Surah Yusuf Tafseer
Tafseer of Yusuf : 31
Saheeh International
So when she heard of their scheming, she sent for them and prepared for them a banquet and gave each one of them a knife and said [to Joseph], "Come out before them." And when they saw him, they greatly admired him and cut their hands and said, "Perfect is Allah ! This is not a man; this is none but a noble angel."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৩০-৩৫ নং আয়াতের তাফসীর:
শহরের মহিলারা আযীযের স্ত্রী (যুলাইখা) সম্পর্কে যা বলাবলি করছিল সে সম্পর্কে এ আয়াতগুলোতে আলোচনা করা হয়েছে।
আযীযে মিসর ইউসুফ (عليه السلام) কে ঘটনা চেপে যেতে বললেও ঘটনা চেপে থাকেনি। বরং নানা ডাল-পালা দিয়ে শহরে প্রচার হয়ে গেল। আযীযের স্ত্রীর এসব ঘটনা যখন শহরের লোকজন/নারীরা জানতে পারল তখন তারা অত্যন্ত বিস্ময় ও ঘৃণার সাথে এই ঘটনার সমালোচনা করতে লাগল। এমনকি তারা পরস্পরে বলতে লাগল যে, আযীযের স্ত্রী তার পুত্রসম দাসের সাথে অপকর্ম মনস কামনা করছে অথচ তার স্বামী বিদ্যমান। ক্রীতদাসের প্রেম তার অন্তরকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। এরকম বিভিন্ন কথা-বার্তা বলাবলি করতে লাগল। তাদের এই সমালোচনার কথা যখন সে মহিলার (যুলাইখা) কানে পৌঁছল তখন তাদেরকে আসার জন্য খবর পাঠাল এবং একটি ভোজ সভার আয়োজন করল এ প্রমাণ করার জন্য যে, আমি যার প্রেমে আসক্ত হয়েছি সে কি সাধারণ একজন দাস, না অসাধারণ সৌন্দর্যের অধিকারী। সভায় আগত মহিলাদের হাতে ফল কেটে খাওয়ার জন্য একটি করে ছুরি দেয়া হল। যখন মহিলারা ছুরি হাতে নিল তখন যুলাইখা ইউসুফ (عليه السلام) কে বলল: হে ইউসুফ! তুমি এই মহিলাদের সামনে দিয়ে হেঁটে যাও। এর আগে তাঁকে আড়াল করে রাখা হয়েছিল। তখন ইউসুফ (عليه السلام) তাদের সামনে দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলেন। অতঃপর মহিলারা ইউসুফ (عليه السلام) এর মনোমুগ্ধকর রূপ-সৌন্দর্য দেখে প্রথমে তাঁর মাহাত্ম্য ও মর্যাদা বর্ণনা করে, তারপর তারা এমন দিশেহারা হয়ে পড়ে যে, ঐ ছুরি দিয়ে ফল কাটার পরিবর্তে তাদের হাঁত কেটে ফেলল এবং সৌন্দর্য দেখে বলল যে, সে কোন সাধারণ মানুষ নয় বরং আল্লাহ তা‘আলার উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন ফেরেশতা! তখন যুলাইখা ঐ সমস্ত মহিলাদেরকে বলল: এই হচ্ছে সেই যুবক, যার ব্যাপারে তোমরা আমাকে অপবাদ রটিয়েছিলে। তোমরা এক নজর দেখে নিজেদের হাত কেটে ফেললে, বুঝতেও পারলেনা অথচ সে সর্বদা আমার প্রাসাদে থাকে আমি কিভাবে তাঁর প্রেমে আবদ্ধ না হয়ে পারি। তখন মহিলারা তাদের অপরাধ স্বীকার করল। এতে যুলাইখার মনে আরো সাহস বেড়ে গেল, লজ্জা-শরম যা ছিল তাও চলে গেল এবং বলল যে, আমি তাকে প্রেম নিবেদন করেছি কিন্তু সে নিজেকে পবিত্র রেখেছে। আমি তাকে যা আদেশ করব তা যদি সে আমার কথা মত না করে তাহলে তাকে অবশ্যই কারারুদ্ধ হতে হবে এবং হীনদের দলভুক্ত হবে। এতে যুলাইখা ইউসুফ (عليه السلام) কে কিছুটা হুমকি দিল।
তখন ইউসুফ (عليه السلام) ঐ মহিলার কথার প্রত্যত্তুরে আল্লাহ তা‘আলার কাছে এই বলে দু‘আ করলেন যে, হে আমার প্রতিপালক! এই মহিলারা আমাকে যে দিকে আহ্বান করছে তা থেকে কারাগারই আমার জন্য উত্তম। আপনি তাদের থেকে আমাকে রক্ষা করুন। আপনার সাহায্য ব্যতীত আমি কোন পাপকার্য থেকে বাঁচতে পারব না এবং কোন সৎ কাজও করতে পারব না। সুতরাং আপনি তাদের থেকে আমাকে হেফাযত করুন নতুবা আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব। তখন আল্লাহ তা‘আলা ইউসুফ (عليه السلام) এর দু‘আ কবূল করলেন এবং তাঁর ডাকে সাড়া দিলেন ও তাঁকে মহিলাদের চক্রান্ত থেকে রক্ষা করলেন। অতঃপর ইউসুফ ঐ মহিলাদের সাথে অপকর্মে লিপ্ত হবার চেয়ে জেলে যাওয়াটাই পছন্দ করলেন এবং তিনি কারারুদ্ধও হলেন। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা সাত শ্রেণির মানুষকে আরশের ছায়া তলে স্থান দেবেন। তাদের মধ্যে এক শ্রেণি হল সে সকল যুবক যাদেরকে কোন রূপসী ও সম্ভ্রান্ত নারী অপকর্ম করার জন্য আহ্বান করে। কিন্তু সে তার ডাকে সাড়া না দিয়ে বলে আমি আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করি। (সহীহ বুখারী হা: ১৪২৩, সহীহ মুসলিম হা: ১০৩১)
নাবীগণ নিষ্পাপ মানুষ ছিলেন:
ইউসুফ (عليه السلام) এর প্রার্থনায় ‘আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব’ এ কথার মথ্যে এ সত্য ফুটে উঠেছে যে, নাবীগণ মানুষ ছিলেন এবং মনুষ্যসুলভ স্বাভাবিক প্রবণতা তাদের মধেও ছিল। তবে আল্লাহ তা‘আলার বিশেষ অনুগ্রহ ও ব্যবস্থাধীনে তাঁরা যাবতীয় কবীরা গুনাহ থেকে মুক্ত থাকেন এবং নিষ্পাপ থাকেন। ইউসুফ (عليه السلام) এর অন্তরে অনিচ্ছাকৃত অপরাধ প্রবণতা সৃষ্টির আশংকাটি কেবল ধারণার পর্যায়ে ছিল। তা সগীরা বা কবীরা কোনরূপ গুনাহের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। নিঃসন্দেহে ইউসুফ ছিলেন নির্দোষ ও নিষ্পাপ এবং পূত পবিত্র চরিত্রের অধিকারী। (ثُمَّ بَدَا لَهُمْ) নির্দোষ ও পবিত্রতার নিদর্শন প্রকাশ হবার পরেও আযীয ও তার সহচর এ জন্য ইউসুফ (عليه السلام)-কে জেলে প্রেরণ করেছে যাতে ইউসুফ (عليه السلام) তার স্ত্রী থেকে দূরে থাকতে পারে এবং যে ঘটনা ঘটে গেছে তার চর্চা ও রটনা বন্ধ হয়ে যায়।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অধিকাংশ মহিলারা গীবত ও পরনিন্দায় লিপ্ত হয়ে থাকে।
২. অপকর্মে লিপ্ত হবার চেয়ে শাস্তি ভোগ করাও উত্তম ও নিরাপদ। যেমন ইউসুফ (عليه السلام) কারারুদ্ধ হওয়াটাই পছন্দ করেছিলেন।
৩. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ওলী ও একনিষ্ঠ বান্দাদের ডাকে সাড়া দিয়ে থাকেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings