Surah An Nahl Tafseer
Tafseer of An-Nahl : 83
Saheeh International
They recognize the favor of Allah ; then they deny it. And most of them are disbelievers.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
৮০-৮৩ নং আয়াতের তাফসীর
মহামহিমান্বিত আল্লাহ তাঁর আরো অসংখ্য ইহসান, ইনআম ও নিয়ামতের বর্ণনা দিচ্ছেন। তিনিই আদম সন্তানের বসবাসের এবং আরাম ও শান্তি লাভ করার জন্যে ঘর-বাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। অনুরূপভাবে চতুষ্পদ জন্তুর চামড়ার তাঁবু, ডেরা ইত্যাদি তাদেরকে দান করেছেন। এগুলো তাদের সফরের সময় কাজে লাগে। এগুলো বহন করাও সহজ এবং কোন জায়গায় অবস্থানকালে খাটানোও সহজ। তারপর বকরীর লোম, উঁটের কেশ এবং মেষ ও দুম্বার পশম ব্যবসায়ের মাল হিসেবে তিনি বানিয়ে দিয়েছেন। এগুলো দ্বারা বাড়ীর আসবাবপত্রও তৈরী হয়। যেমন এগুলো দ্বারা কাপড়ও বয়ন করা হয়। এবং বিছানাও তৈরী করা হয়, আবার ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যবসার মালও বটে। এগুলো বড়ই উপকারী জিনিস এবং একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মানুষ এগুলো দ্বারা উপকার লাভ করে থাকে।
এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ “আল্লাহ তোমাদের উপকার ও আরামের জন্য গাছের ছায়া দান করেছেন। তোমাদের উপকারার্থে তিনি পাহাড়ের উপর গুহা, দুর্গ ইত্যাদির ব্যবস্থা করেছেন যাতে তোমরা তাতে আশ্রয় গ্রহণ করতে পার এবং মাথা গুজবার ব্যবস্থা করে নিতে পারে। তিনি তোমাদেরকে দান। করেছেন সূতী ও পশমী কাপড়, যেন তোমরা তা পরিধান করে শীত ও গরম। হতে রক্ষা পাওয়ার সাথে সাথে নিজেদের গুপ্তস্থান আবৃত কর এবং দেহের শোভাবর্ধনে সমর্থ হতে পার। তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন লৌহবর্ম, যা শত্রুদের আক্রমণ এবং যুদ্ধক্ষেত্রে তোমাদের কাজে লাগে। এভাবে তিনি তোমাদেরকে তোমাদের প্রয়োজনের পুরোপুরি জিনিস নিয়ামত স্বরূপ দিতে রয়েছেন, যেন তোমরা আরাম ও শান্তি পাও এবং প্রশান্তির সাথে নিজেদের প্রকৃত নিয়ামত দাতার ইবাদতে লেগে থাকো।”
(আরবি) এর দ্বিতীয় পঠন (আরবি) এরূপও রয়েছে অর্থাৎ, তোমরা শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ কর। আর প্রথম কিরআতের অর্থ হচ্ছেঃ যাতে অনুগত হও ও আত্মসমর্পণ কর। এই সূরার আর একটি নাম ‘সূরাতুন নিআ’মও রয়েছে। অর্থাৎ নিয়ামত সমূহের সূরা। (আরবি) এর (আরবি) কে যবর দিয়ে পড়লে আর একটি অর্থ হবেঃ “তিনি তোমাদেরকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে কাজে লাগে এরূপ জিনিস দান করেছেন, যেন তোমরা শত্রুদের আক্রমণ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পার।” জঙ্গল ও মরুপ্রান্তরও আল্লাহর একটি বড় নিয়ামত, কিন্তু এখানে পাহাড়ের নিয়ামতের বর্ণনা দেয়ার কারণ এই যে, যাদের সাথে কথা বলা হচ্ছে তারা ছিল পাহাড়ের অধিবাসী। কাজেই তাদের অবগতি অনুযায়ী তাদের সাথে। কথা বলা হচ্ছে। অনুরূপভাবে মেষ, বকরী ও উট ছিল তাদের প্রধান জীবনোপকরণ। তাই, মহান আল্লাহ তাদেরকে এই নিয়ামতের কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। অথচ এর চেয়ে আরো অনেক বড় বড় অসংখ্য নিয়ামত মাখলুকের হাতে রয়েছে। আর এই একই কারণে শীত-গ্রীষ্ম হতে রক্ষা পাওয়ার উপকরণরূপ নিয়ামতের কথা বলেছেন, অথচ এর চেয়ে আরো বড় নিয়ামত বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু এটা তাদের সামনে রয়েছে এবং তাদের জানা জিনিস। তারা ছিল যুদ্ধপ্রিয় জাতি। তাই, যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর আক্রমণ হতে রক্ষা পাওয়ার যে উপকরণ রয়েছে, সেই নিয়ামতের কথা তাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। অথচ এর চেয়ে বহু বড় বড় নিয়ামত মানুষের অধিকারে রয়েছে। যেহেতু ওটা ছিল গরম দেশ, সেহেতু তাদেরকে বলা হয়েছেঃ “তিনি তোমাদের জন্যে ব্যবস্থা করেন পরিধেয় বস্ত্রের; ওটা তোমাদেরকে তাপ হতে রক্ষা করে। কিন্তু এর চেয়ে বহুগুণ উত্তম আরো বহু নিয়ামত কি এই প্রকৃত নিয়ামত দাতা আল্লাহ তাআলার নিকট বিদ্যমান নেই? অবশ্যই আছে। এ কারণেই এ সব নিয়ামত ও রহমত প্রকাশ করার পরেই স্বীয় নবীকে (সঃ) সম্বোধন করে বলেনঃ হে নবী (সঃ)! এখনো যদি এরা আমার ইবাদত, তাওহীদ এবং অসংখ্য নিয়ামতের কথা স্বীকার না করে বরং মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে এতে তোমার কি আসে যায়? তুমি তাদেরকে তাদের কাজের উপর ছেড়ে দাও। তুমি তো শুধু প্রচারক মাত্র। সুতরাং তুমি তোমার কার্য চালিয়ে যাও।
মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ “তারা তো নিজেরাই জানে যে, একমাত্র আল্লাহ তাআলাই হচ্ছেন নিয়ামতরাজি দানকারী। কিন্তু এটা জানা সত্ত্বেও তারা এগুলি অস্বীকার করছে এবং তার সাথে অন্যদের ইবাদত করছে। এমন কি তারা তাঁর নিয়ামতের সম্পর্ক অন্যদের প্রতি আরোপ করছে। তারা মনে করছে যে, সাহায্যকারী অমুক, আহার্যদাতা অমুক। তাদের অধিকাংশই কাফির। তারা হচ্ছে আল্লাহর অকৃতজ্ঞ বান্দা।
হযরত মুজাহিদ (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একজন বেদুঈন রাসূলুল্লাহর (সঃ) কাছে আগমন করে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তার সামনে (আরবি) এই আয়াতটি পাঠ করেন। অর্থাৎ “আল্লাহ তোমাদের গৃহকে করেন তোমাদের আবাস স্থল।” বেদুঈন বলেঃ “হাঁ, (এটা সত্য)।” তারপর তিনি পাঠ করেনঃ “তিনি তোমাদের জন্যে পশু চর্মের ব্যবস্থা করেন। সে বলেঃ “হাঁ, (এটাও সত্য)।” এইভাবে তিনি আয়াতগুলি পাঠ করতে থাকেন এবং সে প্রত্যেক নিয়ামতেরই স্বীকারোক্তি করে। শেষে তিনি পাঠ করেনঃ “যাতে তোমরা মুসলমান ও অনুগত হয়ে যাও।” সে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে চলে যায়। এ সময় আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করেনঃ “তারা আল্লাহর অনুগ্রহ জ্ঞাত আছে; কিন্তু সেগুলি তারা অস্বীকার করে এবং তাদের অধিকাংশই কাফির।” (এটা ইবনু আবি হাতিম (রাঃ) বর্ণনা করেছেন)
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings