18:83

وَيَسۡــَٔلُونَكَ عَن ذِى ٱلۡقَرۡنَيۡنِ‌ۖ قُلۡ سَأَتۡلُواۡ عَلَيۡكُم مِّنۡهُ ذِكۡرًا٨٣

Saheeh International

And they ask you, [O Muhammad], about Dhul-Qarnayn. Say, "I will recite to you about him a report."

Tafsir "Tafsir Fathul Mazid" (Bengali)

৮৩-৯৯ নং আয়াতের তাফসীর: উক্ত আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা বাদশা ‘যুল-কারনাইন’ এর ঘটনা উল্লেখ করেছেন। যার সম্পর্কে ইয়াহূদীদের কথামত মক্কার কুরাইশরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করেছিল। সে দ্বিতীয় জিজ্ঞেসার উত্তর এটি। যুল-কারনাইন এর শাব্দিক অর্থ হল দু’ শিংবিশিষ্ট। তাঁর নাম করণের কারণ হল তাঁর মাথায় প্রকৃতপক্ষে দুটি শিং ছিল। কিংবা তিনি পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছে সূর্যের শিং বা কিরণ প্রত্যক্ষ করেছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন: তাঁর মাথায় শিঙের মত চুলের দুটি ঝুটি ছিল। তার প্রকৃত নাম নিয়েও মতামত পাওয়া যায়। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: তার নাম হল আব্দুল্লাহ বিন যহহাক বিন মা‘আদ, আবার বলা হয়-আবদুল্লাহ বিন কিনান বিন আজাদ ইত্যাদি। তিনি একজন ন্যায়পরায়ণ বাদশা, সৎ মু’মিন ব্যক্তি ছিলেন। (আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ২/১০২-১০৬) সংক্ষিপ্ত ঘটনা: ‘যুল-কারনাইন’ একজন সৎ ও ন্যায়পরায়ণ বাদশা ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে পৃথিবীতে রাজত্ব ও কর্তৃত্ব দান করেছিলেন এবং তাঁকে ক্ষমতা দিয়েছিলেন যে, তুমি যেখানে খুশি সেখানে ভ্রমণ করতে পারবে। তিনি পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যদেশসমূহ জয় করেছিলেন। এসব দেশে তিনি সুবিচার ও ইনসাফের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে তাঁকে লক্ষ্য অর্জনের জন্য সকল প্রকার সাজ-সরঞ্জাম দান করা হয়েছিল। একদা একটি পথ ধরে চলতে লাগলেন, চলতে চলতে এক পর্যায়ে সূর্যের অস্তগমন স্থানে পৌছে গেলেন। অর্থাৎ পশ্চিম প্রান্তে, যার পরে কোন জনবসতি ছিল না। সেখানে তিনি দেখলেন যে, সূর্য কর্দমাক্ত গরম পানিতে অস্ত যাচ্ছে এবং তিনি সেখানে একটি সম্প্রদায়ের সাথে সাক্ষাত লাভ করলেন। আর তারা ছিল কুফরী আকীদা পোষণকারী সম্প্রদায়। তখন আল্লাহ তা‘আলা যুল-কারনাইনকে বললেন: হে যুল-কারনাইন! তুমি চাইলে তাদেরকে শাস্তি দিতে পার অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পার।তখন যুল-কারনাইন তাদেরকে বললেন, যে কেউ সীমালঙ্ঘন করবে তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন এবং তারা তাদের প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তিত হয়েও কঠিন শাস্তি ভোগ করবে। আর যে ঈমান আনবে ও সৎকর্ম করবে তাদের জন্য থাকবে কল্যাণ ও শান্তি। আর তাদের প্রতি নম্র ব্যবহার করা হবে।অতঃপর তিনি অন্য একটি পথ ধরে চলতে লাগলেন। চলতে চলতে এক পর্যায়ে পৌঁছে গেলেন সূর্যোদয় স্থলে অর্থাৎ পূর্বপ্রান্তে। সেখানে গিয়ে একটি সম্প্রদায়ের সাথে সাক্ষাত লাভ করলেন যাদের জন্য সূর্যের তাপ থেকে আত্মরক্ষা করার মত কোন অন্তরাল সৃষ্টি করা হয়নি। আর এ ব্যাপারে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন।অতঃপর অন্য একটি পথ ধরে চলতে লাগলেন। চলতে চলতে এক পর্যায়ে দু’ পর্বত প্রাচীরের মধ্যবর্তী স্থলে পৌঁছে গেলেন এবং সেখানে একটি সম্প্রদায়ের সাথে সাক্ষাত হল যারা তার কথা কিছুই বুঝতে পারছিল না, তারা তাঁকে ইয়া’জূজ ও মা’জূজ এর কষ্ট দেয়ার কথা জানাল এবং তারা যে জমিনে ফিতনা-ফাসাদ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে সে কথাও জানাল আর তাকে কর দিতে চাইল এ শর্তে যে, সে ইয়া’জূজ ও মা’জূজ এবং ঐ সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি প্রাচীর তৈরী করে দেবে যাতে ইয়া’জূজ ও মা’জূজ তাদেরকে আর কষ্ট দিতে না পারে ও জমিনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে। তাদের এ দাবী শুনে যুল-কারনাইন তাদের থেকে কর নিতে রাজি হননি বরং এ প্রাচীর নির্মাণ করার জন্য তাদের সাহায্য কামনা করলেন এবং তাদেরকে বললেন, তারা যেন লৌহপিণ্ডসমূহ নিয়ে আসে। লৌহপিণ্ডসমূহ দু’ পর্বতের মধ্যবর্তী শূন্যস্থানে রাখার পর যখন তা দু’ পর্বতের সমান হল তখন তাদেরকে বললেন, হাঁপর গরম করার জন্য। অবশেষে যখন তা আগুনে উত্তপ্ত হয়ে গলে গেল তখন তাদেরকে তামা নিয়ে আসার জন্য বললেন এবং যুল-কারনাইন ঐ গলিত তামা ঐ লোহার প্রাচীরের ওপর ঢেলে দিলেন। এরপর ইয়া’জূজ ও মা’জূজ আর এ প্রাচীর ছেদ করতে পারেনি। এ ইয়া’জূজ ও মা’জূজ এখনো ঐ প্রাচীরে বন্দী অবস্থায় রয়েছে। তারা প্রাচীর ভাঙ্গতে পারেনি। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলার ওয়াদা যখন বাস্তবায়িত হয়ে যাবে তখন তারা এ প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলবে এবং পৃথিবীতে এসে পূর্বের মতই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে।(قُلْ سَأَتْلُوْا عَلَيْكُمْ مِّنْهُ ذِكْرًا) এখানে প্রণিধানযোগ্য বিষয় যে, কুরআন ذكره সংক্ষিপ্ত শব্দ ছেড়ে مِّنْهُ ذِكْرًا বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ দুটি শব্দের মধ্যে ইঙ্গিত রয়েছে যে, কুরআন যুল-কারনাইন এর আদ্যোপান্ত কাহিনী বর্ণনা করবে না বরং তার আলোচনার একাংশ উল্লেখ করবে। سبب এর প্রকৃত অর্থ মাধ্যম, উপকরণ, যার দ্বারা লক্ষ্য অর্জন করা যায়। এখানে অর্থ হল আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে এমন কিছু মাধ্যম ও উপকরণ দান করেছেন যার দ্বারা তিনি দেশসমূহ জয় করেছেন। শত্র“দের অহংকার মাটিতে মিশিয়ে দেন এবং অত্যাচারী বাদশাকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলেন।(أَتْبَعَ سَبَبًا) অর্থাৎ তাঁকে যে সকল উপকরণ দান করা হয়েছিল তা তিনি কাজে লাগান। عين অর্থ ঝরনা বা সমুদ্র, حمئة অর্থ কর্দম বা কাদা। অর্থাৎ যুল-কারনাইন দেশের পর দেশ জয় করে যখন পশ্চিম প্রান্তে শেষ জনপদে পৌঁছে গেলেন। সেখানে কাদাময় পানির ঝরণা বা সমুদ্র ছিল যেটা নিচে থেকে কালো মনে হচ্ছিল। তার মনে হল যেন সূর্য ঐ পানিতে অস্ত যাচ্ছে। সমুদ্র-তীর থেকে দূরে সূর্যাস্ত স্থলে পানি ব্যতীত আর কিছু দেখা যায় না। সেখানে যারা সূর্যাস্ত প্রত্যক্ষ করবে তাদের মনে হবে যে সূর্য সমুদ্রেই অস্ত যাচ্ছে অথচ সূর্য মহাকাশে স্বস্থানেই অবস্থান করে।(قُلْنَا يَذَا الْقَرْنَيْنِ) ‘আমি বললাম, ‘হে যুল-কারনাইন!’ আল্লাহ তা‘আলার এ নির্দেশ দ্বারা প্রমাণ হয় তিনি নাবী ছিলেন।(بَيْنَ السَّدَّيْنِ) যে বস্তু কোন কিছুর জন্য বাধা হয়ে যায় তাকে سد বলা হয়। তা প্রাচীর হোক কিংবা পাহাড় হোক, কৃত্রিম হোক আর প্রাকৃতিক হোক। এখানে السَّدَّيْنِ বলতে দু’ পাহাড় বুঝানো হয়েছে। এগুলো ইয়া’জূজ মা’জূজের পথে বাধা ছিল। কিন্তু উভয়ের মধ্যবর্তী গিরিপথ দিয়ে এসে তারা আক্রমন চালাত। যুলকারনাইন এ গিরিপথটি বন্ধ করে দেন। زبر শব্দটি زبرة এর বহুবচন। এর অর্থ পাত। এখানে লৌহখণ্ড বুঝানো হয়েছে। গিরিপথ বন্ধ করার জন্য নির্মিতব্য প্রাচীর ইট-পাথরের পরিবর্তে লোহার পাত ব্যবহার করেছেন। قطرا শব্দের অর্থ ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরানো তামা, আলকাতরার প্রলেপ দেয়া। ق এর হরকত পরিবর্তনের কারণে অর্থেরও পরিবর্তন হয়। এখানে গলিত তামা বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ লোহার পাতকে খুব গরম করে এর ওপর গলিত তামা ঢেলে দেয়ায় সে পাহাড়ী রাস্তার মাঝের প্রাচীর এত মজুবত হয়েছিল যে, ইয়া’জূজ-মা’জূজের পক্ষে তা ভেঙ্গে আসা অসম্ভব হয়ে গেল। ইয়া’জূজ ও মা’জূজের বিবরণ: ইয়া’জূজ ও মা’জূজ মূলত মানুষ। তারা আদম ও হাওয়ারই সন্তান। সাহাবী আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ইয়া’জূজ ও মা’জূজ হচ্ছে আদম (عليه السلام)-এর সন্তান। তাদেরকে যদি সাধারণ মানব সমাজে ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে তারা ওদের স্বাভাবিক জীবন যাপন বিনষ্ট করে দেবে। তাদের কেউ মরবে না যতক্ষণ না তার সন্তান-সন্ততি এক হাজার বা তার বেশিতে পৌঁছে। (মিনহাতুল মা‘বূদ ফী তারবীবি মুসনাদিত তায়ালিসী ২/২১৯.)তাদের গঠন প্রকৃতি: তাদের গঠন বর্ণনা দিয়ে যে সকল হাদীস বর্ণিত হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, তাদেরকে দেখতে মোঘল তুর্কীদের মতো মনে হবে। তাদের চোখ হবে ছোট। নাক হবে ছোট ও চ্যাপটা। চুল হবে লাল-সাদা মিশ্রিত হলুদ বর্ণের। তাদের চেহারা যেন চামড়া মোড়ানো ঢালের ন্যায় তথা চওড়া ও ঝুলে পড়া গণ্ডদেশবিশিষ্ট। (নিহায়া/আল ফিতান ওয়াল মালাহিম ১/১৫৩.) ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) ইবনু হারমালাহ থেকে তিনি তাঁর খালা থেকে বর্ণনা করেন, তাঁর খালা বলেন: একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর খুৎবায় বলেন, তোমরা বলছ যে, কোন শত্র“ নেই, অথচ তোমরা ইয়া’জূজ ও মা’জূজ আসা পর্যন্ত শত্র“র মোকাবেলা করেই যাবে। যাদের চেহারা হবে প্রশস্ত। চোখ হবে ছোট, চুল হবে লাল-সাদা মিশ্রিত হলুদ বর্ণের। তারা প্রত্যেক উঁচু জায়গা থেকে দ্রুত নিচে পদার্পন করবে। তাদের চেহারা যেন চামড়া মোড়ানো ঢালের ন্যায় তথা চওড়া ও ঝুলে পড়া গণ্ডদেশবিশিষ্ট। (আহমাদ হা: ২২৩৩১.) ইয়াজূজ ও মা’জূজের আবির্ভাবের প্রমাণসমূহ: শেষ যুগে ইয়া’জূজ ও মা’জূজের আবির্ভাব কিয়ামতের বড় বড় আলামতগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। তাদের আবির্ভাবের ব্যাপারে কুরআন ও সুন্নাহয় প্রমাণ রয়েছে। যেমন উক্ত আয়াতগুলোতে রয়েছে। ইয়া’জূজ ও মা’জূজ সংক্রান্ত হাদীসের সংখ্যা অনেক, যা মুতাওয়াতির পর্যায়ে চলে যাবে। সাহাবী আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যে রাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইসরা তথা মিরাজ হয় সে রাতে তিনি ইবরাহীম, মূসা ও ঈসা (عليه السلام)-এর সাথে সাক্ষাত করেন। তাঁরা সবাই তখন পরস্পর কিয়ামত সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। তাঁরা উক্ত আলোচনার জন্য ঈসা (عليه السلام) কে আবেদন করলে তিনি দাজ্জালের হত্যার ব্যাপারে আলোচনা করার পর বলেন: এরপর মানুষ তাদের নিজ নিজ শহরে চলে যাবে। তখন হঠাৎ তাদের সম্মুখীন হবে ইয়া’জূজ ও মা’জূজ। তারা প্রত্যেক উঁচু জায়গা থেকে নিচের দিকে দ্রুত অবতরণ করবে। তারা কোন পানির পাশ দিয়ে যেতে না যেতেই তা পান করে নিঃশেষ করে ফেলবে এবং কোন বস্তুর পাশ দিয়ে যেতে না যেতেই তা ধ্বংস করে দেবে। তখন মানুষেরা আমার নিকট আশ্রয় নিলে আমি আল্লাহ তা‘আলার নিকট দু‘আ করব। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মেরে ফেলবেন। তখন পুরো পৃথিবী তাদের দুর্গন্ধে গন্ধময় হয়ে যাবে। পুনরায় তারা আবারো আমার নিকট আশ্রয় নেবে। তখন আমি তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলার নিকট দু‘আ করলে আকাশ ভারী বৃষ্টি বর্ষণ করবে। অতঃপর বৃষ্টির পানি তাদের শরীরগুলোকে স্থল ভাগ থেকে ভাসিয়ে নিয়ে নদীতে নিক্ষেপ করবে। (আহমাদ ৪/১৮৯-১৯০, হাকিম ৪/৪৮৮-৪৮৯) ইয়া’জূজ মা’জূজের প্রাচীর: যুল-কারনাইন বাদশা উক্ত প্রাচীর নির্মাণ করেন। যাতে ইয়া’জূজ-মা’জূজ ও তাদের প্রতিবেশির মাঝে একটি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় যারা যুল-কারনাইনের কাছে সাহায্য কামনা করছিল। যেমন আয়াতে উল্লেখ রয়েছে। তবে উক্ত প্রাচীরের সঠিক স্থান এখনো কেউ নির্ণয় করতে পারেনি। কতক রাজা-বাদশা ও ঐতিহাসিকগণ সে স্থানের পরিচয় দিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল আব্বাসীয় খলীফা ওয়াসিক (মৃত্যু ২৩২ হি:) কতক আমীরদেরকে সৈন্যদলসহ সে প্রাচীর দেখার জন্য প্রেরণ করেছেন যাতে তার কাছে সে প্রাচীরের বর্ণনা দিতে পারে। তারা এক দেশ থেকে অন্য দেশে, এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পৌঁছল এমনকি সে প্রাচীর পর্যন্ত পৌঁছে গেল। তারা দেখতে পেলো, সে প্রাচীরটি লোহা ও পিতল দিয়ে নির্মিত। তারা আরো উল্লেখ করলেন যে, সেখানে একটি বিরাট দরজা প্রত্যক্ষ করেছেন, তাতে বড় বড় কয়েকটি তালা রয়েছে। তারা আরো দেখতে পেলেন, একটি দুর্গে দুধ ও মধুর অবশিষ্টাংশ রয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী বাদশার পক্ষ থেকে একজন পাহারাদার নিযুক্ত রয়েছে, যিনি সুউচ্চ ও সুঠাম দেহের অধিকারী যা পার্শ্ববর্তী পাহাড়ও তার সমান হবে না। তারপর তারা দেশে ফিরে আসলেন, তাদের ভ্রমণ ৬০ দিনের অধিক ছিল এবং তারা আরো অনেক ভয়ংকর ও আশ্চর্যজনক জিনিস দেখলেন। ইমাম ইবনু কাসীর (রহঃ) এ ঘটনা তার স্বীয় তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, তবে তার কোন সনদ উল্লেখ করেননি। আল্লাহ তা‘আলাই তার বিশুদ্ধতা সম্পর্কে ভাল জানেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর ৫/১৯৩.)অনেকে মনে করেন ইয়া’জূজ ও মা’জূজের আর্বিভাব হয়ে গেছে। মূলত তাদের আর্বিভাব এখনো হয়নি। কিয়ামতের আলামতস্বরূপ যে ইয়া’জূজ ও মা’জূজ আগমন করবে তারা শেষ যুগে আসবে। কারণ সহীহ হাদীস প্রমাণ করে তাদের আগমন ঈসা (عليه السلام)-এর অবতরণের পর হবে। তিনিই তাদের প্রতি বদদু‘আ করবেন, ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে ধ্বংস করবেন। তারপর তাদেরকে সাগরে নিক্ষেপ করবেন এবং মানুষ ও জমিনকে তাদের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন। আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের প্রামাণিক স্বীকৃতি পেলাম। কারণ তিনি কুরাইশদের তৃতীয় জিজ্ঞাসার উত্তর দিলেন আল্লাহ তা‘আলা ওয়াহীর দ্বারা জানিয়ে দেয়ার মাধ্যমে।২. প্রকৃত বিষয় জানার জন্য জ্ঞানীরা উপকরণ গ্রহণ করতে পারেন।৩. শাসকদের উচিত ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র আল্লাহ তা‘আলার বিধানানুযায়ী পরিচালনা করা।৪. যে সকল বাদশা সারা পৃথিবী শাসন করেছেন তাদের মধ্যে যুল-কারনাইন অন্যতম।৫. শ্রমের বিনিময়ে পারিশ্রমিক নেয়া শরীয়তসম্মত। ৬. ইয়া’জূজ ও মা’জূজের অস্তিত্ব রয়েছে, এখনো তারা প্রাচীরের মধ্যে আবব্ধ।৭. ইয়া’জূজ ও মা’জূজের আর্বিভাব কিয়ামতের আলামত, তারা প্রাচীর থেকে বের হয়ে দুনিয়াতে ফাসাদ সৃষ্টি করবে।

Arabic Font Size

30

Translation Font Size

17

Arabic Font Face

Help spread the knowledge of Islam

Your regular support helps us reach our religious brothers and sisters with the message of Islam. Join our mission and be part of the big change.

Support Us