Surah An Naml Tafseer
Tafseer of An-Naml : 21
Saheeh International
I will surely punish him with a severe punishment or slaughter him unless he brings me clear authorization."
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
২০-২১ নং আয়াতের তাফসীর
হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর সেনাবাহিনীর মধ্যে হুহু গণতকারের কাজ। করতো। পানি কোথায় আছে তা সে বলতে পারতো। যমীনের নীচের পানি সে তেমনই দেখতে পেতো যেমন যমীনের উপরের জিনিস মানুষ দেখতে পায়। যখন হযরত সুলাইমান (আঃ) জঙ্গলে থাকতেন তখন পানি কোথায় আছে তা তিনি হুহুকে জিজ্ঞেস করতেন। তখন হুদহু বলে দিতো যে, অমুক অমুক জায়গায় পানি আছে ও এতোটা নীচে আছে ইত্যাদি। এরূপ সময় হযরত সুলাইমান (আঃ) জ্বিনদেরকে হুকুম করে কূপ খনন করিয়ে নিতেন। এইভাবে একদিন তিনি এক জঙ্গলে ছিলেন এবং পানির খোঁজ নেয়ার জন্যে পাখীগুলোর সন্ধান নেন। ঘটনাক্রমে ঐ সময় হুদহুদ উপস্থিত ছিল না। তাকে দেখতে না পেয়ে হযরত সুলাইমান (আঃ) বলেনঃ “আমি আজ হুহুকে দেখতে পাচ্ছি না। সে কি পাখীদের মধ্যে কোন জায়গায় লুকিয়ে রয়েছে বলেই আমার চোখে পড়ছে না, না আসলেই সে অনুপস্থিত রয়েছে?”
একদা হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট এই তাফসীর শুনে নাফে ইবনে আরযাক খারেজী প্রতিবাদ করে বসে। এই বাজে উক্তিকারী লোকটি প্রায়ই হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর কথার প্রতিবাদ করতো। সে বললোঃ “হে ইবনে আব্বাস (রাঃ)! আপনি তো আজ হেরে গেলেন। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ “এটা তুমি কেন বলছো?” উত্তরে সে বললোঃ “আপনি বলছেন যে, হুহু যমীনের নীচের পানি দেখতে পেতো। কিন্তু কি করে এটা সত্য হতে পারে? ছেলেরা জাল বিছিয়ে ওকে মাটি দ্বারা ঢেকে ওর উপর দানা নিক্ষেপ করে হুদহুদ পাখীকে শিকার করে থাকে। যদি সে যমীনের নীচের পানি দেখতে পায় তবে যমীনের উপরের জাল সে দেখতে পায় না কেন?” তখন হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) উত্তর দেনঃ “তুমি মনে করবে যে, ইবনে আব্বাস (রাঃ) নিরুত্তর হয়ে গেছেন, এরূপ ধারণা আমি না করলে তোমার প্রশ্নের জবাব দেয়া প্রয়োজন মনে করতাম না। জেনে রেখো যে, যখন মৃত্যু এসে যায় তখন চক্ষু অন্ধ হয়ে যায় এবং জ্ঞান লোপ পায়।” একথা শুনে নাফে নিরুত্তর হয়ে যায় এবং বলে“আল্লাহর কসম! আর আমি আপনার কথার কোন প্রতিবাদ করবো না।”
হযরত আবদুল্লাহ বারাযী (রঃ) অলীউল্লাহ লোক ছিলেন। প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার নিয়মিতভাবে রোযা রাখতেন। আশি বছর তাঁর বয়স হয়েছিল। তাঁর এক চক্ষু কানা ছিল। সুলাইমান ইবনে যায়েদ (রঃ) তাঁকে তাঁর একটি চোখ নষ্ট হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি তা বলতে অস্বীকার করেন। কিন্তু তিনি তাঁর পিছনে লেগেই থাকেন। মাসের পর মাস কেটে যায়, কিন্তু না তিনি কারণ বলেন এবং না তিনি তাঁর পিছন ছাড়েন। শেষে অসহ্য হয়ে তিনি বলেনঃ “তাহলে শোন- দু’জন খুরাসানী দামেশকের পার্শ্ববর্তী বারযাহ নামক একটি শহরে আমার নিকট আগমন করে এবং আমাকে অনুরোধ করে যে, আমি যেন তাদেরকে বারযাহ উপত্যকায় নিয়ে যাই। আমি তখন তাদেরকে সেখানে নিয়ে যাই। তারা অঙ্গার ধানিকাসমূহ বের করলো এবং তাতে চন্দন কাঠ জ্বালিয়ে দিলো। এর ফলে সাৱা উপত্যকা সুগন্ধে ভরপুর হয়ে গেল এবং চতুর্দিক হতে সেখানে সাপ আসতে লাগলো। কিন্তু তারা বেপরোয়াভাবে সেখানে বসেই থাকলো। কোন সাপের দিকেই তারা হৃক্ষেপও করলো না। অল্পক্ষণ পরে একটি সাপ আসলো যা এক হাত বরাবর ছিল। তার চক্ষুগুলো সোনার ন্যায় জ্বলজ্বল করছিল। এতে তারা খুবই খুশী হলো এবং বললোঃ “আমরা আল্লাহ তা'আলার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যে, আমাদের এক বছরের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।” অতঃপর সাপটিকে ধরে তারা ওর চোখে শলাকা ঘুরিয়ে দিলো এবং এরপর নিজেদের চোখে ঐ শলাকা ঘুরালো। আমি তখন তাদেরকে বললামঃ আমার চোখেও এই শলাকা ঘুরিয়ে দাও। তারা অস্বীকার করলো। কিন্তু আমার পীড়াপীড়িতে শেষে সম্মত হলো এবং আমার চোখে শলাকা ঘুরিয়ে দিলো। তখন আমি তাকিয়ে দেখি তো যমীন যেন আমার নিকট একটি শীশার মত মনে হতে লাগলো। যমীনের উপরের জিনিস আমি যেমন দেখছিলাম, ঠিক তেমনই যমীনের নীচের জিনিসও দেখতে পাচ্ছিলাম। অতঃপর তারা আমাকে বললোঃ “আচ্ছা, আপনি আমাদের সাথে কিছু দূর চলেন। আমি তখন তাদের কথামত তাদের সাথে চলতে থাকলাম। যখন আমরা জনপদ হতে বহু দূরে চলে গেলাম তখন তারা দুজন আমাকে দু’দিক থেকে ধরে নিলো এবং একজন আমার চোখে অঙ্গুলী ভরে দিয়ে আমার চোখ উঠিয়ে নিলো এবং তা ফেলে দিলো। তারপর আমাকে তারা বেঁধে সেখানে রেখে চলে গেল। ঘটনাক্রমে সেখান দিয়ে এক যাত্রীদল যাচ্ছিল। তারা আমাকে ঐ অবস্থায় দেখে আমার প্রতি দয়াপরবশ হয়ে আমাকে বন্ধনমুক্ত করলো। অতঃপর আমি সেখান হতে চলে আসলাম। আমার চক্ষু নষ্ট হওয়ার কাহিনী এটাই।” (এ ঘটনাটি হাফিয ইবনে আসাকের (রাঃ) বর্ণনা করেছেন)
হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর ঐ হুহুদের নাম ছিল আম্বার। তিনি বললেনঃ “যদি সত্যিই সে অনুপস্থিত থেকে থাকে তবে অবশ্যই আমি তাকে কঠিন শাস্তি দিবো অথবা যবাহ করেই ফেলবো। আর যদি সে তার অনুপস্থিতির উপযুক্ত কারণ দর্শাতে পারে তবে তাকে ক্ষমা করা হবে।”
কিছুক্ষণ পর হুদহুদ এসে গেল। জীব-জন্তুগুলো তাকে বললোঃ “আজ তোমার রক্ষা নেই। বাদশাহ সুলাইমান (আঃ) তোমাকে হত্যা করে ফেলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।” হুদহুদ তখন তাদেরকে বললোঃ “বাদশাহ কি শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন বল দেখি?” তারা তা বর্ণনা করলো। তখন সে খুশী হয়ে বললোঃ “তাহলে আমি রক্ষা পেয়ে যাবো।” হযরত মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, সে তার মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করতো বলেই আল্লাহ তা'আলা তাকে রক্ষা করেছেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings