Surah Yusuf Tafseer
Tafseer of Yusuf : 107
Saheeh International
Then do they feel secure that there will not come to them an overwhelming [aspect] of the punishment of Allah or that the Hour will not come upon them suddenly while they do not perceive?
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১০২-১০৭ নং আয়াতের তাফসীর:
ذٰلِكَ অর্থাৎ ইউসুফ (عليه السلام) এর জীবনের এসব ঘটনাসহ যা কিছু উল্লেখ করা হল সব গায়েবের বিষয়। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগ থেকে হাজার বছরের আগের কথা। এসব জানা নিরক্ষর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পক্ষে কক্ষনো সম্ভব নয়, তা তাছাড়া তিনি তখন উপস্থিত ছিলেন না অর্থাৎ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগ ও ইউসুফ (عليه السلام) এর যুগ এক নয়। তাঁকে জানানো হয়েছে ওয়াহীর মাধ্যমে। সুতরাং এতে প্রমাণিত হয়, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গায়েব জানেন না। তিনি যদি গায়েব জানতেন তাহলে তা ওয়াহীর মাধ্যমে জানানোর কোন প্রয়োজন ছিল না। এ সম্পর্কে সূরা আলি ইমরানের ৭ ও ৪৪ নং আয়াত, সূরা কাসাসের ৪৫-৪৬ নং আয়াত এবং সূরা সাদের ৬৯-৭০ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
(وَمَآ أَكْثَرُ النَّاسِ) অর্থাৎ পূর্ববর্তী জাতির বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ, কিয়ামতের ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্কীকরণ এবং উপস্থিত নিদর্শন প্রত্যক্ষ করেও অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনবে না। সুতরাং অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনুক তা একজন নাবীর আশা করে লাভ নেই। কারণ পূর্বেই আল্লাহ তা‘আলা জানেন অধিকাংশ মানুষ ঈমান বর্জন করবে, শয়তানের দলে শামিল হবে। তবে মানুষকে সত্যের পথে আহ্বান জানানো অব্যাহত রাখতে হবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَلِيْلٌ مِّنْ عِبَادِيَ الشَّكُوْرُ)
“আর আমার কৃতজ্ঞ বান্দার সংখ্যা কম” (সূরা সাবা ৩৪:১৩)
(وَمَا تَسْئَلُهُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْر)
অর্থাৎ হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! তোমার কাজের বিনিময়ে যদি কোন পারিশ্রমিক চাইতে তাহলে তারা সন্দেহ করত যে, হয়তো সম্পদের লোভে সে নতুন পথের দিকে দাওয়াত দিচ্ছে। এ কুরআন নাযিল করা হয়েছে এ জন্য যে, মানুষ এ থেকে হিদায়াত গ্রহণ করবে, সঠিক পথ চিনবে ও উপকৃত হবে। কিন্তু যাদের স্বচ্ছ অন্তর নেই তারা হিদায়াত নিতে পারবে না।
(وَكَأَيِّنْ مِّنْ اٰيَةٍ)
অর্থাৎ আল্লাহর তাওহীদ তথা একত্বের ওপর প্রমাণ বহন করে এমন কত নিদর্শন রয়েছে, মানুষ সকাল-সন্ধ্যা তা প্রত্যক্ষ করে কিন্তু তা অনুধাবন করে না এবং অনুধাবন করার চেষ্টাও করে না। মানুষ প্রতিদিন দেখছে সূর্য পূর্ব দিকে উঠে, পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। কিন্তু কোনদিন চিন্তা করল না, এ সূর্য কে উদিত করছে, কে অস্ত করাচ্ছে? তিনি কত জন, কত শক্তির মালিক? ইত্যাদি নিয়ে একটু চিন্তা করলে আল্লাহকে চিনতে পারা যাবে এবং নিজের ভেতর থেকেই তাঁর কাছে আত্মসর্ম্পণ চলে আসবে।
(وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللّٰهِ)
অর্থাৎ বিশ্বাস করে আল্লাহ তা‘আলা রয়েছেন কিন্তু ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহকে বাদ দিয়ে বিভিন্ন মা‘বূদের ইবাদত করে। যেমন মক্কার মুশরিকরা বিশ্বাস করত তাদের হায়াত-মউত, আকাশ-জমিন, বৃষ্টি দান এমনকি বিপদ থেকে উদ্ধারের মালিক একমাত্র আল্লাহ, কিন্তু ইবাদত করত লাত, উযযা, মানাতসহ শত শত প্রতিমার। যার কারণে তারা তাওহীদে রুবুবিয়্যাহর প্রতি (তথা সকল কিছুর মালিক ও স্রষ্টা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা) বিশ্বাস থাকলেও আখিরাতে নাজাত পাবে না, কারণ ইবাদত করেছে আল্লাহ ছাড়া অন্যের। এভাবে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন মূর্তি, প্রতিমা, বৃক্ষ, নক্ষত্র, কবর, মাযার ও তাগুত ইত্যাদির ইবাদত করার মাধ্যমে মুশরিক হয়ে যাচ্ছে অথচ আবার মুসলিম দাবি করে। এভাবে একজন ব্যক্তি মুসলিম হতে পারে না এবং হলেও মুসলিম থাকবে না। প্রকৃত মুসলিম হতে হলে অবশ্যই তাওহীদ ও শির্ক সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতঃ সর্বদা আকীদাহ ও আমলে তাওহীদের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে হবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قَدْ کَانَتْ لَکُمْ اُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِیْٓ اِبْرٰھِیْمَ وَالَّذِیْنَ مَعَھ۫ﺆ اِذْ قَالُوْا لِقَوْمِھِمْ اِنَّا بُرَءٰ۬ؤُا مِنْکُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللہِﺑ کَفَرْنَا بِکُمْ وَبَدَا بَیْنَنَا وَبَیْنَکُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَا۬ئُ اَبَدًا حَتّٰی تُؤْمِنُوْا بِاللہِ وَحْدَھ۫ٓ)
“তোমাদের জন্য ইবরাহীম ও তাঁর অনুসারীদের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ; তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিল: তোমাদের সঙ্গে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদত কর তার সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই; আমরা তোমাদেরকে প্রত্যাখ্যান করি। তোমাদের ও আমাদের মধ্যে সৃষ্টি হল শত্র“তা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান না আন।” (সূরা মুমতাহিনা ৬০:৪)
সুতরাং ঈমান হল সকল ভ্রান্ত মা‘বূদ, তাগুত ও তাদের অনুসারীদেরকে বর্জন করা এবং এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতে অটল থাকা।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সংখ্যা গরিষ্ঠতা সত্যের মাপকাঠি নয়, বরং সত্যের মাপকাঠি হল হক, যদিও তার পক্ষে একজন থাকে।
২. রব (প্রতিপালক) হিসেবে যেমন আল্লাহ তা‘আলাকে মানা হয় মা‘বূদ (একমাত্র ইবাদতের যোগ্য) হিসেবেও অনুরূপভাবে আল্লাহ তা‘আলাকে মানতে হবে। অন্যথায় নাজাত পাওয়া যাবে না।
৩. যারা অবিশ্বাসী বা কাফির, মুশরিক ও মুনাফিক এ অবস্থায় মৃত্যবরণ করে তারা আল্লাহ তা‘আলার শাস্তি থেকে কখনও রক্ষা পাবে না।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings