Surah Al Hijr Tafseer
Tafseer of Al-Hijr : 16
Saheeh International
And We have placed within the heaven great stars and have beautified it for the observers.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৬-২০ নং আয়াতের তাফসীর:
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলছেন, তিনি আকাশে বুরূজ সৃষ্টি করেছেন। যেমন অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(تَبَارَكَ الَّذِيْ جَعَلَ فِي السَّمَا۬ءِ بُرُوْجًا)
“বরকতময় তিনি যিনি নভোমণ্ডলে সৃষ্টি করেছেন তারকা-রাশিচক্র।” (সূরা ফুরকান ২৫:৬১)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(وَالسَّمَا۬ءِ ذَاتِ الْبُرُوْجِ)
“শপথ বুরূজ (তারকা-রাশিচক্র)-বিশিষ্ট আকাশের।” (সূরা বুরূজ ৮৫:১)
بُرُوْجً শব্দটি برج এর বহুবচন, অর্থ প্রকাশ হওয়া। এখান থেকে تبرج এর উৎপত্তি; যার অর্থ মহিলাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করা। এখানে বুরূজ দ্বারা কী উদ্দেশ্য তা নিয়ে বিদ্বানদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছেন: আকাশের গ্রহ-নক্ষত্রকে বুরূজ বলা হয়েছে, কারণ সেগুলো বড় উঁচুতে প্রকাশমান। কেউ বলেছেন: بُرُوْجً বলতে সূর্য, চন্দ্র ও অন্যান্য গ্রহের কক্ষপথসমূহকে বুঝানো হয়েছে যা তাদের জন্য নির্দিষ্ট। এ ছাড়াও অনেক মতামত রয়েছে, তবে আল্লামা সা‘দী (রহঃ) বলেছেন: উক্ত আয়াতে ‘বুরূজ’ দ্বারা উদ্দেশ্য তারকারাজী এবং বড় বড় নিদর্শনাবলী। যার দ্বারা মানুষ অন্ধকারে জলে-স্থলে পথের সন্ধান পায়। (তাফসীর সা‘দী, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আর আল্লাহ তা‘আলা তারকারাজি দ্বারা আকাশকে সুশোভিত করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَا۬ءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيْحَ)
“আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা (তারকারাজী) দ্বারা।” (সূরা মুলক ৬৭:৫)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَا۬ءَ الدُّنْيَا بِزِيْنَةِ نِالْكَوَاكِبِ)
“নিশ্চয়ই আমি পৃথিবীর আকাশকে সুসজ্জিত করেছি নক্ষত্রমালার সৌন্দর্য দিয়ে।” (সূরা স্ব-ফ্ফত ৩৭:৬)
এ ছাড়াও আকাশে তারকা সৃষ্টি করার দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে একটি পরের আয়াতে বলা হয়েছে, তা হল যখন শয়তান কোন কথা চুরি করার জন্য আকাশে আসতে চায়, তখন তারকা উল্কাপিণ্ডস্বরূপ তাদের প্রতি নিক্ষিপ্ত হয়। যেমন ১৮ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে। আরেকটি হল সমুদ্রে পথ চলার নিদর্শনস্বরূপ। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَعَلٰمٰتٍ ط وَبِالنَّجْمِ هُمْ يَهْتَدُوْنَ )
“এবং পথ নির্ণায়ক চিহ“সমূহও। আর তারা নক্ষত্রের সাহায্যেও পথের নির্দেশ পায়।” (সূরা নাহল ১৬:১৬)
সুতরাং, তারকার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আকাশকে বিতাড়িত শয়তান থেকে রক্ষা করেছেন। رَّجِيْمٍ শব্দটি رجوم ব্যবহার হয়েছে। رجم পাথর ছুঁড়ে মারা। অর্থাৎ যখনই শয়তান আকাশের কোন কথা শোনার জন্য যায় তখনই তাদের দিকে উল্কা ছুঁড়ে মারা হয়।
হাদীসে এসেছে যখন আল্লাহ তা‘আলা আকাশে কোন কিছুর ফায়সালা করেন, তখন তা শুনে ফেরেশতাগণ অক্ষমতা ও দুর্বলতা প্রকাশস্বরূপ ডানা নাড়াতে শুরু করে যেন কোন লোহার শিকল দ্বারা পাথরের উপর প্রহার করা হচ্ছে। অতঃপর যখন তাদের মন থেকে আল্লাহ তা‘আলার ভয় কিছুটা কমে আসে তখন তারা একে অপরকে জিজ্ঞেস করে তোমাদের প্রভু কী বলেছেন? তারা বলে: তিনি যা বলেছেন সত্য বলেছেন এবং তিনি সুমহান ও সুউচ্চ। তারপর সে ফায়সালার কথা ঊর্ধ্ব থেকে নিম্ন আসমান পর্যন্ত ফেরেশতাগণ পরস্পর শোনাশুনি করে। এ সময় শয়তানরাও তা শোনার জন্য চুপি চুপি গিয়ে কান পাতে এবং তারাও একে অপরের একটু দূরে থেকে তা শোনার চেষ্টা করে এবং কেউ কেউ একটু-আধটু শব্দ শুনে ফেলে ও পরে তা কোন গণকের কানে পৌঁছে দেয়। গণক সে কথার সাথে আরোও একশত মিথ্যা কথা মিলিয়ে মানুষের কাছে বর্ণনা করে। (সহীহ বুখারী, সূরা হিজর-এর তাফসীর)
তৎপরবর্তীতে আল্লাহ তা‘আলা জমিনের বর্ণনা দিচ্ছেন যে, তিনি তাকে বিস্তৃত করেছেন, সমতল করে দিয়েছেন, তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, যাতে জমিন নড়াচড়া না করতে পারে। (যেমন সূরা লুকমানের ১০ নং, সূরা নাহলের ১৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে)
مَّوْزُوْنٍ শব্দটি معلوم অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, অথবা এর অর্থ পরিমিত বা প্রয়োজন মত। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা জমিন থেকে পরিমিতভাবে প্রত্যেক বস্তু উদ্গত করেন। আর আল্লাহ তা‘আলা এ জমিন থেকে আমাদেরকে রিযিক দান করেন এবং যে সমস্ত জীব-জন্তু ও দাস-দাসী দ্বারা আমরা উপকার হাসিল করি তাদের এবং যে সমস্ত চতুষ্পদ জন্তু আমরা বাহন হিসেবে ব্যবহার করি তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা রিযিক দান করেন। সমস্ত কিছুর রিযিক দাতা কেবল তিনিই। তিনি ব্যতীত দ্বিতীয় আর কেউ নেই।
সুতরাং যে আল্লাহ তা‘আলা এতসব নেয়ামত দান করেছেন সে আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করা উচিত এবং তাঁর দিকেই আমাদের অভিমুখী হওয়া উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আকাশকে নক্ষত্ররাজি দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে।
২. শয়তানরা যখন আকাশে আরোহন করে আল্লাহ তা‘আলার সিদ্ধান্তের কথা শুনতে যায় তখন তাদের দিকে উল্কা নিক্ষেপ করা হয়।
৩. আকাশকে বিতাড়িত শয়তান থেকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তারা আকাশে পৌঁছাতে পারে না।
৪. শয়তানরা সিদ্ধান্তের কোন কথা শোনার পর তা গণকের কানে এনে দেয়। যার ফলে গণকের কোন কোন কথা সত্য বলে প্রমাণিত হয়।
৫. রিযিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
৬. আল্লাহ তা‘আলা জমিনে পাহাড় স্থাপন করেছেন জমিনকে স্থির রাখার জন্য।
৭. জমিন গুটানো অবস্থায় ছিল পরে আল্লাহ তা‘আলা তাকে বিস্তৃত করেছেন (যা বর্তমানে বিগব্যাঙ থিওরী বলে পরিচিত) ইত্যাদি।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings