Surah Al Furqan Tafseer
Tafseer of Al-Furqan : 53
Saheeh International
And it is He who has released [simultaneously] the two seas, one fresh and sweet and one salty and bitter, and He placed between them a barrier and prohibiting partition.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৫১-৫৪ নং আয়াতের তাফসীর:
এখানে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মর্যাদা ও আল্লাহ তা‘আলার অন্যান্য আরো কিছু গুণাবলীর কথা বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে সম্বোধন করে বলেন, যদি আমি ইচ্ছা করতাম তাহলে প্রত্যেক জাতির নিকট একজন একজন করে রাসূল প্রেরণ করতাম কিন্তু তা না করে তোমাকেই সকলের জন্য প্রেরণ করেছি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَآ أَرْسَلْنٰكَ إِلَّا كَآفَّةً لِّلنَّاسِ بَشِيْرًا وَّنَذِيْرًا وَّلٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُوْنَ)
“আমি তোমাকে সমগ্র মানব জাতির প্রতি সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।” (সূরা সাবা ৩৪:২৮)
এবং তিনি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিষেধ করেছেন কাফির-মুশরিকদের অনুসরণ করতে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ وَلَا تُطِعْ مِنْهُمْ اٰثِمًا أَوْ كَفُوْرًا)
“অতএব তুমি তোমার প্রতিপালকের নির্দেশের জন্য ধৈর্য্যধারণ কর এবং তাদের মধ্যকার পাপী অথবা কাফিরের আনুগত্য কর না।” (সূরা দাহর ৭৬:২৪) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(يٰٓأَيُّهَا النَّبِيُّ اتَّقِ اللّٰهَ وَلَا تُطِعِ الْكٰفِرِيْنَ وَالْمُنٰفِقِيْنَ ط إِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلِيْمًا حَكِيْمًا)
“হে নাবী! ভয় কর আল্লাহ তা‘আলাকে এবং অনুসরণ করবে না কাফিরদের ও মুনাফিকদের। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা মহাজ্ঞানী, উৎকৃষ্ট।” (সূরা আহযাব ৩৩:১)
এবং তিনি আরও নির্দেশ দিয়েছেন যে, যেমনভাবে তোমাকে সমগ্র মানুষের নিকট রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছি ও কুরআন দিয়ে সম্মানিত করেছি, অনুরূপভাবে তুমি কুরআনের মাধ্যমে তাদের মাঝে ব্যাপকভাবে তাবলীগী কাজ চালিয়ে যাও। এ সূরাটি মক্কায় নাযিল হয় যা সশস্ত্র জিহাদের নির্দেশের পূর্বে ছিল। তাই কুরআনের মাধ্যমে জিহাদ করার উদ্দেশ্য হল কুরআনের বিধি-বিধান প্রচার করা, কুরআনের দিকে মানুষকে আহ্বান করা।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ক্ষমতার মধ্যে একটি ক্ষমতার কথা বর্ণনা করেছেন, তা হল সমুদ্র বিজ্ঞান। তিনি পাশাপাশি দু’প্রকার সাগরকে বাহ্যিক কোন পার্টিশন ছাড়াই প্রবাহিত করেছেন। একটির পানি মিষ্টি ও অন্যটি লবণাক্ত, কিন্তু একটির পানি অন্যটির সাথে মিশ্রিত হয় না। مَرَجَ শব্দের অর্থ স্বাধীন ছেড়ে দেয়া। এ কারণেই চারণভূমিকে مرج বলা হয়। সেখানে জীব জন্তু স্বাধীনভাবে বিচরণ করে ও ঘাস খায়। عَذْبٌ মিঠা পানিকে বলা হয়। فُرَاتٌ অর্থ সুপেয়, مِلْحٌ অর্থ লোনা এবং أُجَاجٌ এর অর্থ তিক্ত, বিস্বাদ। بَرْزَخٌ শব্দের অর্থ আড়াল ও প্রতিবন্ধক। আধুনিক বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে যে, যেখানে দুটি ভিন্ন সমুদ্র এসে একত্রিত হয় সেখানে উভয়ের মধ্যে একটি প্রতিবন্ধক বা অন্তরায় থাকে। এ অন্তরায় দুটি সমুদ্রকে বিভক্ত করে, ফলে প্রত্যেক সমুদ্রের নিজস্ব তাপমাত্রা, লবণাক্ততা এবং ঘনত্ব অক্ষুণœ থাকে। কিন্তু যখন এক সমুদ্র থেকে পানি অন্য সমুদ্রে প্রবেশ করে তখন সে তার নিজস্ব পানির বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ফেলে। এভাবে দুই ধরণের পানির মধ্যে পরিবর্তনমূলক একীভূতকারী প্রতিবন্ধক হিসেবে এ অন্তরায় কাজ করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَجَعَلَ بَيْنَ الْبَحْرَيْنِ حَاجِزًا)
“দুই দরিয়ার মধ্যে সৃষ্টি করেছেন অন্তরায়” (সূরা নামল ২৭:৬১) এ অন্তরায় জিব্রাল্টার, ভূমধ্যসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগরের মিলনস্থলসহ আরো অনেক স্থানে লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু কুরআন যখন মিষ্টি পানি ও লবণাক্ত পানির মধ্যে বিভক্তকারী অন্তরায় সম্পর্কে বলে তখন ঐ অন্তরায়ের সাথে নিষেধকারী প্রতিবন্ধকতার কথাই বলে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَجَعَلَ بَیْنَ الْبَحْرَیْنِ حَاجِزًاﺚ ءَاِلٰھٌ مَّعَ اللہِﺚ بَلْ اَکْثَرُھُمْ لَا یَعْلَمُوْنَ)
“ও দুই দরিয়ার মধ্যে সৃষ্টি করেছেন অন্তরায়; আল্লাহ তা‘আলার সঙ্গে অন্য কোন মা‘বূদ আছে কি? বরং তাদের অনেকেই জানে না।” (সূরা নামল ২৭:৬১)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর আরো একটি ক্ষমতার কথা বর্ণনা করেছেন যে, তিনি মানুষকে পানি হতে সৃষ্টি করেছেন। এবং তিনি তাদের মধ্যে বৈবাহিক ও রক্ত সম্পর্ক স্থাপন করে দিয়েছেন। পিতা-মাতার দিক থেকে যে আত্মীয়তা সম্পর্ক হয় তাকে نسب বলা হয় আর স্ত্রীর দিক থেকে যে সম্পর্ক হয় তাকে صهر বলা হয়। মানুষ সৃষ্টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা সূরা মু’মিনূনের ১২ নং আয়াতে করা হয়েছে।
অতএব আল্লাহ তা‘আলা সকল বিষয়ের ওপর ক্ষমতাবান, অন্য কেউ নয়। তাই আমাদের উচিত সকলকে বাদ দিয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁরই ইবাদত করা।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলাই সকল বিষয়ের ওপর ক্ষমতাবান।
২. মানুষকে পানি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
৩. কোন কাফির-মুশরিকের অনুসরণ করা যাবে না।
৪. মানুষের মাঝে তাবলীগের কাজ করতে হবে হিকমতের সাথে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings