14:34

وَءَاتَٰكُم مِّن كُلِّ مَا سَأَلۡتُمُوهُ‌ۚ وَإِن تَعُدُّواۡ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ لَا تُحۡصُوهَآ‌ۗ إِنَّ ٱلۡإِنسَٰنَ لَظَلُومٌ كَفَّارٌ٣٤

Saheeh International

And He gave you from all you asked of Him. And if you should count the favor of Allah, you could not enumerate them. Indeed, mankind is [generally] most unjust and ungrateful.

Tafsir "Ibn Kathir Full" (Bengali)

৩২-৩৪ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তাআলা তাঁর অসংখ্য নিয়ামতের কথা বলছেন যা তাঁর মাখলুকাতের উপর রয়েছে। আকাশকে তিনি একটি সুরক্ষিত ছাদ বানিয়ে রেখেছেন। যমীনকে উত্তম বিছানারূপে বিছিয়ে রেখেছেন। আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করে যমীন থেকে সুস্বাদু ফল মূল, ফসলের ক্ষেত এবং বাগ-বাগিচা তৈরী করে দিয়েছেন। তাঁরই নির্দেশক্রমে নৌকাসমূহ পানির উপর ভাসমান অবস্থায় চলাফেরা করছে এবং মানুষকে নদীর এক পার থেকে আর এক পারে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে মানুষ এক দেশ হতে অন্য দেশে ভ্রমণ করছে। তারা এক জায়গার মাল অন্য জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে এবং এইভাবে বেশ লাভবানহচ্ছে। আর এইভাবে তাদের অভিজ্ঞতাও বাড়ছে। নদীগুলিকেও তিনি তাদের কাজে লাগিয়ে রেখেছেন। তারা এর পানি নিজেরা পান করছে, অপরকে পান করাচ্ছে, জমিতে সেচন করছে, গোসল করছে, কাপড় চোপড় ধৌত করছে। এবং এই ধরনের বিভিন্ন প্রকারের উপকার লাভ করছে।মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবি) তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত রেখেছেন সূর্য ও চন্দ্রকে যারা অবিরাম একই নিয়মের অনুবর্তী। অর্থাৎ তারা দিন রাত্রি অবিরাম গতিতে চলতে রয়েছে, অথচ ক্লান্ত হচ্ছে না। আল্লাহ তাআলা আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চন্দ্রের নাগাল পাওয়া এবং রজনীর পক্ষে সম্ভব নয় দিবসকে অতিক্রম করা এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ কক্ষ পথে সন্তরণ করে।” (৩২:৪০)আর এক জায়গায় আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “সূর্য, চন্দ্র ও তারকারাজি অধীন হয়েছে তাঁরই বিধানে, জেনে রেখো যে, সৃষ্টি ও বিধান তাঁরই, বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ কতই না মহান।” তিনি আরো বলেনঃ “তিনি রাতকে দিনের মধ্যে প্রবিষ্ট করেন এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবিষ্ট করেন, আর সূর্য ও চন্দ্রকে করেছেন তিনি নিয়মাধীন; প্রত্যেকেই পরিভ্রমণ করে এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত; জেনে রেখো, তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।”মহান আল্লাহর উক্তিঃ তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন তোমরা তাঁর কাছে যা কিছু চেয়েছে তা হতে।' অর্থাৎ হে মানবমণ্ডলী! তোমরা আল্লাহ তাআলার কাছে যে সব জিনিসের মুখাপেক্ষী ছিলে তিনি তোমাদেরকে তা সব কিছুই দিয়েছেন। তিনি চাইলেও দেন, না চাইলেও দেন। তাঁর দানের হাত কখনো বন্ধ থাকে না। সুতরাং তোমরা তাঁর কৃতজ্ঞতা পূর্ণরূপে প্রকাশ করতে পারবে কি? তোমরা যদি তার নিয়ামতগুলি এক এক করে গণনা করতে শুরু কর তবে। গুণে শেষ করতে পারবে না।তালাক ইবনু হাবীব (রঃ) বলেন যে, আল্লাহ তাআলার হক এর চেয়ে অনেক বেশী যে, বান্দা তা আদায় করতে পারে। আর তাঁর নিয়ামত এর চেয়ে অনেক বেশী যে, বান্দা তা গণনা করতে পারে। সুতরাং হে লোক সকল! সকাল-সন্ধ্যায় তোমরা তার কাছে তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকো।সহীহ বুখারীতে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলতেনঃ “হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা ও গুণগান আপনারই জন্যে। আমাদের প্রশংসা মোটেই যথেষ্ট নয় এবং তা পূর্ণ ও বেপরোয়াকারীও নয়। সুতরাং হে আমাদের প্রতিপালক! (আমাদের অপারগতার জন্যে আমাদেরকে ক্ষমা করুন)”হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “কিয়ামতের দিন আদম সন্তানের জন্যে তিনটি রেজিস্টার বই বের হবে। একটিতে লিখা থাকবে পুণ্য, একটিতে পাপ এবং তৃতীয়টিতে লিখিত থাকবে আল্লাহ তাআলার নিয়ামত সমূহ। আল্লাহ পাক স্বীয় নিয়ামত সমূহের মধ্য হতে সর্বাপেক্ষা ছোট নিয়ামতকে বলবেনঃ “ওঠো এবং তোমার প্রতিদান তার নেক আমল সমূহ হতে নিয়ে নাও।” এতে তার সমস্ত আমল শেষ হয়ে যাবে, অথচ ঐ ছোট নিয়ামতটি সেখান হতে সরে গিয়ে বলবেঃ “(হে আল্লাহ!) আপনার মর্যাদার শপথ! আমার পূণ্যমূল্য এখনো আমি পাইনি।”এখন পাপসমূহের রেজিস্টার বহি অবশিষ্ট থাকবে, আর ওদিকে নিয়ামতরাজির বহি বাকী থাকবে। অতঃপর যদি বান্দার উপর আল্লাহ তাআলার করুণা হয় তবে তিনি তার পূণ্য বাড়িয়ে দিবেন পাপরাশি ক্ষমা করে দিবেন। আর বলবেনঃ “আমি তোমাকে আমার নিয়ামতরাজির বিনিময় ছাড়াই দান করলাম।” (এ হাদীসটি হাফিয আবু বকর আল বাযার (রঃ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছে। কিন্তু এর সনদ দুর্বল)বর্ণিত আছে যে, হযরত দাউদ (আঃ) বলেনঃ “হে আমার প্রতিপালক! আমি কি করে আপনার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবো? শুকর করাও তো আপনার একটা নিয়মিত।” উত্তরে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “হে দাউদ (আঃ) । এখন তো তুমি আমার শুকরিয়া করেই ফেললে। কেননা, তুমি জানতে পারলে এবং স্বীকার করলে যে, তুমি আমার নিয়ামতসমূহের শুকরিয়া আদায় করতে অপারগ।”ইমাম শাফেয়ী (রঃ) বলেনঃ “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই জন্যে, যার অসংখ্য নিয়ামতরাজির মধ্যে একটি নিয়ামতের শুকরও নতুন একটি নিয়ামত ছাড়া আমরা আদায় করতে পারি না। ঐ নতুন নিয়ামতের উপর আবার একটা শুকর ওয়াজিব হয়ে যায়। আবার ঐ নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার তাওফীক লাভের উপর আর একটি নিয়ামত লভি হয় যার উপর আবার শুকরিয়া আদায় করা ওয়াজিব হয়ে যায়। একজন কবি এই বিষয়টিকেই নিজের কবিতার মধ্যে প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “যদি আমার দেহের প্রতিটি লোমের ভাষা থাকতো এবং আপনার নিয়ামতরাজির শুকরিয়া আদায় করতো তবুও তা শেষ হতো না, বরং নিয়ামত আরো বেড়েই যেতো। আপনার ইহসান ও নিয়ামত অসংখ্য।”

Arabic Font Size

30

Translation Font Size

17

Arabic Font Face

Help spread the knowledge of Islam

Your regular support helps us reach our religious brothers and sisters with the message of Islam. Join our mission and be part of the big change.

Support Us