Surah Al Hijr Tafseer
Tafseer of Al-Hijr : 91
Saheeh International
Who have made the Qur'an into portions.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৮৭-৯৩ নং আয়াতের তাফসীর:
(وَلَقَدْ آتَيْنَاكَ سَبْعًا)
এখানে স্বাব-এ মাছানী দ্বারা কী উদ্দেশ্য এ বিষয়ে আলেমদের মতামত পাওয়া গেলেও সঠিক কথা হল এই যে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য সূরা ফাতিহা। কারণ এতে সাতটি আয়াত রয়েছে আর এটা সালাতে প্রত্যেক রাকাআতে পাঠ করা হয়। আর এটিই সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
“আবূ সাঈদ বিন মুয়াল্লা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন এমতাবস্থায় আমি সালাতরত ছিলাম, সে সময় তিনি আমাকে আহ্বান করলেন কিন্তু আমি তাঁর ডাকে সাড়া দেইনি। অতঃপর আমি সালাত শেষ করে তাঁর নিকট আসলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন: আমার নিকট আসতে কিসে তোমাকে বারণ করল? আমি উত্তরে বললাম যে, আমি সালাতরত অবস্থায় ছিলাম, তখন তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলা কি বলেননি?
(يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِيْبُوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيْكُمْ)
“হে মু’মিনগণ! রাসূল যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে আহ্বান করে যা তোমাদেরকে প্রাণবন্ত করে, তখন আল্লাহ ও রাসূলের আহ্বানে সাড়া দাও।” (সূরা আনফাল ৮:২৪)
অতঃপর তিনি বললেন: আমি কি মাসজিদ থেকে বের হবার পূর্বে কুরআনে মর্যাদার দিক দিয়ে কোন্ সূরাটি সবচেয়ে বেশি মর্যাদাসম্পন্ন সে সম্পর্কে তোমাকে অবগত করব না? অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হবার সময় আমি তাকে এ কথা স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেন, এটা হল
(اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ)
“সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।”
সূরা ফাতিহা হল বার বার পঠিত সাতটি আয়াত ও কুরআনুল আযীম যা আমাকে দেয়া হয়েছে। (সহীহ বুখারী: ৪৭০৩)
পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন যে, যেহেতু তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর নিকট হতে সবচেয়ে বড় ও মহান একটি জিনিস দিয়েছেন তাই তাঁকে নিষেধ করছেন তিনি কাফির-মুশরিকদের এই তুচ্ছ অংশ দেখে আকৃষ্ট না হওয়ার জন্য।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “তুমি তোমার চক্ষুদ্বয় কখনও প্রসারিত কর না তার প্রতি, যা আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে পার্থিব জীবনের সৌন্দর্যস্বরূপ উপভোগের উপকরণ হিসেবে দিয়েছি, তার দ্বারা তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য। তোমার প্রতিপালক প্রদত্ত জীবনোপকরণ উৎকৃষ্ট ও অধিক স্থায়ী। এবং তোমার পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ দাও ও তাতে অবিচল থাক, আমি তোমার নিকট কোন জীবনোপকরণ চাই না; আমিই তোমাকে জীবনোপকরণ দেই এবং শুভ পরিণাম তো মুত্তাকীদের জন্য।” (সূরা ত্বহা ২০:১৩১-১৩২) এবং তিনি তাঁর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিষেধ করলেন তিনি যেন তাদের ব্যাপারে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত না হন।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاصْبِرْ وَمَا صَبْرُكَ إِلَّا بِاللّٰهِ وَلَا تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَلَا تَكُ فِيْ ضَيْقٍ مِّمَّا يَمْكُرُوْنَ)
“তুমি ধৈর্য ধারণ কর, তোমার ধৈর্য তো আল্লাহরই সাহায্যে। তাদের দরুন দুঃখ কর না এবং তাদের ষড়যন্ত্রে তুমি মনঃক্ষুণত্ন হয়ো না।” (সূরা নাহল ১৬:১২৭)
আর তিনি তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নির্দেশ দিলেন তিনি যেন মু’মিনদের জন্য তার বিনয়ের ডানাকে অবনমিত করেন। অর্থাৎ তাদের সাথে উত্তম আচরণ করেন।
যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ)
“এবং যারা তোমার অনুসরণ করে সে সমস্ত মু’মিনদের প্রতি বিনয়ী হও।” (সূরা শু‘আরা ২৬:২১৫)
সুতরাং মানুষের উচিত মু’মিন ব্যক্তিবর্গের সাথে বিনয়ের সাথে কথা বলা। উচ্চৈঃস্বরে হৈ-হুল্লোড় করে নয়। মানুষকে দাওয়াত দিতে গেলে তাকে নম্র ভাষায় দাওয়াত দিতে হবে, তা না হলে মানুষ তার দাওয়াতে সাড়া দেবে না।
পরবর্তীতে আল্লাহ তা‘আলা অবগত করছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছেন। সুতরাং যারা শাস্তির কথা শোনার পরও সতর্ক হবে না, ঈমান আনবে না তাদের অবস্থা হবে ঐ সম্প্রদায়ের মত যারা আল্লাহ তা‘আলার বিধান ও রাসূলের ব্যপারে মিথ্যা শপথ করত আর তার ফলে তাদের যে করুণ পরিণতি হয়েছিল তাদেরও সেরূপই হবে।
এখানে الْمُقْتَسِمِيْنَ দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে তা নিয়ে মতানৈক্য বিদ্যমান থাকলেও সঠিক কথা হল, এরা হল তারা যারা কুরআনের ব্যাপারে শপথ করত, কুরআনের কিছু অংশের প্রতি ঈমান আনত আর কিছু অংশের প্রতি কুফরী করত। চাই তারা ইয়াহূদী, খ্রিস্টান বা অন্য যারাই হোক না কেন। (তাফসীর মুয়াসসার, অত্র আয়াতের তাফসীর)
তাদেরকে الْمُقْتَسِمِيْنَ বলার কারণ হল যে, তারা কথায় কথায় মিথ্যা শপথ করত এর দ্বারা মানুষদেরকে আল্লাহর পথ থেকে বাধা প্রদান করার জন্য। যার ফলে তাদের الْمُقْتَسِمِيْنَ বলা হত।
অতএব তারা যদি সতর্ক না হয় তাহলে অবশ্যই তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সূরা ফাতিহা অন্যতম একটি মর্যাদাসম্পন্ন সূরা।
২. পার্থিব কোন জিনিসের প্রতি লোভ করা যাবে না।
৩. মানুষকে নম্র ভাষায় ঈমানের দিকে ডাকতে হবে।
৪. মিথ্যা শপথ করা যাবে না।
৫. মানুষকে মৃত্যুর পর তার কার্য-কলাপ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings