Surah Al Hajj Tafseer
Tafseer of Al-Hajj : 67
Saheeh International
For every religion We have appointed rites which they perform. So, [O Muhammad], let the disbelievers not contend with you over the matter but invite them to your Lord. Indeed, you are upon straight guidance.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৬৩-৬৯ নং আয়াতের তাফসীর:
أَلَمْ تَرَ শব্দটি الم تعلم অর্থে ব্যবহার হয়েছে। কারণ বৃষ্টি বর্ষণ চক্ষু দ্বারা দেখা গেলেও, যে আল্লাহ তা‘আলা তা বর্ষণ করেন তাঁকে জ্ঞান দিয়ে জানা যায়, চোখ দিয়ে দেখা যায় না। (আযওয়াউল বায়ান) অর্থাৎ হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তুমি কি জান না, আল্লাহ তা‘আলা আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করে জমিনে গাছ-পালা, তরু-লতা ইত্যাদি গজিয়ে সবুজ-শ্যামলে পরিণত করেন। মারা যাওয়ার পর মানুষকে আবার জীবিত হতে হবে তার এটি একটি বড় উপমা। মাটি শুকিয়ে ধু-ধু মরুভূমিতে পরিণত হয়ে যাওয়ার পর বৃষ্টির পানি দ্বারা যেমন জীবিত হয়, তেমনি মানুষ মরে গেলেও আবার আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে জীবিত হবে। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَأَحْيَيْنَا بِه۪ بَلْدَةً مَّيْتًا ط كَذٰلِكَ الْخُرُوْجُ)
“আমি বৃষ্টি দ্বারা জীবিত করি মৃত জমিনকে; এভাবেই পুনরুত্থান ঘটবে।” (সূরা ক্বাফ ৫০:১১) এরূপ অসংখ্য আয়াত রয়েছে যে, মানুষকে মৃত্যুর পর জীবিত করা হবে।
لَطِيْفٌ অর্থ সূক্ষ্মদর্শী, যিনি তার চোখ দ্বারা ছোট-বড় সব কিছু পুঙ্খানুপুঙ্খাভাবে দেখতে পান। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান রাখেন, সব কিছু দেখতে পান। অথবা এর অর্থ অনুগ্রহপরায়ণ। অর্থাৎ তিনি বান্দাদের প্রতি খুব অনুগ্রহ করেন, দয়া করেন।
(لَه۫ مَا فِي السَّمٰوٰتِ)
অর্থাৎ সৃষ্টির দিক থেকে, মালিকানার দিক থেকে এবং নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার দিক থেকে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই মালিক। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। অনেকে মনে করতে পারে যে, আল্লাহ তা‘আলা এসব সৃষ্টি করেছেন, তিনি এসব সৃষ্টির প্রতি মুখাপেক্ষী, আমাদের ইবাদতের মুখাপেক্ষী। না, আল্লাহ তা‘আলা কোন কিছুর মুখাপেক্ষী নন। তিনি সব কিছু থেকে অমুখাপেক্ষী, বরং সকল মাখলূক তাঁরই মুখাপেক্ষী। যেমন এসম্পর্কে সহীহ মুসলিমের ২৫৭৭ নং হাদীসে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে।
(بِإِذْنِه۪....سَخَّرَ لَكُمْ مَّا فِي الْأَرْضِ)
‘আল্লাহ তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন পৃথিবীতে যা কিছু আছে তৎসমুদয়কে এবং তাঁর নির্দেশে সমুদ্রে বিচরণশীল নৌযানসমূহকে’ যেমন জীবজন্তু, নদী-নালা, গাছ-পালা ও অন্যান্য অসংখ্য জিনিস যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়, সবই সৃষ্টি করে মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করে দিয়েছেন। এমনকি সমুদ্রে যে জাহাজ হাজার হাজার টন ওজনের জিনিস নিয়ে চলাচল করে তাও মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত। যেখানে মানুষ একটি পাথরের টুকরা পানির ওপর ভাসমান রাখতে পারে না সেখানে হাজার হাজার টন মালামাল নিয়ে জাহাজ চলাচল করে, নিশ্চয়ই এটা মানুষের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ ও কল্যাণ দান।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاٰيَةٌ لَّهُمْ أَنَّا حَمَلْنَا ذُرِّيَّتَهُمْ فِي الْفُلْكِ الْمَشْحُوْنِ - وَخَلَقْنَا لَهُمْ مِّنْ مِّثْلِه۪ مَا يَرْكَبُوْنَ - وَإِنْ نَّشَأْ نُغْرِقْهُمْ فَلَا صَرِيْخَ لَهُمْ وَلَا هُمْ يُنْقَذُوْنَ)
“আর তাদের জন্য একটি নিদর্শন এই যে, আমি তাদের সন্তান-সন্ততিকে বোঝাই নৌকায় আরোহণ করিয়েছি। এবং তাদের জন্য আমি এর অনুরূপ যানবাহন সৃষ্টি করেছি যাতে তারা আরোহণ করে। আর আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে ডুবিয়ে দিতে পারি, তখন কেউ তাদের আর্তনাদে সাড়া দেবে না এবং তাদেরকে উদ্ধারও করা হবে না।” (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪১-৪৩) এ সম্পর্কে সূরা নাহলের প্রথম দিকে আলোচনা করা হয়েছে।
(وَيُمْسِكُ السَّمَا۬ءَ أَنْ تَقَعَ....)
অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা চাইলে আকাশ পৃথিবীর ওপর ভেঙ্গে পড়বে। ফলে পৃথিবীর সমস্ত কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। আল্লাহ তা‘আলা মানুষের প্রতি দয়ালু ও ক্ষমাশীল বলে আকাশকে নিষেধ করেছেন যেন তা পড়ে না যায়।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يُمْسِكُ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضَ أَنْ تَزُوْلَا ৫ج وَلَئِنْ زَالَتَآ إِنْ أَمْسَكَهُمَا مِنْ أَحَدٍ مِّنْۭ بَعْدِه۫ ط إِنَّه۫ كَانَ حَلِيْمًا غَفُوْرًا)
“নিশ্চয়ই আল্লাহ আসমান ও জমিনকে স্থির রাখেন, যাতে তা টলে না যায়। যদি এরা টলে যায় তবে তিনি ছাড়া কে এদেরকে স্থির রাখবে? তিনি অতিশয় সহনশীল, পরম ক্ষমাশীল।” (সূরা ফাতির ৩৫:৪১) তবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছায় আকাশ ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে।
এ সম্পর্কে সূরা সাবার ৯ নং আয়াত এবং সূরা ফাতিরের ৪১ নং আয়াতে আলোচনা করা হবে ইনশা-আল্লাহ তা‘আলা।
(وَهُوَ الَّذِيْ أَحْيَاكُمْ....)
এ সম্পর্কে সূরা বাক্বারার ২৮ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি প্রত্যেক জাতির জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছি ইবাদত পদ্ধতি, যা তারা অনুসরণ করে থাকে। যার কিছু বিষয়ে একে অপরের হতে আলাদা। যেমন তাওরাত মূসা (عليه السلام)-এর উম্মাতের জন্য, ইঞ্জিল ঈসা (عليه السلام)-এর উম্মাতের জন্য এবং কুরআন হল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উম্মাতের জন্য শরীয়ত ও জীবন ব্যবস্থা। সুতরাং হে নাবী! এ কাফিররা যতই তর্ক-বিতর্ক করুক না কেন, তুমি ওদের তর্ক-বিবাদের কোনই পরোয়া করবে না। বরং তাদেরকে নিজ প্রতিপালকের দিকে আহ্বান করতে থাক। কারণ ‘সিরাতে মুস্তাকীম’-এ কেবল তুমিই প্রতিষ্ঠিত আছ, আর বাকী পূর্বের সমস্ত শরীয়ত এখন রহিত। এরপরও যদি তারা বাক-বিতণ্ডা করে তাহলে বলে দাও, তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে আল্লাহ তা‘আলা অবহিত আছেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার নানাবিধ নিদর্শন ও ক্ষমতার কথা জানলাম।
২. প্রত্যেক জাতির জন্য আল্লাহ তা‘আলা ইবাদত পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
৩. সত্যের ব্যাপারে বাক-বিতণ্ডা করা মূর্খতা ব্যতীত আর কিছুই নয়।
৪. পূর্বের নাবীদের সমস্ত ধর্ম রহিত হয়ে গেছে।
৫. আল্লাহ তা‘আলা বান্দার প্রতি অতিশয় দয়ালু ও ক্ষমাশীল।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings