Surah Al Isra Tafseer
Tafseer of Al-Isra : 24
Saheeh International
And lower to them the wing of humility out of mercy and say, "My Lord, have mercy upon them as they brought me up [when I was] small."
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
২৩-২৪ নং আয়াতের তাফসীর
এখানে (আরবি) শব্দের অর্থ আদেশ করা। আল্লাহ তাআলার গুরুত্বপূর্ণ আদেশ যা কখনো নড়বার নয়। তা এটাই যে, ইবাদত হবে শুধু আল্লাহর এবং পিতা-মাতার আনুগত্যে যেন তিল পরিমাণও ত্রুটি না হয়। হযরত উবাই ইবনু (রাঃ) কাব, ইবনু মাসউদ (রাঃ) এবং যহহাক ইবনু মাযাহিমের কিরআতে (আরবি) এর স্থলে (আরবি) রয়েছে। এই দুটো হুকুম একই সাথে যেমন এখানে রয়েছে, অনুরূপভাবে আরো বহু আয়াতেও রয়েছে। যেমন এক জায়গায় রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “তুমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর আমার এবং তোমার পিতামাতার।” বিশেষ করে তাদের বার্ধক্যের সময় তাদের সাথে ভদ্রতাপূর্ণ আচরণ করা, কোন বড় কথা মুখ দিয়ে বের না করা, এমনকি তাদের সামনে কোন বিরক্তি সূচক কথা উচ্চারণ না করা, না এমন কোন কাজ করা যা তারা খারাপ মনে করে, বেআদবীর সাথে নিজের হাত তাদের দিকে না বাড়ানো, বরং আদব ও সম্মানের সাথে কথাবার্তা বলা, ভদ্রতার সাথে কথোপকথন করা, তারা যে কাজে সন্তুষ্ট থাকে সেই কাজ করা, তাদেরকে দুঃখ না দেয়া, তাদের সামনে বিনয় প্রকাশ করা, তাদের বার্ধক্যের সময় এবং মৃত্যুর পর তাদের জন্যে দুআ করা অবশ্য কর্তব্য। বিশেষ করে নিম্নরূপ দুআ করতে হবেঃ হে আমার প্রতিপালক! তাঁদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তাঁরা আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।
তবে কাফিরদের জন্যে দুআ করতে মুমিনদেরকে নিষেধ করে দেয়াহয়েছে। যদিও তারা পিতা-মাতাও হয়। পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করার হাদীস অনেক রয়েছে। একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) একদা মিম্বরের উপর উঠে তিনবার আমীন বলেন। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ “আমার কাছে জিবরাঈল (আঃ) এসেছিলেন। এসে তিনি বলেনঃ “হে নবী (সঃ)! ঐ ব্যক্তির নাক ধূলা মলিন হোক, যার সামনে আপনার নাম উচ্চারিত হয়, অথচ সে আপনার উপর দরূদ পাঠ করে না। বলুন, আমীন।” সুতরাং আমি আমীন বললাম। আবার তিনি বললেনঃ “ঐ ব্যক্তির নাসিকা ধূলায় ধুসরিত হোক যার জীবনে রমযান মাস আসলো এবং চলেও গেল, অথচ তাকে ক্ষমা করা হলো না। বলুন, আমীন।” আমি আমীন বললাম। পুনরায় তিনি বললেনঃ“ঐ ব্যক্তিকেও আল্লাহ ধ্বংস করুন, যে তার পিতামাতা উভয়কে পেলে অথবা কোন একজনকে পেলো, অথচ তাদের খিদমত করে জান্নাতে যেতে পারলো না; আমীন বলুন।” আমি তখন আমীন বললাম।”
মুসনাদে আহমদে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি কোন মুসলমান পিতা-মাতার পিতৃহীন সন্তানদেরকে লালন-পালন করে পানাহার করায় যে পর্যন্ত না তারা ' অমুখাপেক্ষী হয়, নিঃসন্দেহে তার জন্যে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলমান গোলামকে আযাদ করে, আল্লাহ তাআলা তাকে জাহান্নাম হতে আযাদ করবেন, তার এক একটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিনিময়ে তাঁর এক একটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জাহান্নাম থেকে মুক্ত করবেন। এই হাদীসেরই একটি সনদে রয়েছেঃ “যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে বা তাদের কোন একজনকে পেলো অথচ জাহান্নামে চলে গেল, আল্লাহ তাআলা তাকে স্বীয় রহমত হতে দূর করবেন।” মুসনাদে আহমাদের অন্য একটি রিওয়াইয়াতে এই তিনটির বর্ণনা একই সাথে আছে। অর্থাৎ গোলাম আযাদ করা, পিতা-মাতার খিদমত করা এবং পিতৃহীনকে লালন-পালন করা। একটি রিওয়াইয়াতে পিতামাতার সম্পর্কে এও রয়েছেঃ আল্লাহ তাকে দূর করুন এবং তাকে ধ্বংস করুন। একটি বর্ণনায় তিনবার তাকে বদ দুআ করা হয়েছে। একটি রিওয়াইয়াতে রাসূলুল্লাহর (সঃ) নাম শুনে দুরূদ পাঠ না কারী ব্যক্তি, রমযান মাসে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত ব্যক্তি এবং পিতা-মাতার খিদমত করে ও তাদেরকে সন্তুষ্ট করে বেহেশতে যেতে পারলো না এমন ব্যক্তির জন্যে রাসূলুল্লাহর (সঃ) বদুআ করা বর্ণিত হয়েছে।
একজন আনসারী এসে রাসূলুল্লাহকে (সঃ) জিজ্ঞেস করলোঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমার পিতা-মাতার ইন্তেকালের পরেও কি তাদের সাথে। সদাচরণের কোন সুযোগ আছে?” তিনি উত্তরে বলেনঃ “হাঁ, চারটি আচরণ রয়েছে। তাদের জানাযার নামায পড়া, তাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করা, তাদের ওয়াদা পূরণ করা, তাদের বন্ধু-বান্ধবদের সম্মান করা এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক যুক্ত রাখা। এটা এ আচরণ যা তুমি তাদের মৃত্যুর পরেও তাদের সাথে করতে পারো। (এ হাদীসটি সুনানে আবি দাউদ ও সুনানে ইবনু মাজাহতে বর্ণিত হয়েছে)
একটি লোক এসে বললোঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি জিহাদের ইচ্ছায় আপনার খিদমতে সুসংবাদ নিয়ে এসেছি।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “তোমার মা (বেঁচে) আছে কি?” উত্তরে সে বললোঃ “হাঁ, আছে।” তখন তিনি লোকটিকে বললেনঃ “যাও, তারই খিদমতে লেগে থাকো। বেহেশত তার পায়ের কাছে রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে লোকটি দু’বার, তিনবার এই কথাটারই পুনরাবৃত্তি করে এবং রাসূলুল্লাহ ও (সঃ) এই জবাবেরই পুনরাবৃত্তি করেন। (সুনানে নাসাঈ, সুনানে ইবনু মাজাহ প্রভৃতি হাদীস গ্রন্থে এটা বর্ণিত আছে)
বলা হয়েছেঃ আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের পিতাদের সম্পর্কে অসিয়ত করেছেন, আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মাতাদের সম্পর্কে অসিয়ত করেছেন। পরবর্তী বাক্যটিকে তিনি তিন বার বর্ণনা করে বলেনঃ তিনি তোমাদেরকে তোমাদের নিকটতম আত্মীয়দের ব্যাপারে অসিয়ত করেছেন, প্রথমে সর্বাপেক্ষা নিকটতমদের ব্যাপারে এবং এরপর তাদের পরবর্তীদের ব্যাপারে (অসিয়ত করেছেন)। (সুনানে ইবনু মাজাহ ও সুনানে আহমাদে এটা বর্ণিত আছে)
নবী (সঃ) বলেছেনঃ “দাতার হাত উপরে। তোমরা সদাচরণ কর তোমাদের মাতাদের সাথে। পিতাদের সাথে, বোনদের সাথে, ভাইদের সাথে এবং এরপর এর পরবর্তী নিকটতম আত্মীয়দের সাথে এইভাবে স্তরের পর স্তর।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)
একটি রিওয়াইয়াতে রয়েছে যে, একটি লোক তার মাতাকে পিঠে উঠিয়ে নিয়ে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করছিল। এ সময় সে রাসূলুল্লাহকে (সঃ) জিজ্ঞেস করেঃ “এখন আমি আমার মাতার হক আদায় করতে পেরেছি কি?” উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ না, এক অণু পরিমাণও নয়।” (এ হাদীসটি ইমাম বাযার (রঃ) দুর্বল সনদে স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings