Surah Al Isra Tafseer
Tafseer of Al-Isra : 16
Saheeh International
And when We intend to destroy a city, We command its affluent but they defiantly disobey therein; so the word comes into effect upon it, and We destroy it with [complete] destruction.
Tafsir Abu Bakar Zakaria
Tafseer 'Tafsir Abu Bakar Zakaria' (BN)
[১] এ আয়াতে ব্যবহৃত أمرنا শব্দটির অর্থ ও উদ্দেশ্য নিয়ে আলেমদের মধ্যে বিভিন্ন মত রয়েছেঃ
১) এখানে أمرنا –শব্দের অর্থ, "নির্দেশ’। সে হিসেবে আয়াতের অর্থ দাঁড়ায়, “সেখানকার সমৃদ্ধশালী ব্যক্তিদেরকে আদেশ করি ফলে তারা সেখানে অসৎ কাজ করে” কিন্তু প্রশ্ন হলো, আল্লাহ তা'আলা কিভাবে খারাপ কাজের নির্দেশ করেন? তাই এ অর্থ নেয়া হলে যে সমস্যা সৃষ্টি হয় তার সমাধানে আলেমগণ কয়েকটি দিক নির্দেশ করেছেনঃ এক, এখানে "নির্দেশ' মানে প্রকৃতিগত নির্দেশ ও প্রাকৃতিক বিধান। অর্থাৎ প্রকৃতিগত ভাবে সবসময় এমনটিই হয়ে থাকে। যখন কোন জাতির ধ্বংস হবার সময় এসে যায়, তার সমৃদ্ধিশালী লোকেরা ফাসেক হয়ে যায়। আর ধ্বংস করার সংকল্প মানে এ নয় যে, আল্লাহ এমনিতেই বিনা কারণে কোন নিরপরাধ জনবসতি ধ্বংস করার সংকল্প করে নেন, বরং এর মানে হচ্ছে, যখন কোন জনবসতি অসৎকাজের পথে এগিয়ে যেতে থাকে এবং আল্লাহ তাকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন তখন এ সিদ্ধান্তের প্রকাশ এ পথেই হয়ে থাকে। দুই, এখানে নির্দেশ দেয়ার অর্থ অসৎকাজের নির্দেশ নয়। বরং এখানে একটি বাক্য উহ্য আছে। তাহলে, “সেখানকার সমৃদ্ধশালী ব্যক্তিদেরকে সৎকাজের নির্দেশ করি কিন্তু তারা অসৎ কাজে লিপ্ত হলে আমি তাদেরকে ধ্বংস করি। ” তখন এ নির্দেশটি শর"য়ী নির্দেশ বলে বিবেচিত হবে । [ইবন কাসীর]
২) ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি أمرنا শব্দের অর্থ করেছেন سلطنا তখন অর্থ হবে, ‘যখন আমি কোন জনপদকে ধ্বংস করতে চাই তখন তাদের উপর খারাপ লোকদের ক্ষমতায়ন করি ফলে তারা সেখানে আমার নাফরমানী করার কারণে তাদেরকে আমি ধ্বংস করি।’ [ইবন কাসীর]
৩) হাসান, কাতাদা সহ আরও অনেকে বলেন, أمرنا অর্থ بعشنا অৰ্থাৎ তাদের উপর এমন খারাপ লোকদের চড়াও করি যাতে তারা ধ্বংস হওয়ার কাজ করে। ফলে তাদের আমি ধ্বংস করি। [ফাতহুল কাদীর]
৪) ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও কাতাদা রাহেমাহুল্লাহ বলেন, এখানে أمرنا অর্থ أكثرنا অর্থাৎ তাদের মধ্যে আমি আধিক্য দান করি। ফলে আল্লাহকে ভুলে যায় এবং নাফরমানী করতে থাকে যাতে তাদের ধ্বংস অনিবাৰ্য হয়ে পড়ে। জাহেলিয়াতের যুগে যখন কোন গোত্রের লোক বেড়ে যেত এবং শক্তি বৃদ্ধি পেত তখন বলা হতো, أَمِرَ بَنُو فُلانٍ সে হিসেবে এখানে ও একই অর্থ নেয়া হবে। [বুখারীঃ ৪৭১১]
[২] আয়াতে বিশেষভাবে অবস্থাপন্ন ধনীদের কথা উল্লেখ করে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, জনসাধারণ স্বাভাবিকভাবেই বিত্তশালী ও শাসক-শ্রেণীর চরিত্র ও কর্মের দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়। এরা কুকর্মপরায়ণ হলে সমগ্র জাতি কুকর্মপরায়ণ হয়ে যায়। তাই আল্লাহ্ তাআলা যাদেরকে ধন-দৌলত দান করেন, কর্ম ও চরিত্রের সংশোধনের প্রতি তাদের অধিকতর যত্নবান হওয়া উচিত। এমন হওয়া উচিত নয় যে, তারা বিলাসিতায় পড়ে কর্তব্য ভুলে যাবে এবং তাদের কারণে সমগ্র জাতি ভ্ৰান্ত পথে পরিচালিত হবে। এমতাবস্থায় সমগ্ৰ জাতির কুকর্মের শাস্তিও তাদেরকে ভোগ করতে হবে। তাছাড়া যখন কোন জাতির লোকেরা খারাপ কাজ করে এবং অন্যান্যরা সেটাতে বাধা না দেয়। তখন তারা হয় সেটায় রাজি আছে হিসেবে অথবা তার বিরোধিতা না করার কারণে শাস্তি লাভ করে। এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, “আমাদের মধ্যে সৎ লোকগণ থাকা অবস্থায় ও আমরা কি ধ্বংস প্রাপ্ত হবো?” তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বলেছিলেন, “হ্যাঁ, যখন খারাপের পরিমান বৃদ্ধি পায়”। [মুসলিমঃ ২৮৮০]
[৩] আয়াতের বাহ্যিক অর্থ থেকে এরূপ সন্দেহের অবকাশ ছিল যে, তাদেরকে ধ্বংস করাই ছিল আল্লাহ তা'আলার উদ্দেশ্য। তাই প্রথমে তাদেরকে নবী-রাসূলগণের মাধ্যমে ঈমান ও আনুগত্যের আদেশ দেয়া অতঃপর তাদের পাপাচারকে আযাবের কারণ বানানো এসব তো আল্লাহ তাআলারই পক্ষ থেকে হয়। এমতাবস্থায় বেচারাদের দোষ কি? তারা তো অপারগ ও বাধ্য। এর জওয়াব হলো, আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিবেক-বুদ্ধি ও ইচ্ছা শক্তি দান করেছেন এবং আযাব ও সওয়াবের পথ সুস্পষ্টভাবে বাতলে দিয়েছেন। কেউ যদি স্বেচ্ছায় আযাবের পথে চলারই ইচ্ছা ও সংকল্প গ্ৰহণ করে, তবে আল্লাহর রীতি এই যে, তিনি তাকে সেই আযাবের উপায় উপকরণাদি সরবরাহ করে দেন। কাজেই আযাবের আসল কারণ স্বয়ং তাদের কুফুরী ও গোনাহের সংকল্প। তাই তারা ক্ষমার যোগ্য হতে পারে না। এখানে প্রশ্ন হতে পারে যে, গোনাহ যদি সমৃদ্ধশালীরা করে থাকে, তবে তার জন্য সাধারণ জনসাধারণ কেন শাস্তি ভোগ করবে? এর দু'টি উত্তর হতে পারে। এক, যারা সমৃদ্ধশালী নয়। তারা সমৃদ্ধশালীদেরই অনুগামী থাকে। সেজন্য তারা তাদের মতই শাস্তি ভোগ করবে। এখানে সমৃদ্ধশালীদের উল্লেখ এজন্যে করা হয়েছে যে, সাধারণত: এরাই নেতা গোছের লোক হয়ে থাকে। দুই. তাদের কেউ যেহেতু অন্যায় করেছিল অন্যরা তাতে বাধা দেয়ার দরকার ছিল। কিন্তু তারা যেহেতু তা করেনি। সুতরাং তারাও সমান দোষে দোষী। [আদওয়াউল বায়ান; সংক্ষেপিত]
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings