Surah Yunus Tafseer
Tafseer of Yunus : 22
Saheeh International
It is He who enables you to travel on land and sea until, when you are in ships and they sail with them by a good wind and they rejoice therein, there comes a storm wind and the waves come upon them from everywhere and they assume that they are surrounded, supplicating Allah, sincere to Him in religion, "If You should save us from this, we will surely be among the thankful."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২২-২৩ নং আয়াতের তাফসীর:
মানুষের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার দয়া ও অনুগ্রহ যে, তিনি তাদেরকে জল ও স্থলের ভ্রমণ করা সহজ করে দিয়েছেন। স্থলভাগে অর্থাৎ তিনি মানুষকে পা দিয়েছেন যার দ্বারা চলাফেরা করে, যানবাহনে চড়ে ভ্রমণ করে সহজেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমনাগমন করতে পারে। জলভাগে অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা মানুষদেরকে নৌকা ও জলযান তৈরি করার জ্ঞান দান করেছেন। যা তৈরি করে মানুষ নদীতে বা সমুদ্রে ভ্রমণ করে, হাজার হাজার টন মালামাল বহন করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যায় অথচ সে পানিতে একটি লোহার বালাও ভাসমান থাকে না। জল পথে ভ্রমণকালে যখন رِيْحٌ طَيِّبَةٌ তথা এমন বাতাস বয়ে যায় যা নৌযানের অনুকূলে এবং নিম্নগতিসম্পন্ন্ তখন মানুষ খুব খুশী হয়। পক্ষান্তরে যখনই তাদের ওপর হঠাৎ এক প্রচণ্ড প্রতিকূল বায়ু এসে পড়ে এবং চতুর্দিক থেকে ঢেউ আসতে থাকে তখন তারা মনে করে যে, বিপদ তাদেরকে পাকড়াও করে নিয়েছে, এমতাবস্থায় তারা খাঁটি বিশ্বাসের সাথে কাকুতি মিনতি করে আল্লাহ তা‘আলাকে ডাকে এবং বলে আল্লাহ তা‘আলা এ বিপদ থেকে মুক্তি দিলে আর কোন দিন অন্যায় করব না, অবশ্যই আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করব। তখন তারা কোন মূর্তিকেও ডাকে না এবং কোন বাতিল মা‘বূদকেও ডাকে না। কারণ তারাও জানে এ বিপদ থেকে তাদের বাতিল মা‘বূদেরা মুক্তি দিতে পারে না। তখন ঐ সকল শয়তানী চিন্তা-চেতনা দূর হয়ে যায়। এতে প্রথমত এ কথা বুঝা যায় মানুষের প্রকৃতিতে এক আল্লাহ তা‘আলার দিকে ফিরে যাবার প্রবণতা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। মানুষ পরিবেশে প্রভাবিত হয়ে সে প্রবণতা বা প্রকৃতিকে চাপা দিয়ে ফেলে, কিন্তু মসীবতের সময় উক্ত প্রবণতা মানব মনে স্বতঃবিকাশ লাভ করে। আরো বুঝা গেল যে তাওহীদ মানুষের প্রকৃতিগত মৌলিক বস্তু, যা থেকে মানুষের বিচ্যুত হওয়া উচিত নয়। কারণ তাওহীদ থেকে বিচ্যুত থাকা, সহজাত প্রকৃতি থেকে বিচ্যুত থাকার নামান্তর, যা সরাসরি ভ্রষ্টতা। দ্বিতীয়ত এ কথা বুঝা যায় যে মুশরিকরা যখন এরূপ বিপদে পড়ত তখন তারা তাদের তৈরি করা মা‘বূদদেরকে বাদ দিয়ে এক আল্লাহ তা‘আলার কাছে আহ্বান করত।
ইকরিমা বিন আবূ জাহল সম্পর্কে পাওয়া যায় মক্কা বিজয়ের পর তিনি মক্কা থেকে পালিয়ে যান। তিনি হাবশাহ যাবার জন্য এক নৌকায় বসেন। নৌকা সামুদ্রিক ঝড়ের মুখে পড়লে নৌকার মাঝি যাত্রীগণকে বলল যে, এখন এক আল্লাহ তা‘আলার নিকট দু’আ কর, কারণ তোমাদেরকে তিনি ছাড়া কেউ এ তুফান থেকে পরিত্রাণ দিতে পারেন না। ইকরিমা বলেন: আমি মনে মনে ভাবলাম যদি সমুদ্রের মাঝে পরিত্রাণ দাতা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা হন তাহলে অবশ্যই স্থলভাগে পরিত্রাণদাতা একমাত্র তিনিই হবেন। আর মুহাম্মাদ তো সে কথাই বলে। সুতরাং তিনি স্থির করলেন যে, যদি এখান থেকে বেঁচে যাই তাহলে মুহাম্মাদের কাছে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করব। তিনি পরে ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম হয়ে যান। (আবূ দাঊদ হা: ২৬৮৩, সিলসিলা সহীহাহ হা: ১৭২৩)
কিন্তু পরিতাপের বিষয়! উম্মাতে মুহাম্মাদীর কিছু মানুষ রয়েছে যারা শির্কে এমনভাবে ফেঁসে গেছে যে, বালা-মসিবত ও কষ্টের সময়ও তারা আল্লাহ তা‘আলার দিকে ফিরে যাওয়া বাদ দিয়ে মৃত বুযুর্গ ব্যক্তিদেরকেই ত্রাণকর্তা মনে করে এবং তাদের কাছেই সাহায্যের জন্য আহ্বান করে। সুতরাং সতর্ক হওয়া উচিত, যেখানে মক্কার মুশরিকরা বিপদে পড়লে এক আল্লাহ তা‘আলাকে ডাকত আর আমাদের কিছু মানুষ আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে মাযার, বাবা, পীর ও দরগাহ শরীফে যায়। অতঃপর যখন তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা মুক্তি দেন তখনই তারা কুফরী করে বসে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَإِذَا مَسَّكُمُ الضُّرُّ فِي الْبَحْرِ ضَلَّ مَنْ تَدْعُوْنَ إِلَّآ إِيَّاهُ ج فَلَمَّا نَجَّاكُمْ إِلَي الْبَرِّ أَعْرَضْتُمْ ط وَكَانَ الْإٍنْسَانُ كَفُوْرًا)
“সমুদ্রে যখন তোমাদেরকে বিপদ স্পর্শ করে তখন কেবল তিনি ব্যতীত অপর যাদেরকে তোমরা আহ্বান করে থাক তারা অন্তর্হিত হয়ে যায়; অতঃপর তিনি যখন তোমাদেরকে উদ্ধার করে স্থলে আনেন তখন তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও। মানুষ অতিশয় অকৃতজ্ঞ।” (সূরা ইসরা ১৭:৬৭)
তারা অন্যায় অত্যাচারে লিপ্ত হয়, জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করে এবং আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে চলে না। তবে সকলের জেনে রাখা উচিত তাদের অন্যায় আচরণ, তাদের বিদ্রোহ তাদের ব্যতীত অন্য কারো কোন ক্ষতি করতে পারবে না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “আল্লাহ তা‘আলার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করা এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা, এ দু‘টো এমন পাপ যে, এ কারণে আখিরাতে শাস্তি হবেই, এমনকি দুনিয়াতেও এর জন্য শাস্তি দেয়া হবে। তাদের এসমস্ত কৃতকর্মের পরও তাদের সকলকে আল্লাহ তা‘আলার নিকট ফিরে যেতে হবে আর তিনি তাদেরকে তাদের আমল সম্পর্কে বলে দেবেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সকল কিছুকে ছেড়ে দিয়ে একমাত্র উপাস্য হিসেবে আল্লাহ তা‘আলাকেই আহ্বান করতে হবে, অন্য কারো উপাসনা করা যাবে না।
২. মানুষদেরকে আখিরাতে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবগত করা হবে।
৩. বিপদে-আপদে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকেই ডাকতে হবে, অন্য কারো কাছে চাইলে পাওয়া যাবে না।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings