Surah Al Hajj Tafseer
Tafseer of Al-Hajj : 5
Saheeh International
O People, if you should be in doubt about the Resurrection, then [consider that] indeed, We created you from dust, then from a sperm-drop, then from a clinging clot, and then from a lump of flesh, formed and unformed - that We may show you. And We settle in the wombs whom We will for a specified term, then We bring you out as a child, and then [We develop you] that you may reach your [time of] maturity. And among you is he who is taken in [early] death, and among you is he who is returned to the most decrepit [old] age so that he knows, after [once having] knowledge, nothing. And you see the earth barren, but when We send down upon it rain, it quivers and swells and grows [something] of every beautiful kind.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৫-৭ নং আয়াতের তাফসীর:
মৃত্যুর পর জীবিত হতে হবে তথা পুনরুত্থানকে সন্দেহ করে বা অস্বীকার করে এমন ব্যক্তিদেরকে উক্ত আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা সম্বোধন করে বলেছেন: তোমর যারা পুনরুত্থানকে অস্বীকার কর, তারা নিজেদের সৃষ্টির প্রক্রিয়া সম্পর্কে একটু চিন্তা করে দেখ তো; তোমরা কি ছিলে! তোমাদের শরীরের মূল উপাদান হল মাটি। তোমাদের আদি পিতা আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে মাটি হতে, তোমরা তো তারই সন্তান। পিতার পৃষ্ঠদেশ থেকে নির্গত শুক্রকীট ও মায়ের বক্ষদেশ হতে নির্গত ডিম্বানু একত্র করে মায়ের গর্ভে জমাট বাঁধা রক্ত আকারে রাখলাম, তারপর তা মাংসপিণ্ডে পরিণত করলাম, এরপর আস্তে আস্তে হাড় দিলাম অতঃপর চামড়া দিয়ে সারা শরীর ঢেকে দিলাম। তারপর মায়ের গর্ভে যতদিন আমার ইচ্ছা রাখলাম, সময় শেষে শিশু আকারে মায়ের গর্ভ থেকে বের করে আনলাম। এ হল তোমাদের সৃষ্টি প্রক্রিয়া, সুতরাং তোমরা কতই না দুর্বল।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَللّٰهُ الَّذِيْ خَلَقَكُمْ مِّنْ ضَعْفٍ ثُمَّ جَعَلَ مِنْۭ بَعْدِ ضَعْفٍ قُوَّةً ثُمَّ جَعَلَ مِنْۭ بَعْدِ قُوَّةٍ ضَعْفًا وَّشَيْبَةً ط يَخْلُقُ مَا يَشَا۬ءُ ج وَهُوَ الْعَلِيْمُ)
“আল্লাহ তিনি, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেন দুর্বল অবস্থায়, অতঃপর তিনি দুর্বলতার পর শক্তি দিয়েছেন, তারপর শক্তির পর পুনরায় দিয়েছেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।” (সূরা রূম ৩০:৫৪)
সুতরাং তোমরা তো কিছ্ইু ছিলে না। সেখান থেকে তোমাদের অস্তিত্ব দিয়েছি, তাহলে অস্তিত্বহীনতা থেকে আবার অস্তিত্ব দিতে পারব না? আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(أَلَيْسَ ذٰلِكَ بِقَادِرٍ عَلٰٓي أَنْ يُّحْيِيَ الْمَوْتٰي)
“তবুও কি তিনি মৃতকে পুনর্জীবিত করতে সক্ষম নন?” (সূরা কিয়ামাহ ৭৫:৪০) অবশ্যই, আল্লাহ পুনরায় সৃষ্টি করতে সক্ষম এবং এটা তাঁর জন্য প্রথমবারের তুলনায় অধিক সহজ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَهُوَ الَّذِيْ يَبْدَؤُا الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيْدُه۫ وَهُوَ أَهْوَنُ عَلَيْهِ)“
তিনি সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর তিনিই আবার তা পুনরাবৃত্তি করবেন এটা তার জন্য খুবই সহজ।” (সূরা রূম ৩০:২৭)
مُّخَلَّقَةٍ পূর্ণাকৃতি বলতে এমন ভ্রুণকে বুঝানো হয়েছে যার আকার-আকৃতি পরিপূর্ণ ও স্পষ্ট। এ রকম ভ্রুণের মাঝে রূহ ফুঁকে দেয়া হয়, আর وَّغَيْرِ مُخَلَّقَةٍ অপূর্ণাকৃতি বলতে এর বিপরীত, যে ভ্রুণ থেকে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এরূপ ভ্রুণ সময় হওয়ার আগেই গর্ভচ্যুত হয়ে যায়। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা মাতৃগর্ভের জন্য একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন। তিনি পর্যায়ক্রমে বলতে থাকেন, হে রব! এখন বীর্য-আকৃতিতে আছে, হে রব! এখন জমাট রক্তে পরিণত হয়েছে। হে রব! এখন মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা যখন তার সৃষ্টি পূর্ণ করতে চান তখন জিজ্ঞেস করেন: ছেলে, না মেয়ে? সৌভাগ্যবান, না দুর্ভাগা? রিযক ও বয়স কত? আল্লাহ তা‘আলার রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: তার মাতৃগর্ভে থাকতেই তা লিখে দেয়া হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৩১৮, ৩৩৩৩, সহীহ মুসলিম হা: ২৬৪৬)
অন্য বর্ণনায় এসেছে: তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টি (অর্থাৎ তার মূল উপাদান প্রথমে) ৪০ দিন, তার মায়ের গর্ভে শুক্ররূপে থাকে। অতঃপর ৪০ দিন লাল জমাট রক্ত পিণ্ডরূপে অবস্থান করে, তারপর ৪০ দিন মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়। তারপর আল্লাহ একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন। (সহীহ বুখারী হা: ৬৫৯৪)
(لِتَبْلُغُوْآ أَشُدَّكُمْ) অর্থাৎ যৌবনে পদার্পণ করে এবং সুন্দর রূপ ধারণ করে। কেউ কেউ যৌবনে পদার্পণ করার পূর্বেই মৃত্যু বরণ করে, আবার কেউ কেউ অতি বার্ধক্যে পৌঁছে যায়। তখন তার জ্ঞান-বুদ্ধিও লোপ পায় এবং সে শিশুর মত দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পূর্বের সমস্ত জ্ঞান সে হারিয়ে ফেলে। আর এগুলো মূলত আল্লাহ তা‘আলাই করে থাকেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(هُوَ الَّذِيْ خَلَقَكُمْ مِّنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ يُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوْآ أَشُدَّكُمْ ثُمَّ لِتَكُوْنُوْا شُيُوْخًا وَمِنْكُمْ مَّنْ يُّتَوَفّٰي مِنْ قَبْلُ وَلِتَبْلُغُوْآ أَجَلًا مُّسَمًّي وَّلَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ)
“তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি হতে, পরে শুক্রবিন্দু হতে, তারপর বের করেন শিশুরূপে, অতঃপর যেন তোমরা উপনীত হও যৌবনে, তারপর হও বৃদ্ধ।
তোমাদের মধ্যে কারো এর পূর্বেই মৃত্যু ঘটে এবং এটা এজন্য যে, তোমরা নির্ধারিত কালে পৌঁছে যাও এবং যাতে তোমরা অনুধাবন করতে পার।” (সূরা মু’মিন ৪০:৬৭)
(وَتَرَي الْأَرْضَ هَامِدَةً.....)
এটি মৃতকে পুনরায় জীবিত করার ব্যাপারে দ্বিতীয় আরো একটি উপমা, আর তা হল আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তুমি ভূমিকে শুষ্ক ও মৃত দেখ, কিন্তু বৃষ্টির পর তা কেমন সঞ্জীবিত শস্য-শ্যামল নানান প্রকৃতির উদ্ভিদ ও নানান ফল-ফসলে ভরে উঠে। এভাবেই আল্লাহ তা‘আলা তা‘আলা কিয়ামত দিবসে মানুষকে কবর থেকে উঠাবেন। যেমন হাদীসে এসেছে:
একজন সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন: হে আল্লাহ তা‘আলার রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহ তা‘আলা কিভাবে মৃতকে জীবিত করবেন? সৃষ্টি জগতের মধ্যে তার নির্দশন কী? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: তুমি কি এমন উপত্যকা অতিক্রম করেছ যা শুকনো ও মৃত? সে বলল: হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার জিজ্ঞেস করলেন: তুমি কি পরে তা সবুজ শ্যামল অবস্থায় দেখেছ? সে বলল: হ্যাঁ। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: এভাবেই আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে মৃত্যুর পর জীবিত করবেন। (আবূ দাঊদ হা: ৪৭৩১, ইবনু মাযাহ হা: ১৮০, হাসান)
এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(حَتّٰيٓ إِذَآ أَقَلَّتْ سَحَابًا ثِقَالًا سُقْنٰهُ لِبَلَدٍ مَّيِّتٍ فَأَنْزَلْنَا بِهِ الْمَا۬ءَ فَأَخْرَجْنَا بِه۪ مِنْ كُلِّ الثَّمَرٰتِ ط كَذٰلِكَ نُخْرِجُ الْمَوْتٰي لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنَ)
“এমনকি যখন তা ঘন মেঘ বহন করে তখন আমি তা নির্জীব ভূখণ্ডের দিকে চালনা করি, পরে তা হতে বৃষ্টি বর্ষণ করি, তৎপর তার দ্বারা সর্বপ্রকার ফল উৎপাদন করি। এভাবেই আমি মৃতকে জীবিত করি যাতে তোমরা শিক্ষা লাভ কর।” (সূরা আ‘রাফ ৭:৫৭)
এ সম্পর্কে সূরা হা-মীম সাজদাহ: ৩৯ নং আয়াতে আলোচনা রয়েছে।
অতএব কিয়ামত অবশ্যই সংঘটিত হবে, আল্লাহ মানুষকে পুনরায় জীবিত করে হাশরের ময়দানে একত্রিত করবেন, তারপর দুনিয়ার কর্মের হিসাব-নিকাশ নেবেন। এতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. পুনরুত্থান সম্ভব তার জ্বলন্ত প্রমাণ পেলাম। সুতরাং এতে কোন সন্দেহ নেই।
২. মানুষ সৃষ্টির প্রক্রিয়া জানতে পারলাম।
৩. কিয়ামত অবশ্যই সংঘটিত হবে, তা ঘটানো আল্লাহ তা‘আলার পক্ষে খুবই সহজ।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings