Surah Yusuf Tafseer
Tafseer of Yusuf : 109
Saheeh International
And We sent not before you [as messengers] except men to whom We revealed from among the people of cities. So have they not traveled through the earth and observed how was the end of those before them? And the home of the Hereafter is best for those who fear Allah ; then will you not reason?
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
আল্লাহ তাআ’লা খবর দিচ্ছেন যে, তিনি রাসূল ও নবী হিসেবে দুনিয়ায় পুরুষ লোককেই পাঠিয়েছেন। স্ত্রীলোকদেরকে নয়। জমহুর আলেমদের উক্তি এটাই যে, নুবওয়াত কখনো নারীদেরকে দান করা হয় নাই। এই আয়াতের ধরণেও এটাই প্রমাণিত হয়। কিন্তু কোন কোন আলেমের উক্তি এই যে, হযরত ইবরাহীমের (আঃ) স্ত্রী হযরত সারা (আঃ) হযরত মূসার (আঃ) মাতা এবং হযরত ঈসার (আঃ) মাতা মারইয়ামও (আঃ) নবী ছিলেন। ফেরেশতাগণ হযরত সারা (আঃ) কে তার পুত্র হযরত ইসহাক (আঃ) এবং পৌত্র হযরত ইয়াকুবের (আঃ) সুসংবাদ দিয়েছিলেন। হযরত মূসার (আঃ) মাতার নিকট তাঁকে দুধ পান করাবার ওয়াহী করা হয়। হযরত মারইয়ামকে (আঃ) ফেরেশতাগণ তাঁর পুত্র হযরত ঈসার (আঃ) সুসংবাদ দিয়েছিলেন। ফেরেশতাগণ তাকে বলেছিলেনঃ “হে মারইয়াম (আঃ)! আল্লাহ তোমাকে মনোনীত ও পবিত্র করেছেন এবং বিশ্বের নারীদের মধ্যে তোমাকে মনোনীত করেছেন। হে মারইয়াম (আঃ) তোমার প্রতিপালকের অনুগত হও ও সিজদা কর, এবং যারা রুকু করে তাদের সাথে রুকু’ কর।”
এর উত্তর এই যে, কুরআন কারীমে যেটুকু বর্ণনা রয়েছে তা আমরা বিনা বাক্য ব্যয়ে স্বীকার করে নিচ্ছি। কিন্তু এর দ্বারা তাদের নুবওয়াত প্রমাণিত হয় না। শুধু এইটুকু ফরমান বা এইটুকু শুভ সংবাদ অথবা এইটুকু হুকুম কারো নুবওয়াতের জন্যে দলীল নয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের সবারই মাযহাব এটাই যে, নারীদের মধ্যে কেউই নবী হন নাই। হ্যাঁ তবে তাঁদের মধ্যে সিদ্দিকা বা সত্যবাদিণী রয়েছেন। যেমন সর্বাপেক্ষা সম্ভ্রান্ত বংশীয়া ও মর্যাদা সম্পন্না স্ত্রীলোক মারইয়াম (আঃ) সম্পর্কে কুরআন কারীমে ঘোষিত হয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “তার (হযরত ঈসার (আঃ) মা হচ্ছে সিদ্দীকা বা চরম সত্যবাদিনী।” সুতরাং যদি তিনি নবী হতেন তবে এই জায়গায় তাকে এটাই বলা হতো।
আয়াতটির ভাবার্থ হচ্ছে এই যে, যমীনে বসবাসকারী মানুষই নবী হয়ে থাকেন, এটা নয় যে, আকাশ হতে কোন ফেরেশতা অবতীর্ণ হন। যেমন এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেছেনঃ (আরবি)
অর্থাৎ “(হে নবী সঃ)! তোমার পূর্বে আমি যে রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছিলাম তারা অবশ্যই খাদ্য খেতো এবং বাজারে চলাফেরা করতো।” (২৫: ২০) তারা এইরূপ দেহ বিশিষ্ট ছিলেন না যে, খাদ্য গ্রহণ থেকে পবিত্র থাকবেন। তারা এমনও ছিলেন না যে, মৃত্যু তাদেরকে পেয়ে বসবে না। তারা বাজারেও চলাফেরা করতেন। আল্লাহ তাদের সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছেন। তিনি তাঁদের সাথে যাদেরকে ইচ্ছা মুক্তি দিয়েছেন এবং সীমালংঘনকারী লোকদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এক আয়াতে আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ (আরবি)
অর্থাৎ “ (হে নবী (সঃ)! তুমি বলঃ আমি তো প্রথম রাসূল নই।” (৪৬: ৯) এ কথা জেনে রাখা প্রয়োজন যে, এখানে ‘গ্রামবাসী’ দ্বারা শহরবাসী উদ্দেশ্য। কেননা, গ্রামবাসী বড়ই বক্র স্বভাব ও দুশ্চরিত্র হয়ে থাকে। এটা সর্বজন বিদিত যে, শহরবাসী হয় কোমল অন্তর ও মহৎ চরিত্রের অধিকারী। অনুরূপভাবে জনপদ হতে দূরে তাঁবুতে বসবাসকারী বেদুঈনরাও অত্যন্ত কঠোর স্বভাবের হয়ে থাকে। এ জন্যেই আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবি)
অর্থাৎ “মরুবাসী বেদুঈনরা কুফরী ও নিফাকে খুবই কঠিন।” (৯: ৯৭) কাতাদা’'ও (রঃ) এই ভাবার্থ বর্ণনা করেছেন। কেননা, শহরের লোকদের মধ্যে বিদ্যা ও ধৈর্য বেশি থাকে।
একটি হাদীসে এসেছে যে, এক মরুবাসী বেদুঈন রাসূলুল্লাহর (সঃ) সমিনে কিছু হাদিয়া পেশ করে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে ওর বিনিময় প্রদান করেন। সে কিন্তু ওটাকে খুবই কম মনে করে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে আরো দেন এবং শেষ পর্যন্ত তাকে খুশী করেন। অতঃপর তিনি বলেনঃ “আমি ইচ্ছা করছি যে, আমি কুরায়েশ, আনসারী, সাকাথী এবং দাওসী গোত্রের লোক ছাড়া আর কারো উপঢৌকন গ্রহণ করবো না।”
হযরত আ’মাশ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “যে মুমিনমু’মিন লোকদের সাথে মেলামেশা করে এবং তাদের দেয়া কষ্টের উপর ধৈর্য ধারণ করে সে ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা উত্তম যে লোকদের সাথে মেলামেশা করে না এবং তাদের দেয়া কষ্টের উপর ধৈর্য ধারণও করে না।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ) স্বীয় মুসনাদ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)
আল্লাহ তাআ’লার উক্তিঃ (আরবি) অর্থাৎ “হে মুহাম্মদ (সঃ)! তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্নকারী এই লোকগুলি কি ভূপৃষ্ঠে ভ্রমণ করে নাই, অতঃপর তাদের পুর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছিল তা কি দেখে নাই?’ (৪০: ৪৮২) অর্থাৎ তাদের পূর্ববর্তী যে সব উম্মত তাদের রাসূলদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল তাদের পরিণাম ফল কি হয়েছিল! আল্লাহ কিভাবে তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন! এই কাফিরদের জন্যে অনুরূপ শাস্তি রয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ এক জায়গায় বলেনঃ (আরবি)
অর্থাৎ তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে নাই যে, তাদের অন্তরগুলি তার ফলে বোধশক্তি সম্পন্ন হতো?” (২২: ৪৬) এরূপ করলে তারা দেখতে পেতো যে, তাদের ন্যায় কাফির ও গুনাহগারদের পরিণতি কি হয়েছিল! আল্লাহ তাআ’লা কাফিরদের ধ্বংস করে দিয়েছিলেন এবং মুমিনমু’মিনদেরকে মুক্তি দিয়েছিলেন। আল্লাহ তাআ’লার নীতি তাঁর মাখলুকের সাথে এইরূপই বটে। এই জন্যেই আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ যারা আল্লাহকে ভয় করে তাদের জন্যে পরকালই উত্তম। অর্থাৎ যেমন দুনিয়ায় আমি মু'মিনদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকি, অনুরূপভাবে আখেরাতেও তাদেরকে আমার শাস্তি হতে রক্ষা করবো এবং পরকালের মুক্তি তাদের জন্যে দুনিয়ার মুক্তি হতে উত্তম হবে। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবি)
অর্থাৎ “আমি অবশ্যই আমার রাসূলদেরকে এবং মু'মিনদেরকে পার্থিব জগতে সাহায্য করবো এবং যে দিন সাক্ষীগণ দাঁড়িয়ে যাবে। সেইদিন অত্যাচারীদের ওজর কোনই উপকারে আসবে না। তাদের উপর অভিসম্পাত বর্ষিত হবে এবং তাদের জন্যে নিকৃষ্ট ঘর হবে।” (৪০: ৫১-৫২) এখানে (আরবি) বা ঘরের সম্বন্ধ আখেরাতের দিকে লাগানো হয়েছে। যেমন (আরবি) এবং (আরবি) বলা হয়ে থাকে। আরব কবিদের কবিতাতেও এইরূপ (আরবি) বা সম্বন্ধ অনেক রয়েছে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings