Surah An Nur Tafseer
Tafseer of An-Nur : 61
Saheeh International
There is not upon the blind [any] constraint nor upon the lame constraint nor upon the ill constraint nor upon yourselves when you eat from your [own] houses or the houses of your fathers or the houses of your mothers or the houses of your brothers or the houses of your sisters or the houses of your father's brothers or the houses of your father's sisters or the houses of your mother's brothers or the houses of your mother's sisters or [from houses] whose keys you possess or [from the house] of your friend. There is no blame upon you whether you eat together or separately. But when you enter houses, give greetings of peace upon each other - a greeting from Allah, blessed and good. Thus does Allah make clear to you the verses [of ordinance] that you may understand.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
এই আয়াতে যে দোষ না হওয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে সে সম্পর্কে হযরত আতা (রঃ) প্রমুখ গুরুজনতো বলেন যে, এর দ্বারা অন্ধ ও খোঁড়াদের জিহাদে যোগদান না করা বুঝানো হয়েছে। যেমন সূরায়ে আল-ফাতহুতে রয়েছে। সুতরাং এ ধরনের লোক যদি জিহাদে গমন না করে তবে তাদের শরীয়ত সম্মত ওজর থাকার কারণে তাদের কোন অপরাধ হবে না। সূরায়ে বারাআতে রয়েছেঃ “যারা দুর্বল, যারা পীড়িত এবং যারা অর্থ সাহায্যে অসমর্থ, তাদের কোন অপরাধ নেই, যদি আল্লাহ ও রাসূল (সঃ)-এর প্রতি তাদের অবিমিশ্র অনুরাগ থাকে। যারা সৎকর্মপরায়ণ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন হেতু নেই; আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। তাদেরও কোন অপরাধ নেই যারা তোমার নিকট বাহনের জনে আসলে তুমি বলেছিলেঃ তোমাদের জন্যে কোন বাহন আমি পাচ্ছি না, তারা অর্থ ব্যয়ে অসামর্থ্য জনিত দুঃখে অশ্রু বিগলিত নেত্রে ফিরে গেল।” তাহলে এই আয়াতে তাদের জন্যে অনুমতি রইলো যে, তাদের কোন অপরাধ নেই।
কতকগুলো লোক ঘৃণা করে তাদের সাথে খেতে বসতো না। শরীয়ত এসব অজ্ঞতাপূর্ণ অভ্যাস উঠিয়ে দেয়। হযরত মুজাহিদ (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, জনগণ এইরূপ লোকদেরকে নিজেদের পিতা, ভ্রাতা, ভগ্নী প্রভৃতি নিকটতম আত্মীয়দের নিকট পৌঁছিয়ে দিতো, যেন তারা সেখানে আহার করে। এ লোকগুলো এটাকে দূষণীয় মনে করতো যে, তাদেরকে অপরের বাড়ী নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তখন এই আয়াত অবতীর্ণ হয়।
সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, মানুষ যখন তার ভ্রাতা, ভগ্নী প্রভৃতির বাড়ী যেতো এবং স্ত্রীলোকেরা কোন খাদ্য তার সামনে হাযির করতো তখন সে তা খেতো না এই মনে করে যে, সেখানে বাড়ীর মালিক তো নেই। তখন আল্লাহ তা'আলা ঐ খাদ্য খেয়ে নেয়ার অনুমতি দেন। এটা যে বলা হয়েছে যে, তোমাদের নিজেদের জন্যেও কোন দোষ নেই, এটা তো প্রকাশমানই ছিল, কিন্তু এর উপর অন্যগুলোর সংযোগ স্থাপনের জন্যে এর বর্ণনা দেয়া হয়েছে এবং এর পরবর্তী বর্ণনা এই হুকুমের ব্যাপারে সমান। পুত্রদের বাড়ীর হুকুমও এটাই, যদিও শব্দে এর বর্ণনা দেয়া হয়নি। কিন্তু আনুষঙ্গিকভাবে এটাও এসে যাচ্ছে। এমনকি এই আয়াত দ্বারাই দলীল গ্রহণ করে কেউ কেউ বলেছেন যে, পুত্রের মাল পিতার মালেরই স্থলবর্তী। মুসনাদ ও সুনান গ্রন্থে কয়েকটি সনদে হাদীস এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তুমি ও তোমার মাল তোমার পিতার (-ই মালিকানাধীন)।” আর যাদের নাম এসেছে তাদের দ্বারা দলীল গ্রহণ করে কেউ কেউ বলেছেন যে, নিকটতম আত্মীয়দের একের খাওয়া পরা অপরের উপর ওয়াজিব। যেমন ইমাম আবু হানীফা (রঃ) ও ইমাম আহমাদ (রঃ)-এর প্রসিদ্ধ উক্তি এটাই।
আল্লাহ পাকের যার চাবী তোমাদের মালিকানায় রয়েছে’ -এই উক্তি দ্বারা গোলাম ও প্রহরীকে বুঝানো হয়েছে যে, তারা তাদের মনিবের মাল হতে প্রয়োজন হিসেবে প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী খেতে পারে। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন জিহাদে গমন করতেন তখন প্রত্যেকেরই মনের বাসনা এটা হতো যে, সে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে যদি যেতে পেতো! যাওয়ার সময় তারা নিজেদের বিশিষ্ট বন্ধুদেরকে চাবি দিয়ে যেতো এবং তাদেরকে বলে যেতো: “প্রয়োজনবোধে তোমরা আমাদের মাল থেকে খেতে পারবে। আমরা তোমাদেরকে অনুমতি দিলাম। কিন্তু এরপরেও এরা নিজেদেরকে আমানতদার মনে করে এবং এই মনে করে যে, তারা হয়তো ভোলা মনে অনুমতি দেয়নি। পানাহারের কোন জিনিসকে তারা স্পর্শই করতো না। তখন এই হুকুম নাযিল হয়।
এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ তোমরা তোমাদের বন্ধুদের গৃহেও খেতে পার, যখন তোমরা জানবে যে, তারা এটা খারাপ মনে করবে না এবং তাদের কাছে এটা কঠিনও ঠেকবে না। কাতাদা (রঃ) বলেনঃ “যখন তুমি তোমার বন্ধুর বাড়ীতে যাবে তখন তার অনুমতি ছাড়াই তুমি তার খাদ্য হতে খেতে পারবে।”
অতঃপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তোমরা একত্রে আহার কর অথবা পৃথক পৃথকভাবে আহার কর তাতে তোমাদের জন্যে কোন অপরাধ নেই।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, যখন (আরবি) অর্থাৎ “হে মুমিনগণ! তোমরা অন্যের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না।” (৪: ২৯) এই আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন সাহাবীগণ (রাঃ) পরস্পর বলাবলি করেনঃ “পানাহারের জিনিসগুলোও তো মাল, সুতরাং এটাও আমাদের জন্যে হালাল নয় যে, আমরা একে অপরের সাথে আহার করি। কাজেই তারা ওটা থেকেও বিরত হন। ঐ সময় এই আয়াত অবতীর্ণ হয়।
অনুরূপভাবে পৃথক পৃথকভাবে পানাহারকেও তারা খারাপ মনে করতেন। কেউ সঙ্গী না হওয়া পর্যন্ত তারা খেতেন না। এজন্যে আল্লাহ পাক এই হুকুমের মধ্যে দুটোরই অনুমতি দিলেন, অর্থাৎ অন্যদের সাথে খেতেও এবং পৃথক পৃথকভাবে খেতেও। বানু কিনানা গোত্রের লোক বিশেষভাবে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তারা ক্ষুধার্ত থাকতো, তথাপি সঙ্গে কাউকেও না পাওয়া পর্যন্ত খেতো না। সওয়ারীর উপর সওয়ার হয়ে তারা সাথে আহারকারী সঙ্গীর খোঁজে বেরিয়ে পড়তো। সুতরাং আল্লাহ তা'আলা একাকী খাওয়ার অনুমতি দান সম্পর্কীয় আয়াত অবতীর্ণ করে অজ্ঞতাযুগের ঐ কঠিন প্রথাকে দূর করে দেন।
এ আয়াতে যদিও একাকী খাওয়ার অনুমতি রয়েছে, কিন্তু এটা স্মরণ রাখার বিষয় যে, লোকদের সাথে মিলিত হয়ে খাওয়া নিঃসন্দেহে উত্তম। আর এতে বেশী বরকতও রয়েছে।
ওয়াহশী ইবনে হারব (রাঃ) তাঁর পিতা হতে এবং তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, একটি লোকে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলেঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি খাই, কিন্তু পরিতৃপ্ত হই না (এর কারণ কি?)।” উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বলেনঃ “ সম্ভবতঃ তুমি পৃথকভাবে একাকী খেয়ে থাকো। তোমরা খাদ্যের উপর একত্রিত হও এবং আল্লাহর নাম নিয়ে খেতে শুরু কর, তোমাদের খাদ্যে বরকত দেয়া হবে।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
হযরত উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমরা সবাই একত্রিতভাবে খাও, পৃথক পৃথকভাবে খেয়ো না। কেননা, বরকত জামাআতের উপর রয়েছে।” (এ হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
এরপর শিক্ষা দেয়া হচ্ছেঃ যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি অভিবাদন স্বরূপ সালাম করবে।
হযরত জাবির (রাঃ) বলেনঃ “যখন তোমরা ঘরে প্রবেশ করবে তখন আল্লাহ তা'আলার শেখানো বরকতময় উত্তম সালাম বলবে। আমি তো পরীক্ষা করে দেখেছি যে, এটা সরাসরি বরকতই বটে।”
ইবনে তাউস (রঃ) বলেনঃ “তোমাদের যে কেউ বাড়ীতে প্রবেশ করবে সে যেন বাড়ীর লোকদেরকে সালাম দেয়।”
হযরত আতা (রঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়ঃ “এটা কি ওয়াজিব?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “কেউ যে এটাকে ওয়াজিব বলেছেন তা আমার জানা নেই। তবে আমি এটা খুবই পছন্দ করি যে, যখনই তোমরা বাড়ীতে প্রবেশ করবে তখন সালাম দিয়ে প্রবেশ করবে। আমি তো এটা কখনো ছাড়িনি। তবে কোন সময় ভুলে গিয়ে থাকি। সেটা অন্য কথা।” মুজাহিদ (রঃ) বলেনঃ “যখন মসজিদে যাবে তখন বলবেঃ (আরবি) অর্থাৎ আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর উপর শান্তি বর্ষিত হোক।' যখন নিজের বাড়ীতে প্রবেশ করবে তখন নিজের ছেলে মেয়েদেরকে সালাম দিবে এবং যখন এমন কোন বাড়ীতে যাবে যেখানে কেউই নেই তখন বলবেঃ(আরবি) অর্থাৎ আমাদের উপর ও আল্লাহর সৎ বান্দাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।' এটাই হুকুম দেয়া হচ্ছে। এইরূপ সময়ে তোমাদের সালামের জবাব আল্লাহর ফেরেশতারা দিয়ে থাকেন।"
হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সঃ) আমাকে পাঁচটি অভ্যাসের অসিয়ত করেছেন। তিনি বলেছেনঃ “হে আনাস (রাঃ)! তুমি পূর্ণভাবে অযু কর, তোমার বয়স বৃদ্ধি পাবে। আমার উম্মতের যার সাথেই তোমার সাক্ষাৎ হবে তাকেই সালাম দেবে, এর ফলে তোমার পুণ্য বেড়ে যাবে। যখন তুমি তোমার বাড়ীতে প্রবেশ করবে তখন তোমার পরিবারের লোককে সালাম দেবে, তাহলে তোমার বাড়ীর কল্যাণ বৃদ্ধি পাবে। চাশতের নামায পড়তে থাকবে, তোমাদের পূর্ববর্তী দ্বীনদার লোকদের এই নীতিই ছিল। হে আনাস (রাঃ)! ছোটদেরকে স্নেহ করবে এবং বড়দেরকে সম্মান করবে, তাহলে কিয়ামতের দিন তুমি আমার বন্ধুদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (এ হাদীসটি হাফিয আবু বকর আল বাযযার (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
মহান আল্লাহ বলেনঃ এটা আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণ ও পবিত্র। অর্থাৎ এটা হলো দু'আয়ে খায়ের যা আল্লাহর পক্ষ হতে তোমাদেরকে শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এটা কল্যাণময় ও পবিত্র।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ “আমি তাশাহ্হুদ তো আল্লাহর কিতাব হতেই গ্রহণ করেছি। আমি আল্লাহকে বলতে শুনেছিঃ (আরবি)
অর্থাৎ “যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম করবে অভিবাদন স্বরূপ যা আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র।” সুতরাং নামাযের তাশাহহুদ হলোঃ (আরবি)
অর্থাৎ কল্যাণময় অভিবাদন ও পবিত্র সালাত আল্লাহর জন্যে। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা'বুদ নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল। (হে নবী সঃ)! আপনার উপর শান্তি এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের উপর এবং আল্লাহর সৎ বান্দাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তারপর নামাযী ব্যক্তি নিজের জন্যে দু'আ করবে, অতঃপর সালাম ফিরাবে।” (এটা মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক (রঃ) বর্ণনা করেছেন। আবার সহীহ মুসলিমে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতেই মারফু’রূপে যা বর্ণিত আছে তা এর বিপরীত। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী)
অতঃপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ এইভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্যে তাঁর নির্দেশ বিশদভাবে বিবৃত করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার এবং জ্ঞান লাভ কর।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings