Surah Al Isra Tafseer
Tafseer of Al-Isra : 33
Saheeh International
And do not kill the soul which Allah has forbidden, except by right. And whoever is killed unjustly - We have given his heir authority, but let him not exceed limits in [the matter of] taking life. Indeed, he has been supported [by the law].
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৩১-৩৩ নং আয়াতের তাফসীর:
পূর্বের আয়াতে রিযিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, তিনি মানবসহ সকল প্রাণীর রিযিকের দায়িত্ব নিয়েছেন এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার পর মানুষকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তারা যেন দারিদ্রতার ভয়ে সন্তান হত্যা না করে। কারণ তিনিই তোমাদেরকে এবং তোমাদের সন্তানদেরকে রিযিক দিয়ে থাকেন। আমরা জানি মানুষ সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে রিযিক নির্ধারণ করে রাখা হয়। সুতরাং যিনি দুনিয়াতে মানুষ প্রেরণ করবেন তিনি তার রিযিকের ব্যাবস্থা করেই প্রেরণ করবেন। দারিদ্রতার ভয়ে সন্তান হত্যা করা শিরকের পর বড় ধরণের একটি গুনাহ বলে হাদীসে এসেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তুমি তোমার নিজ সন্তানকে এই ভয়ে হত্যা করো না যে, সে তোমার সাথে খাবে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৭৭)
অনেকে মনে করে থাকে, এটা অপরাধ হবে বাচ্চা দুনিয়াতে আসার পর হত্যা করলে। না, ছোট ও সুখী পরিবারের নামে বা অর্থ সম্পদ নেই, বেশি সন্তান হলে খাবার দেব কোথা থেকে, বা মহিলাদের সৌন্দর্য অক্ষত রাখার জন্য সন্তান কম নেয়াই হল সন্তান হত্যা করা। এসব যেকোন পদ্ধতিতেই হোক না কেন এ অপরাধের শামিল হবে। এ সম্পর্কে সূরা আন‘আমের ১৫১ নং আয়াতে আলোচনা রয়েছে।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ব্যভিচারের মত অশ্লীল বেহায়াপনাপূর্ণ কাজের নিকটবর্তী হতেও নিষেধ করছেন। এটি এমন একটি অপরাধ যে, অপরাধী বিবাহিত হলে ইসলামী সমাজে তার জীবিত থাকার অধিকার থাকে না। এমনকি তরবারী দিয়ে হত্যা করলেও যথেষ্ট হয় না, বরং পাথর মেরে হত্যা করতে হয় যাতে সমাজে এ শ্রেণির লোকদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে এবং লোকেরা তা থেকে শিক্ষা নেয়। তাই এখানে ব্যভিচারের কথা বলা হয়নি, ব্যভিচারের প্রতি উৎসাহিত করে, ধাবিত করে এমন কাজ ও কথাবার্তার কাছে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যেমন গায়ের মাহরাম নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, কোমল কন্ঠে কথা বলা, মহিলাদের সাজ-সজ্জা করে বাড়ির বাইরে যাওয়া, অশ্লীল গান-বাজনা ও ভিডিও ফিল্ম ইত্যাদি। আল্লাহ তা‘আলা এটাকে فَاحِشَةً বা অশ্লীল বলে আখ্যায়িত করেছেন, কারণ এটা শরীয়তের দিক থেকে যেমন খারাপ কাজ তেমনি মানুষের বিবেকও খারাপ বলে। এতে আল্লাহ তা‘আলার হক নষ্ট হয়, মহিলার হক নষ্ট হয়, স্বামীর হক নষ্ট হয় সর্বোপরি সমাজে অশ্লীতা সৃষ্টি হয় ও মানুষের বংশনামা নষ্ট হয়। তাই আমাদের প্রত্যেককে এ অশ্লীল কাজ থেকে বেঁচে থাকতে হবে।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করছেন ইসলামী শরীয়তের বৈধ পন্থা ব্যতীত কাউকে হত্যা করতে। যেমন অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যদি কেউ কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করল সে সারা পৃথিবীর মানুষকে হত্যা করল। (সূরা মায়িদাহ ৫:৩২)
আর যদি মু’মিনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে তাহলে তার ঠিকানা জাহান্নাম। (সূরা নিসা ৪:৯৩)
কাউকে হত্যা করার বৈধ পন্থাগুলো হল হত্যার বদলে হত্যা করা, বিবাহিত ব্যক্তি ব্যভিচার করলে তাকে হত্যা করা এবং কেউ ইসলাম বর্জন করে মুরতাদ হলে তাকে হত্যা করা। সেটাও রাষ্ট্রপ্রধনের দায়িত্বে। উল্লিখিত বিধি-বিধানগুলো সম্পর্কে সূরা আন‘আমের ১৫১ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
(وَمَنْ قُتِلَ مَظْلُوْمًا فَقَدْ جَعَلْنَا لِوَلِيِّه۪ سُلْطَانًا)
-এখানে আল্লাহ তা‘আলা ঘোষণা করছেন যে, যদি কোন ব্যক্তি অন্যায়ভাবে নিহত হয় তাহলে তার যে অভিভাবক রয়েছে তারা দায়িত্বশীল হবে। অর্থাৎ ইসলামী সরকারের ব্যবস্থাপনায় নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীগণ হত্যা করলে হত্যাকারীকে হত্যা করতে পারবে, ইচ্ছা করলে দিয়াত গ্রহণ করতে পারবে অথবা সম্পূর্ণ ক্ষমা করে দিতে পারবে। তিনটি বিধানেই তাদের স্বাধীনতা রয়েছে, তবে বাড়াবাড়ি যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বাড়াবাড়ি বলতে হত্যাও করবে আবার দিয়াতও নেবে, বা ক্ষমা করে আবার হত্যা করল বা কিসাস গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি যেমন
(১) একজনকে হত্যা করার ফলে দুইজন বা একের অধিক জনকে হত্যা করা, যদি তারা জড়িত না থাকে।
(২) একজনকে হত্যা করার ফলে একজনকেই হত্যা করা, কিন্তু যে হত্যা করেছে তার পরিবর্তে অন্যকে হত্যা করা।
(৩) একজনকে এবং যে হত্যা করেছে তাকেই হত্যা করা কিন্তু তার সাথে অতিরিক্ত আঘাত করা। এগুলো হল হত্যা করার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা। (আযওয়াউল বায়ান, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. যেকোন পদ্ধতি অবলম্বন করে দারিদ্রতার ভয়ে সন্তান হত্যা করা জঘন্য অপরাধ।
২. রিযিক দেয়ার মালিক আল্লাহ তা‘আলা।
৩. যিনা-ব্যাভিচারের মত অশ্লীল কাজ করা তো দূরের কথা, এর নিকটবর্তীও হওয়া যাবে না।
৪. বৈধ কারণ ব্যতীত মানুষকে হত্যা করা যাবে না।
৫. অন্যায়ভাবে নিহত হলে কিসাস গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে।
৬. কিসাস আদায়ের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা যাবে না।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings