরা একে অপরের স্থলাভিষিক্ত হবে। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবি)
অর্থাৎ “স্মরণ কর, যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদেরকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করছি।” (২: ৩০) এ আয়াতের তাফসীরে এ ব্যাপারে সব কিছু বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এখানকার এই আয়াতেরও ভাবার্থ এটাই যে, একের পরে এক, এক যুগের পরে দ্বিতীয় যুগ এবং এক কওমের পরে অপর কওম প্রতিনিধিত্ব করবে।
সুতরাং এটা হলো আল্লাহ তা'আলার ক্ষমতা এবং এতে মাখলুকের কল্যাণ রয়েছে। কারণ তিনি ইচ্ছা করলে সবকেই একই সাথে সৃষ্টি করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে এই নিয়ম রেখেছেন যে, একজন মারা যাবে এবং আর একজন জন্মগ্রহণ করবে। তিনি হযরত আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করেছেন এবং তার থেকে তাঁর বংশাবলী ছড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি এমন এক পন্থা রেখেছেন যে, যেন দুনিয়াবাসীদের জীবিকার পথ সংকীর্ণ না হয়। অন্যথায় হয়তো সমস্ত মানুষ একই সাথে হলে তাদেরকে পৃথিবীতে খুবই সংকীর্ণতার সাথে জীবন অতিবাহিত করতে হতো। আর একের দ্বারা অপরকে কষ্ট পৌছতত। সুতরাং বর্তমান পদ্ধতি আল্লাহ তা'আলার নিপুণতারই পরিচায়ক। সবারই জন্ম, মৃত্যু এবং আগমন ও প্রস্থানের সময় তাঁর নিকট নির্ধারিত রয়েছে। প্রত্যেকটাই তাঁর অবগতিতে আছে। কিছুই তাঁর দৃষ্টির অগোচরে নেই। তিনি এমনই একটা দিন আনয়নকারী যেই দিনে সবকেই একত্রিত করবেন এবং তাদের কার্যাবলীর বিচার করবেন। সেই দিন তিনি পাপ ও পুণ্যের প্রতিদান প্রদান করবেন। মহিমান্বিত আল্লাহ তাঁর ক্ষমতার বর্ণনা দেয়ার পর প্রশ্ন করছেন ? এসব কাজ করতে পারে এমন অন্য কেউ আছে কি? অর্থাৎ অন্য কারোই এসব কাজের কোন ক্ষমতা নেই। তাদের ক্ষমতা যখন নেই তখন তারা ইবাদতেরও যোগ্য হতে পারে না। কিন্তু মানুষ উপদেশ অতি সামান্যই গ্রহণ করে থাকে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings