Surah Al Furqan Tafseer
Tafseer of Al-Furqan : 10
Saheeh International
Blessed is He who, if He willed, could have made for you [something] better than that - gardens beneath which rivers flow - and could make for you palaces.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৭-১৪ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতগুলোতে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রিসালাতকে অস্বীকারকারী কাফিরদের একটি ভ্রান্ত ধারণার খণ্ডন করা হয়েছে। তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে বলতন এটা কেমন রাসূল যে খাওয়া দাওয়া করে, বাজারে যায়, আমাদের মতই সাধারণ মানুষ। তাদের বিশ্বাস ছিল যে, রাসূল হবেন ফেরেশতা বা যিনি রাসূল হবেন তার সাথে একজন ফেরেশতা থাকবেন, অথবা তার অনেক ধন-ভাণ্ডার থাকবে বা বিশাল বাগান থাকবে ফলে মানুষ তা থেকে খেতে পারবে। এ সম্পর্কে সূরা মু’মিনূনের ৩৩-৩৪ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা আলোচনা করেছেন। সুতরাং যখন মুহাম্মাদের এসব কিছুই নেই, তাই তা জানা সত্ত্বেও যে মুহাম্মাদের অনুসরণ করবে সে জাদুগ্রস্ত ব্যক্তি, মুহাম্মাদ তাকে জাদু করেছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের এ বিশ্বাসকে খণ্ডন করে বলেন: শুধু মুহাম্মাদ নয় বরং তার পূর্বে যত রাসূল প্রেরণ করেছি সবাই মানুষ ছিল এবং খাবার খেত ও বাজারে যেত। অত্র সূরার ২০ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَآ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِيْنَ إِلَّآ إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُوْنَ الطَّعَامَ وَيَمْشُوْنَ فِي الْأَسْوَاقِ ط وَجَعَلْنَا بَعْضَكُمْ لِبَعْضٍ فِتْنَةً ط أَتَصْبِرُوْنَ ج وَكَانَ رَبُّكَ بَصِيْرًا)
“তোমার পূর্বে আমি যে সকল রাসূল প্রেরণ করেছি তারা সকলেই তো আহার করত ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করত। হে মানুষ! আমি তোমাদের মধ্যে পরস্পরকে পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে কি? আর তোমার প্রতিপালক সমস্ত কিছু দেখেন।”
এরূপ অসংখ্য আয়াত রয়েছে যা প্রমাণ করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন মানুষ, অন্যান্য মানুষের মত খাবার ও প্রয়োজন পূরণের জন্য তাঁকেও বাজারে গমন করতে হত। সুতরাং নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাটির তৈরি একজন মানুষ, পার্থক্য হল তাঁকে আল্লাহ তা‘আলা রিসালাত দান করেছেন, তাঁর কাছে ওয়াহী আসে; আমাদের কাছে আসে না।
অর্থাৎ তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার জন্য তারা কিরূপ উদারহণ পেশ করে থাকে! নাবী এরূপ হবে না, এরূপ হবে না, এরূপ হবে ইত্যাদি। আল্লাহ বলছেন, তাদের এসব কথার জন্য তারা পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে, তারা নাজাতের কোন পথ পাবে না। তারা যে বাগানের কথা বলে আল্লাহ তা‘আলা চাইলে তোমাকে এর চেয়ে উত্তম বাগান দিতে পারেন, যার তলদেশ দিয়ে নাদী-নালা প্রবাহিত হবে এবং বিশাল অট্টালিকা দিতে পারেন। এরপর আল্লাহ বলছেন, তারা এসব কথা বলে সত্য অনুসন্ধানের জন্য নয় এবং সত্যের অনুসরণ করার জন্যও নয় বরং তা প্রকাশ পায় হিংসার কারণে এবং সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার জন্য। এমনকি তারা কিয়ামত দিবসকেও অস্বীকার করে বসেছে। তাদের সম্পর্কেই আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি এদের জন্যই জাহান্নাম প্রস্তুত করে রেখেছি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“যখন বলা হয়: নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলার প্রতিশ্র“তি সত্য এবং কিয়ামত এতে কোন সন্দেহ নেই, তখন তোমরা বলে থাক: আমরা জানি না কিয়ামত কী; আমরা মনে করি এটি একটি ধারণা মাত্র এবং আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত নই। তাদের মন্দ কর্মগুলো তাদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়বে এবং যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করত তা তাদেরকে পরিবেষ্টন করবে। আর বলা হবে: আজ আমি তোমাদেরকে ভুলে যাব যেমন তোমরা এই দিবসের সাক্ষাতকে ভুলে গিয়েছিলে। তোমাদের আশ্রয়স্থল জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না।” (সূরা জাসিয়া ৪৫:৩২-৩৪)
এ সমস্ত লোকেদেরকে জাহান্নাম যখন দেখতে পাবে তখন সে চিৎকার ও গর্জন করতে থাকবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِذَآ أُلْقُوْا فِيْهَا سَمِعُوْا لَهَا شَهِيْقًا وَّهِيَ تَفُوْرُ لا - تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ ط كُلَّمَآ أُلْقِيَ فِيْهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَآ أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيْرٌ)
“যখন তারা তাতে (জাহান্নামে) নিক্ষিপ্ত হবে তখন তারা তার গর্জনের শব্দ শুনতে পাবে, আর তা টগবগ করে ফুটবে। অত্যধিক ক্রোধে তা ফেটে পড়ার উপক্রম হবে।” (সূরা মুলক ৬৭:৭-৮)
অতঃপর যখন তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে তখন তারা শুধু মৃত্যু কামনা করবে। কিন্তু তখন তাদেরকে বলা হবে আজ এক মৃত্যুকে ডেকে কোন লাভ নেই বরং বহু মৃত্যুকে ডাক অর্থাৎ তারা সেখানে শুধু শাস্তি ভোগ করবে আর কখনো মৃত্যুবরণ করবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. প্রত্যেক যুগেই মানুষের মধ্য হতেই রাসূল প্রেরণ করা হয়েছে, কোন ফেরেশতা বা জিনকে নয়। সুতরাং খাদ্য খাওয়া ও বাজারে গমন করাটা রাসূল না হওয়ার জন্য কোন দলীল হতে পারে না।
২. একই কথার ওপর অটল না থাকলে তার ওপর বিশ্বাস আসে না বা এ কথা মিথ্যা বলে গৃহিত হয়। যেমন কাফিররা রাসূলকে কখনো কবি, কখনো জাদুকর, কখনো পাগল বলত তাদের এসব কথা প্রমাণ করে যে, তারা ছিল মিথ্যুক।
৩. আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করলেই যাকে যা কিছু খুশি দিতে পারেন। এতে প্রমাণিত হয়ে যায় যে, আল্লাহ তা‘আলাই সকল ক্ষমতার অধিকারী, অন্য কেউ নয়।
৪. কিয়ামত সংঘটিত হবেই।
৫. জান্নাত, জাহান্নাম বিদ্যমান রয়েছে।
৬. জাহান্নামের চিৎকার ও গর্জন থাকবে।
৭. মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন মাটির তৈরি মানুষ এবং রাসূল, নূরের তৈরি নন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings