Surah Al Kahf Tafseer
Tafseer of Al-Kahf : 75
Saheeh International
[Al-Khidh r] said, "Did I not tell you that with me you would never be able to have patience?"
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৬০-৮২ নং আয়াতের তাফসীর:
উক্ত আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (عليه السلام)-এর দু’ সমুদ্রের মিলনস্থলে খাজির (عليه السلام)-এর সাথে যে সাক্ষাত হয়েছিল এবং তাদের মাঝে যে ঘটনা ঘটেছিল সে ঘটনা আলোচনা করেছেন। এ ঘটনা অত্র সূরার এ আয়াতগুলোসহ সহীহ বুখারীর ৩০৪১ ও ৪৭২৫ নং হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত ঘটনা:
উবাই বিন কা‘ব (রাঃ) হতে বর্ণিত নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: একদা মূসা (عليه السلام) জনসম্মুখে ভাষণ প্রদান করছিলেন। জনৈক ব্যক্তি বলল: আপনার চেয়ে অধিক জ্ঞানী কেউ আছে বলে আপনি জানেন? মূসা (عليه السلام) বললেন: না। এতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে তিরস্কার করলেন, কেন এ ব্যাপারের জ্ঞান আল্লাহ তা‘আলার দিকে সোপর্দ করেনি। আল্লাহ তা‘আলা বললেন: হ্যাঁ, আমার বান্দা খাজির তোমার চেয়ে বেশি জ্ঞানী। মূসা (عليه السلام) বললেন: হে আল্লাহ তা‘আলা তাকে কোথায় পাব? আল্লাহ তা‘আলা বললেন: (مَجْمَعَ الْبَحْرَيْنِ) দু’সাগরের মধ্যস্থলে। তখন মূসা (عليه السلام) বললেন: ‘দু’ সমুদ্রের মিলনস্থলে না পৌঁছিয়ে আমি থামব না অথবা আমি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকব।’ মূসা (عليه السلام) ও যুবক ইউশা বিন নূন এ দু’জন খাজির (عليه السلام)-এর কাছে জ্ঞানার্জনের জন্য সাগরের দিকে ভ্রমণ করলেন। فَتَي শব্দের অর্থ যুবক। শব্দটি কোন বিশেষ ব্যক্তির সাথে সম্বন্ধ করা হলে অর্থ হয় খাদেম। এখানে শব্দটিকে মূসা (عليه السلام)-এর দিকে সম্বন্ধযুক্ত করা হয়েছে। তাই অর্থ হবে মূসা (عليه السلام)-এর খাদেম। এ খাদেমের নাম ইউশা বিন নূন। ইউশা বিন নূন নাবী ছিলেন কি-না তা নিয়ে মতভেদ থাকলেও সঠিক কথা হচ্ছে তিনি নাবী ছিলেন না। (আযওয়াউল বায়ান) খাজির (عليه السلام)-কে সন্ধানের জন্য আল্লাহ তা‘আলা একটি নিদর্শন দিলেন। তা হল সাথে একটি মাছ নেয়ার নির্দেশ দিলেন, যেখানে মাছ হারিয়ে যাবে সেখানেই তাঁকে পাওয়া যাবে। তারা উভয়ে থলের ভেতর মাছ নিয়ে রওনা দিলেন। পথিমধ্যে একটি প্রস্তুরখন্ডের ওপর মাথা রেখে তারা ঘুমিয়ে পড়লেন। এখানে হঠাৎ মাছটি নড়াচড়া করতে লাগল এবং থলে থেকে বের হয়ে সমুদ্রে চলে গেল। আল্লাহ তা‘আলা সেপথে পানির স্রোত বন্ধ করে দিলেন। ফলে সেখানে পানির মধ্যে একটি সুড়ঙ্গের মত হয়ে গেল। ইউশা মাছটিকে সমুদ্রে যেতে দেখেন কিন্তু মূসা (عليه السلام) কে বলতে ভুলে যান। মূসা (عليه السلام) ঘুম থেকে উঠে রওনা দিলেন। একদিন এক রাত অনেক রাস্তা অতিক্রম করার পর যখন খুব ক্ষুধা অনুভব করলেন তখন মূসা (عليه السلام) বললেন: ‘আমাদের সকালের খাবার আন, আমরা আমাদের এ সফরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।’ তখন ইউশা বললেন: যেখানে আমরা পাথরের ওপর মাথা রেখে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম আর আপনি ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন সেখানে মাছটি থলে থেকে বের হয়ে চলে গেছে। কিন্তু আমি আপনাকে বলতে ভুলে গেছি। আসলে শয়তানই আমাকে ভুলিয়েছে। মূসা (عليه السلام) বললেন: যেখানে মাছটি সুড়ঙ্গ করে চলে গেছে সেখানেই তো আমাদের গন্তব্য। তাই নিজের পায়ের চিহ্ন অনুসরণ করে প্রত্যাবর্তন করে আসলেন এবং দু’ সমুদ্রের মিলনস্থলে ফিরে গেলেন। قَقَصًا অর্থ পদাঙ্ক অনুসরণ করে পেছনে ফিরে আসা। তারা উভয়ে দু’ সমুদ্রের মিলনস্থলে এসে খাজির (عليه السلام) কে পায়। (عَبْدًا مِّنْ عِبَادِنَآ) দ্বারা উদ্দেশ্য খাজির (عليه السلام), খাজির অর্থ সবুজ-শ্যামল। তিনি একদা সাদা জমিনের ওপর বসলে জমিনের সে অংশটুকু সবুজ হয়ে যায়। এ কারণেই তাকে খাজির বলা হয়। (সহীহ বুখারী, সূরা কাহফের তাফসীর) আল্লাহ তা‘আলা খাজির (عليه السلام) কে رَحمةً তথা নবুওয়াত দান করেছেন। যখন তারা তাঁর কাছে আসলেন তখন তিনি মাথা ঢাকা অবস্থায় ছিলেন। মূসা (عليه السلام) সালাম দিলে তিনি মাথা তুলে তাকালেন এবং বললেন: আমি তোমার সালামে সন্তুষ্ট। তিনি বললেন: তুমি কে? মূসা (عليه السلام) বললেন: আমি মূসা। খাজির (عليه السلام) বললেন: বানী ইসলাঈলের মূসা? মূসা (عليه السلام) বললেন: হ্যাঁ। খাজির (عليه السلام) বললেন: কেন এসেছ? তিনি বললেন: আপনার কাছে শিক্ষা গ্রহণ করতে এসেছি। খাজির (عليه السلام) বললেন: আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে যে তাওরাত প্রদান করেছেন তা কি যথেষ্ট নয়? এ ঘটনা প্রমাণ করে মানুষ যত বড় জ্ঞানী হোক সে আরো অধিক জ্ঞানের মুখাপেক্ষী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (قُلْ رَّبِّ زِدْنِيْ عِلْمًا) “বল: ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ কর।’’ (সূরা ত্বা-হা ২০:১১৪)
মূসা (عليه السلام) একজন সম্মানিত নাবী, শুধু নাবী নন, উলূল আযম বা শ্রেষ্ঠ রাসূলদের অন্যতম একজন। এতদসত্ত্বেও তিনি অধিক জ্ঞানার্জনের জন্য ভ্রমণ করেছেন। আর খাজির (عليه السلام) শুধু নিজের শরীয়তেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না। যখন মূসা (عليه السلام) বললেন: আমি আপনার কাছে জ্ঞানার্জনের জন্য এসেছি। খাজির (عليه السلام) বললেন: (আমার কাছে থেকে জ্ঞানার্জন করতে) তুমি সক্ষম হবে না। মূসা (عليه السلام) বললেন: ইনশা-আল্লাহ তা‘আলা আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। খাজির (عليه السلام) বললেন: তুমি যদি তাই চাও, তাহলে তোমাকে কিছু না বলা পযর্ন্ত আমাকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে না। কিন্তু এমন কিছু দেখতে পাবে যাতে তুমি ধৈর্যধারণ করতে সক্ষম হবে না। মূসা (عليه السلام) বললেন: ইনশা-আল্লাহ তা‘আলা আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন।
তাঁরা সমুদ্র উপকূল দিয়ে হাঁটতে শুরু করলেন। একদা তাদের পাশ দিয়ে নৌকা অতিক্রম করে যাচ্ছিল। খাজির (عليه السلام) ইশারায় নৌকা থামাতে বললে মাঝিরা নৌকা থামাল। কারণ তারা খাজির ও মূসা (عليه السلام) উভয়কে চিনত। ফলে বিনা ভাড়ায় নৌকার মালিক তাদের উভয়কে আরোহন করাল। (পথ অতিক্রমের পর) খাজির (عليه السلام) একটি কুড়াল নিয়ে নৌকা ছিদ্র করে দিলেন এমনকি নৌকাতে পানি উঠতে লাগল। মূসা (عليه السلام) বিস্মিত হলেন, ধৈর্যধারণ করতে পারলেন না। তিনি বললেন: সুবহানাল্লাহ, তারা আমাদের সাথে ভাল ব্যবহার করল, বিনা ভাড়ায় নৌকায় আরোহন করাল, আর আপনি নৌকাটি নষ্ট করে দিলেন। আপনি এক গুরুতর অন্যায় কাজ করেছেন। (لَقَدْ جِئْتَ شَيْئًا إِمْرًا) আপনি তো এক গুরুতর অন্যায় কাজ করলেন!’ (সূরা কাহফ ১৮:৭১) মূসা (عليه السلام) তাকে তিরস্কার করলেন। খাজির (عليه السلام) বললেন:
( أَلَمْ أَقُلْ إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيْعَ مَعِيَ صَبْرًا)
‘আমি কি বলিনি যে, তুমি আমার সঙ্গে কিছুতেই ধৈর্য ধারণ করতে পারবে না?’ (সূরা কাহ্ফ ১৮:৭২)
মূসা (عليه السلام) বললেন:
(لَا تُؤَاخِذْنِيْ بِمَا نَسِيْتُ وَلَا تُرْهِقْنِيْ مِنْ أَمْرِيْ عُسْرًا)
‘আমার ভুলের জন্য আমাকে পাকড়াও করবেন না ও আমার ব্যাপারে অধিক কঠোরতা অবলম্বন করবেন না।’ (সূরা কাহ্ফ ১৮:৭৩)
অতঃপর তারা কোন একটি এলাকায় অবতরণ করে হাঁটতে লাগলেন এবং একটি ছোট বালককে হাঁটতে দেখলেন। খাজির (عليه السلام) তাকে ধরে নির্মমভাবে হত্যা করলেন। মূসা (عليه السلام) খুব বিরক্তবোধ করলেন এবং বললেন: সুবহানাল্লাহ, অন্যায়ভাবে একজন মানুষকে হত্যা করলেন। আপনি এক গুরুতর অপরাধ করেছেন। (সূরা কাহ্ফ ১৮:৭৪)
প্রথম ও দ্বিতীয়বার খাজির (عليه السلام) মূসা (عليه السلام) কে বললেন: ‘আমি কি আপনাকে বলিনি যে, আপনি আমার সঙ্গে কিছুতেই ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন না? (সূরা কাহ্ফ ১৮:৭৫) মূসা (عليه السلام) বললেন: এটাই সর্বশেষ, এরপর আপনাকে জিজ্ঞেস করলে আমার ও আপনার মাঝে বিচ্ছেদ হয়ে যাবে। এরপর তারা কোন এক গ্রাম বা শহরবাসীর পাশ দিয়ে অতিক্রম করে যাচ্ছেন। তাদের কাছে তারা আপ্যায়নের আবেদন জানালেন। কিন্তু তারা আপ্যায়নের পরিবর্তে তিরস্কার করল এবং তাড়িয়ে দিল। মেহমানের অধিকার আদায় করল না। তারা উভয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম একটি দেয়াল দেখতে পেল। খাজির (عليه السلام) তা মেরামত কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন এবং বললেন: এটা অবশ্যই স্থাপন করা আবশ্যক। মূসা (عليه السلام) বললেন: সুবহানাল্লাহ, মানুষেরা আমাদের তিরস্কার করল, মেহমানদারী করল না এতদসত্ত্বেও তাদের কাজ করে দিলেন? খাজির (عليه السلام) বললেন: এখানেই আপনার ও আমার মাঝে সম্পর্ক বিচ্ছেদ ঘটল। (সূরা কাহ্ফ ১৮:৭৮)
এরপর খাজির (عليه السلام) এ বিষয়গুলোর তাৎপর্য বর্ণনা করে দিলেন। যে নৌকা তিনি ছিদ্র করে নষ্ট করে দিয়েছেন তা কতিপয় দরিদ্র ব্যক্তির ছিল যারা সমুদ্রে জীবিকা অন্বেষণ করত। তাদের একজন বাদশা ছিল যে বল প্রয়োগ করে ভাল নৌকা ছিনিয়ে নিত। আমি চাচ্ছিলাম নৌকাটিকে ত্র“টিযুক্ত করে দিতে যাতে নৌকাটি ঐ দরিদ্র ব্যক্তিদের থেকে যায়। যে ছিদ্র আমি করেছিলাম তা বন্ধ করে দেবে ফলে নৌকা ভালই থেকে যাবে। কেননা যে নৌকাতে ত্র“টি থাকে জালিম বাদশা তা নেয় না। আর বালক (যাকে মেরেছি) যদি সে বেঁচে থাকত তাহলে কাফির হত। সে বড় হয়ে পিতামাতার বিরুদ্ধাচরণ করত ও তাদেরকে কুফরীর দিকে নিয়ে যেত। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে এর চেয়ে উত্তম সন্তান দান করবেন। আর দেয়াল, (যা আমি মেরামত করেছি) তা ছিল শহরের দু’ ইয়াতীম বালকের। এ দেয়ালের নিচে তাদের গুপ্তধন ছিল। তাদের পিতা একজন সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তি। যদি দেয়ালটি এভাবে রেখে দেয়া হতো ফলে ভেঙ্গে পড়ে যেত, এতে তাদের সম্পদ নষ্ট হয়ে যেত। কিন্তু আমি তা মেরামত করে দিয়েছি যাতে তাদের সম্পদ হেফাযতে থাকে এবং তারা সম্পদের জায়গা চিনে নিতে পারে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলছেন:
يَرْحَمُ اللّٰهُ مُوسَي لَوْ كَانَ صَبَرَ لَقُصَّ عَلَيْنَا مِنْ أَمْرِهِمَا
আল্লাহ তা‘আলা মূসার প্রতি রহম করুন। যদি তিনি আরো ধৈর্যধারণ করতেন তাহলে আল্লাহ তা‘আলা উভয়ের ঘটনা আমাদের আরো বর্ণনা করতেন। খাজির (عليه السلام) বললেন: হে মূসা! আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে এমন জ্ঞান দান করেছেন যা আমি জানি না, আমাকে আল্লাহ তা‘আলা এমন জ্ঞান দান করেছেন যা আপনি জানেন না। সে সময় একটি চড়–ই পাখি সমুদ্রে ঠোঁট দিয়ে পানি তুলে নিল তখন খাজির (عليه السلام) বললেন: বিশাল সমুদ্র থেকে চড়–ই পাখি ঠোঁট দিয়ে যে পরিমাণ পানি তুলে নিয়েছে আপনার আমার জ্ঞান আল্লাহ তা‘আলার জ্ঞানের তুলনায় তেমন অল্প।
(مَجْمَعَ الْبَحْرَيْنِ)
বা দু’ সমুদ্রের মিলনস্থল বলতে কোন দু’ সমুদ্রের মিলনস্থলকে বুঝানো হয়েছে তা নিয়ে অনেক মতামত পাওয়া যায়; কুরআন ও সহীহ হাদীসে এর কোন ইঙ্গিত নেই। কাতাদাহ বলেন: পারস্য উপসাগর ও রোম সাগরের মিলনস্থল। ইবনু আতিয়্যাহ বলেন: আজরবাইজানের নিকটে একটি স্থান। কেউ বলেছেন, জর্ডান নদী ও ভূমধ্যসাগরের মিলনস্থল ইত্যাদি।
খাজির (عليه السلام) এখনো বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন? এ বিষয়ে সঠিক কথা হল তিনি মারা গেছেন। আল্লামা শানকিতী এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। (তাফসীর (আযওয়াউল বায়ান)
অর্থাৎ খাজির (عليه السلام)-এর কাছে এমন জ্ঞান ছিল যা মূসা (عليه السلام)-এর কাছে ছিল না। এটাকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে সুফিবাদীরা দাবী করে থাকে নাবী নয় এমন কতক লোকদেরকে আল্লাহ তা‘আলা ইলমে লাদুন্নী (বিশেষ আধ্যাত্মিক জ্ঞান) দান করে থাকেন। যেমন এ হাদীসেও বলা হয়েছে: খাজির বললেন: হে মূসা! আল্লাহ তা‘আলা আমাকে এমন জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন যে জ্ঞান আপনাকে দেয়া হয়নি, আর আপনাকে এমন জ্ঞান দান করা হয়েছে যা আমাকে দেয়া হয়নি। সুতরাং ইলমে লাদ্ন্নুী বা বাতেনী জ্ঞান বলতে কিছু রয়েছে যা বিশেষ ব্যক্তিদেরকে দেয়া হয়। এ জ্ঞান শরীয়তের অন্তর্ভুক্ত নয়। সুফীবাদের এ দাবী সঠিক নয়; বরং এটা তাদের অজ্ঞতা ও কুপ্রবৃত্তির বহিঃপ্রকাশ। কারণ মানুষের প্রয়োজনীয় সমস্ত বিষয় আল্লাহ শরীয়তের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন
(ثُمَّ جَعَلْنٰكَ عَلٰي شَرِيْعَةٍ مِّنَ الْأَمْرِ فَاتَّبِعْهَا وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَا۬ءَ الَّذِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ)
“এরপর আমি তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি দীনের সঠিক ও শরীয়তের ওপর; সুতরাং তুমি তার অনুসরণ কর, অজ্ঞদের প্রবৃত্তির অনুসরণ কর না।” (সূরা জাসিয়া ৪৫:১৮) দ্বিতীয়ত: আল্লাহ তা‘আলা খাজির (عليه السلام) কে বিশেষ জ্ঞান দান করেছেন সে কথা পরিস্কারভাবে বলে দিয়েছেন, অথচ অন্য কারো সম্পর্কে এ ধরণের কথা বলা হয়নি। যদি এটাকে ব্যাপক করে দেয়া হয় তাহলে জাদুকর ও ভেল্কিবাজ এ ধরনের দাবী করতে পারে। সুতরাং তাদের এ দাবী অযৌক্তিক।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. বান্দা যতই জ্ঞানী হোক, তার জন্য অহঙ্কার করা শোভা পায় না।
২. বড় জুলুম থেকে বাঁচানোর জন্য কারো ওপরে ছোট-খাট জুলুম করা বৈধ।
৩. ছোটদের কাছেও বড়দের শিক্ষণীয় বিষয় থাকতে পারে।
৪. নাবীরা অন্যায় সহ্য করতে পারতেন না, যেমন মূসা (عليه السلام) পারছিলেন না।
৫. শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য দূরে ভ্রমণ করা বৈধ।
৬. কোন বিষয় না জানলে আল্লাহ তা‘আলার দিকে সোপর্দ করা উচিত।
৭. যে বিষয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা প্রথমে শুরু করা উচিত, যেমন মূসা (عليه السلام) যখন জানতে পারলেন তাঁর চেয়ে বড় জ্ঞানী রয়েছে তখন তিনি সেটাই আগে জানার জন্য গুরুত্ব দিলেন।
৮. খারাপ কাজ ঘটে গেলে শয়তানের দিকে সোপর্দ করা যায়, যেহেতু সে কুমন্ত্রণা দিয়ে করিয়েছে।
৯. ইলম অর্জনের জন্য উস্তাদের কাছে বিনয়ী হওয়া আবশ্যক।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings