Surah Ar Rad Tafseer
Tafseer of Ar-Ra'd : 15
Saheeh International
And to Allah prostrates whoever is within the heavens and the earth, willingly or by compulsion, and their shadows [as well] in the mornings and the afternoons.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৪-১৫ নং আয়াতের তাফসীর:
(لَھ۫ دَعْوَةُ الْحَقِّ....)
পূর্বের আয়াতে আল্লাহ তা‘আলার রুবুবিয়্যাহ তথা তিনি মানুষের জন্য বৃষ্টি বর্ষণ করেন যার ফলে মানুষ উপকৃত হয় এবং বিজলী দিয়ে মানুষের মাঝে ভয় ও আশা সঞ্চার করেন। অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করছেন যে, ভয় ও আশা সর্বাবস্থায় তাঁকেই ডাকতে হবে। কেননা তিনিই প্রত্যেকের ডাক শুনেন এবং কবুল করেন। তিনি ব্যতীত আর কেউ মানুষের ডাকে সাড়া দেন না এবং তা কবুলও করেন না।
(لَھ۫ دَعْوَةُ الْحَقِّ)
‘সত্যের আহ্বান তাঁরই প্রাপ্ত’ এর দু’টি অর্থ হতে পারে; ১. পূর্বে যা উল্লেখ করা হল অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকেই ডাকা, তাঁকেই আহ্বান করা সত্য, অন্য বাতিল মা‘বূদদেরকে আহ্বান করা মিথ্যা। তারা মানুষের ডাকে সাড়া দিতে পারে না। ২. দা‘ওয়াতুল হক বা সত্যের আহ্বান বলতে সকল ইবাদত একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যই করতে হবে, তাঁরই জন্য ইবাদত করা সঠিক বা তিনিই সত্য মা‘বূদ, বান্দার ইবাদত পাওয়ার যোগ্য তিনি ব্যতীত আর কেউ নয়। কেননা বিশ্বের মালিক, সৃষ্টিকর্তা ও পরিচালক তিনিই। সুতরাং ইবাদতও একমাত্র তাঁরই প্রাপ্য, অন্য কারো নয়। ইবাদতের দু‘আ হোক আর কোন কিছু চাওয়ার জন্য দু‘আ হোক সব কিছু তাঁর কাছেই নিবেদন করতে হবে। অন্য কাউকে ডাকলে বা তার ইবাদত করলে তা বিশুদ্ধ হবে না। বরং তা র্শ্কি হবে। অতএব দু‘আসহ সকল ইবাদত তাঁরই উদ্দেশ্যে করতে হবে।
পরবর্তীতে যারা আল্লাহ তা‘আলাকে ব্যতীত অন্যকে ডাকে বা অন্যের ইবাদত করে তাদের দৃষ্টান্ত পেশ করছেন যে, তারা হল ঐ ব্যক্তির ন্যায়, যে দূর থেকে পানির দিকে দুই হাত বাড়িয়ে পানিকে বলে, তুই আমার মুখ পর্যন্ত চলে আয়। এটা স্পষ্ট কথা যে, পানি এমনই বস্তু যে, সে বুঝতেই পারে না, হাত প্রসারণকারী ব্যক্তির প্রয়োজন কী? আর সে এটাও জানে না, ঐ ব্যক্তি তাকে মুখ পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ার অনুরোধ করছে? এবং তার মধ্যে এই ক্ষমতাও নেই, সে নিজের স্থান থেকে চলে ঐ ব্যক্তির মুখ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। অনুরূপ এই মুশরিকরা যারা আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্য কোন কিছুর কাছে সাহায্য কামনা করে অথবা অকল্যাণ দূর করার জন্য আহ্বান করে তারা না এটা জানে যে, তাদেরকে কেউ আহ্বান করছে এবং তার কী প্রয়োজন রয়েছে, আর না তাদের মধ্যে প্রয়োজন মেটানোর ক্ষমতা আছে।
বরং যারা ডাকে তারা নির্বোধ এবং যাদেরকে ডাকে তারাও নির্বোধ বা জ্ঞানহীন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বাণী:
(ضَعُفَ الطَّالِبُ وَالْمَطْلُوْبُ)
“প্রার্থনাকারী আর যার কাছে প্রার্থনা করা হয় উভয়েই দুর্বল।” (সূরা হজ্ব ২২: ৭৩)
অতএব যারা আল্লাহ তা‘আলাকে ব্যতীত অন্যকে আহ্বান করে তারা দুনিয়া ও আখেরাতে কোনই উপকার লাভ করতে পারবে না। সুতরাং তাদেরকে আহ্বান করা সম্পূর্ণ অর্থহীন।
(وَلِلہِ یَسْجُدُ مَنْ فِی السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ.....)
এতে আল্লাহ তা‘আলার মহিমা ও ক্ষমতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রত্যেক বস্তুর উপর তাঁর আধিপত্য রয়েছে এবং প্রত্যেক বস্তু তাঁরই অধীন ও তাঁরই সামনে সিজদারত। চাই তা মু’মিনদের ন্যায় ইচ্ছাকৃতভাবে হোক বা কাফিরদের ন্যায় অনিচ্ছাকৃতভাবে হোক। তাদের ছায়াও সকাল-সন্ধ্যায় সিজদা করে। আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(أَوَلَمْ يَرَوْا إِلٰي مَا خَلَقَ اللّٰهُ مِنْ شَيْءٍ يَّتَفَيَّأُ ظِلَالُه۫ عَنِ الْيَمِيْنِ وَالشَّمَآئِلِ سُجَّدًا لِّـلّٰهِ وَهُمْ دٰخِرُوْنَ)
“তারা কি লক্ষ্য করে না আল্লাহর সৃষ্ট বস্তুর প্রতি, যার ছায়া ডানে ও বামে ঢলে পড়ে আল্লাহর প্রতি বিনীতভাবে সাজদাবনত অবস্থায়?” (সূরা নাহল ১৬:৪৮)
ছায়া ও কাফেররা কিভাবে আল্লাহ তা‘আলাকে সিজদা করে তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে: কেউ বলেছেন: আকাশ-জমিনে যা কিছু রয়েছে সব কিছু আল্লাহ তা‘আলার সিজদা করা (আম ও খাস) ব্যাপক ও সীমাবদ্ধ। মুমিন ও ফেরেশতারা আল্লাহ তা‘আলার সিজদা করে প্রকৃত সিজদা, তাহল মাটিতে কপাল রেখে সিজদা করা এবং তারা এ সিজদা করে আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য স্বীকারপূর্বক। আর কাফেররা সিজদা করে বাধ্য হয়ে অনিচ্ছায়। কাফের দ্বারা উদ্দেশ্য হল মুনাফিক। মুনাফিকরা প্রকৃতপক্ষে কাফের, বাহ্যিকভাবে যদিও ঈমানের কথা বলে। সুতরাং ব্যাপক ও সীমাবদ্ধ উভয়ভাবে আকাশ-জমিনে সবাই আল্লাহ তা‘আলাকে সিজদা করে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللّٰهَ يَسْجُدُ لَه۫ مَنْ فِي السَّمٰوٰتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُوْمُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَآبُّ وَكَثِيْرٌ مِّنَ النَّاسِ ط وَكَثِيْرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ)
“তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহকে সাজদাহ্ করে যা কিছু আছে আকাশমণ্ডলীতে ও পৃথিবীতে সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্ররাজি, পর্বতমালা, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সাজ্দাহ্ করে মানুষের মধ্যে অনেকে? আবার অনেকের প্রতি অবধারিত হয়েছে শাস্তি।” (সূরা হাজ্জ ২২:১৮) সব কিছুর ছায়াও সকাল সন্ধ্যা স্ব-স্ব পদ্ধতিতে আল্লাহ তা‘আলার সিজদা করে থাকে।
এ আয়াত পাঠ করার পর সিজদা করা মুস্তাহাব, সিজদার হুকুম-আহকাম সম্পর্কে সূরা আ‘রাফের শেষ আয়াতের টিকায় আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত যাদেরকে ডাকা হয় তারা সকলেই নির্বোধ এবং যারা ডাকে তারাও। এমনকি তারা কোন প্রয়োজন মেটাতেও সক্ষম নয়।
২. দু‘আসহ সকল ইবাদতের হকদার একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
৩. সাজদাহ করা একটি ইবাদত, তা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকেই করতে হবে, অন্যকে নয়, করলে তা শিরক হবে।
৪. আকাশ-জমিনের সব কিছু আল্লাহ তা‘আলার জন্য সিজদা করে তা সেচ্ছায় হোক কিংবা অনিচ্ছায়।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings