Surah Yunus Tafseer
Tafseer of Yunus : 89
Saheeh International
[ Allah ] said, "Your supplication has been answered." So remain on a right course and follow not the way of those who do not know."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৮২-৯৩ নং আয়াতের তাফসীর:
এই আয়াতগুলোতে মূসা (عليه السلام) ও তাঁর সম্প্রদায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বাণী দ্বারা সত্যকে সত্য হিসেবে প্রমাণিত করেছেন। আর এগুলো হল ঐ সকল প্রমাণ ও স্পষ্ট দলীল, যা আল্লাহ তা‘আলা নিজ কিতাবে অবতীর্ণ করেছেন এবং যা তিনি নাবীগণকে প্রদান করেছেন। অথবা ঐ সকল মু‘জিযা যা আল্লাহ তা‘আলার আদেশে নাবীদের হাতে প্রকাশ হত।
৮৩ নং আয়াতে বলা হচ্ছে যে, ফির‘আউনের সম্প্রদায়ের কিছু লোক মূসা (عليه السلام)-এর নিদর্শন দেখার পর তারা মূসা (عليه السلام)-এর প্রতি ঈমান আনল। বাকিরা ঈমান আনেনি এই ভয়ে যে, ফির‘আউন তাদেরকে শাস্তি দেবে। কারণ ফির‘আউন ছিল সীমালঙ্ঘনকারী।
পরবর্তীতে মূসা (عليه السلام) তাদেরকে ভয় মুক্ত হবার জন্য আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা করতে বললেন। যদি তোমরা আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা কর তবে আল্লাহ তা‘আলার শত্র“ ও তোমাদের শত্র“ ফির‘আউন তোমাদের কোন ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। এবং আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য প্রার্থনা কর। তখন তারা একথা শুনে আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা করল এবং তাঁরই সাহায্য প্রার্থনা করল এবং ফির‘আউনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। তারা আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা করার সাথে সাথে আল্লাহ তা‘আলার দরবারে দু‘আও করেছিল।
আর আল্লাহ তা‘আলা তাদের দু‘আ কবূল করলেন।
৮৭ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা ও তার ভাইয়ের প্রতি ওয়াহী করলেন যে, তারা যেহেতু ঈমান এনেছে অতএব তারা ইবাদত করার জন্য যেন যার যার ঘরে একটি করে ইবাদতখানা তৈরী করে নেয়। যাতে করে ইবাদত করার জন্য তোমাদের বাইরে যেতে না হয়। কারণ বাইরে ফির‘আউন ও তার দলবলের অত্যাচারের আশঙ্কা রয়েছে। তখন তারা ইবাদতখানা তৈরী করে নিল।
৮৮ নং আয়াতে বলা হচ্ছে যে, মূসা (عليه السلام) বললেন, যখন তিনি দেখলেন যে, তাঁর ওয়াজ, নসীহত কোন উপকারে আসছে না তখন আল্লাহ তা‘আলার কাছে বদদু‘আ করলেন যে, তিনি যেন ফেরাউনের ধন-সম্পদ ধ্বংস করে দেন এবং ফির‘আউন যেন কঠিন শাস্তি না দেখা পর্যন্ত ঈমান না আনে। অর্থাৎ সে যদিও ঈমান আনে তবে যেন শাস্তি দেখার পর আনে যে ঈমান তার কোন কাজে আসবে না। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের দু‘আ কবূল করলেন এবং তাদেরকে তাদের বদদু‘আর ওপর অটল থাকার নির্দেশ দিলেন। আর যারা সত্যের অনুসরণ করে না তাদের মত যেন না হয়ে যায় সে ব্যাপারে সতর্ক করলেন এবং তাদেরকে ধৈর্য ধারণ করতে বললেন এবং তারা যেন তার ব্যাপারে তাড়াহুড়া না করে। কারণ আল্লাহ তা‘আলা হিকমত ও কৌশল অনুযায়ী অবিলম্বে তার প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করবেন।
৯০ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলছেন যে, আমি বাণী ইসরাইলকে সমুদ্র পার করিয়ে দিলাম। অর্থাৎ সমুদ্র চিরে তাতে শুষ্ক রাস্তা তৈরী করে দিলাম। যেমন
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَأَوْحَيْنَآ إِلٰي مُوْسٰٓي أَنِ اضْرِبْ بِّعَصَاكَ الْبَحْرَ ط فَانْفَلَقَ فَكَانَ كُلُّ فِرْقٍ كَالطَّوْدِ الْعَظِيْمِ)
“অতঃপর মূসার প্রতি ওয়াহী করলাম, ‘তোমার লাঠি দ্বারা সমুদ্রে আঘাত কর।’ ফলে তা বিভক্ত হয়ে প্রত্যেক ভাগ বিশাল পবর্তসদৃশ হয়ে গেল।” (সূরা শুআরা ২৬:৬৩)
অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ দিলেন যে, তোমার লাঠি দ্বারা সমুদ্রে আঘাত কর। যার ফলে ডান দিকের পানি ডান দিকে এবং বাম দিকের পানি বাম দিকে সরে গিয়ে স্থির হয়ে গেল আর মাঝখান দিয়ে রাস্তা তৈরী হয়ে গেল। যা দিয়ে মূসা (عليه السلام) ও তার সৈন্যদল সমুদ্র পার হয়ে চলে গেল। আর ফির‘আউন সম্প্রদায় যখন সমুদ্রের মাঝখানে পৌঁছল এমন সময় আল্লাহ তা‘আলা দু‘দিকের পানিকে একত্র করে দিলেন ফলে ফির‘আউন ও তার দলবল পানিতে ডুবে মরল।
আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(وَاَنْجَیْنَا مُوْسٰی وَمَنْ مَّعَھ۫ٓ اَجْمَعِیْنَﮐﺆ ثُمَّ اَغْرَقْنَا الْاٰخَرِیْنَﮑﺚ)
“এবং আমি মূসা ও তার সঙ্গী সকলকে রক্ষা করলাম। অতঃপর নিমজ্জিত করলাম অপর দলটিকে।” (সূরা শুআরা ২৬:৬৫-৬৬)
আর ঐ ডুবে মরার সময় ফির‘আউন আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমান এনেছিল কিন্তু তার ঈমান কোন কাজে আসেনি। পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা উত্তর দিচ্ছেন যে, এখন ঈমান এনেছ অথচ এর পূর্বে নাফরমানী করেছ। অতএব এখন ঈমান আনাতে আর কোন লাভ হবে না, কারণ ঈমান আনার সময় চলে গেছে। সে সময় তুমি অবাধ্যতা, ঔদ্ধত্য ও ফাসাদ সৃষ্টিতে রত ছিলে। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তার শরীরকে নষ্ট করেননি বরং সযতেত্ন রেখে দিলেন যাতে করে পৃথিবীর সকল অবাধ্য ব্যক্তিরা তার এ শরীর দেখে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে এবং তারা যেন অবাধ্য না হয়। যদি অবাধ্য হয় তাহলে ফেরাউনের মতই অবস্থা হবে। পরবর্তীতে আল্লাহ তা‘আলা বানী-ইসরাইলকে বসবাস করার জন্য একটি সুন্দর জায়গা দিলেন এবং তাদেরকে উত্তম রিযিক দান করলেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَأَوْرَثْنَا الْقَوْمَ الَّذِيْنَ كَانُوْا يُسْتَضْعَفُوْنَ مَشَارِقَ الْأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا الَّتِيْ بٰرَكْنَا فِيْهَا ط)
“যে সম্প্রদায়কে দুর্বল মনে করা হত তাদেরকে আমি আমার কল্যাণপ্রাপ্ত (সিরিয়া) রাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী করেছি।” (সূরা আ‘রাফ ৭:১৩৭) কিন্তু তারা তৎপরবর্তীতে শত্র“তা ও অহঙ্কারবশত বিবাদ করেছিল। যার ফলে তারা প্রাপ্ত নেয়ামত থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ফির‘আউনের মত মানুষের ওপর অত্যাচার করা যাবে না।
২. মু’মিন ও মুসলিমদের উচিত আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা করা ও তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করা।
৩. সালাত পরিত্যাগ করা যাবে না।
৪. ভয়ের সময় বাড়িতে মাসজিদ হিসেবে সালাত পড়া জায়েয।
৫. প্রাণ কণ্ঠাগত হবার পূর্বেই ঈমান আনতে হবে অর্থাৎ মৃত্যুবরণ করার পূর্বেই।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings