Surah Ash Shu'ara Tafseer
Tafseer of Ash-Shu'ara : 57
Saheeh International
So We removed them from gardens and springs
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
৫২-৫৯ নং আয়াতের তাফসীর
হযরত মূসা (আঃ) তাঁর নবুওয়াতের বহু যুগ ফিরাউন ও তার লোকদের মধ্যে কাটিয়ে দেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার নিদর্শনাবলী ও দলীল প্রমাণাদি তাদের উপর খুলে দেন। কিন্তু তবুও তাদের মাথা নীচু হলো না, অহংকার কমলো না এবং বদদেমাগীর মধ্যে কোনই পার্থক্য দেখা দিলো না। অতঃপর তাদের অবস্থা এমন স্তরে পৌঁছে গেল যে, তাদের উপর আল্লাহর আযাব এসে পড়ার আর কিছুই বাকী থাকলো না। এমতাবস্থার মহান আল্লাহ হযরত মূসা (আঃ)-এর উপর অহী করলেনঃ “আমার নির্দেশ মোতাবেক তুমি বানী ইসরাঈলকে নিয়ে রাতারাতি মিসর হতে বেরিয়ে পড়।” এই সময় বানী ইসরাঈল কিবতীদের নিকট হতে বহু অলংকার ধার স্বরূপ গ্রহণ করে এবং চাঁদ ওঠার সময় তারা চুপচাপ মিসর হতে প্রস্থান করে। মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, ঐ রাত্রে চন্দ্রগ্রহণ হয়েছিল। হযরত মূসা (আঃ) পথে জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ “হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কবর কোথায় আছে?” একজন বৃদ্ধা তাঁর কবরটি দেখিয়ে দেয়। হযরত মূসা (আঃ) হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর তাবূতটি (শবাধারটি) সাথে নেন। কথিত আছে যে, স্বয়ং তিনিই তাবূতটি উঠিয়ে নিয়েছিলেন। হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর অসিয়ত ছিল যে, বানী ইসরাঈল এখান দিয়ে গমনের সময় যেন তাঁর তাবৃক্টটি সাথে নিয়ে যায় ।
হযরত আবু মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) একজন বেদুঈনের বাড়ীতে অতিথি হন। সে তার খুব খাতির সম্মান করে। ফিরবার সময় রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বললেনঃ “মদীনায় গেলে তুমি আমার সাথে সাক্ষাৎ করবে। কিছুদিন পর ঐ বেদুঈন রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বলেনঃ “কিছু চাও।" সে বললোঃ “হাওদাসহ আমাকে একটি উষ্ট্র দিন এবং'দুগ্ধবতী একটি ছাগী দিন।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বলেনঃ “বড়ই আফসোস যে, তুমি বানী ইসরাঈলের বুড়ীর মত চাওনি।” সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! বানী ইসরাঈলের বুড়ীর ঘটনাটি কি?” উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, যখন হযরত মূসা (আঃ) বানী। ইসরাঈলকে নিয়ে পথ চলছিলেন তখন তিনি পথ ভুলে যান। বহু চেষ্টা করেও তিনি পথ ঠিক করতে পারলেন না। তিনি তখন লোকদেরকে একত্রিত করে জিজ্ঞেস করলেন, “ব্যাপার কি? আমরা পথ ভুল করলাম কেন? বানী ইসরাঈলের আলেমগণ তখন বললেনঃ ‘ব্যাপার এই যে, হযরত ইউসুফ (আঃ) তাঁর মৃত্যুর সময় আমাদের কাছে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, যখন আমরা মিসর হতে চলে যাবো তখন যেন তার তাতটিও (শবাধারটিও) এখান থেকে আমাদের সাথে নিয়ে যাই।” হযরত মুসা (আঃ) তখন জিজ্ঞেস করলেনঃ “হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কবর কোথায় আছে তা তোমাদের কার জানা আছে?” সবাই উত্তরে বললোঃ “আমরা কেউ এটা জানি না। আমাদের মধ্যে শুধুমাত্র একজন বুড়ী এটা জানে।” হযরত মূসা (আঃ) তখন লোক মারফত বুড়ীকে বলে পাঠালেন যে, সে যেন হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কবরটি তাঁকে দেখিয়ে দেয়। বুড়ী বললোঃ “হ্যাঁ, আমি দেখিয়ে দিতে পারি, তবে প্রথমে আমার প্রাপ্য আমাকে দিতে হবে।” হযরত মূসা (আঃ) তাকে বললেনঃ “তুমি কি চাও?” সে উত্তরে বললোঃ “জান্নাতে আমি আপনার সাথে থাকতে চাই।” হ্যরত মূসা (আঃ)-এর কাছে বুড়ীর এই দাবী খুবই ভারীবোধ হয়। তৎক্ষণাৎ হযরত মূসা (আঃ)-এর কাছে অহী আসলোঃ “হে মূসা (আঃ)! তুমি ঐ বুড়ীর শর্ত মেনে নাও।” বুড়ী হযরত মূসা (আঃ)-কে একটি বিলের নিকট নিয়ে গেল যার পানির রঙ পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল। বুড়ী বললোঃ “এর পানি উঠিয়ে ফেলার নির্দেশ দিন।” তার কথামত বিলের পানি বের করে দেয়া হলে মাটি দেখা গেল। বুড়ী তখন বললোঃ “এ জায়গা খনন করতে বলন।” মাটি খনন করলে কবরটি প্রকাশিত হয়ে পড়লো। তখন হযরত মূসা (আঃ) তাবূতটি সঙ্গে নিয়ে নিলেন। অতঃপর তিনি পুনরায় পথ চলতে শুরু করলেন। এবার রাস্তা পরিষ্কারভাবে দেখা গেল এবং তিনি সঠিক পথ পেয়ে গেলেন।” (এ হাদীসটি ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন। কিন্তু হাদীসটি খুবই গরীব বা দুর্বল। সত্যের কাছাকাছি এটাই যে, হাদীসটি মাওকুফ, অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কথাই এটা নয়। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন)
এ লোকেগুলো তো তাদের পথে চলতে থাকলো। আর ওদিকে ফিরাউন ও তার লোকেরা সকালে দেখলো যে, চৌকিদার, গোলাম ইত্যাদি কেউই নেই। সুতরাং তারা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে গেল এবং রাগে লাল হয়ে গেল। যখন তারা জানতে পারলো যে, রাতে বানী ইসরাঈলের সবাই পালিয়ে গেছে তখন তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়লো। ফিরাউন তৎক্ষণাৎ সৈন্য জমা করতে লাগলো। সকলকে একত্রিত করে সে তাদেরকে বললোঃ “বানী ইসরাঈল তো ক্ষুদ্র একটি দল। তারা অতি তুচ্ছ ও নগণ্য। সদা-সর্বদা তারা আমাদেরকে দুঃখ কষ্ট দিতে রয়েছে। তাদের ব্যাপারে আমাদেরকে সদা সতর্ক থাকতে হচ্ছে। (আরবি) -এর কিরআতে এই অর্থ হবে। পূর্বযুগীয় গুরুজনদের একটি দল (আরবি) পড়েছেন। তখন অর্থ হবেঃ “আমরা অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত রয়েছি এবং ইচ্ছা করেছি যে, তাদেরকে তাদের ঔদ্ধত্যপনার স্বাদ গ্রহণ করাবো। তাদের সকলকে এক সাথে ঘিরে ফেলে কচুকাটা করবো।” আল্লাহর কি মহিমা যে, এটা তাদের উপরই ফিরে আসলো। ফিরাউন তার কওম ও লোক-লকরসহ একই সময়ে ধ্বংস হয়ে গেল। (তার উপর ও তার অনুসারীদের উপর আল্লাহর লানত বর্ষিত হোক)।
মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ পরিণামে আমি ফিরাউন গোষ্ঠীকে বহিস্কৃত করলাম তাদের উদ্যানরাজি ও ধন-ভাণ্ডার হতে এবং ধন-ভাণ্ডার ও সুরম্য সৌধমালা হতে। তাদের ব্যাপারে এরূপই ঘটেছিল এবং বানী ইসরাঈলকে আমি এ সমুদয়ের অধিকারী করেছিলাম। যারা অত্যন্ত নিম্ন শ্রেণীর লোক বলে গণ্য হতো তাদেরকে আমি চরম সম্মানিত বানিয়ে দিলাম। এরূপ করারই আমার ইচ্ছা ছিল এবং আমার ইচ্ছা আমি পূর্ণ করলাম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings