95:1
وَٱلتِّينِ وَٱلزَّيۡتُونِ١
Saheeh International
By the fig and the olive
নামকরণ ও গুরুত্ব: التِّيْنِ তীন হচ্ছে ডুমুর জাতীয় এক প্রকার মিষ্টি ফল, যার গাছ ও ফল দেখতে ডুমুর গাছ ও ফলের মতই। প্রথম আয়াতে উল্লিখিত তীন শব্দ থেকেই সূরার নামকরণ করা হয়েছে। বারা বিন আযেব (রাঃ) হতে বর্ণিত, নাবী (সাঃ) সফরে দুরাকাত সালাতের কোন এক রাকাতে সূরা তীন পাঠ করতেন। আমি তাঁর চেয়ে মধুর ও উত্তম কণ্ঠস্বরে কিরাত আর কারো শুনিনি। (সহীহ বুখারী হা. ৭৬৯, সহীহ মুসলিম হা. ১৭৫) তাফসীর : অধিকাংশ মুফাসসির বলেছেন: তীন ও যাইতুন হলো দুটি প্রসিদ্ধ ফল যা মানুষ খায়। (তাফসীর মুয়াসসার) আল্লাহ তা‘আলা এ দুটি গাছের শপথ করেছেন কারণ এ দুটি গাছ অন্যান্য গাছের তুলনায় অধিক উপকারী। এ বিষয়ে অনেক চিকিৎসাবিদ আলোচনা করেছেন। যহহাক (রহঃ) বলেছেন: তীন হলো: মাসজিদে হারাম আর যাইতুন হলো: মাসজিদে আকসা। ইবনু জায়েদ (রহঃ) বলেন: তীন হলো: দামেস্কের মাসজিদ আর যাইতুন হলো: মাসজিদে আকসা। এছাড়াও অনেক মতামত পাওয়া যায়। (ইবনু কাসীর, ফাতহুল কাদীর)(وَطُوْرِ سِيْنِيْنَ) তুরে সিনাই হলো সেই পাহাড় যার ওপর আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ)-এর সাথে কথা বলেছেন। (الْبَلَدِ الْأَمِيْنِ) নিরাপদ শহর হলো মক্কা, আবার কতক আলেম বলেছেন: প্রকৃতপক্ষে এ হচ্ছে তিনটি জায়গা যার প্রত্যেকটিতে আল্লাহ তা‘আলা একজন করে “উলূল আযম” রাসূল প্রেরণ করেছেন। তীন ও যাইতুন দ্বারা বাইতুল মাকদিস এলাকাকে বুঝানো হয়েছে, যেখানে ঈসা (আঃ)-কে প্রেরণ করা হয়েছে। সিনাই পর্বত দ্বারা মূসা (আঃ)-এর সাথে আল্লাহ তা‘আলা যে পাহাড়ের ওপর কথা বলেছেন তা বুঝানো হয়েছে। “নিরাপদ শহর” দ্বারা মক্কাকে বুঝানো হয়েছে। যেখানে শেষ নাবী মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে প্রেরণ করা হয়েছে। (ইবনু কাসীর) (فِيْٓ أَحْسَنِ تَقْوِيْمٍ) পূর্বে উল্লিখিত তিনটি স্থানের শপথের জবাব হলো এ আয়াত। আল্লাহ তা‘আলা প্রতিটি প্রাণীকে সৃষ্টি করেছেন নিম্নমুখী করে। কেবলমাত্র মানুষকে সৃষ্টি করেছেন আলম্বিত দেহে সোজা করে। ইমাম কুরতুবী (রহঃ) বলেন : تقويم অর্থ সোজা সামঞ্জস্যপূর্ণ করে সৃষ্টি করেছেন। ইবনুল আরাবী (রহঃ) বলেন : আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টিসমূহের মধ্যে মানুষের চেয়ে উত্তম আর কোন সৃষ্টি নেই। আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে, বিবেক বুদ্ধি বোধশক্তি, শ্রবণ, প্রজ্ঞা ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন করে সৃষ্টি করেছেন। (أَسْفَلَ سٰفِلِيْنَ) এখানে অনেক মানুষের শারীরিক পরিবর্তনের কথা বলেছেন, আবার অনেকে হীনতার অর্থ নিয়েছেন যে, মানুষ কর্মের কারণে চতুষ্পদ প্রাণীর চেয়ে নিকৃষ্ট হয়ে যায়। তবে সঠিক অর্থ হলো : এখানে জাহান্নামের শাস্তির কথা বলা হচ্ছে। কাফিররা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমান না আনার কারণে নিজেদেরকে উঁচুমর্যাদা আশরাফুল মাখলুকাত (সৃষ্টির শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি) থেকে জাহান্নামের নিম্ন দেশে ঠেলে দিচ্ছে। এজন্য আল্লাহ তা‘আলা পরের আয়াতে ঈমানদার ও সৎ আমলকারী ব্যক্তিদের আলাদা করেছেন। কেননা তারা ঈমান এনে এ লাঞ্ছনা থেকে নিজেদের রক্ষা করেছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা সূরা আছরে বলছেন: (إِنَّ الْإِنْسَانَ لَفِيْ خُسْرٍ إِلَّا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَتَوَاصَوْا بِالْـحَقِّ ৫ لا وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْر) “নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত; কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং পরস্পরকে হক্বের উপদেশ দেয় এবং উপদেশ দেয় সবরের।” (সূরা আসর ১০৩: ২-৩) (فَمَا يُكَذِّبُكَ بَعْدُ بِالدِّيْنِ) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমতার প্রমাণ বহন করে এমন নিদর্শনাবলী সুষ্পষ্ট করে দেয়ার পরেও কোন্ জিনিস তোমাদেরকে পুনরুত্থানের প্রতি অবিশ্বাসী হতে অনুপ্রাণিত করছে?(أَلَيْسَ اللّٰهُ بِأَحْكَمِ الْـحٰكِمِيْنَ) অর্থাৎ যে আল্লাহ তা‘আলা বিচারের দিনকে নির্ধারিত করে রেখেছেন তিনি কি সৃষ্টি জীবের মাঝে ন্যায় বিচার করবেন না? হ্যাঁ, অবশ্যই তিনি মানুষকে তাদের কর্মের ভাল-মন্দ প্রতিদান দেয়ার জন্য ন্যায় বিচার করবেন। এ সূরার শেষে بلي وانا علي ذلك من الشاهدين পড়ার প্রমাণ বিশুদ্ধ নয়। (তিরমিযী হা. ৩৩৪৭, সনদ দুর্বল।) আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. তীন ও যাইতুনের তাফসীর জানতে পারলাম। ২. মক্কার মর্যাদা ও গুরুত্ব জানলাম। ৩. মানুষের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ যে, তিনি মানুষকে উত্তম অবয়ব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন।৪. মু’মিনদের মর্যাদাবান ও কাফিরদের অসম্মানের পাত্র করার হিকমত জানলাম।
Arabic Font Size
30
Translation Font Size
17
Arabic Font Face
Help spread the knowledge of Islam
Your regular support helps us reach our religious brothers and sisters with the message of Islam. Join our mission and be part of the big change.
Support Us