Surah Yusuf Tafseer
Tafseer of Yusuf : 55
Saheeh International
[Joseph] said, "Appoint me over the storehouses of the land. Indeed, I will be a knowing guardian."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৫৪-৫৭ নং আয়াতের তাফসীর:
উক্ত আয়াতগুলোতে মিসরে ইউসুফ (عليه السلام) কে আল্লাহ তা‘আলা যেভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
এভাবে আযীযের স্ত্রী ও নগরীর মহিলারা যখন বাস্তব ঘটনা স্বীকার করল এবং বাদশার নিকট ইউসুফ (عليه السلام) এর নির্দোষিতা, সত্যবাদিতা ও বিচক্ষণতা সুস্পষ্ট হয়ে গেল তখন তিনি ইউসুফ (عليه السلام) কে তার নিকট নিয়ে আসতে বললেন এবং এ সংবাদও দিলেন যে, আমি তাঁকে একান্ত একজন নৈকট্যশীল সহচর ব্যক্তি হিসেবে গ্রহণ করে নেব। অতঃপর ইউসুফ (عليه السلام) কে নিয়ে আসা হলে বাদশা তাঁর সাথে কথা বললেন এবং তাঁর কথায় মুগ্ধ হয়ে বাদশা বললেন: আজ থেকে তুমি আমাদের কাছে একজন মর্যাদাবান ও বিশ্বাসভাজন। বাদশা তাঁকে মন্ত্রী নিযুক্ত করতে চাইলেন। তখন ইউসুফ (عليه السلام) নিজের জন্য একটি জনসেবা মূলক কাজ পছন্দ করলেন এবং তিনি নিজের যোগ্যতা ও আমানতদারীতার কথা বলে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে চাইলেন। তিনি এ প্রস্তাব করলেন এজন্য যে, যাতে করে আসন্ন দুর্ভিক্ষের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ শস্য সংরক্ষণ করতে পারেন।
এ আয়াত প্রমাণ করে কাউকে কোন কাজের উপযুক্ত মনে হলে তাকে সে কাজে নিয়োগ দেয়া যাবে। তবে দায়িত্ব চেয়ে নেয়া যাবে না, কারণ হাদীসে নিষেধ রয়েছে, যে দায়িত্ব চাইবে তাকে দায়িত্ব দিও না। (সহীহ মুসলিম হা: ১৮২৪)
অনেকে মনে করতে পারে যে, ইউসুফ (عليه السلام) এখানে দায়িত্ব চেয়ে নিলেন। না, তিনি দায়িত্ব চেয়ে নেননি, যখন বাদশা তাঁকে দায়িত্ব দিতে চাইলেন তখন তিনি যে পদের উপযুক্ত সে পদের কথা বললেন, তিনি আগে চাননি। কারণ বাদশা যদি নিজের ইচ্ছা মত নিয়োগ দেন, আর তিনি যদি সে পদের উপযুক্ত না হন, তাহলে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবেন। তাই তিনি বললেন: আমি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে অভিজ্ঞ, সম্পদ কখন কোথায় কিভাবে সংরক্ষণ ও ব্যয় করতে হবে তা আমার জানা আছে। অনুরূপ অপচয় ও ঘাটতি থেকে সংরক্ষণ করতে পারব। সুতরাং যখন আমাকে নিয়োগ দিতে চাচ্ছেন তখন এ পদেই নিয়োগ দিন। এ ছাড়াও তিনি দেখলেন, এখানে দায়িত্ব না নিলে বড় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
خَزَآئِنِ শব্দটি خزانة এর বহুবচন, অর্থ ধন-ভাণ্ডার।
(خَزَا۬ئِنِ الْأَرْضِ)
এমন স্থানকে বলা হয় যেখানে খাদ্য গুদামজাত করে রাখা হয়। আল্লাহ তা‘আলা এসব উপকরণ ও মাধ্যমে ইউসুফ (عليه السلام) কে মিসরের জমিনে প্রতিষ্ঠিত করলেন। তিনি এমনভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করতেন যেন নিজ গৃহে বা এলাকায় বসবাস করছেন। তিনি যেখানে ইচ্ছা সফর করতেন, কোন বাধা ছিল না।
আহলে কিতাবগণের বর্ণনা মতে এ সময় বাদশা তাঁকে কেবল খাদ্য মন্ত্রণালয় নয় বরং সমস্ত মিসরের শাসন ক্ষমতা অর্পণ করেন এবং বলেন, ‘আমি আপনার চেয়ে বড় নই, কেবল সিংহাসন ব্যতীত।’ ইবনু ইসহাকের বর্ণনা মতে, এ বাদশা তাঁর হাতে মুসলিম হয়েছিল। একথাও বলা হয়েছে যে, এ সময় আযীযে মিসর (যুলাইখার স্বামী) মারা যান। ফলে ইউসুফকে উক্ত পদে বসানো হয় এবং তার বিধবা স্ত্রী যুলাইখাকে বাদশা ইউসুফ (عليه السلام) এর সাথে বিবাহ দেন। (আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ১/১৯৬-১৯৭) জ্ঞান ও যুক্তি একথা মেনে নিলেও কুরআন-সুন্নাহ এ বিষয়ে কিছু বলেনি। যেমন রাণী বিলকীসের মুসলিম হওয়া সম্পর্কে কুরআন সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছে (সূরা নামল ২৭:৪৪)। যেহেতু কুরআন ও হাদীস এ বিষয়ে কিছু বলেনি, অতএব আমাদের চুপ থাকা উচিত। আহলে কিতাবদের ক্ষেত্রে সত্য-মিথ্যা কিছু বলতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৫)
নাবী হিসেবে সুলাইমান (عليه السلام) এর যেমন উদ্দেশ্য ছিল বিলকীসের মুসলিম হওয়া ও তার রাজ্য থেকে শির্ক উৎখাত হওয়া। অনুরূপভাবে নাবী হিসেবে ইউসুফ (عليه السلام) এরও উদ্দেশ্য থাকতে পারে বাদশার মুসলিম হওয়া এবং মিসর থেকে শির্ক উৎখাত হওয়া ও সর্বত্র আল্লাহ তা‘আলার বিধান প্রতিষ্ঠিত হওয়া। এভাবে আল্লাহ তা‘আলা ইউসুফ (عليه السلام) কে মিসরের সর্বোচ্চ পদে আসীন করলেন এবং অন্ধকূপে হারিয়ে যাওয়া ইউসুফ পুনরায় দীপ্ত সূর্যের ন্যায় পৃথিবীতে বিকশিত হয়ে উঠলেন।
(نُصِيْبُ بِرَحْمَتِنَا مَنْ نَّشَا۬ءُ)
অর্থাৎ ইউসুফ (عليه السلام) কে এভাবে প্রতিষ্ঠিত করা আল্লাহ তা‘আলার রহমত। যারা সৎকর্মপরায়ণ তিনি তাদের কর্মের প্রতিদান নষ্ট করেন না। বলা হয়, এটা ইউসুফ (عليه السلام) এর সেই ধৈর্যের সুফল যা তার ভাইদের অত্যাচারে ধৈর্য ধরেছিলেন এবং ঐ সুদৃঢ় পদক্ষেপের বদলা যখন তিনি যুলাইখার কুকর্মের আহ্বানে সাড়া দেননি।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সাধারণ অবস্থায় দায়িত্ব চেয়ে নেয়া ঠিক নয়। কিন্তু বিশেষ অবস্থায় যেখানে চেয়ে না নিলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে সেখানে দায়িত্ব চেয়ে নেয়া জায়েয। যেমন ইউসুফ (عليه السلام) চেয়ে নিয়েছিলেন। তবে অবশ্যই পূর্ণ আমানতদার ও সততা থাকতে হবে।
২. সৎকর্মপরায়ণদেরকে আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া ও আখেরাতে উত্তম পুরষ্কার দিয়ে থাকেন, তবে দুনিয়ার চেয়ে আখিরাতের পুরষ্কারই শ্রেষ্ঠ।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings