Surah An Nahl Tafseer
Tafseer of An-Nahl : 90
Saheeh International
Indeed, Allah orders justice and good conduct and giving to relatives and forbids immorality and bad conduct and oppression. He admonishes you that perhaps you will be reminded.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
মহামহিমান্বিত আল্লাহ স্বীয় বান্দাদেরকে ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতি দানের নির্দেশ দিচ্ছেন, যদিও প্রতিশোধ গ্রহণও জায়েয। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর তবে সমান সমান ভাবে প্রতিশোধ গ্রহণ কর। আর যদি ধৈর্য ধারণ কর তবে ধৈর্যশীলদের জন্যে এটা বড়ই উত্তম কাজ।” (১৬:১২৬) অন্য আয়াতে আছেঃ “মন্দের বদল সমপরিমাণ মন্দ, আর যে মাফ করে দেয় ও মীমাংসা করে নেয়, তার প্রতিদান আল্লাহর নিকট রয়েছে।” আর একটি আয়াতে রয়েছেঃ “যখমের কিসাস রয়েছে, কিন্তু যে ক্ষমা করে দেয়, ওটা তার জন্যে গুনাহ মাফের কারণ।” সুতরাং ন্যায়পরায়ণতা তো ফরয, আর ইহসান নফল। কালেমায়ে তাওহীদের সাক্ষ্য দেয়াও আ। বাহির ও ভিতর এক হওয়াও আ। আর ইহসান এই যে, ভিতরের পরিচ্ছন্নতা বাইরের চেয়েও বেশী হবে। ফাহসা’ এবং ‘মুনকার’ হচ্ছে ভিতর অপেক্ষা বাহির বেশী সুন্দর হওয়া।
আল্লাহ তাআলা আত্মীয়তার সম্পর্ক যুক্ত রাখারও নির্দেশ দিচ্ছেন। যেমন স্পষ্ট ভাষায় রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “আত্মীয়-স্বজন, মিল্কীন ও মুসাফিরদেরকে তাদের হক দিয়ে দাও এবং অপচয় করো না।” আর তিনি অশ্লীলতা, অসৎকার্য ও সীমালংঘন থেকে নিষেধ করছেন। প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সমস্ত অশ্লীলতা হারাম এবং লোকদের উপর যুলুম ও বাড়াবাড়ী করাও হারাম। যেমন হাদীসে এসেছেঃ যুলুম ও সীমালংঘন অপেক্ষা এমন কোন বড় গুনাহ নেই যার জন্যে দুনিয়াতেই তাড়াতাড়ি শাস্তি দেয়া হয় এবং পরকালে কঠিন শাস্তি জমা থাকে।” আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “এই আদেশ ও নিষেধ তোমাদের জন্যে উপদেশ স্বরূপ, যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।”
হযরত ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন যে, গোটা কুরআনের ব্যাপক অর্থ জ্ঞাপক আয়াত হচ্ছে সূরায়ে নাহলের এই আয়াতটি। কাতাদা (রঃ) বলেন যে, যত ভাল স্বভাব আছে সেগুলি অবলম্বনের নির্দেশ কুরআন দিয়েছে এবং মানুষের মধ্যে যে সব খারাপ স্বভাব রয়েছে সেগুলি পরিত্যাগ করতে আল্লাহ তাআ’লা হুকুম করেছেন। হাদীসে রয়েছে যে, উত্তম চরিত্র আল্লাহ তাআলা পছন্দ করেন এবং অসৎ চরিত্র তিনি অপছন্দ করেন।
আবদুল মালিক ইবনু উমাইর (রাঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। যে,হযরত আকসাম ইবনু সাইফীর (রাঃ) নিকট নবীর (সঃ) আবির্ভাবের খবর পোঁছে। তিনি তাঁর কাছে গমন করার স্থির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কিন্তু তাঁর কওম তাঁর এই পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তিনি তখন তাদেরকে বলেনঃ
“তোমরা আমাকে তাঁর কাছে যেতে না দিলে এমন লোক আমার কাছে হাজির কর যাদেরকে আমি দূত হিসেবে তাঁর নিকট প্রেরণ করবো।” তাঁর কথা অনুযায়ী দু’জন লোক এ কাজের জন্যে প্রস্তুত হয়ে যান। তাঁরা নবীর (সঃ) নিকট হাজির হয়ে আরজ করেনঃ “আমরা আকসাম ইবনু সাইফীর (রাঃ) দূত হিসেবে আপনার নিকট আগমন করেছি।” অতঃপর তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞেস করেনঃ “আপনি কে এবং আপনি কি?” তিনি উত্তরে বলেনঃ “তোমাদের প্রথম প্রশ্নের উত্তর এই যে, আমি মুহাম্মদ ইবনু আব্দিল্লাহ (সঃ)। আর তোমাদের দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর এই যে, আমি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল।” অতঃপর তিনি (আরবি) এই আয়াতটি পাঠ করেন। তাঁরা বলেনঃ “পুনরায় পাঠ করুন।” তিনি আবার পাঠ করেন। তারা তা মুখস্থ করে নেন এবং ফিরে গিয়ে আকসামকে (রাঃ) সমস্ত খবর অবহিত করেন। তাঁরা তাঁকে বলেনঃ “তিনি নিজের বংশের কোন গৌরব প্রকাশ করেন নাই। শুধু নিজের নাম ও পিতার নাম তিনি বলেন। অথচ তিনি অতি সম্ভান্ত বংশের লোক। তিনি আমাদেরকে যে কথাগুলি শিখিয়ে দিয়েছেন তা আমরা মুখস্থ করে নিয়েছি।” অতঃপর তাঁরা তাঁকে তা শুনিয়ে দেন। কথাগুলি শুনে আকসাম (রাঃ) বলেনঃ “তিনি তো তাহলে খুবই উত্তম ও উন্নত মানের কথা শিখিয়ে থাকেন। আর তিনি খারাপ ও অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে বিরত রাখেন। হে আমার কওমের লোকেরা! তোমরা ইসলামে অগ্রগামী হও। তাহলে তোমরা নেতৃত্ব লাভ করবে এবং অন্যদের গোলাম হয়ে থাকবে না।”
হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) একদা বাড়ীর উঠানে বসে ছিলেন। এমন সময় হযরত উসমান ইবনু মাযউন (রাঃ) তার পার্শ্ব দিয়ে গমন করেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁকে বলেনঃ “বসছে না কেন?” তিনি তখন বসে পড়লেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তার সাথে কথা বলতে ছিলেন। হঠাৎ তিনি (নবী (সঃ) তাঁর দৃষ্টি আকাশের দিকে উত্তোলন করেন। কিছুক্ষণ ধরে তিনি উপরের দিকেই তাকাতে থাকেন। তারপর ধীরে ধীরে তিনি দৃষ্টি নীচের দিকে নামিয়ে দেন এবং নিজের ডান দিকে যমীনের দিকে তাকাতে থাকেন। এ দিকে তিনি মুখমণ্ডলও ঘুরিয়ে দেন। আর এমনভাবে মাথা হেলাতে থাকেন যে, যেন কারো নিকট থেকে কিছু বুঝতে রয়েছেন এবং কেউ তাঁকে কিছু বলতে রয়েছে। কিছুক্ষণ পর্যন্ত এই অবস্থাই থাকে। তারপর তিনি স্বীয় দৃষ্টি উঁচু করতে শুরু করেন, এমন কি আকাশ পর্যন্ত তাঁর দৃষ্টি পৌঁছে যায়। তারপর তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসেন এবং পূর্বের বসার অবস্থায় হযরত উসমানের (রাঃ) দিকে মুখ করেন। হযরত উসমান (রাঃ) সবকিছুই দেখতে ছিলেন। তিনি আর ধৈর্য ধরতে পারলেন না। জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আপনার পাশে বেশ কয়েকবার আমার বসার সুযোগ ঘটেছে। কিন্তু আজকের মত কোন দৃশ্য তো কখনো দেখি নাই?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “কি দেখেছো?” তিনি উত্তরে বলেনঃ “দেখি যে, আপনি দৃষ্টি আকাশের দিকে উত্তোলন করলেন এবং পরে নীচের দিকে নামিয়ে দিলেন। এরপর ডান দিকে ঘুরে গিয়ে ঐ দিকেই তাকাতে লাগলেন এবং আমাকে ছেড়ে দিলেন। তারপর আপনি মাথাকে এমনভাবে নড়াতে থাকলেন যে, যেন কেউ আপনাকে কিছু বলছে এবং আপনি কান লাগিয়ে তা শুনছেন।” তিনি বললেনঃ “তা হলে তুমি সবকিছুই দেখেছো?” তিনি জবাবে বলেনঃ “জ্বি, হাঁ, আমি সবকিছুই দেখেছি।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন বললেনঃ “আমার কাছে আল্লাহ তাআলার প্রেরিত ফেরে ওয়াহী নিয়ে এসেছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ “আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত?” তিনি উত্তর দিলেনঃ “হাঁ, আল্লাহ কর্তৃকই প্রেরিত।” তিনি প্রশ্ন করলেনঃ “তিনি আপনাকে কি বললেনঃ “তিনি জবাব দিলেনঃ “তিনি আমাকে (আরবি) এই আয়াতটি পড়ে শুনালেন।” হযরত উসমান ইবনু মাযউন (রাঃ) বলেনঃ “তৎক্ষণাৎ আমার অন্তরে ঈমান সুদৃঢ় হয়ে যায় এবং রাসূলুল্লাহর (সঃ) মহব্বত আমার অন্তরে স্থান করে নেয়।” অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, হযরত উসমান ইবনু আবুল আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ “আমি রাসূলুল্লাহর (সঃ) পার্শ্বে বসে ছিলাম। এমন সময় হঠাৎ তিনি তাঁর দৃষ্টি উপরের দিকে উত্তোলন করেন এবং বললেনঃ “আমার নিকট হযরত জিবরাঈল (আঃ) আগমন করে আমাকে নির্দেশ দেন যে, আমি যেন (আরবি) এই আয়াতটিকে এই সূরার এই স্থানে রেখে দিই।” এই রিওয়াইয়াতটিও সঠিক।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings