Surah An Nahl Tafseer
Tafseer of An-Nahl : 76
Saheeh International
And Allah presents an example of two men, one of them dumb and unable to do a thing, while he is a burden to his guardian. Wherever he directs him, he brings no good. Is he equal to one who commands justice, while he is on a straight path?
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
b> ৭৩-৭৯ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতগুলোতে কাফির-মুশরিকদের বাতিল মা‘বূদের দুর্বলতা ও অক্ষমতার পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। তারা এমন মা‘বূদের ইবাদত করে যারা আকাশ-জমিন কোথাও থেকে একটু রিযিকের ব্যবস্থা করতে সক্ষম নয়। আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করতে পারে না, কোন খাদ্য নিয়ে আসতে পারে না। জমিন থেকে কোন ফসল উৎপন্ন করতে পারে না, কোন খাদ্য সরবরাহ করতে পারে না। বরং সকল রিযিকের ব্যবস্থা করে থাকেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
আল্লাহ বলেন:
(إِنَّ الَّذِيْنَ تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ لَا يَمْلِكُوْنَ لَكُمْ رِزْقًا فَابْتَغُوْا عِنْدَ اللّٰهِ)
“তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদের পূজো কর তারা তোমাদের জীবনোপকরণের ক্ষমতা রাখে না, তোমরা রিযিক কামনা কর আল্লাহর নিকট এবং তাঁরই ‘ইবাদত কর ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।” (সূরা আনকাবুত ২৯:১৭)
তাই আল্লাহ তা‘আলার জন্য কোন উপমা, শরীক ও মাধ্যম সাব্যস্থ কর না। কারণ আল্লাহ তা‘আলা একাই সকলকে সৃষ্টি করেছেন, রিযিক দিয়ে থাকেন এবং পরিচালনা করে থাকেন। তাই তার কোন সহযোগী, শরীক ও মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না।
আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(لَيْسَ كَمِثْلِه۪ شَيْءٌ)
“কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়।” (সূরা শুরা ৪২:১১)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(وَلَمْ يَكُنْ لَّه۫ كُفُوًا أَحَدٌ)
“আর তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।” (সূরা ইখলাস ১১২:৪)
অনেকে বলে থাকে বান্দা পাপ করতে করতে এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, আল্লাহ তা‘আলার কাছে সরাসরি চাইলে তিনি তা কবূল করেন না, বা তাঁর কাছে পৌঁছা সম্ভব নয়। সুতরাং কোন বুযুর্গ বা ওলী-আওলীয়াকে ধরতে হবে যেমন কোন রাজা বা বড় ধরণের ব্যক্তির কাছে যেতে পিয়ন বা নৈকট্যশীল ব্যক্তির প্রয়োজন হয়। এরূপ বিশ্বাস ও কর্ম সম্পূর্ণ শিরক ও কুফরী কাজ। বান্দা সরাসরি আল্লাহ তা‘আলার কাছে চাইবে এ নির্দেশ কুরআনে আল্লাহ তা‘আলাই দিয়েছেন। যেমন সূরা মু’মিন ৬০ নং, সূরা বাকারাহ ১৮৬ নং-সহ অনেক আয়াত রয়েছে। হাদীসে এসেছে রাতের এক তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং বলেন: কে আছো আমাকে ডাকবে আমি তার ডাকে সাড়া দেবো, কে আছো আমার কাছে ক্ষমা চাইবে তাকে ক্ষমা করে দেবো, কে আছো আমার কাছে সম্পদ চাইবে তাকে আমি দেবো। এভাবে ফজর হওয়া পর্যন্ত বলতে থাকেন। (সহীহ বুখারী হা: ১১৪৫, সহীহ মুসলিম হা: ৭৫৮)
আল্লাহ তা‘আলার কাছে চাইতে কোন পীর-ফকীর বা মাজারে শায়িত ব্যক্তিসহ কারো মাধ্যম লাগে না, বরং সরাসরি আল্লাহ তা‘আলার কাছে চাইলেই আল্লাহ তা‘আলা খুশি হন ও তা পাওয়া যায়।
রিযিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তাই সকলের উচিত সব কিছু ছেড়ে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার কাছে চাওয়া।
(ضَرَبَ اللّٰهُ مَثَلًا عَبْدًا)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলার ও যারা আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্যের ইবাদত করে তাদের দুটি উপমা বর্ণিত হয়েছে:
একটি উপমা হল-
১. কৃতদাস, যে দুনিয়ার কোন কিছু তো দূরের কথা নিজেরও মালিক না।
২. স্বাধীন ধনী ব্যক্তি যাকে আল্লাহ তা‘আলা অনেক সম্পদ দান করেছেন এবং সম্মানিত করেছেন। সে তার সম্পদ থেকে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে আল্লাহ তা‘আলার পথে দান করে। এ দু’জন ব্যক্তি কি সমান? না, কখনো সমান হতে পারে না, অথচ দু’জনেই মাখলুক। তাহলে কিভাবে আল্লাহ তা‘আলা ও বান্দা সমান হতে পারে, যে বান্দার কোন ক্ষমতা ও সামর্থ্য নেই, সব দিক থেকে আল্লাহ তা‘আলার মুখাপেক্ষী। এজন্য আল্লাহ তা‘আলা নিজের প্রশংসা করেছেন।
দ্বিতীয় উপমা হল দু’জন ব্যক্তির একজন কোন কিছু শুনতে পায় না এবং কোন কথা বলতে পারে না, এমনকি কোন কিছু করতে সক্ষম নয়, সে তার মালিকের বোঝাস্বরূপ। এ ব্যক্তি কি ঐ ব্যক্তির মত হবে যে ন্যায়ের নির্দেশ দেয় এবং যে নিজে সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত। তাঁর কথাগুলো ন্যায়সঙ্গত এবং কাজগুলো সঠিক। এ দু’জন যেমন সমান হতে পারে না তেমনি যারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের ইবাদত করে আর যারা এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করে তারা কক্ষনো সমান হতে পারে না ।
(وَلِلّٰهِ غَيْبُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ....)
অর্থাৎ আকাশ ও জমিনে যত গায়েবের বিষয় রয়েছে সব আল্লাহ তা‘আলা জানেন, অন্য কেউ নয়। এসব গায়েবের বিষয়ের মধ্যে অন্যতম হল কিয়ামত দিবস সংঘটিত হওয়ার সময়কাল আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কেউ জানে না।
কিয়ামতের বিষয়টি আল্লাহ তা‘আলার কাছে একটি পলকের ন্যায় বরং তার চেয়েও সত্বর। তা সংঘটিত করতে আল্লাহ তা‘আলার এক মূহুর্তের ব্যাপার নয়।
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَآ أَمْرُنَآ إِلَّا وَاحِدَةٌ كَلَمْحٍۭ بِالْبَصَرِ)
“আমার আদেশ তো একটি কথায় নিষ্পন্ন, চক্ষুর পলকের মত।” (সূরা ক্বামার ৫৪:৫০)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(إِنَّهُمْ يَرَوْنَه۫ بَعِيْدًا - وَّنَرَاهُ قَرِيْبًا)
“নিশ্চয়ই তারা ঐ দিনকে অনেক দূরে মনে করে, কিন্তু আমি তা দেখছি নিকটে।” (সূরা মায়া‘রিজ ৭০:৬-৭)
সুতরাং বুঝা গেল যে, কিয়ামত অতি সন্নিকটে, তা যেকোন মুহূর্তে সংঘটিত হতে পারে।
(وَاللّٰهُ أَخْرَجَكُمْ مِنْ.....)
অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে মায়ের পেট থেকে এমন অবস্থায় বের করে আনেন যে,সে অবস্থায় তার কোন জ্ঞান থাকে না। কোনটা ভাল-মন্দ, কোন্টা সঠিক, কোন্টা বেঠিক ইত্যাদি সম্পর্কে থাকে একেবারেই অজ্ঞ। কিন্তু সৃষ্টির সময় আল্লাহ তা‘আলা কান, চোখ ও অন্তর দিয়ে দিয়েছেন যাতে কান দ্বারা শোনে, চোখ দ্বারা দেখে এবং অন্তর দ্বারা উপলদ্ধি করে জ্ঞান অর্জন করতে পারে। মানুষ যখন ধীরে ধীরে বড় হয় তখন তার সব কিছু বাড়তে থাকে এবং দৈহিক শক্তি ও জ্ঞানের পরিমাণও বাড়তে থাকে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قُلْ هُوَ الَّذِيْٓ أَنْشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ ط قَلِيْلًا مَّا تَشْكُرُوْنَ - قُلْ هُوَ الَّذِيْ ذَرَأَكُمْ فِي الْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُوْنَ)
“বল: তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও অন্তঃকরণ। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাক। বল: তিনিই পৃথিবীব্যাপী তোমাদেরকে ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং তাঁরই কাছে তোমাদেরকে একত্রিত করা হবে।” (সূরা মুলক ৬৭:২৩-২৪)
(أَلَمْ يَرَوْا إِلَي....)
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে আবারো তাঁর ক্ষমতার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, তিনিই আকাশের এই শূন্য গর্ভে পাখিকে উড়ার ক্ষমতা দিয়েছেন, তাদেরকে স্থির রাখেন, কোন ইঞ্জিন নেই, কোন সংযোগ নেই। এসব কে করেন, একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তাই নয় কী?
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَوَ لَمْ یَرَوْا اِلَی الطَّیْرِ فَوْقَھُمْ صٰ۬فّٰتٍ وَّیَقْبِضْنَﺔ مَا یُمْسِکُھُنَّ اِلَّا الرَّحْمٰنُﺚ اِنَّھ۫ بِکُلِّ شَیْءٍۭ بَصِیْرٌﭢ)
“তারা কি লক্ষ্য করে না তাদের উপরে পাখিসমূহের প্রতি, যারা ডানা বিস্তার করে ও সঙ্কুচিত করে? দয়াময় আল্লাহই তাদেরকে শূন্যে স্থির রাখেন। তিনি সর্ববিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা।” (সূরা মুলক ৬৭:১৯)
উপরোক্ত আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর একচ্ছত্র আধিপত্যের কথাই বর্ণনা করছেন যে, তিনি সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা এবং তিনি তাদের রক্ষণাবেক্ষণ এর দায়িত্ব পালন করেন। সুতরাং ইবাদত পাবার যোগ্য একমাত্র তিনিই, অন্য কেউ নয়। তাই সকলের উচিত তাঁরই উপাসনা করা।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. রিযিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ।
২. আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় দান করতে হবে।
৩. আল্লাহ তা‘আলার নিকট সকল কিছুর জ্ঞান রয়েছে।
৪. মানুষকে অস্তিত্বহীন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
৫. আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত ক্ষমতায় পাখিরা শূন্য আকাশে উড়ে বেড়ায়।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings