Surah Al Isra Tafseer
Tafseer of Al-Isra : 22
Saheeh International
Do not make [as equal] with Allah another deity and [thereby] become censured and forsaken.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২২-২৪ নং আয়াতের তাফসীর:
(لَا تَجْعَلْ مَعَ اللّٰهِ إلٰهًا اٰخَرَ.... )
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে সকলকে এ নির্দেশ দিচ্ছেন যে, এ বিশ্বাস কর না যে, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্য কেউ ইবাদত পাওয়ার হকদার আছে, অথবা আল্লাহ তা‘আলার সাথে অন্য কেউ ইবাদত পাওয়ার হকদার আছে। বরং একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই সকল ইবাদত পাওয়ার হকদার, তাঁর জন্যই সকল ইবাদত করতে হবে। যদি এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত না করে, অন্য কোন মা‘বূদের ইবাদত কর তাহলে অবশ্যই নিন্দিত ও লাঞ্ছিত হবে। দুনিয়াতে তোমাকে তোমার বাতিল মা‘বূদেরা কোন উপকার করবে না, আখিরাতেও তারা কোন উপকার করতে পারবে না, তাদেরকে নিয়ে জাহান্নামে যেতে হবে। এই শিরক ও তার পরিণতি সম্পর্কে সূরা নিসায় আলোচনা করা হয়েছে।
(وَقَضٰي رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوْا....)
এখানে আল্লাহ তা‘আলা একমাত্র তাঁর ইবাদত করার নির্দেশ দেয়ার সাথে সাথে পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছেন। কুরআনের প্রত্যেক স্থানে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিজের হকের (একমাত্র তাঁর ইবাদতের নির্দেশের) সাথে সাথে মানুষের মধ্যে যারা সবচেয়ে বেশি সৎ ব্যবহার পাওয়ার হকদার তথা পিতা-মাতা তাদের কথা উল্লেখ করেছেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاعْبُدُوا اللّٰهَ وَلَا تُشْرِكُوْا بِه۪ شَيْئًا وَّبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا)
“তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর ও কোন কিছুকে তাঁর সাথে শরীক কর না; এবং পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহার কর” (সূরা নিসা ৪:৩৬)
এরূপ কুরআনে অসংখ্য আয়াত রয়েছে যেখানে পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমনকি যদি পিতা-মাতা মুশরিকও হয় তাহলেও তাদের সাথে সৎ ব্যবহার করতে হবে, তবে আল্লাহর আনুগত্য বহির্ভূত কোন কাজ বা তাঁর সাথে শিরক করার নির্দেশ দিলে তাদের কথা মানা যাবে না, কিন্তু বিআদবীও করা যাবে না, সুন্দরপন্থায় বর্জন করতে হবে। হাদীসেও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর ইবাদতের পর পিতা-মাতার হকের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন কবীরাহ গুনাহ হল আল্লাহর সাথে শিরক করা এবং পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া। (সহীহ বুখারী হা: ৬৮৭০, সহীহ মুসলিম হা: ৮৭)
বিশেষ করে তারা উভয়ে বা একজন বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদের সাথে ভাল আচরণ করতে হবে, তাদের খেদমত করতে হবে এবং তাদের কথায় বা আচরণে কষ্ট পেয়ে মুখ দিয়ে উফ শব্দটিও উচ্চারণ করবে না, এমন কি ধমকস্বরেও কথা বলবে না। এসময় তারা খেদমতের বেশি মুখাপেক্ষী থাকে, কারণ নিজেরা স্বয়ংসম্পন্নভাবে চলতে ফিরতে পারে না, ঔষধ-ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন হয়, কাপড় নষ্ট করে ফেলে ইত্যাদি। তাই এ সময়টির কথা আল্লাহ তা‘আলা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। এবং সর্বদা তাদের সাথে উত্তম ভাষায় সম্মান দিয়ে কথা-বার্তা বলতে হবে। সুতরাং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভাষায় পিতা-মাতা সন্তানের জান্নাতে ও জাহান্নামে যাওয়ার মাধ্যম। কেউ যদি তাদের সেবা করে সন্তুষ্ট করতে পারে তাহলে আল্লাহ তা‘আলা সন্তুষ্ট হন, আর সে জান্নাতে যাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করবে আর যদি কেউ তাদেরকে কষ্ট দেয় তাহলে আল্লাহ তা‘আলাও কষ্ট পান, এ জন্য তাকে জাহান্নামে যেতে হবে। হাদীসে এসেছে
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা মিম্বরে আরোহণ করে তিনবার বললেন, আমীন, আমীন, আমীন। তখন সাহাবারা এর কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন । তিনি বললেন: আমার নিকট জিবরীল এসেছিল। সে বলল, হে মুহাম্মাদ! ঐ ব্যক্তির নাক ধূলোমলিন হোক যার নিকট আমার নাম স্মরণ করার পর সে আমার ওপর দরূদ পাঠ করে না। বলুন আমীন। আমি বললাম, আমীন। অতঃপর সে বলল: ঐ ব্যক্তির নাক ধূলোমলিন হোক যার কাছে রমযান মাস এসেছে আবার চলেও গেছে কিন্তু তাকে ক্ষমা করা হয়নি। বলুন আমীন। আমি বললাম, আমীন। অতঃপর সে আবার বলল: ঐ ব্যক্তির নাক ধূলোমলিন হোক যে, তার পিতা-মাতাকে অথবা তাদের একজনকে তার জীবদ্দশায় পেয়েছে কিন্তু সে জান্নাতে যেতে পারল না। বলুন আমীন। আমি বললাম, আমীন। (তিরমিযী-৩৫৪৫, যাওয়ায়েদুল মুসনাদ হা: ৭৪৪৪, সহীহ)
(جَنَاحَ الذُّلِّ) ‘নম্রতার বাহু’ অর্থাৎ পাখি যখন তার বাচ্চাদেরকে নিজ করুণার ছায়ায় রাখতে চায়, তখন তাদের জন্য নিজের ডানাকে নত করে দেয়। অর্থাৎ তুমিও তোমার পিতা-মাতার সাথে ঐরূপ উত্তম এবং করুণাসিক্ত আচরণ কর। আর তাদের ঐরূপ সেবাযত্ন কর যেরূপ সেবা-যত্ন তারা তোমার শিশুকালে করেছিল। আর তাদের মৃত্যুর পর তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করে বল:
(رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِيْ صَغِيْرًا)
‘হে আমার প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া কর যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।’
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ)
‘হে আমাদের প্রতিপালক! যেদিন হিসেব অনুষ্ঠিত হবে সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং মু’মিনগণকে ক্ষমা করে দাও।’ (সূরা ইবরাহীম ১৪:৪১)
তবে যদি পিতা-মাতা বিধর্মী হয় তাহলে তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা যাবে না। যেমনিভাবে ইবরাহীম (عليه السلام) তাঁর পিতার অবস্থা জানার পর তার জন্য দু‘আ করা থেকে বিরত থাকলেন। (তাওবা ৯:১০৩) তবে ভাল ব্যবহার করতে হবে এবং সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার পরিবর্তে অন্যের ইবাদত করা যাবে না।
২. পিতা-মাতার সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে। তাদের অবাধ্য হওয়া যাবে না।
৩. পিতা-মাতা বিধর্মী হলে তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা যাবে না, তবে ভাল আচরণ করতে হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings