Surah Al Isra Tafseer
Tafseer of Al-Isra : 110
Saheeh International
Say, "Call upon Allah or call upon the Most Merciful. Whichever [name] you call - to Him belong the best names." And do not recite [too] loudly in your prayer or [too] quietly but seek between that an [intermediate] way.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১১০-১১১ নং আয়াতের তাফসীর:
মক্কার মুশরিকরা আল্লাহর ‘রহমান, রহীম’ গুণবাচক নামের সাথে পরিচিত ছিল না। যেমন সূরা ফুরকানের ৬০ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে। বিশিষ্ট তাবেয়ী মাকহুল (রহঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: জনৈক মুশরিক নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সিজদারত অবস্থায় আল্লাহকে ‘ইয়া রহমান, ইয়া রহীম’ নামে ডাকতে শুনলেন। তখন সে মুশরিক বলল: সে দাবী করে একমাত্র আল্লাহকেই আহ্বান করে, এখন তো দেখছি সে দু’জন মাবুদকে ডাকছে। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (ইবনু জারীর ১৫/১২১, ইবনু কাসীর ৫/১৩৫)
তাই আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলছেন: বলে দাও তোমরা আল্লাহ তা‘আলাকে তাঁর যে কোন নামেই ডাকতে পারো। ইচ্ছা করলে আল্লাহ বলে ডাকতে পারো, ইচ্ছা করলে রহমান নামে ডাকতে পারো। এছাড়াও তাঁর অনেক সুন্দর সুন্দর নাম রয়েছে সেগুলো উল্লেখ করে ডাকতে পারো।
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلِلہِ الْاَسْمَا۬ئُ الْحُسْنٰی فَادْعُوْھُ بِھَا وَذَرُوا الَّذِیْنَ یُلْحِدُوْنَ فِیْٓ اَسْمَا۬ئِھ۪ سَیُجْزَوْنَ مَا کَانُوْا یَعْمَلُوْنَ)
“আল্লাহর জন্য রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম। অতএব তোমরা তাঁকে সে সকল নামেই ডাক, যারা তাঁর নাম বিকৃত করে তাদেরকে বর্জন কর, অচিরেই তাদেরকে দেয়া হবে তাদের কৃতকর্মের ফল।” (সূরা আ‘রাফ ৭:১৮০)
আল্লাহ তা‘আলার সুন্দর সুন্দর নামগুলো বিভিন্ন সূরায় যেমন সূরা হাশরে কিছু রয়েছে। এ সম্পর্কে সূরা আ‘রাফের ১৮০ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
অতঃপর আল্লাহ তাঁর রাসূলকে নির্দেশ দিলেন তিনি যেন সালাতে উচ্চস্বরে কুরআন তেলাওয়াত না করেন। কারণ কুরআন শুনে ইয়াহূদী খ্রিস্টানরা আল্লাহ তা‘আলাকে, রাসূলকে এবং কুরআনকে গালি-গালাজ করত এবং খুব নিম্ন স্বরেও পড়তে নিষেধ করেছেন। কারণ এতে যারা সালাতে পেছনে থাকে তারা তেলাওয়াত শুনতে পায় না। বরং মধ্যমপন্থা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
একদা রাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বকর (রাঃ) এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি দেখলেন যে, আবূ বকর (রাঃ) খুব মৃদু আওয়াজে সালাত আদায় করছেন। অতঃপর উমার (রাঃ) এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন; দেখলেন যে, তিনি উঁচু আওয়াজে তেলাওয়াত করে সালাত আদায় করছেন। তিনি তাদের উভয়কে কারণ জিজ্ঞেস করলেন। আবূ বকর (রাঃ) বললেন: আমি যার সাথে মুনাজাতে ব্যস্ত ছিলাম তিনি আমার শব্দ শুনছিলেন। আর উমার (রাঃ) উত্তরে বললেন: আমার উদ্দেশ্য ঘুমন্তদেরকে জাগিয়ে দেয়া এবং শয়তানকে তাড়ানো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বকর (রাঃ) কে বললেন: তুমি তোমার শব্দ একটু উঁচু করবে আর উমার (রাঃ) কে বললেন: তুমি তোমার শব্দ একটু নিচু করবে। (আবূ দাঊদ হা: ১৩২৯, সহীহ)
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, ‘তোমার সালাতে স্বর উচ্চ করো না এবং অতিশয় ক্ষীণও করো না’ এ আয়াত এমন সময় অবতীর্ণ হয় যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় অপ্রকাশ্যে অবস্থান করছিলেন। অতঃপর যখন তিনি সাহাবীদের নিয়ে সালাত আদায় করতেন এবং উঁচু আওয়াজে কুরআন তেলাওয়াত করতেন তখন মুশরিকরা তা শুনে কুরআনকে গালি দিত, যিনি কুরআন অবতীর্ণ করেছেন তাঁকে (আল্লাহ তা‘আলাকে) গালি দিত এবং যে কুরআন নিয়ে এসেছেন (জিবরীল (عليه السلام))কে গালি দিত। তখন আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেন। এতে তিনি এমনভাবে কুরআন পাঠ করতে বলেছেন যাতে মুশরিকরা তা শুনতে না পায় এবং যারা মুক্তাদী তাদেরও যেন শুনতে কষ্ট না হয়। মধ্যমপন্থা অবলম্বন করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। (সহীহ বুখারী: ৪৭২২-৭৪৯০, সহীহ মুসলিম হা: ৪৪৬)
(وَقُلِ الْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ.....) শানে নুযূল:
ইবনু জারীর মুহাম্মাদ ইবনু কা‘ব আল কুরাযী থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানরা বলত যে, আল্লাহ তা‘আলা সন্তান গ্রহণ করেন। আরবের মুশরিকরা বলত, “হে আল্লাহ তা‘আলা আমরা আপনার কাছে হাযির আছি, আপনার কোন অংশীদার নেই, শুধু একজন অংশীদার রয়েছে, তারও মালিক আপনিই। সে যা কিছুর মালিক তারও মালিক আপনিই।” সাবী এবং মাজুসীরা বলত: যদি আল্লাহ তা‘আলার ওয়ালী না থাকত তবে তিনি একাই সমস্ত ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করতে পারতেন না। نعوذ بالله তাদের এই সকল কথা খণ্ডন করার জন্য আল্লাহ তা‘আলা উক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ করেন। (লুবাবুন নুকূল ফী আসবাবিন নুযূল: পৃ. ১৭৬)
সুতরাং প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার যিনি কোন দিক থেকে কোন প্রকার অংশীদার গ্রহণ করেননি। তাঁর কোন স্ত্রী-সন্তান নেই, তাঁর রাজত্বে কোন শরীক নেই এবং তাঁর কোন অভিভাবক ও উপদেষ্টা নেই। তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ। তিনি একাই বিশ্ব জগৎ পরিচালনার জন্য যথেষ্ট।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(قُلْ ھُوَ اللہُ اَحَدٌﭐﺆاَللہُ الصَّمَدُﭑﺆلَمْ یَلِدْﺃ وَلَمْ یُوْلَدْﭒﺫ وَلَمْ یَکُنْ لَّھ۫ کُفُوًا اَحَدٌ)
“বল: তিনিই আল্লাহ একক। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। আর তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।” (সূরা ইখলাস: ১-৪)
সকল ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। যেমন তিনি অন্যত্র বলেন,
(تَبَارَكَ الَّذِيْ بِيَدِهِ الْمُلْكُ ز وَهُوَ عَلٰي كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرُ )
“বরকতময় সেই স্বত্ত্বা, যাঁর হাতে সর্বময় কর্তৃত্ব; তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।” (সূরা মুলক ৬৭:১)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার সুন্দর সুন্দর নাম রয়েছে, সেগুলোর যে কোন নাম ধরে ডাকলে তিনি সাড়া দেবেন।
২. কোন প্রেক্ষাপট বা কোন স্থানে আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূল অথবা দীনের কোন নিদর্শনের মানহানি হতে পারে সেখানে ভাল কাজও করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩. আল্লাহ তা‘আলার কোন শরীক, স্ত্রী-সন্তান ও ওয়ালী নেই।
৪. আল্লাহ তা‘আলার কোন নাম ও গুণাবলীকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই বরং ঈমান আনার সাথে সাথে সে সকল নাম ও গুণাবলীর মর্যাদা দিতে হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings