Surah Ash Shu'ara Tafseer
Tafseer of Ash-Shu'ara : 84
Saheeh International
And grant me a reputation of honor among later generations.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
৮৩-৮৯ নং আয়াতের তাফসীর
এটা হলো হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর প্রার্থনা যে, তাঁর প্রতিপালক যেন তাকে হুকম দান করেন। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, ওটা (হু) হলো ইলম বা জ্ঞান। ইকরামা (রঃ) বলেন যে, ওটা হলো আকল। মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, ওটা হলো কুরআন। আর সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, ওটা হলো নবুওয়াত। হযরত ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ তা'আলার নিকট দু'আ করেন যে, তিনি যেন তাকে এগুলো দান করে দুনিয়া ও আখিরাতে সৎ লোকদের সাথে মিলিত করেন। যেমন নবী (সঃ) জীবনের শেষ সময়ে বলেছিলেন (আরবি) অর্থাৎ “হে আল্লাহ! উচ্চ ও মহান বন্ধুর সাথে আমাকে মিলিত করুন।” একথা তিনি তিন বার বলেছিলেন।”
হাদীসে নিম্নরূপে দু'আও রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আমাকে মুসলমানরূপে জীবিত রাখুন, ইসলামের অবস্থায় মৃত্যু দান করুন এবং সৎ লোকদের সাথে মিলিত করুন, এমন অবস্থায় যে, না হয় কোন অপমান এবং না হয় কোন পরিবর্তন।”
এরপর তিনি আরো দু'আ করেনঃ ‘আমাকে আমার পরবর্তীদের মধ্যে যশস্বী করুন। লোকেরা যেন আমার পরে আমাকে স্মরণ করে এবং কাজে কর্মে আমার অনুসরণ করে। সত্যি আল্লাহ তা'আলা তাঁর পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে তাঁর আলোচনা বাকী রাখেন। প্রত্যেকেই তার উপর সালাম পাঠিয়ে থাকে। আল্লাহ তা'আলা তাঁর কোন সৎ বান্দার পুণ্য বৃথা যেতে দেন না। একটি জগত রয়েছে যার যবান তাঁর প্রশংসা কীর্তনে সদা সিক্ত থাকে। দুনিয়াতেও আল্লাহ তা'আলা তাঁকে উচ্চ মর্যাদা ও কল্যাণ দান করেন। সাধারণতঃ প্রত্যেক মাযহাব ও মিল্লাতের লোক তার সাথে মহব্বত রাখে।
তিনি আরো দু'আ করেনঃ “হে আমার প্রতিপালক! আখিরাতে আমাকে সুখময় জান্নাতের অধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন।”
তিনি আরো প্রার্থনা করেনঃ “হে আল্লাহ! আমার পথভ্রষ্ট পিতাকেও আপনি ক্ষমা করে দিন। পিতার জন্যে এই ক্ষমা প্রার্থনা করা তাঁর একটি ওয়াদার কারণে ছিল। কিন্তু যখন তাঁর কাছে এটা প্রকাশ হয়ে পড়ে যে, তাঁর পিতা ছিল আল্লাহর শত্রু এবং সে কুফরীর উপরই মৃত্যু বরণ করেছে তখন তার প্রতি তাঁর মহব্বত দূর হয়ে যায় এবং এরপর তিনি তার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করাও ছেড়ে দেন।
হযরত ইবরাহীম (আঃ) ছিলেন বড়ই পরিষ্কার অন্তরের অধিকারী এবং খুবই সহনশীল। আমাদেরকেও যেখানে হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর রীতি নীতির উপর চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেখানে এটাও বলা হয়েছে যে, এ ব্যাপারে তাঁর অনুসরণ করা চলবে না।
এরপর হযরত ইবরাহীম (আঃ) প্রার্থনায় বলেনঃ “হে আল্লাহ! আমাকে পুনরুত্থান দিবসে লাঞ্ছিত করবেন না।” অর্থাৎ যেই দিন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সমস্ত মাখলুককে জীবিত করে একই ময়দানে দাঁড় করানো হবে সেই দিন যেন তাঁকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করা না হয়।
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “কিয়ামতের দিন হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর তাঁর পিতার সাথে সাক্ষাৎ হবে। তিনি দেখবেন যে, তাঁর পিতার চেহারা লাঞ্ছনায় ও ধূলো-বালিতে আচ্ছন্ন রয়েছে।” (ইমাম বুখারী (রঃ) এ আয়াতের তাফসীরে এ হাদীসটি আনয়ন করেছেন)
অন্য রিওয়াইয়াতে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতেই বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “হযরত ইবরাহীম (আঃ) তাঁর পিতার সাথে সাক্ষাৎ করবেন। ঐ সময় তিনি বলবেনঃ “হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমার সাথে ওয়াদা করেছেন যে, পুনরুত্থান দিবসে আমাকে লাঞ্ছিত করবেন না।” তখন আল্লাহ তা'আলা বলবেনঃ “জেনে রেখো যে, জান্নাত কাফিরদের জন্যে সম্পূর্ণরূপে হারাম।”
আর একটি রিওয়াইয়াতে রয়েছে যে, পিতাকে ঐ অবস্থায় দেখে হযরত ইবরাহীম (আঃ) বলবেনঃ “তুমি আমার নাফরমানী করো না একথা কি আমি তোমাকে বলেছিলাম না?” পিতা উত্তরে বলবেঃ “আচ্ছা, আর নাফরমানী করবো।” তখন তিনি আল্লাহ তা'আলার নিকট আরয করবেন: “হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমার সাথে ওয়াদা করেছিলেন যে, এই দিন আমাকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করবেন না। কিন্তু আজ এর চেয়ে বড় অপমান আমার জন্যে আর কি হতে পারে যে, আমার পিতা আপনার রহমত হতে দূরে রয়েছে?” উত্তরে আল্লাহ তা'আলা বলবেনঃ “হে আমার বন্ধু! আমি তো জান্নাত কাফিরদের জন্যে হারাম করে দিয়েছি।” অতঃপর তিনি বলবেনঃ “হে ইবরাহীম (আঃ)! দেখো তো, তোমার পায়ের নীচে কি?” তখন তিনি দেখবেন যে, এক কুৎসিত বেজি কাদাপানি মাখা অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওর পা ধরে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। প্রকৃতপক্ষে ওটাই হবে তার পিতা যার ঐরূপ আকৃতি করে তার নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছিয়ে দেয়া হবে।
মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোন কাজে আসবে না। ঐ দিন মানুষ যদি তার ক্ষতিপূরণ মাল-ধন দ্বারা আদায় করতে চায়, এমনকি যদি দুনিয়া ভর্তি সোনাও প্রদান করে তবুও তা নিষ্ফল হবে। ঐ দিন উপকার দানকারী হবে ঈমান, আন্তরিকতা এবং শিরক ও মুশরিকদের প্রতি অসন্তুষ্টি। যাদের অন্তর পরিষ্কার হবে, অর্থাৎ অন্তর শিরক ও কুফরীর ময়লা আবর্জনা হতে পাক পবিত্র থাকবে, যারা আল্লাহ তা'আলাকে সত্য জানবে, কিয়ামতকে নিশ্চিত রূপে বিশ্বাস করবে, পুনরুত্থানের প্রতি ঈমান রাখবে, আল্লাহর একত্ববাদকে স্বীকার করবে এবং তদনুযায়ী আমল করবে, যাদের অন্তর কপটতা ইত্যাদি রোগ হতে মুক্ত থাকবে ও অন্তর ঈমান, ইখলাস ও নেক আকীদায় পূর্ণ থাকবে, যারা বিদআতকে ঘৃণা করবে এবং সুন্নাতের প্রতি মহব্বত রাখবে, সেই তারাই উপকৃত হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings