3:181
لَّقَدۡ سَمِعَ ٱللَّهُ قَوۡلَ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاۡ إِنَّ ٱللَّهَ فَقِيرٌ وَنَحۡنُ أَغۡنِيَآءُۘ سَنَكۡتُبُ مَا قَالُواۡ وَقَتۡلَهُمُ ٱلۡأَنۢبِيَآءَ بِغَيۡرِ حَقٍّ وَنَقُولُ ذُوقُواۡ عَذَابَ ٱلۡحَرِيقِ١٨١
Saheeh International
Allah has certainly heard the statement of those [Jews] who said, "Indeed, Allah is poor, while we are rich." We will record what they said and their killing of the prophets without right and will say, "Taste the punishment of the Burning Fire.
১৮১-১৮৪ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, যখন- ‘আল্লাহকে উত্তম কর্জ দিতে পারে এমন কে আছে? এবং তিনি তাকে দ্বিগুণ-চতুগুণ করে প্রদান করবেন। এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় তখন ইয়াহূদীরা বলতে আরম্ভ করে, “হে নবী (সঃ)! আপনার প্রভু দরিদ্র হয়ে পড়েছেন এবং এ জন্যেই তিনি স্বীয় বান্দাদের নিকট কর্জ যা করছেন। তখন উপরের আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। মুসনাদ-ই-ইবনে আবি হাতিমে রয়েছে যে, হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) একদা ইয়াহুদীদের বিদ্যালয়ে গমন করেন। ফানহাস নামক এখানকার একজন বড় শিক্ষক ছিল এবং তার অধীনে আশী’ নামক একজন বড় আলেম ছিল। তথায় জন-সমাবেশ ছিল। তিনি তাদের ধর্মীয় আলোচনা শুনছিলেন। তিনি ফানহাসকে সম্বোধন করে বলেন, “হে ফানহাস! আল্লাহকে ভয় করতঃ তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তোমার খুব ভাল করেই জানা আছে যে, মুহাম্মাদ (সঃ) আল্লাহর সত্য রাসূল। তিনি আল্লাহ পাকের নিকট হতে সত্য আনয়ন করেছেন। তাঁর গুণাবলী তাওরাত ও ইঞ্জীলের মধ্যে বর্ণিত আছে যা "তোমাদের হাতেই বিদ্যমান। রয়েছে। ফানহাস তখন উত্তরে বলে, “হে আবু বকর (রাঃ) শুনুন, আল্লাহর শপথ! আল্লাহ আমাদের মুখাপেক্ষী, আমরা তাঁর মুখাপেক্ষী নই। আমরা তাঁর নিকট ঐরূপ কাকুতি মিনতি করি না যেমন তিনি আমাদের নিকট কাকুতি মিনতি করে থাকেন। বরং আমরা তো তাঁর নিকট মোটেই মুখাপেক্ষী নই। কারণ, আমরা ধনবান। তিনি যদি ধনী হতেন তবে আমাদের নিকট ঋণ চাইতেন না। যেমন আপনাদের নবী বলছেন। আল্লাহ তো আমাদেরকে সুদ হতে বিরত রাখতে চাচ্ছেন, অথচ নিজেই সুদ দিতে চাচ্ছেন। তিনি যদি ধনী হতেন তবে আমাদেরকে সুদ দিতে চাইবেন কেন?' এ কথা শুনে হযরত আবু। বকর (রাঃ) ক্রেধিান্বিত হয়ে ফানহাসের মুখে সজোরে চপেটাঘাত করেন এবং বলেন, “যে আল্লাহর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! যদি তোমাদের ইয়াহূদীদের সাথে আমাদের চুক্তি না থাকতো তবে আমি অবশ্যই তোমার মত আল্লাহদ্রোহীর মস্তক কেটে নিতাম।' ফানহাস সরাসরি হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)-এর নিকট গিয়ে হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করে। তিনি হযরত আবু বকর (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেনঃ তাকে মেরেছে কেন?' হযরত আবু বকর (রাঃ) তখন ঘটনাটি বর্ণনা করেন। ফাহাস চালাকি করে বলে, 'আমি তো এরূপ কথা মোটেই বলিনি। সে সম্বন্ধে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।অতঃপর আল্লাহ তাআলা তাদেরকে স্বীয় শাস্তির সংবাদ দিচ্ছেন, তাদের এরূপ উক্তি এবং সাথে সাথে তাদের ঐরূপই বড় পাপ অর্থাৎ নবীদেরকে হত্যাকরণ আমি তাদের আমলনামায় লিখে নিয়েছি। এক দিকে তাদের মহা প্রতাপান্বিত আল্লাহর শানে বেয়াদবী এবং অপর দিকে নবীগণকে হত্যা করার কারণে তাদেরকে ভীষণ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। আমি তাদেরকে বলবো‘এটা তোমাদের পূর্বের কৃতকর্মেরই প্রতিফল।' এ কথা বলে তাদেরকে শাস্তির উপর শাস্তি প্রদান করা হবে। এটা সরাসরি সুবিচারই বটে এবং এটাও স্পষ্ট কথা যে, মনিব কখনও স্বীয় দাসের উপর অত্যাচার করেন না। এরপর আল্লাহ তা'আলা আহলে কিতাবের ঐ ধারণা মিথ্যা প্রতিপন্ন করছেন যে, তারা বলতো, যেসব আসমানী কিতাব আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করেছেন ঐগুলোতে তিনি আমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন,-আমরা যেন কোন রাসূলের উপর বিশ্বাস স্থাপন না করি যে পর্যন্ত তিনি আমাদেরকে এ অলৌকিক ঘটনা প্রদর্শন না করবেন যে, তিনি তার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন কিছু কুরবানী করবে, তার সেই কুরবানী খেয়ে নেয়ার জন্যে আকাশ হতে আল্লাহ-প্রেরিত আগুন এসে তা খেয়ে নেবে। তাদের এই কথার উত্তরে ইরশাদ হচ্ছে- “তোমাদের চাহিদা মত অলৌকিক ঘটনা প্রদর্শনকারী নবীগণ নিদর্শন ও প্রমাণাদি নিয়ে তো তোমাদের নিকট আগমন করেছিলেন, তথাপি তোমরা তাদেরকে হত্যা করেছিলে কেন? তাদেরকে তো আল্লাহ পাক ঐ মুজিযাও দিয়ে রেখেছিলেন যে, প্রত্যেক গৃহীত কুরবানীকে আসমানী আগুন এসে খেয়ে নিত। কিন্তু তোমরা তাদেরকেও তো সত্যবাদী বলে স্বীকার করে নাওনি। তোমরা তাদেরও বিরুদ্ধাচরণ ও শক্রতা করেছিলে, এমনকি তাদেরকে হত্যা করেও ফেলেছিলে। এর দ্বারা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, তোমরা তোমাদের নিজেদের কথারও কোন মর্যাদা দাও না। তোমরা সত্যের সাথীও নও এবং নবীকে সত্য বলে স্বীকার করতেও সম্মত নও। নিশ্চয়ই তোমরা চরম মিথ্যাবাদী'।এরপর আল্লাহ পাক স্বীয় নবী (সঃ)-কে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন-“হে নবী (সঃ)! তারা তোমাকে মিথ্যাবাদী বলছে বলে তোমার মন ছোট করার ও দুঃখিত হওয়ার কোনই প্রয়োজন নেই। পূর্ববর্তী দৃঢ়চিত্ত নবীদের ঘটনাবলীকে সান্ত্বনাদায়ক হিসেবে গ্রহণ কর। তারাও স্পষ্ট দলীলসমূহ এনেছিল এবং ভালভাবে নিজেদের সত্যতা প্রকাশ করেছিল। তথাপি জনগণ তাদেরকে অবিশ্বাস করতে মোটেই দ্বিধাবোধ করেনি'। (আরবী) শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে ঐসব আসমানী গ্রন্থ যেগুলো ক্ষুদ্র পুস্তিকারূপে নবীদের উপর অবতীর্ণ হয়েছিল। (আরবী) শব্দের অর্থ হচ্ছে প্রকাশ্য, স্পষ্ট, উজ্জ্বল ও দীপ্তিমান।
Arabic Font Size
30
Translation Font Size
17
Arabic Font Face
Help spread the knowledge of Islam
Your regular support helps us reach our religious brothers and sisters with the message of Islam. Join our mission and be part of the big change.
Support Us