Surah Al Anbiya Tafseer
Tafseer of Al-Anbya : 44
Saheeh International
But, [on the contrary], We have provided good things for these [disbelievers] and their fathers until life was prolonged for them. Then do they not see that We set upon the land, reducing it from its borders? So it is they who will overcome?
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৪১-৪৭ নং আয়াতের তাফসীর:
এখানে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন: হে নাবী! মুশরিকরা যে তোমাকে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করছে সে কারণে তুমি মনঃক্ষুণ্ন হয়ো না, তোমার পূর্ববর্তী নাবীদেরকেও এরূপ ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করা হয়েছে। সুতরাং তুমি এদের এরূপ কথাবার্তা উপেক্ষা করে চল এবং ধৈর্য ধারণ কর যেমনভাবে ধৈর্য ধারণ করেছিল পূর্ববর্তী নাবী-রাসূলগণ। আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
وَلَقَدْ كُذِّبَتْ رُسُلٌ مِّنْ قَبْلِكَ فَصَبَرُوْا عَلٰي مَا كُذِّبُوْا وَأُوْذُوْا حَتّٰي أَتٰهُمْ نَصْرُنَا ج وَلَا مُبَدِّلَ لِكَلِمٰتِ اللّٰهِ ج وَلَقَدْ جَا۬ءَكَ مِنْ نَّبَاْئِ الْمُرْسَلِيْنَ)
“তোমার পূর্বেও অনেক রাসূলকে অবশ্যই মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়েছিল; কিন্তু তাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা ও কষ্ট দেয়া সত্ত্বেও তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল, যে পর্যন্ত না আমার সাহায্য তাদের নিকট এসেছে। আল্লাহর আদেশ কেউ পরিবর্তন করতে পারে না, রাসূলগণের সম্বন্ধে কিছু সংবাদ তো তোমার নিকট এসেছেই।” (সূরা আন‘আম ৬:৩৪)
অতএব এখনো যদি দাওয়াতী কাজ করতে গিয়ে বিপদের সম্মুখিন হতে হয় তাহলে সেক্ষেত্রেও ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং আল্লাহর ওপর ভরসা করতে হবে। কোনভাবেই বিচলিত হওয়া যাবে না।
(أَمْ لَهُمْ اٰلِهَةٌ تَمْنَعُهُمْ مِّنْ دُوْنِنَا)
অর্থাৎ তোমাদের কাজ এমন যে, দিন-রাতের যেকোন সময়ে তোমাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার আযাব আসতে পারে। সে আযাব হতে তোমাদেরকে দিনে-রাতে কে রক্ষা করছে? আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত আর কেউ আছে কি, যে তোমাদেরকে আল্লাহ তা‘আলার আযাব হতে রক্ষা করতে পারে?
(وَلَا هُمْ مِّنَّا يُصْحَبُوْنَ)
এর অর্থ হল- তারা আমার আযাব হতে রক্ষা পাবে না, অর্থাৎ তারা নিজেদেরকে সাহায্য করতে ও আল্লাহ তা‘আলার আযাব হতে মুক্ত করতে সক্ষম নয়, তাহলে তারা অপরকে সাহায্য করবে কিভাবে? অথবা অপরকে আযাব থেকে বাঁচাবে কিভাবে?
(بَلْ مَتَّعْنَا هٰٓؤُلَا۬ءِ وَاٰبَا۬ءَهُمْ)
অর্থাৎ যদি তাদের বা তাদের পূর্বপুরুষদের জীবন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও ভোগ-বিলাসে অতিবাহিত হয় তাহলে কি তারা মনে করে যে, তারা সঠিক পথে আছে এবং ভবিষ্যতেও তাদের কোন কষ্ট হবে না? বরং তাদের ক্ষণস্থায়ী জীবনের সুখ-বিলাস তো আমার ঢিল দেয়া নীতির অংশবিশেষ। এতে কারো ধোঁকায় পড়া উচিত নয়।
(نَأْتِي الْأَرْضَ نَنْقُصُهَا)
কুফরীর এলাকা দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে আর ইসলামের এলাকা দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। কুফরীর পায়ের তলা হতে মাটি সরে যাচ্ছে এবং ইসলামের বিজয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর মুসলিমরা দেশের পর দেশ জয় করে যাচ্ছে।
(أَفَهُمُ الْغٰلِبُوْنَ)
কুফরীর অনগ্রসরতা ও ইসলামের অগ্রসরতা দেখেও কি কাফিররা মনে করে যে, তারাই বিজয়ী? অর্থাৎ কক্ষনো নয়, তারা কোনদিন জয়ী হতে পারবে না, হয়তো মুসলিমদের ভুলের জন্য ক্ষণিক সময়ের জন্য জয়ী হতে পারে।
(وَنَضَعُ الْمَوَازِيْنَ الْقِسْطَ....)
‘এবং ক্বিয়ামাত দিবসে আমি স্থাপন করব ন্যায়বিচারের মানদণ্ড’ আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামত দিবসে ন্যায় বিচারের মানদণ্ড দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করবেন। প্রত্যেকের আমল ওজন করে দেখবেন, যার সৎ আমলের পাল্লা ভারি হবে সে চিরসুখে থাকবে। পক্ষান্তরে যার সৎ আমলের পাল্লা হালকা হবে তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। আল্লাহ তা‘আলা বিন্দু পরিমাণও জুলুম করবেন না।
আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(وَلَا يَظْلِمُ رَبُّكَ أَحَدًا)
“তোমার প্রতিপালক কারো প্রতি জুলুম করেন না।” (সূরা ক্বাহ্ফ ১৮:৪৯)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(يٰبُنَيَّ إِنَّهَآ إِنْ تَكُ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِّنْ خَرْدَلٍ فَتَكُنْ فِيْ صَخْرَةٍ أَوْ فِي السَّمٰوٰتِ أَوْ فِي الْأَرْضِ يَأْتِ بِهَا اللّٰهُ ط إِنَّ اللّٰهَ لَطِيْفٌ خَبِيْرٌ)
“হে আমার ছেলে! কোন কিছু যদি সরিষার দানার পরিমাণও হয় এবং তা যদি থাকে পাথরের ভিতরে অথবা আসমানে কিংবা ভূ-গর্ভে, তথাপি তাও আল্লাহ উপস্থিত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবহিত।” (সূরা লুক্বমান ৩১:১৬)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(فَاَمَّا مَنْ ثَقُلَتْ مَوَازِیْنُھ۫ﭕﺫ فَھُوَ فِیْ عِیْشَةٍ رَّاضِیَةٍﭖﺚ وَاَمَّا مَنْ خَفَّتْ مَوَازِیْنُھ۫ﭗﺫ فَاُمُّھ۫ ھَاوِیَةٌﭘ)
“অতএব যার পাল্লা ভারী হবে, সে সন্তোষজনক জীবন যাপন করবে আর যার পাল্লা হালকা হবে, তার ঠিকানা হবে হাবিয়া।” (সূরা ক্বারিয়াহ ১০১:৬-৯)
কিয়ামতের দিন আমল, আমলকারী ও আমলনামা তিনটিই ওজন করা হবে। (আক্বীদাহ ওয়াসিতিয়্যাহ)
মানুষের আমল ও কর্মসমূহ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ও অনুভূত নয়, তার বাহ্যিক কোন রূপ বা অস্তিত্ব নেই। তাহলে তার ওজন কিভাবে সম্ভব? আধুনিক যুগে এ প্রশ্নের কোন গুরুত্ব নেই। যেহেতু বর্তমানে বৈজ্ঞানিক আবিস্কার এ প্রশ্নের উত্তর সহজ করে দিয়েছে। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের সাহায্যে নিরাকার বস্তুও ওজন করা যাচ্ছে। যখন মানুষ দ্বারা এটা সম্ভব তখন আল্লাহ তা‘আলা র জন্য আকারহীন জিনিসকে ওজন করা কেমন করে কঠিন হতে পারে?
সুতরাং প্রত্যেক আমল, আমলকারী ও যে দফতরে আমল লিখে রাখা হয় তা ওজন করা হবে। যাদের ভাল আমলের পাল্লা ভারী হবে তাদের সুখের সীমা থাকবে না, অন্যথায় দুখের সীমা থাকবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্য কোন সত্য মা‘বূদ নেই।
২. আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্য কোন রক্ষণাবেক্ষণকারী নেই।
৩. মানুষকে রিযিক দিয়ে থাকেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
৪. কিয়ামতের দিন ন্যায়ের মানদণ্ড স্থাপন করা হবে এবং ন্যায় বিচার করা হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings