13:29
ٱلَّذِينَ ءَامَنُواۡ وَعَمِلُواۡ ٱلصَّٰلِحَٰتِ طُوبَىٰ لَهُمۡ وَحُسۡنُ مَــَٔابٍ٢٩
Saheeh International
Those who have believed and done righteous deeds - a good state is theirs and a good return.
২৭-২৯ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা‘আলা কাফের-মুশরিকদের উক্তি সম্পর্কে সংবাদ দিচ্ছেন যে, তারা বলে পূর্ববর্তী নবীদের মত এই নবীর উপর কোন নিদর্শন বা মু‘জিযাহ অবতীর্ণ করা হয় না কেন? কোন মুজিযাহ নিয়ে আসলে আমরা ঈমান আনতাম, কিন্তু এটা তাদের মুখের বুলি। যত মু‘জিযাই প্রকাশ করা হোক না কেন তারা ঈমান আনবে না। মক্কার কাফের-মুশরিকরা যখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল: যদি সাফা পাহাড়কে সোনায় পরিণত করতে পারেন, পাহাড়ি জমিকে চাষাবাদ ভূমিতে পরিণত করতে পারেন, তবে আমরা ঈমান আনব। তখন আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানিয়ে দিলেন আমি তাদেরকে এসব প্রদান করব, কিন্তু এর পরেও যদি তারা ঈমান না আনে তাহলে তাদের এমন শাস্তি দিব যা পৃথিবীর কাউকে দেইনি। তুমি যদি চাও তাহলে তাই করব নচেৎ তাদের জন্য রহমত ও তাওবার দরজা খোলা রাখব। (মুসনাদে আহমাদ হা: ২১৬৬, সনদ সহীহ) আর এ সম্পর্কে সূরা ইউনুসের ২০ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।(قُلْ إِنَّ اللّٰهَ يُضِلُّ... ) অর্থাৎ হিদায়াত করার প্রকৃত মালিক আল্লাহ তা‘আলা। হিদায়াত কোন নাবী-রাসূলদের হাতেও নয় এবং কোন ওলী-আউলিয়াদের হাতেও নয়। এরা কেবল হিদায়াতের পথ দেখাতে পারেন। কারো হিদায়াত পাওয়া ও না পাওয়া মু‘জিযাহ দেখার উপর নির্ভরশীল নয়। মুজিযাহ দেখালে ঈমান আনব, আর মুজিযাহ না দেখালে ঈমান আনব না বিষয়টি এমন নয়। বরং যারা ঈমান আনবে না তাদেরকে যতই মু‘জিযাহ দেখানো হোক না কেন তাতে কোন ফায়দা হবে না। কারণ তারা আল্লাহ তা‘আলা অভিমুখী হতে চায় না, সত্য গ্রহণের আগ্রহ নেই। আর যারা মূলত ঈমান আনার তাদেরকে মু‘জিযাহ দেখানোর প্রয়োজন হয় না। তারা শুনামাত্রই বিশ্বাস করে। তারা আল্লাহ তা‘আলার দিকে অভিমুখী হতে চায়। ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের নিদর্শন উল্লেখ করে বলেন: আল্লাহ তা‘আলার যিকির করার মাধ্যমে মু’মিনদের অন্তর প্রশান্ত হয়। অর্থাৎ অন্তরের অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা দূর হয়ে তৃপ্তি, শান্তি ও স্থিরতা ফিরে আসে। যিকির দ্বারা উদ্দেশ্য হল সালাত, সিয়াম, হজ্জ, যাকাত, তাসবীহ, তাহলীল, কুরআন তেলাওয়াত ও সকল সুন্নাতী দু‘আ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কোন বিপদে পড়লে বা মনে অস্থিরতা অনুভব করলে সালাতে দাঁড়িয়ে যেতেন। যিকির বলতে হালকায়ে যিকির বা সকলে উচ্চ আওয়াজে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, তারপর ইল্লালাহ, তারপর আল্লাহ তা‘আলা, অতঃপর হু ইত্যাদি নয়। এগুলো সুন্নাতী যিকির নয়, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবীদের থেকে এরূপ পদ্ধতিতে যিকির করার প্রমাণ নেই। বরং উঁচু আওয়াজের সাথে যিকির করা নিষেধ রয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ২৯৯২, সহীহ মুসলিম হা: ২৭০৪) এবং ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’কে খণ্ড করতে করতে শেষে হু বলা সম্পূর্ণ শরীয়ত গর্হিত কাজ। কুরআন ও সহীহ সুন্নাতে কোথাও এভাবে যিকিরের কথা উল্লেখ নেই, বরং কালেমা তাইয়্যেবাকে সম্পূর্ণ পড়তে বলা হয়েছে। হাদীসে এসেছে সর্বোত্তম যিকির হল ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (সহীহ বুখারী হা: ৩৩৮৩) বলা হয়নি প্রথমে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তারপর ইল্লাল্লাহ তারপর আল্লাহ তা‘আলা তারপর হু ইত্যাদি। সুতরাং যে কোন ইবাদত করতে হবে শরীয়তের নির্দেশিত পন্থায়, নিজের কাছে যা ভাল মনে হবে বা অন্য কারো তৈরি করা পদ্ধতি অনুসরণ করে নয়। তারপর বলা হয়েছে যারা ঈমান আনবে এবং সৎ আমল করবে তাদের জন্য রয়েছে তুবা ও শুভ পরিণাম। طُوْبٰي এর একাধিক অর্থ রয়েছে; কল্যাণ, পুণ্য, কারামত, ঈর্ষা, জান্নাতের বিশেষ গাছ অথবা বিশেষ জায়গা। সবকটির অর্থ কাছাকাছি, অর্থাৎ জান্নাতের উত্তম স্থান ও তার সুখ শান্তি। । আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. হিদায়াত দেয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, অন্য কেউ নয়।২. একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ তা‘আলার যিকির করার মাধ্যমে অন্তর প্রশান্তি লাভ করে।৩. একমাত্র মু’মিনদের জন্যই শুভ পরিণাম, অন্যদের জন্য নয়।৪. যিকিরসহ অন্য যে কোন ইবাদত শরীয়তসম্মত পন্থায় পালন করতে হবে অন্যথায় তা ইবাদত বলে গণ্য হবে না।
Arabic Font Size
30
Translation Font Size
17
Arabic Font Face
Help spread the knowledge of Islam
Your regular support helps us reach our religious brothers and sisters with the message of Islam. Join our mission and be part of the big change.
Support Us