Surah Hud Tafseer
Tafseer of Hud : 3
Saheeh International
And [saying], "Seek forgiveness of your Lord and repent to Him, [and] He will let you enjoy a good provision for a specified term and give every doer of favor his favor. But if you turn away, then indeed, I fear for you the punishment of a great Day.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
নামকরণ ও গুরুত্ব:
সূরার ৫০ থেকে ৬০ নং আয়াত পর্যন্ত আদ জাতি ও তাদের কাছে প্রেরিত নাবী হূদ (عليه السلام) সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সেখান থেকেই উক্ত নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। এই সূরাতেও সে সকল জাতির কথা আলোচনা করা হয়েছে; যারা আল্লাহ তা‘আলার আয়াত ও পয়গম্বরদেরকে মিথ্যা মনে করে আল্লাহ তা‘আলার আযাবের সম্মুখীন হয়েছিল। ইতিহাসের পাতা থেকে হয় ভুল অক্ষরের মত মিটিয়ে দেয়া হয়েছে অথবা ইতিহাসের পাতায় শিক্ষাস্বরূপ লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। এ কারণেই হাদীসে এসেছে: একদা আবূ বকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেন, কি ব্যাপার আপনাকে বৃদ্ধ মনে হচ্ছে কেন? নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরে বললেন: সূরা হূদ, ওয়াকিয়া, আম্মা ইয়াতাসাআলুন (সূরা নাবা) এবং ইযাশশামছু কুওবিরাত (সূরা তাকভীর) ইত্যাদি সূরাগুলো আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে। (তিরমিযী হা: ৩২৯৭, সহীহ)
১-৪ নং আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়::
الٓرٰ (আলিফ-লাম-রা) এ গুলো হচ্ছে “হুরূফুল মুক্বাত্বআত” বা বিচ্ছিন্ন অক্ষরসমূহ। এসব অক্ষর সূরার শুরুতে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য কী তা আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন। যদিও এ ব্যাপারে বিদ্বানগণ বিভিন্ন মত ব্যক্ত করেছেন। ইমাম শানক্বিতী (রহঃ) বলেন: বিদ্বানদের সেসব মতামতের মধ্যে গ্রহণযোগ্য মত হলযে সকল সূরার শুরুতে “হুরূফুল মুক্বাত্বআত” উল্লেখ করা হয়েছে তা কুরআনের মু‘জিযাহ বা অলৌকিকত্ব বুঝানোর জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। কুরআনের এ বিচ্ছিন্ন অক্ষরগুলো একত্রিতভাবে উল্লেখ থাকলেও তার উদ্দেশ্য নিয়ে আসতে সৃষ্টিকুল অক্ষম। এ অক্ষরগুলো যে মু‘জিযাহ স্বরূপ তার প্রমাণ হল যে সকল সূরার শুরুতে এসকল অক্ষর নিয়ে আসা হয়েছে তার পরে পরেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া হয়েছে। যেমন এ সূরার শুরুতে এ অক্ষরগুলো উল্লেখ করার পর বলা হয়েছে: ‘এটা এমন গ্রন্থ যার আয়াতগুলো সুদৃঢ়, অতঃপর বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞের পক্ষ থেকে।’
সুতরাং কুরআনের মাঝে দুর্বলতা ধরতে পারলে ধরে নিয়ে আসো। কিন্তু কেউ আজ পর্যন্ত এ চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে আসেনি, অথচ তৎকালীন আরবরা ছিল ভাষা ও সাহিত্যের শীর্ষচূড়ায়। এ সম্পর্কে সূরা বাকারার প্রথম আয়াতেও আলোচনা করা হয়েছে।
أُحْكِمَتْ শব্দের শাব্দিক অর্থ-দৃঢ় করা, মজবুত করা। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন: কোন কিতাব তা রহিত করতে পারবে না। যেমন তাওরাত ও ইনজিলকে রহিত করে দিয়েছে। কাতাদাহ বলেন: কুরআনের সকল আয়াতগুলো মুহকাম, তাতে কোন ভ্রান্তি নেই এবং কোন বাতিল কিছু নেই। মোট কথা কুরআনের আয়াতগুলো বিধি-বিধানের দিক থেকে মজবুত, সংবাদের দিক থেকে সত্যবাদী এবং শব্দ বিন্যাস ও অর্থের দিক থেকে কোন প্রকার ত্র“টি নেই।
অতঃপর তাতে আহকাম ও শরঈ বিধি-বিধান, নসীহত ও কাহিনী, আক্বায়েদ ও ঈমান সংক্রান্ত বিষয় এবং চরিত্র ও ব্যবহারনীতি-নৈতিকতার বিষয়গুলোকে পরিষ্কার ও বিস্তারিতভাবে মহাজ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিয়েছেন, পূর্ব কিতাবসমূহে এর দৃষ্টান্ত মেলে না। সুতরাং মহাজ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ তা‘আলা যিনি অগ্র-পশ্চাত সব জানেন তিনি এ কুরআনকে সকল প্রেক্ষাপট ও সময়ের জন্য উপযোগী করে নাযিল করেছেন। কারো বলার সুযোগ নেই, বর্তমান আধুনিক যুগে কুরআন উপযোগী নয়। এ শুধু আধুনিক নয় বরং এর চেয়ে যত বেশি আধুনিক ও অত্যাধুনিক আসুক না কেন তাতেও কুরআন উপযোগী।
অতএব আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ বাণী জ্ঞান ও হিকমত থেকে খালি নয়। আল্লাহ তা‘আলার হিকমত-এর মধ্য থেকে এটাও একটি হিকমত যে, তিনি সকল নাবী-রাসূলকে একই বিধান দিয়ে প্রেরণ করেছেন। আর তাদের সকলের দা‘ওয়াত এটাই ছিল যে, তোমরা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই ইবাদত কর অন্য কারো ইবাদত করো না এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না। সুতরাং তাঁর কথা অনুপাতে আমল করলেই তোমরা উভয় জগতের অনিষ্ট থেকে বাঁচতে পারবে। অন্যথায় তোমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
আর যদি তোমাদের দ্বারা পাপ হয়ে যায় তাহলে তার জন্য আল্লাহ তা‘আলার দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং তাঁর নিকট তাওবাহ কর তাহলে তিনি তোমাদেরকে উত্তম ভোগের বস্তু দান করবেন। এখানে উত্তম ভোগ্য সামগ্রী বলতে দুনিয়ার ভোগ্য সামগ্রীকেই বুঝানো হয়েছে। কারণ যে ব্যক্তি দুনিয়ার বস্তু উপার্জনের মাধ্যমে আখিরাতের প্রস্তুতি গ্রহণ করবে তার জন্য এই দুনিয়ার সরঞ্জামাদিই উৎকৃষ্ট সরঞ্জামাদিতে পরিণত হবে। কারণ সে আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ অনুসারে তা করেছে।
(وَيُؤْتِ كُلَّ ذِيْ فَضْلٍ فَضْلَه۫)
এই উক্তির ব্যাখ্যায় ইবনু জারীর (রহঃ) ইবনে মাসউদ থেকে বর্ণনা করেন যে, যদি কোন ব্যক্তি খারাপ কাজ করে তবে তার জন্য একটি পাপ লিখে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি একটি ভাল কাজ করে তার জন্য দশটি নেকী লিখে দেয়া হয়। মূলত এখানে অনুগ্রহ বলতে এটাই বুঝানো হয়েছে।
আর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার কর তবে অবশ্যই তোমাদেরকে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। আর সর্বাবস্থায়ই তোমাদেরকে আল্লাহ তা‘আলার নিকট ফিরে যেতে হবে। সুতরাং অস্বীকার করলে কঠিন দিবসের শাস্তি থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. এই কিতাবের আয়াতগুলো মানুষের উপকারার্থে সুন্দরভাবে বর্ণনা করে দেয়া হয়েছে।
২. মানুষকে দুনিয়াতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পাঠানো হয়েছে, সময় শেষ হয়ে গেলে চলে যেতে হবে।
৩. আল্লাহ তা‘আলা বান্দার ওপর স্নেহপরায়ণ।
৪. মানুষকে সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার নিকটই ফিরে যেতে হবে।
৫. কুরআন সকল যুগের উপযোগী একটি আসমানী কিতাব।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings