Surah Al Hijr Tafseer
Tafseer of Al-Hijr : 6
Saheeh International
And they say,"O you upon whom the message has been sent down, indeed you are mad.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৬-৯ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা এখানে কাফির মুশকিরদের কুফরী, অবাধ্যতা, ঔদ্ধত্যপনা, অহংকার এবং হঠকারীতার সংবাদ দিচ্ছেন যে, তারা বিদ্রƒপ করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতো: এই সে মুহাম্মাদ! যার ওপর কুরআন নাযিল হওয়ার কথা দাবী করে, আমরা তাকে পাগল মনে করি।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قَالَ إِنَّ رَسُوْلَكُمُ الَّذِيْ أُرْسِلَ إِلَيْكُمْ لَمَجْنُوْنٌ)
“ফির‘আউন বলল: ‘তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের রাসূল নিশ্চয়ই পাগল।’’ (সূরা শু‘আরা ২৬:২৭)
সুতরাং এ পাগলের কথায় আমাদের বাপ-দাদার ধর্ম বর্জন করব না। তুমি যদি সত্যিকার রাসূল হও তাহলে ফেরেশতা নিয়ে আসো না কেন? তারা এসে আমাদের কাছে তোমার সত্যবাদিতার বর্ণনা দেবে। যেমন ফির‘আউন বলেছিল:
(فَلَوْلَآ أُلْقِيَ عَلَيْهِ أَسْوِرَةٌ مِّنْ ذَهَبٍ أَوْ جَا۬ءَ مَعَهُ الْمَلٰٓئِكَةُ مُقْتَرِنِيْنَ )
“(তিনি যদি নাবী হতেন তবে) মূসাকে কেন দেয়া হল না স্বর্ণবালা অথবা তার সাথে কেন আসল না ফেরেশতারা দলবদ্ধভাবে।” (সূরা যুখরুফ ৪৩:৫৩)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَالَ الَّذِيْنَ لَا يَرْجُوْنَ لِقَا۬ءَنَا لَوْلَآ أُنْزِلَ عَلَيْنَا الْمَلٰ۬ئِكَةُ أَوْ نَرٰي رَبَّنَا ط لَقَدِ اسْتَكْبَرُوْا فِيْٓ أَنْفُسِهِمْ وَعَتَوْا عُتُوًّا كَبِيْرًا)
“যারা আমার সাক্ষাৎ কামনা করে না তারা বলে: ‘আমাদের নিকট ফেরেশ্তা অবতীর্ণ করা হয় না কেন? অথবা আমরা আমাদের প্রতিপালককে প্রত্যক্ষ করি না কেন?’ তারা তো তাদের অন্তরে অহংকার পোষণ করে এবং তারা সীমালংঘন করেছে গুরুতরভাবে।” (সূরা ফুরকান ২৫:২১)
তাদের কথার প্রত্যুত্তরে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا صَاحِبُكُمْ بِمَجْنُوْنٍ)
“এবং তোমাদের সাথী (মুহাম্মদ) পাগল নয়।” (সূরা আত-তাকবীর ৮১:২২)
আর আমি যথাযথ কারণ ছাড়া ফেরেশতা প্রেরণ করি না। অর্থাৎ যখন আমার ইচ্ছা ও হিকমত অনুযায়ী কোন জাতির ওপর আযাব পাঠানোর প্রয়োজন হয় তখন আমি ফেরেশতা প্রেরণ করি। যেদিন তারা ফেরেশতাদেরকে প্রত্যক্ষ করবে সেদিন তাদের জন্য কোন কল্যাণ থাকবে না।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَقَالُوْا لَوْلَآ أُنْزِلَ عَلَيْهِ مَلَكٌ ط وَلَوْ أَنْزَلْنَا مَلَكًا لَّقُضِيَ الْأَمْرُ ثُمَّ لَا يُنْظَرُوْنَ)
“তারা বলে, ‘তার নিকট কোন ফেরেশতা কেন প্রেরিত হয় না? যদি আমি ফেরেশতা প্রেরণ করতাম তা হলে চূড়ান্ত ফায়সালাই হয়ে যেত আর তাদেরকে কোন (তাওবার) অবকাশ দেয়া হত না।” (সূরা আন‘আম ৬:৮)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(يَوْمَ يَرَوْنَ الْمَلٰٓئِكَةَ لَا بُشْرٰي يَوْمَئِذٍ لِّلْمُجْرِمِيْن)
“যেদিন তারা ফেরেশতাদেরকে প্রত্যক্ষ করবে সেদিন অপরাধীদের জন্য সুসংবাদ থাকবে না।” (সূরা ফুরকান ২৫:২২)
অতএব তারা যতই ছলচাতুরী করে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতকে অস্বীকার করতে ইচ্ছা করুক তাতে তারা পার পাবে না, তাদেরকে কুফর ও অবাধ্যতার কারণে পাকড়াও করা হবে।
الذِّكْرَ দ্বারা উদ্দেশ্য হল ওয়াহী, ওয়াহী মাতলূ (কুরআন)। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা কুরআন নাযিল করেছেন এবং তা সকল প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন, বিকৃতি সাধন তথা অবৈধ হস্তক্ষেপ থেকে সংরক্ষণ করবেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاِنَّھ۫ لَکِتٰبٌ عَزِیْزٌﭸﺫ لَّا یَاْتِیْھِ الْبَاطِلُ مِنْۭ بَیْنِ یَدَیْھِ وَلَا مِنْ خَلْفِھ۪ﺚ تَنْزِیْلٌ مِّنْ حَکِیْمٍ حَمِیْدٍﭹ)
“এটা অবশ্যই এক মহিমাময় গ্রন্থ। কোন মিথ্যা এতে অনুপ্রবেশ করবে না অগ্র হতেও নয়, পশ্চাত হতেও নয়। এটা প্রজ্ঞাবান, প্রশংসনীয় আল্লাহর নিকট হতে অবতীর্ণ।” (সূরা হা-মীম সাজদাহ ৪১:৪১-৪২)
সুতরাং যে সকল শিয়া ও ভ্রান্ত ফিরকার লোকেরা বলে থাকে কুরআন তার নাযিলকালের অবস্থার মত নেই, বিকৃত হয়েছে। কুরআন ছিল ৬০ পারা, আছে ৩০ পারা, বাকী ৩০ পারা কোথায় গেল? কিছু কিছু সুফীরাও এরূপ কথা বলে থাকে, তাদের এসব কথা ভিত্তিহীন। কারণ স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা কুরআন সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন।
আল্লাহ তা‘আলা যুগে যুগে অসংখ্য মুসলিম বিদ্বান প্রেরণ করেছেন যারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীসকে মুখস্ত, শিক্ষা ও প্রচার করে সংরক্ষণ করেছেন এবং যাতে ইসলাম ও মুসলিমদের শত্র“দের বানানো কোন কথা প্রবেশ না করতে পারে সে জন্য ছাত্রদেরকে সতর্ক করে গেছেন যে, অমুক এরূপ দোষে দুষ্ট তার হাদীস নেয়া যাবে না। তাই যারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামে হাদীস তৈরি করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল তারা চিহ্নিত, তাদের কোন কথা গ্রহণ করার পূর্বে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সতর্ক করেছেন।
তিনি বলেন:
(يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْآ إِنْ جَا۬ءَكُمْ فَاسِقٌۭ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوْا)
“ওহে যারা ঈমান এনেছ! যদি কোন ফাসিক লোক তোমাদের কাছে কোন খবর নিয়ে আসে তাহলে এর সত্যতা যাচাই করে নাও।” (সূরা হুজুরাত ৪৯:৬)
কুরআন অক্ষরে অক্ষরে সংরক্ষণের দায়িত্ব আল্লাহ তা‘আলা নিয়েছেন এবং হাদীসের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলা কুরআনের মতো অক্ষরে অক্ষরে সংরক্ষণের দায়িত্ব না নিলেও যুগে যুগে তার একনিষ্ঠ বান্দাদের মাধ্যমে তাকে এর শত্র“দের হাত থেকে হেফাযত করবেন এবং তার দ্বীনকে কালিমা মুক্ত করবেন, কাফির-বেঈমান ও মুশরিকরা তা ধ্বংস করার করার জন্য যতই চেষ্টা করুক না কেন। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে তাঁর মনোনীত দ্বীন পরিপূর্ণভাবে পালন করার তাওফীক দান করুন। আমীন!
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কাফিররা অস্বীকার করত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে পাগল বলে নবুওয়াতকে মানত না।
২. আল্লাহ তা‘আলা উপযুক্ত দায়িত্ব দিয়ে দুনিয়াতে ফেরেশতা অবতীর্ণ করেন।
৩. শাস্তি আসার পর কেউ রেহাই পাবে না।
৪. প্রত্যেকের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। এ সময়ের পূর্বে কেউ মৃত্যুবরণ করবেনা এবং পরেও করবে না।
৫. কুরআন ও হাদীসে কেউ পরিবর্তন, বিকৃতি ও অসৎ উদ্দেশ্যে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings